২২৬/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ১২, ২০১৫

ছোটদের ফটোগ্রাফি শিক্ষা ১০

আজকের লেখার পর টিউটোরিয়াল লেখা এক্টূ বিরতি দিমু। তারপর আবার টানা দশটা লিখা ফালামু ইনশাল্লাহ। কালকে থেইকা আবার আমার হাবি জাবি লেখা শুরু হবে।

এর আগের লেখায় কইসিলাম এর পর আলুচনা করুম লেন্স লইয়া। কিন্তু মনে হইতাসে লেন্স এর আগে ক্যামেরার ই আরেকটা জিনিষ বুঝন দরকার। সেইটা হইলো “মিটারিং”।

মিটারিং এ যাওনের আগে আরকবার মনে করায়া দেই যে ক্যামেরা কেমতে ফটুক তুলে। এই ফটুকটা দেহেন:

এইহানে দেখন যাইতাসে যে আলোর উৎস থেইকা আলো আইসা সাবজেক্টের উপর পরতাসে। সাবজেক্ট থেইকা আলো প্রতিফলন হইয়া আবার ক্যামেরায় আইতাসে। (ধইরা লন এই ক্যামেরা বাজারের সবচেয়ে নিম্নমানের চাংকি পান্ডে ব্র্যান্ড এর মুবাইলের ক্যামেরা। ) এহন ক্যামেরা এই “প্রতিফলিত আলো”র উপর নির্ভর কইরা ঠিক করতাসে ছবিডা কেরম হইবো। খেয়াল করেন সাবজেক্টের উপর আলো কতটুকু পরতাসে তার উপর কিন্তু ক্যামেরা কিসু করতাসে না, করতাসে কতটুক আলো সাব্জেক্ট এ বাড়ি খায়া বাইর হয়া আইসা ক্যামেরার উপর পরতাসে তার উপর।

আমরাছবি তুলার আগে ফোকাস করি, এই আলো টা মাপি, সেই অনুযায়ি এক্সপোজার ঠিক করি, তারপর ছবি তুলি। এই যে আলো মাপামাপির বিষয়ডা, এইডারে কয় মিটারিং। আর যেই যন্ত্র এই আলো মাপার কামডা করে তারে কয় লাইট মিটার। লাইট মিটার দুই কিসিমের আসে:

১) এক্সটার্নাল লাইট মিটার : হাতে ধইরা আলো মাপা যায় এরম একখান জিনিষ। উপরে ছবিটায় নীল বলটার উপরে ছবি আসে দেহেন। এইডা সরাসরি সাবজেক্টের উপর রাইখা কি পরিমান আলো সাবজেক্টের উপর আইতাসে তা মাপন যায়। একুরেসির হিসাবে এইডা সবচেয়ে ভালা তাই দামটাও সেইরাম। ভবিষ্যতে একখান কিনার ইচ্ছা রাখি। দুআ রাইখেন।

২) ইন ক্যামেরা লাইট মিটার: এইডা ক্যামেরার ভিতরে থাকে। আর এইডা মোটামুটি সব ডিজিটাল ক্যামেরার লগো ফিরি হিসাবে আসে। ভালা ছবি তুলতে হইলে এইডা কেমনে কাজ করে তা বুঝনটা খুব দরকার। তাই লন এট্টু এইডা লইয়া গপশপ করি।

একটু আগেই কইতাসিলাম যে ক্যামেরা প্রতিফলিত আলোর উপর নির্ভর কইরা ছবির এক্সপোজার (এক্সপোজার কি জিনিষ, আগের লেখা গুলায় কইসিলাম) ঠিক করে। কিন্তু সব জিনিষ থেইকা তো একি রকম আলো আসেনা তাইনা? আপনের সবুজ পেন্ট আর গুলাপি শার্ট পরা বন্ধুর ছবি তুলান সময় ক্যামেরা তো কনফিউজড হইয়া যাইবো যে, শার্ট এর থেইকা প্রতিফলিত আলোটারে স্ট্যানডার্ড ধরবো না প্যান্ট এর টা? না কি চিপা দিয়া উকি মারা লাল আন্ডিটারে ধরবো? 😀

এই ধরনের কনফিউশন থেইকা রেহাই পাওয়ার জন্য বিগ গ্যায়ানিরা ইন ক্যামেরা লাইট মিটার ডিজাইন করসে একটা বিশেষ রং থেইকা প্রতিফলিত আলোরে স্ট্যানডার্ড ধইরা। এই বিশেষ রংটা হইলো ১৮% গ্রে।

মানে উপরের রংটা ওয়ালা কোনো বোর্ড যদি সাবজেক্টের উপর ধরেন, তারপর ক্যামেরার এক্সপোজার (শাটর স্পিড, এপারচার, আই এস ও)ঠিক করেন, তারপর বোর্ডটা সরায়া ছবিটা তুলেন তাইলে সেইটা সবচেয়ে পারফেক্ট এক্সপোজারে ছবি তুলা হবে।

তার মানে হইলো ক্যামেরার লাইট মিটার আসলে কালার ব্লাইন্ড। সে সামনে যা দেখে তা আসলে সব ওই ১৮% গ্রে এর সাথে তুলনা কইরা দেখার চেষ্টা করে। এই জন্য যেই ছবিতে কালারের ভ্যারিয়েশন বেশি থাকে সেইখানে মিটারিং ভুল হয় সবচেয়ে বেশি। কারন ক্যামেরার মিটার ই তখন ভুল রিডিং দিতেসে সামনের যেই রংটা ১৮% গ্রে এর কাছাকাছি, তার উপর নির্ভর কইরা।

তাইলে ওখন কি করবেন? ২ টা কাম করতে পারেন। এক, সাথে একটা গ্রে কার্ড লইয়া ঘুরবেন। ছবি তুলনের আগে গ্রে কার্ডের এক্সপোজার নিয়া তারপর ছবি তুলবেন। মাগার খিয়াল রাইখেন, গ্রে কার্ড কইলাম দামি জিনিষ।

অথবা দুই, নিজের হাতের পাতার এক্সপোজার নিবেন। কারন, এশিয়ান হওয়ার সুবিধা হিসাবে আমাদের হাতের পাতা থেইকা প্রতিফলিত আলো প্রায় ১৮% গ্রে এর কাছাকাছি এক্সপোপার দেয়।

যাইকগা মিটারিং বিষয়টা কি তা যদি বুইঝা থাকেন তাইলে আহেন এইটার আরেকটু ভিতরে ঢুকি। আমগো ক্যামরা কয়েক রকম ভাবে মিটারিং করতে পারে। ছবির ধরনের উপর এই রকম গুলা নির্ভর করে। মানে আমি কইতে চাইতাসি যে আপনে যদি বুঝতে পারেন যে কোন ছবি তুলার সময় কোন মিটারিং ব্যবহার করবেন তাইলে ছবিটাও সেরম ভালা হইবো।

১) Evaluative Metering (ইভালুয়েটিভ মিটারিং): ক্যাননের Evaluative Metering অথবা নাইকনের Evaluative/Matrix Metering হইলো এই ক্যামেরা গুলার ডিফল্ট মিটারিং। এই ধরনের মিটারিং এ ক্যামেরা সামনের সিনটারে কয়েকটা জোন এ ভাগ কইরা প্রত্যেকটা জোনের আলো মাপে, তারপর সেইগুলা এনালাইসিস কইরা একটা রিডিং দেয় (মানে ক্যামেরায় দেখায় ছবি আন্ডার এক্সপোজড না ওভার এক্সপোজড হইবো) । এই মিটারিং এর সুবিধা হইলো, যহন আপনে শিউর না যে কোন মিটারিং ব্যবহার করবেন, তহন এইডা মাইরা দিবেন, কাম হইয়া যাইবো । আর অসুবিধা হইলো, ক্যামেরা ওভারওল আলোকিত একটা ছবি তুলে ফলে আলো ছায়ার খেলাটা ঠিক মতো খেলা যায় না। নিচের ছবিটা দেহেন, ইভালুয়েটিভ মিটারিং এ তুলা হইসে। কিন্তু মনে হইতাসে না যে কাঠের উপর আরেকটু ডিটেইল থাকলে ভালা হইতো?

২) Partial Metering/Spot Metering (পারশিয়াল মিটারিং আর স্পট মিটারিং): এই ধরনের মিটারিং এ ক্যামেরা ফ্রেমের একেবারে মাঝখান থেইকা রিডিং লয়। কিসু কিসু ক্যামেরায় ডাইনে/বামে/উপরে/নিচে কোন একটা ফোকাসিং পয়েন্ট সিলেক্ট কইরা দিলে সেই পয়েন্টের রিডিং লয়। যহন আপনের ফ্রেমের বিশেষ কোনো জায়গার আলো আপনে একদম ঠিক ঠাক দেখাইতে চান, বাকি জায়গা মুটামুটি হইলেই হইলো, তখন এইডা ইউজ করবেন। উপরের ছবিটাই পারশিয়াল মিটারিং দিয়া তুল্লে এরম হইবো:

আমি পারশিয়াল মিটারিং ইউজ করি পোর্টেইট তুলতে। তাইলে ব্যাক লাইট আমার সাবজেক্টের চেহারার এক্সপোজার রে কনফিউজড করতে পারে না। আর স্পট মিটারিং ইউজ করি যখন সিন এ শুধু একটা আলোকিত জায়গা থাকে। ধরেন মুমবাতির ছবি অথবা চান্দের ছবি।

Center-Weighted Average Metering (সেন্টার ওয়েটেড এভারেজ মিটারিং): এই ক্ষেত্রে ক্যামেরা ফ্রেমের মাঝখানের এক্সপোজার নেয়, তারে একটা ওয়েটেজ ভ্যালু দেয়, আবার সেন্টারের চারপাশের এক্সপোজার নেয়, একটা ওয়েটেজ ভ্যালু দেয় তয় প্রথমটার চেয়ে কম। এইবার এই গুলার একটার এভারেজ কইরা রিডিং দেয়। যখন সাবজেক্ট ফ্রেমের এক্কেরে মাঝখানে থাকে তহন এইডা সবচেয়ে ভালা কাম করে।

হফফফফফফফফফফফ…. বিশাল লেখা লিখলাম। এল্লা থামি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *