১৯৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫ । ১১.৫০ পি এম

 

একটা সিনেমা দেখসিলাম অনেক আগে। নাম “Buried”। খুবি মিনিমালিস্টিক সিনেমা। একটা লোক চোখ খুইলা আবিষ্কার করে সে একটা কফিনের ভিতর আটকায়া আসে। ঢাকনা খুলার উপায় নাই কারন উপরে টন টন মাটি। একটা মোবাইল ফোন থাকে যেইখানে টেররিস্ট রা বলে যে তাদের দেশে আমেরিকার আক্রমণ এর কারণে তারা তারে জ্যান্ত কবর দিসে। এদিকে আমেরিকার ডিফেন্স এর লোকজন তারে উদ্ধার করার জন্য অনেক তৎপরতা শুরু করে। পুরা সিনেমাটার সেট একটাই। কফিন টার ভিতর। এক সময় দেখতে দেখতে ক্লাস্টারফোবিক লাগতে থাকে। আটকাইয়া পরা লোকটার সাথে মোবাইল এর কনভারসেশন শুনতে শুনতে বুঝা যায় পুরা কাহিনী।

শেষ টা খুবি শকিং ছিল। ** স্পয়লার এলার্ট ** লোকটা মারা যাওয়ার আগে আগে যখন প্রায় শিওর থাকে যে এখনি তাকে উদ্ধার করতে আসা লোকজন মাটি খুউইরা তারে বাইর করবে, তখন সে মোবাইল ফোনে শুনতে পায়, সরি , আমরা আসলে ভুল একটা কবর খুজে পাইসি। তুমি কোথায় আমাদের আইডিয়াই নাই। এত ধাক্কা মত লাগে একটা ভিতরে।

এই কাহিনী বলার শানে নজুল হইল আমার এখন এই রকম ফিলিংস হইতাসে। মনে হইতাসে যখন ই ভাবতাসি এই অন্ধকার এই দম বন্ধ করা এখনি শেষ হবে তখন ই জানতে পারতাসি, সরি, আমি না, অন্য কোন কবর এর মানুষটা মুক্তি পাইলো। সিনামায় তো তাও এই ঘটনা একবার ই ঘটসে, আমার ক্ষেত্রে বার বার ই হইতাসে। আর আমি নিজেকে ঠিক রাইখাই যাইতাসি, আচ্ছা ঠিক আসে। ব্যাপার না। কেউ তো ভাল থাকুক।

আমার লেখা পইরা যারা ইন্সপায়ার হন তাদের নিশ্চয়ই এখন “তাইলে কি এদ্দিন ভুল পীর এর মুরিদ ছিলাম?” টাইপ ফিলিইংস হইতাসে। কিন্তু আমি যদি সারাক্ষণ ই একদম চার্জড আপ থাকি, ইন্সপায়ারিং থাকি, তাইলে হয় আমি মিথ্যা কথা বলতাসি নাইলে আপনে আমারে নিজের মত কিছু একটা ভাইবা লইতাসেন। মানুষ তো। মানুষ সারাক্ষণ ভাল আছে দেখাইতে পারে, কিন্তু সারাক্ষণ ভাল থাকতে পারে না। তাই নিজের লেখায় আমার জীবনে আনন্দের সীমা নাই এই টাইপ নিজের সাথে ভণ্ডামি করতে পারুম না।

আমার মাথা কি রকম খারাপ হয়া আসে একটু বলি। আজকে রাশা কে বলতেসিলাম, দোস্ত আই ওয়ানট টু রাইট ডাউন মাই উইল। আমি মইরা গেলে কে কি পাইবও তার তালিকা। রাশা মানা করসে। বলসে ইট উইল সাউন্ড আই এম টু ডেস্পারেট টু সিক এটেনশন। কিন্তু আমি তো জানি না, কালকেও বাইচা থাকুম কিনা। তাই সব কিছুর একটা বন্দবস্ত কইরা গেলে ভাল না?

নিচে কিছু জিনিষ পত্রের তালিকা আর আমি মইরা গেলে সেইটা কে পাবে তা দিলাম।

ব্যাংক এর টাকা পয়সা, সঞ্চয়পত্র, জীবন বীমার টাকা – আম্মা আর আম্মার দিতে ইচ্ছা করলে বাবা
আমার সব বই গুলা – তামিম ভাই
আমার তোলা প্লেন আর এভিয়েশন রিলেটেড যত ছবি, আমার জমানো সব বোর্ডিং পাস, সেফটি কার্ড, বুমির ব্যাগ – কারিব ভাই
আমার সব রকম এর মিউজিকাল ইনস্ট্রুমেন্টস, টিভি টা – রাশা
আমার ক্যামেরা, লেন্স, ফটোগ্রাফি রিলেটেড যা কিছু, প্লেন এর ছবি বাদে বাকি সব ছবি, রান্না ঘরের সব জিনিশ পত্র, চুলা, ফ্রিজ – ফেরদৌস আর লরা
টি শার্ট, শার্ট, আর যা কিছু কাপর চোপর, গেমিং কনসল, মোবাইল ফোন সেট – অন্তর
অনলাইন এ অফলাইন এ সব লেখা লেখি – জিকো ভাই, মিশু আপু
মডেল প্লেন্স, লেগো সেটস, খেলনা টাইপ এর যা কিছু – ওহি আর মিহি
ছবি আঁকা আঁকির সব কিছু, আঁকা ছবি, ছবি আঁকার জিনিষ পত্র, কিচি-মিচি – মোহনা খন্দকার মিতি
ল্যাপটপ গুলা, লাইট, ফ্যান, শীত এর কাপর, চেয়ার, টেবিল, ফার্নিচার- স্বপ্ননগর বিদ্যা নিকেতন (ইশতিয়াক আল মাহমুদ)

আর কিছু আছে বইলা মনে পরতাসে না। মনে পরলে ইডিট কইরা দিমু নে। এখন হাল্কা হাল্কা লাগতাসে। আর চিন্তা নাই।

 

১৯৬/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫ । ১১.৪৪ পি এম

 

আমার মন খারাপ থাকলে আমি ট্রাই করি রিয়ালিটি রে বেন্ড করতে। হয়তো কোন ঘটনা ঘটেনাই কিন্তু ঘটতে পারলে অসাম হইতো, এরকম কিছু কল্পনা কইরা নেই। এগুলা সংখ্যায় অনেক। সময়ের সাথে সাথে এগুলা পালটায়, ম্যাচিউড়ড হয়, কিউট হয়, মাঝে অশ্লিলও হয়। এগুলা কখনো শেয়ার করা হয় নাই কারো সাথেই। আজকে মনে হইতাসে দুই একটা লিখে রাখা দরকার। এগুলা ঠিক ছোট গল্প না, কল্প দৃশ্য বলা যেতে পারে

কল্প দৃশ্য ১

ব্যাংক এ ক্রেডিট কার্ড এর বিল দিতে লাইনে দাঁড়ায় আসি। আনমনেই গুন গুন কইরা উঠলাম, “সেই তুমি কেন এর অচেনা হলে”। সাম্নের লোক ঘুইরা তাকাইলো আমার দিকে। আমি ভাব্লাম ঝারি লাগাবে এখনি। সে খুবি গম্ভির মুখে বলল “সেই আমি কেন তোমাকে দুঃখ দিলেম।” তার সাম্নের লোক ও ঘুইরা দারায়া বলল, “কেমন করে এত অচেনা হলে তুমি”। দুই মিনিটের মধ্যে সোনা গেল পুরা ব্যাংক এর লোকজন কোরাসে গাইতাসে, তুমি ক্যান বোঝনা তোমাকে ছাড়া আমি অসহায়…

কল্প দৃশ্য ২

একটা পিচ্চির হাত থেইকা বেলুন ছুইটা আসে। পিচ্চিটা ঠোট উল্টায়ে আকাশের দিকে তাকায় আসে। যেন সব দোষ আকাশের। বেলুন্টা যাইতে যাইতে একবার পিচ্চিটার দিকে তাকাইল। তারপর আকাশের দিকে তাকাইলো। তারপর রউনা দিলো নিচের দিকে। পিচ্চিটার কাছে গিয়া গাল ঘষা ঘষি শুরু করলো। নিঃসংগ বিশালতার চেয়ে কারো কারো কাছে সামাজিক ক্ষুদ্রতাও অনেক প্রিয় যে।

কল্প দৃশ্য ৩

ছেলেটা নিজেই ড্রাইভ করছিল। এই এপার্টমেন্ট টা অদ্ভুত। ঢুক্তে হয় বেজমেন্ট দিয়ে। গাড়ি নিয়ে তো সমস্যা হয় না। সাই সাই করে ঢালু বেজমেন্ট এর ঢাল বেয়ে উপরে উঠে যাওয়া যায়। সমস্যা হয় গাড়ি ছাড়া হেটে উঠতে গেলে। এসব ভাবতে ভাবতে ছেলেটা আগাচ্ছিল বেস্মেন্ট থেকে বেরোনোর জন্য। হঠাত দেখলো সেই মেয়েটা। যাকে দেখলে ছেলেটার হারটবিট ডাবল বিট হয়ে যায়।সেই মেয়েটা দুইটা ক্রাচ এ ভর দিয়ে এগুচ্ছে বেজমেন্ট এর ঢাল্টার দিকে। এক পায়ে ব্যান্ডেজ। কিইইইচ করে ব্রেক কশ্লো মেয়েটার পাশে। অফার করলো, আসেন আপনাকে পৌছে দেই। মেয়েটা না শোনার ভান করে আগায় গেল। ছেলেটা আবারো মেয়েটার পাশে গাড়িটা ব্রেক করে গিয়ে বলল, সারা রাস্তা আপনাকে বিরক্ত করবো না। শুধু বেজমেন্ট এর উপর পর্যন্ত। মেয়েটা এই আইডিয়াতে এতই হচকচায় গেল যে একটা কাঠ কাঠ হাসি হেসে গাড়িতে উঠে পরলো। ছেলেটা ঢালের উপর গিয়ে নামায় দিল মেয়েটাকে তারপর হুশ করে চলে গেল। মেয়েটা খুবি অবাক হয়ে গাড়ীর চলে যাওয়া দেখছিলো। গাড়ি থেকে কেন নেমে গেল এটা ভেবে হঠাত হয়ে গেল মন খারাপ। দু’জনেরি।

 

১৯৫/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৫ । ১১.৪৪ পি এম

 

বাসাবো আসছি এক্টু আগে। আম্মা ধইরা দুই গামলা ভাত খাওয়ায় দিসে মুরগির মাংশ দিয়া। স্বেচ্ছায় মাইর খাওয়ার ইচ্ছা হয় নাই তাই আম্মার সামনে ডায়েটের কথা বলি নাই। আজকে লিখতে বিশেষ ইচ্ছা করতাসে না। তাই নিজের লেখা লিরিক্স দিয়া ফাকিবাজি করা যাক।

এই গান টা ছিল আমাদের এলবাম এর একেবারে শেষ গান। আর আমার সবচেয়ে প্রিয় গান। গান টার নাম “স্নাত। গান এর নাম দেওয়া আমার জন্য অনেক কঠিন কাজ ছিল। আর আমরা এলবাম ডিজাইন ই করসিলাম ওম্নে যে প্রত্যেক্টা গান এর শুরুতে একটা ছোট লেখা থাকবে, তারপর গানের লিরিক্স লেখা থাকবে।

এদিকে ডেডলাইন চলে আসছে,রেকর্ডিং কাল্কেই। তখন আমি পড়ি ইউনিভার্সিটি তে। পরীক্ষা চলে অর এসাইন্মেন্ট কি নিয়া জানি ব্যাস্ত ছিলাম মনে নাই, কিন্তু মনে আসে অনেক টেনশন এ ছিল ব্যান্ডের সবাই।। টাইম নাই দেইখা পর পর দুুইটা ক্লাস মিস দিয়া এই লিরিক শেষ করসিলাম।

আইকন্স – স্নাত

তার দিকে তাকিয়ে
আমার চলে যাওয়া
হয় না সে ধরে
আছে আমায় তার মাঝে

চলে যাই তবু থেমে যাই
আমি এ-খানে
পেছনে তোমার ডাক
এসে থামে

আমি দাড়িয়ে থাকি
ঝড়ের মাঝে
সরে দাঁড়াবার ডাক
তুচ্ছ করে

চোখ মেলে দেখ চারিদিকে
তুমি একা নও
তোমার পাশে

আমারতো তাও তুমি আছ
তোমার মাঝে আমি লুকাই
আমার তুমি আছ বলেই
অন্ধকারে হাতটা বাড়াই
চোখের নিচ
কান্না চেপে
বুকের মাঝে শুনি
আমার আছ তুমি
আমার আছ তুমি ।

১৯৪/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৫ । ১১.২৮ পি এম

 

একদিন মনে হবে এসব ই ঠিক ছিল। সব কিছু সৃষ্টিকর্তার বিশাল কোন প্ল্যান এর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ ছিল। যার পুরোটা বোঝা কারো পক্ষে সম্ভব হয় নি কোনদিন। যখন হারিয়ে যাওয়া ধাঁধার অংশ গুলো শূন্য থেকে এসে বসে যাবে ঠিক ঠাক জায়গায়, তখন মনে হবে, এমন ই তো হওয়ার কথা। এটাই তো ঠিক।

একদিন মনে হবে যা হয়েছে ভালর জন্যই। এই কথা গুলো শোনা দরকার ছিল, সেই ধাক্কা খাওয়াটা জরুরী ছিল। আবেগে বলা কথা গুলো , উত্তেজনায় লেখা বাক্যগুলো, ভাল লাগা থেকে কেনা জিনিষ গুলো যখন গায়ে ধুলো মেখে ভেঙচি কাটবে তখন মনে হবে এগুলো তো অপচয় হয়নি। ঠিকানাটা ঠিকই ছিল। শুধু চিঠিটা পৌঁছানোর আগেই প্রেরক আর প্রাপক ঠিকানা পালটে ফেলেছেন। তাই চিঠিটার এখন কোথাউ যাবার নেই।

একদিন মনে হবে ওরা কি অমর হতে চায়? তা না হলে কবি কে কষ্ট দিয়ে গেল কেন? সুখী মানুষ তো কবিতা লেখে না। গলা ছেড়ে গান গায় বড়জোর। সুখে থাকলে কবিতার কিল খাবার কথা শুনেছে কেউ। সুখী কবিতা খুবি ভয়ঙ্কর ব্যাপার। সুখী কবিতা কে ঠিক বিশ্বাস করা যায় না।

একদিন মনে হবে অনেক দূর এলাম। এবার থামা যাক। বেঁচে থাকা ক্লান্তি আনে। কষ্ট পেতে পেতে মন এর ক্ষয় হয়। মনে হবে থাক, দেখলাম তো অনেক। সেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শেষ মেষ একই ভাবে হেরে যাওয়া। একটা জীবনে আর কত হারা যায়। লজ্জা শরম বোধহয় কম আমার। এই বার যারা খেলছে খেলুক। আমি বাড়ি যাই।

১৯৩/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৫ । ৯.২০ পি এম

 

কিছু সুখ হোক প্রকাশ্যে। হাসি ছড়িয়ে যাক এ কান থেকে ও কানে। চোখ গুলো আকৃতি পালটাক। ঝিক করে উঠুক চোখের তারা। নিজের অজান্তেই ভিজে যাক চোখের নিচের পাপড়ি গুলো। গড়িয়ে পরার আগেই হাতের উলটো পিঠ এসে মুছে দিয়ে যাক আর কানে বাজুক, “ধুর বোকা”। তা সে নিজের হাতই হোক অথবা তার।

কিছু সুখ হোক গোপনে। পেটের ভিতর গুড়গুড়ি। কাউকে বলা যাবে না সেই খুশি তে কাঁধ নাচানো। “হা হা” গুলো “খিক খিক” এ বদলে যাক। যখন সবাইকে বলা হবে তখন মানুষ গুলোর মুখ এর মানচিত্রে কত দেশ ভাগ হবে, কত জন এর হৃদয়ে স্টেপ্লার এর পিন পরবে তা ভেবে ভেবে দানবীয় আনন্দ অনুভব করা হোক মনে মনে। ঠোটের কোনায় ঈদের চাঁদ এর মত এক চিলতে হাসি বার বার উঠতে থাকুক।মানুষ কি ভাবলো সেই চিন্তা তখন ছুটি নিয়ে চলে গেছে বনবাসে।

কিছু সুখ হোক দলগত। ভাঙ্গা স্ট্যাম্পটা উড়তে উড়তে পিছনে যাওয়ার সময় দলের সবার কাছা কাছি চলে আসার যেই দৌড়টা শুরু হয় তার প্রতি পদক্ষেপে এই সুখ টা বেড়ে যাক অনেক গুন। এক সাথে অনুভব করা হোক সবাই মিলে আমরা কাজ টা করে ফেলেছি। এক সাথে কিছুক্ষণ জাবরা জাব্রি করা হোক। দুটো হাত শূন্যে চটাস চটাস করে বাড়ি খাক।

কিছু সুখ হোক একা একা। দারুণ কষ্টে রাখা অংক টা যখন মিলতে মিলতে মিলেই গেলো শেষ মেষ, তখন এক হাতে মুঠো করে দেখানো হোক, ইয়েস, সুখ টাকে ধরে ফেলেছি। ভোর রাতে কাজ শেষে ঘুমাতে যাওয়া প্রোগামার এর চোখে মুখে এই সুখ টা হোলির রঙ এর মত মাখা থাকুক। প্রথম বেতন পাওয়া মেয়েটার টাকা গুলো মায়ের হাতে তুলে দেয়ার আগ পর্যন্ত এই সুখ টা খেলতে থাকুক তার ফ্লাড লাইট জালানো মনে।

কিন্তু সুখ গুলা এমন হোক যা অনেক খন স্থায়ী হয়। শীর্ষ অনুভূতির পরের শূন্যতার বোধ এর মত না। দেখলাম, ভাল্লাগ্লো, ভুলে গেলাম এমন না। সুখ হোক এমন যার কথা চিন্তা করেও দুঃখী সময়ে সুখ সুখ ফিল করা যায়। আইকন্স এর জন্য যে লিখেছিলাম, সেই গানটার মত,

যার জন্যে মেঘে নেমেছিলাম আমি
হাতের পাতায় খুঁজে ছিলাম তোমায়
তারপর শুধু স্বপ্ন লুকিয়ে রাখা আমার
অন্ধতার অন্ধকারে জন্ম
নিলে কেন?
আমি কি সুখী হতে পারি?
যা নিয়ে অনেক গভীরে যাই

 

১৯২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৫ । ১২.০০ এ এম

 

ছোটদের পিয়ানো শিক্ষা ১

 

পিয়ানো একটা অসাধারণ ইন্সট্রুমেন্ট। আর শেখাও অনেক সহজ। শেখার রাস্তাটা এত বড় যে হাটতে হাটতে হাটতে অনেক দূর চইলা যাওয়া যায়। আমি যদিও এখনো গলি পার হয়া রাজপথেই আস্তে পারি নাই তবু যা পারি, যট্টুক ই পারি শিখানোর  ট্রাই করি একটা । এইটা যদি একজন মহান পিয়ানো প্লেয়ার এর পিয়ানো নিয়া পড়া প্রথম পাঠ হয়, ক্ষতি কি? না হয় সেই ম্যাচ এর কাঠি টাই হই, যে আলোর মিছিলের প্রথম মোমবাতিটা জালাইসিল।

 

যাই হোক,  পিয়ানোর দিকে তাকালে আমরা কি দেখি? উত্তর টা প্রশ্নের মধ্যেই আছে। পিয়ানোর দিকে তাকাইলে আমরা “কি” দেখি। সাদা কি আর কালো কি। অনেক গুলা কালো আর সাদা লম্বা লম্বা কি থাকে পর পর সাজানো। এই রকম।

 

 

প্রথম বার দেখলে মনে হবে, ও.মো.খো (ওরে মোর খোদা) এত্তগুলা কি ক্যান? এত্তডি ক্যামনে শিখুম? কিন্তু মনে আসে কোন কিছু কঠিন লাগলে কেমনে শিখতে বলসিলাম? কঠিন জিনিশ টারে ভাইঙ্গা ছোট ছোট টুকরা করতে, তারপর টুকরা গুলা একটা একটা কইরা শিখতে। এবার আমরা পিয়ানো কি গুলারে ভাঙ্গি। প্রথমে তাকাই কালো কি গুলার দিকে। খেয়াল কইরা দেখেন কালো কি গুলা দুইটা কালো কি পর পর, তারপর একটু গ্যাপ, তারপর তিনটা কালো কি পর পর, তারপর আবার দুইটা কালো কি এমনে আছে। অর্থাৎ কিনা কালো কি গুলা ২,৩,২,৩ এমনে আছে। তাইলে এই প্যাটার্নটাকে কাজে লাগাইয়া আমরা পিয়ানোর কি গুলারে কয়েকটা টুকরায় ভাগ করতে পারি। ধরলাম একটা টুকরায় ২,৩ এই প্যাটার্ন টা নিলাম। দুইটা কালো কি এর ঠিক আগের সাদা কি টা থেইকা শুরু কইরা ডান পাশের আবার যেখানে দুইটা কালো কি আছে তার বামের সাদা কি টা পর্যন্ত নিয়া একটা সেকশন নিলাম। একদম এই রকম

 

 

 

 

 

একটা বড় পিয়ানোর ছবি বাইর কইরা যদি দেখি, তাইলে দেখবো আমাদের নেওয়া এই সেকশন টাই বার বার রিপিট হইসে বাম থেইকা ডান পর্যন্ত। এই এক একটা সেকশন কে বলে এক এক টা “অক্টেভ”। যেমন এই যে একটা অক্টেভ

 

 

 

 

পিয়ানোর সাইজ এর উপর ডিপেন্ড কইরা এই অক্টেভ এর সংখ্যা কম বেশি হইতে পারে। একেবারে বাচ্চাদের খেলনা কি বোর্ড এর যেমন ২টা বা ৩টা অক্টেভ থাকতে পারে। আমার কি বোর্ড Yamaha PSR E313 বাচ্চাদের কি বোর্ড এর চেয়ে একটু উন্নত মানের। এইটা তে ৫ টা অক্টেভ আছে।

 

 

 

 

একটু যদি গইনা দেখি তাইলে দেখবো প্রত্যেক্টা অক্টেভ এ মোট ১৩ টা কি আছে। ৮ টা সাদা কি আর ৫ তা কালো কি । ওই ৮ টা সাদা কি এর জন্য এইটার নাম “অক্টেভ”।

 

একটা অক্টেভ এর প্রত্যেকটা কি এর আবার নাম আসে । A থেইকা G পর্যন্ত এই নাম গুলা দেওয়া হয়। পৃথিবী এর যাবতীয় সুর এই সাত টা লেটার এর মধ্যেই থাকে। এই গুলা বলা হয় এক একটা নোট। মানে A একটা নোট, B একটা নোট এইরকম। তাইলে কি দাঁড়াইল। এক এক টা কি আসলে একটা একটা নোট।

 

 

বেশি জটিল চিন্তা করার দরকার নাই। আমরা আস্তে আস্তে এই সব গুলা নোট এর নাম ই শিখবো আর পিয়ানো তে এই নোট গুলা কুনটা কই থাকে তাও শিখব। মূলত সাদা কি গুলাকেই A থেইকা G পর্যন্ত নাম দেওয়া হয়া থাকে। কালো কি গুলার নাম তাদের আগের বা পরের সাদা কি এর নাম অনুসারে হয়া থাকে।

 

যে কোণ সাদা কি এর ডান পাশে যদি কোন কাল কি থাকে, তাইলে ওই কালো কি টার নাম হয় সাদা কি এর নাম+শার্প। শার্প বুঝাইতে আমরা # চিনহ টা ব্যাবহার করি। যেমন উপরে আমরা যেই অক্টেভ এর ছবি দিসি তার একদম প্রথম কি টা, অর্থাৎ দুইটা কালো কি এর ঠিক বাম পাশের সাদা কি/নোট টার নাম যদি C হয় তাইলে C এর ডান পাশের কালো কি/নোট টার নাম C Sharp.  আবার C এর পাশের সাদা নোট টার নাম যদি D হয় তাইলে D পাশের কালো নোট টার নাম D sharp.  এই ভাবে আগে বারলে সব গুলা নোট আর তার শার্প এর নাম গুলা হবে এরকমঃ

 

 

 

 

আবার যদি পিছন দিকে চিন্তা করি তাইলে D নোট এর আগের কালো নোট কে বলব D Flat. E নোট এর আগের কালো নোট টাকে বলব E Flat এরকম। ফ্ল্যাট বুঝাইতে আমরা b এই সিম্বল টা ইউজ করি, যেমন Db, Eb, Gb মানে ডি ফ্ল্যাট, ই ফ্ল্যাট, জি ফ্ল্যাট ইত্যাদি ।

 

 

 

 

যেই সাদা নোট এর পরে কালো নোট নাই, তার কোন শার্প ও নাই। যেমন উপরের ছবি থেইকা আমরা বলতে পারি E এবং B এর কোণ শার্প নাই। আবার যেই সাদা নোট এর আগে কালো নোট নাই তার কোন ফ্ল্যাট ও নাই। যেমন C এবং F এর কোন ফ্ল্যাট নাই।

 

আজকে এই পর্যন্তই থাক। এগুলা শিখতে হইলে নিজের পিয়ানো বা কি বোর্ড থাকতে হইব এমন কোন কথা নাই। নেট এ Online Virtual Keyboard দিয়া সার্চ দিলেই অনেক অনলাইন কি বোর্ড পাওয়া যাবে। অগুলা তে জিনিশ গুলা একটু চর্চা করলে শিখাটা আরো শক্ত হইব আরকি।

 

আর না শিখতে ইচ্ছা করলে তো হইলই। ফরগিভ, ফরগেট এন্ড মুভ অন।

 

১৯১/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫ । ১০.৪১ পি এম

ফেসবুকের গ্রুপ গুলা খুবি আজিব জায়গা। দুই দিন খুব ভাল মত চলে। তারপর কারো কারো মনে হয় এই গ্রুপ খ্রাপ। এর চেয়ে আমরা নিজেরা করলে আরো ভালো গ্রুপ চালাইতে পারুম। তারা ওই গ্রুপ থেইকা বাইর হয়া বা না বাইর হয়া আরেকটা গ্রুপ খুলে। তার কয়দিন পর তাদের মধ্যে থেইকা আবার কয়েকজন বাইর হয়া আরেকটা গ্রুপ খুলে । এমনে চলতেই থাকে। এডমিন হওয়ার পাওয়ার মনে হয় খুব লোভনীয়। সবার উপর কন্ট্রোল করতাসি টাইপ ফিলিংস আসে।

তা ওরা করতে থাকুক যা ইচ্ছা। ওদের যদি এইটাই করতে ভাল্লাগে। কিন্তু প্রব্লেম হয় সাধারণ মেম্বার দের। এদের রাজনৈতিক দলের সভার মত মাঝে মাঝে জোর কইরা আইনা ঘার ধইরা ঢুকানো হয় গ্রুপ এ। হটাত নোটিফিকেশন অমুক হ্যাস এডেড ইউ টু তমুক গ্রুপ। আমার কাছে এইটা খুবি বিরক্তিকর লাগে। আজকে সকালে এরম একটা ঘটনা হইসে।

চুপচাপ শান্তিমত অফিস করতাসি এমন সময় একটা নোটিফিকেশন আসলো। নোটিফিকেশন পইরা আরেকটু হইলে চেয়ার নিয়া উলটাইয়া পরতাম। শরীরে হাত দিয়া দেখলাম সব ঠিক আছে কিনা। কিন্তু তবু বিশ্বাস হইতাসিল না। দুয়া কালাম পইরা বুকে ফু দিলাম। তারপর আবার ঠাণ্ডা মাথায় দেখলাম। এবং আবারো আতঙ্কে হাত পা ঠাণ্ডা হয়া গেল। নোটিফিকেশন টা ছিল,

অমুক হ্যাস এডেড ইউ টু দা গ্রুপ “স্বেচ্ছায় কিডনি দান”

বাই, কিডনি দান একটি খুবি মহৎ কাজ। কিন্তু আমি এখনো স্বেচ্ছায় কিডনি দান এর কোন প্ল্যান করি নাই। এরুম জুর কইরা এইসব গ্রুপ এ এড না করলে কি হয় না। ডর লাগে।

আগে তো তাও “আমরা সবাই ইরাক যাবো, লাদেন ভাই এর খাদেম হব” টাইপ ইভেন্ট এর ইনভাইটেশন আসতো। এখন তো ডাইরেক্ট এড মারা শুরু কইরা দিসে।

 

১৯০/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫ । ১২.০২ এ এম

 

কিছু চাই না আর থাক। এই ভাবে চুপ চাপ দিন যাক। আমি বসে বসে শুধু জীবন দেখি। মানুষের গল্প শুনি। তাদের দুঃখে দুখী হয়ে যাচ্ছি ভান করি। যদিও দুইটা দুঃখের কখনো তুলনা হয় না। পৃথিবীর যে কোন দুই টা দুঃখ পুরাপুরি ভাবে দুই রকম। আর একটা বড় দুঃখ দিয়ে আরেকটা ছোট দুঃখ দূর করা যায় টাইপ উপদেশ যারা দ্যান তারা নিজেরাও এটা বোঝেন কিনা সন্ধেহ আছে। “দ্যাখ তোমার চেয়েও দুখী মানুষ আছে, ওই যে ওই বেচারার তো পা ই নাই, আর তুমি জুতা নাই বইলা ফাল পারো” আমার কাছে এই ধরনের কথা বার্তা বুলশিট লাগে। অন্যের দুঃখের সাথে কম্পেয়ার করা মানে নিজের দুঃখ এনাফ হার্ট করতাসে না টাইপ হিপক্রেসি করা। আগে স্বীকার করতে হইব যে হ, আমি অনেক দুঃখে আসি। হ আমার কষ্ট হইতাসে। তারপর গিয়া এই টা দূর করার পদক্ষেপ নিতে হইব।

একটা সময় ছিল আমি পুরাই একা একা সারভাইভ করসি। আমার ভার্সিটির বন্ধুরা, যারা আমি ফার্স্ট হওয়ার পর খুব বন্ধু ছিল, তারা যখন আমারে এক হেডম আর তার গার্লফ্রেন্ড এর কথায় সেকেন্ড ইয়ারে উইঠা এক ঘরে কইরা দিল, আমি মাইনা নিসিলাম। তিনটা বছর একা একা পড়ালেখা করসি, একা একা প্রজেক্ট করসি। আমি মাইনা নিসিলাম। তারপর জিদ করসিলাম যে আই উইল সারভাইভ। লোকজন যখন ক্লাস কইরা বাসায় গিয়া টিভি দেখত নাইলে নেট এর কই থেইকা কপি পেস্ট কইরা এসাইন্মেন্ট দিব সেই চিন্তা করত, আমি লোকাল বাস এ ঝুইলা অফিস যাইতাম পার্ট টাইম চাকরি করতে। রাইত দশটায় বাসায় ফিরা পরের দিন এর লাইগা পড়তে বইতাম।

এই সব কথা মনে হয় আগেও কোথায় জানি বলসি বলসি লগে। কিন্তু এই সব কথা মনে করা আমাকে শক্তি দ্যায় অনেক। আমারে মনে করায় দ্যায় যে আই এম বেটার অফ এলোন। কই এতদিন তো কোন অসুবিধা হয় নাই। এখন আইসা হঠাত অনেক বন্ধু হইতাসে আর আর আমি লোভী হইয়া যাইতাসি। আমার নির্ভরশীলতা বাইরা যাইতাসে। এইটা কমাইতে হইব।

মানুষ সামাজিক জীব। হ ভাই। সে সমাজ ছারা বাচতে পারে না। ট্রু কথা ভাই। কিন্তু আমি ত হালার মানুষ ই না। অমানুষ। আমি পারি। সবার জীবন দৌড়াক। আমার অত ব্যাস্ততা নাই। আমার মনের ভিতর অনেক ছুটি। জীবনানন্দ দাশ পড়ি বইসা বইসা। কি প্রচন্ড একা ছিল কবি টা। কত O this Sadness, This Glorious Madness এর মতন একাকিত্ত ছিল তার।

এই পৃথিবীতে আমি অবসর নিয়ে শুধু আসিয়াছি — আমি হৃষ্ট কবি
আমি এক; — ধুয়েছি আমার দেহ অন্ধকারে একা একা সমুদ্রের জলে;
ভালোবাসিয়াছি আমি রাঙা রোদ, ক্ষান্ত কার্তিকের মাঠে — ঘাসের আঁচলে
ফড়িঙের মতো আমি বেড়ায়েছি — দেখেছি কিশোরী এস হলুদ করবী
ছিঁড়ে নেয় — বুকে তার লাল পেড়ে ভিজে শাড়ি করুন শঙ্খের মতো ছবি
ফুটাতেছে — ভোরের আকাশখানা রাজহাস ভরে গেছে নব কোলাহলে
নব নব সূচনার: নদীর গোলাপী ঢেউ কথা বলে — তবু কথা বলে,
তবু জানি তার কথা কুয়াশায় ফুরায় না — কেউ যেন শুনিতেছে সবি।

কোন্‌ রাঙা শাটিনের মেঘে বসে — অথবা শোনে না কেউ, শূণ্য কুয়াশায়
মুছে যায় সব তার; একদিন বর্ণচ্ছটা মুছে যাবো আমিও এমন;
তবু আজ সবুজ ঘাসের পরে বসে থাকি; ভালোবাসি; প্রেমের আশায়
পায়ের ধ্বনির দিকে কান পেতে থাকি চুপে; কাঁটাবহরের ফল করি আহরণ
কারে যেন এই গুলো দেবো আমি; মৃদু ঘাসে একা — একা বসে থাকা যায়
এই সব সাধ নিয়ে; যখন আসিবে ঘুম তারপর, ঘুমাব তখন।

১৮৯/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৫ । ১২.০০ এ এম

 

আমাদের ধৈর্য খুব কম। এইটা আমি সব জায়গায় দেখি। ঘুরায় ফিরায় অনেক কিছুর কারন আমার এইটাই মনে হয়। আমাদের তাড়াহুড়া শুধু বেশি না। অত্যাধিক বেশি। আমরা সব কিছু এখন ই চাই। রাইট নাউ। পরের টা পরে।

একটা গাড়ি ব্যাক করতাসে, পিছে দিয়া এক মিলিমিটার জায়গা থাকা পর্যন্ত রিকশা সাইকেল মানুষ যাইতেই থাকবে। কারন ওইটুক যায়গা দিয়া না গেলে আর জীবনেও যাওয়া যাবে না। ওইটা দুনিয়ার শেষ উইন্ডো।

একটা সি এন জি বা একটা গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হয়া গেসে রাস্তার মধ্যে। ড্রাইভার ঘামতে ঘামতে ইগিনিশন দিতাসে বার বার। ক্যার ক্যার করতাসে কিন্তু স্টার্ট নিতাসে না। আর যায় কই। পিছনে থাকা গাড়ি টা হর্ন এর বন্যা বহায় দিবে। যত জোরে পারা যায়, যত বার পারা যায় হর্ন দিতেই থাকবে। আমি ভাবার ট্রাই করি যেখানে দেখতাসে যে স্টার্ট বন্ধ হয়া গেসে, সেইখানে হর্ন দেয়ার দরকার কি। পজিটিভলি ভাবার ট্রাই করি। মনে করি, হর্ন দিয়া আসলে পিছনের গাড়ি হেল্প করতে চাইতাসে। হর্ন এর আওয়াজে হয়তো ইগ্নিশন প্লাগ এর রাগ উইঠা যাবে। আর জলে উঠবে আপন শক্তি তে।

বেচারা সি এন জি বা গাড়ির ড্রাইভার হয়তো নাইমা আইসা ঠেইলা গাড়ি টারে সাইডে নেওয়ার ট্রাই করবে। কিন্তু তাতেও হর্ন বাজানো থামবে না। পাশে দিয়া যাওয়ার সময় বইলা যাবে, ওই শালা, নষ্ট গাড়ি নিয়া রাস্তায় নামস ক্যান। খালি দৌড় দিয়া আয়া পরস ঢাকা শহর ! কইততে যে আহে এডি।

শুধু রাস্তায় না রাস্তার বাইরেও আমাদের ধৈর্য কম। আমরা লাইন এ দাড়ায়া বাস এর জন্য অপেক্ষা করি কিন্তু বাস এ উঠার সময় আর লাইন থাকে না। শিক্ষা ব্যাবস্থার এই অবস্থার জন্য আমরা সরকার কে কত গালি দেই। কিন্তু আমরা কি করি? বাবা মার ধৈর্য হয় না ছোট ছেলেমেয়েরে নিয়া পড়াইতে বসার। তাই কোচিং এ ঠেইলা দেই। মাস্টার রাখি। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরের জন্য গাইড বই, প্রাইভেট টিউশন। জিনিশ টা অনেক টা ম্যানুয়াল পইড়া বুঝার জন্য সাথে একটা ছোট ম্যানুয়াল দিয়া দেওয়ার মত লাগে আমার কাছে।

কোক পানি কিনাই ফার্স্ট এ গলার প্লাস্টিক টা ছিরা ফালায় দেই। কই ফালাইলাম দেখার দরকার ই নাই। আর খাওয়ার পর বটল টা রাস্তায় ফালাইতে তো আমাদের সেই মজা লাগে। ডাস্টবিন এর জন্য ট্রেশ সাথে নিয়া ঘুরুম? এত টাইম আসে কার।

আর আমরা ক্রমাগত শর্ট টার্ম এন্টারটেইনমেন্ট এ অভ্যস্ত হয়া যাচ্ছি। ফেসবুক এর নিউজ ফিড, হয় তো একটা মজার ভিডিও, একটা অনেক ইন্সপাইরেশনাল কথা বার্তা লেখা ইমেজ, ফিল্মি গিয়ান নামক পেজ এর কিছু সংগৃহীত ছবি শেয়ার দেওয়া, গান শোনা , সিনেমা দেখা এগুলা আমাদের কাছে এখন বেশি প্রিয়। আমাদের ধৈর্য কম তাই আমাদের বই পড়া কমে যাচ্ছে। সব কিছু তে আমরা লিঙ্ক চাই। একজন যদিও বলেও যে অমুক বই টা পড়সি, খুব ভাল্লাগসে, একজন থাকবেই যে কমেন্ট করবে নিচে, ভাই লিঙ্ক টা দ্যান।

আমরা কবিতা পড়ি না। কবিতা বুঝতে টাইম লাগে। এত টাইম কই। ফুড কম খাই, ফাস্ট ফুড বেশি খাই। যে কোন রকমের সারকাস্টিক ফাইযলামি আমাদের বড়ই অপছন্দ। আরে এত কিছু বোঝার টাইম আছে নাকি। যা বলবি সরাসরি বল। শুনব, বুঝলে হাসবো, না বুঝলে এইটা ব্যাড জোক। তুই ফাউল।

প্রেম ভালবাসা তেও আমাদের কোন ধৈর্য নাই। একটু মেয়েটারে বুঝি আগে। তার সাথে নিজের কেমিস্ট্রি টা দেখি। ছেলেটারে আগে দেখি শো অফ নাকি আসলেই ভিতরে কিছু আছে। আমরা দ্রুত যেমন ভাবতে চাই তা ভাইবা নেই। আর ধরা খাই। সবচেয়ে কমন সার্কেল অফ রিলেশনশিপ এখন প্রোফাইল ছবি দেখলাম, ভাল লাগলো আর প্রেম করার জন্য পাগল হয়া গেলাম। ইউ ভেরি কিউট লুকিং টাইপ ভুল ভাল ইংরাজি কপচাইয়া ইনবক্স ভইরা ফালানো তেই আমাদের রোমান্টিকতা শুরু হইল। তারপর হোয়াটস এপ এর নাম্বার চাওয়ার বাহানায় ফোন নাম্বার পাওয়া। ফোন দিয়া ত্যাক্ত করা। অপরপক্ষ তার বিপুল অভিজ্ঞতায় বুইঝা যায় যে ঘটনা আসলে কোন দিকে যাইতাসে। তারপর ব্লক মারা, দুখখের স্ট্যাটাস, আবার আরেকজন এর প্রোফাইল ছবির প্রেম এ পড়া। এই ভাবে কোনদিন ভালবাসা হয়?

আল্লাহ আমাদের ধৈর্য বাড়ানোর প্র্যাকটিস করার তৌফিক দিন। একদিন এ এই জিনিশ পালটাইবো না।

 

 

 

১৮৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৫ । ১০.৫৭ পি এম

 

আজকে ঢাকা চইলা আসছি। বেশিক্ষণ লাগে নাই আস্তে। ময়মনসিং এর রাস্তা অনেক ভাল করসে এখন। বড় করসে। মাঝখানে ডিভাইডার , দুই পাশে বাউন্ডারি পিলার দিসে। বৃষ্টির মধ্যে সাই সাঁই কইরা আসতে আসতে ভাবতাসিলাম, আহা আমরা কত অল্প পাইলেই খুশি হই। এইরকম থাকাটাই স্বাভাবিক ছিল, অথচ এই রকম দেইখা মনে হইতাসে কত উন্নয়ন হইসে। এই টা মনে হয় ইংরেজ সূত্রে প্রাপ্ত এই উপমহাদেশ এর রাজনৈতিক স্ট্রাটেজি ই। আমাদের এমন কইরা রাখা হইব যাতে আমাদের মনে হইব আমরা গরীব। আমাদের সমস্যার শেষ নাই। আমাদের অনেক অভাব। তারপর আমাদের যা দিব মনে হইব কত্ত কিছু পাইসি আর যে দিব তারে মনে হইব সেই তো আসল গড।

একটা নতুন জিনিশ খেয়াল করলাম রাস্তায় আস্তে আস্তে। বাজার বা লোকালয় এলাকা গুলা দিয়া যখন হাইওয়ে পাস করসে তখন রাস্তার পিচ চেঞ্জ হয়া গেসে। এস্ফল্ট এর বদলে কংক্রিট ঢালাই দিয়া খাবরা খাবরা কইরা রাখা হইসে। যার উপর দিয়ে গাড়ি জুরে যাইতে বাধা পায়, ঘটর ঘটর আওয়াজ হয়। তাই গতি কমাইতেই হয়। ভালা লাগসে বুদ্ধি ডা।

ময়মনসিং এর এক দিন এর ট্যুর টা ভালাই লাগসে। মিটিং ওয়াজ প্রিটি গুড। আমি যেহেতু আমার বস এর হয়া গেসি তাই ডর ডর লাগতাসিল ইট্টটু। কি না কি মেস আপ করি। পরে ঢাকা আয়া বকা খামু। কিন্তু কিছু স্ক্রু আপ করি নাই। যা যা জিগাইসে ভালা মত উত্তর দিতে পারসি, প্রেজেন্টেশন দিতে পারসি ঠিক ঠাক মত। রিজিয়ন এর হেড আমাদের যাওয়া উপলক্ষে ব্যাপক খানা দানার ব্যবস্থা করসিল। খাইয়া দায়া এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটির ভিতর গাড়ি দিয়া একটা ঘুরান দিয়া রওনা দিয়া দিসি ঢাকার দিকে।

মাঝখানে তন্ময় নামে একজন ফেসবুক বন্ধু আসছিল আমার সাথে দেখা করতে। উনি চাও খাওয়াইসে। মজা লাগসে ব্যাপার টা। আমি কত তুচ্ছাতিতুচ্ছ একটা বিন্দু, আমারে সাথে দেখা করতে চইলা আসছে দ্যাখা করতে। পরে মনরে একটা ধমক দিয়া চুপ করাইলাম যে ফেসবুক এর জন্ম শুধু নিজেরে বিক্রি করার জন্য তৈরি হয় নাই। ফেসবুক এর মুল উদ্দেশ্যই ছিল কিন্তু একটা মানুষের সাথে আরেকটা মানুষ এর কানেক্ট হওয়ার একটা ক্ষেত্র তৈরি করা। এই খানে আমরা ক্রমাগত নিজেরে আসল দুনিয়া থেইকা ডিস্কানেক্ট কইরা খুব কানেক্টেড ফিল নিয়া ঘুইরা বেরাইতাসি। ভুইলা যাইতাসি , মানুষ যত দেখি, মানুষ তত হই।

গতকাল সন্ধ্যায়ও দুইজন আসছিল দেখা করতে। আমি ময়মন্সিং এর হোটেলে পৌঁছাইয়া খালি রুম এ ব্যাগ টা রাইখাই বাইর হয়া গেসিলাম হাটতে। হোটেলের নিচেই একটা বাজার। নাম “মাইচ্ছা বাজার” যদি মাছ এর চেয়ে চাউলের দুকান বেশি লাগসে। এইটার নাম পালটাইয়া “চাউল্লা বাজার” রাখা উচিত।

আমি নাইমা বাজারের গলিতে ঢুইকা এই গলি ওই গলি করতে করতে ইচ্ছা কইরা হারায় গেলাম। একটা অচেনা শহরে হারায় যাইতে যে কি মজা। ভাল লাগাইতে টুরিস্ট স্পট এই যাইতে হইব এমন কোন কথা নাই। আশে পাশেই কত গল্প দেখলাম। আমি যখন হাট্টতাসিলাম তখন সন্ধ্যা। অনেক দোকানে ধুপ দেওয়া হইসে। ধুপ এর গন্ধে পুরা গলি কেমন মাদকতা ময় হয়া আসে। ধুপ এর গন্ধ টা এত ভাল্লাগে। কোথায় জানি উলু দিতেসিল মহিলারা। আমি আওয়াজ লক্ষ্য কইরা হাঁটলাম অনেকক্ষণ , মন্দির পাইলাম না।

একটা ছোট চায়ের দোকান দেখতে অনেক ভাল্লাগ্লো। নাম সুনীল টি স্টল। একজন ই মাত্র চালায়  দোকান টা। তার আবার খুব রাশ আওয়ার যাইতাসে। আমি গিয়া দাঁড়াইতে উনি বলল, দাদা একটু দারাইনযে, আইতাসি। বইলা উনিই চা নিয়া কই জানি দিয়া আস্তে গেল। ফিরা আইসা আমারে চা বানায় দিল। অনেক মজার চা। আর পরিবেশনা টাও অন্যরকম। ছোট ছোট কাচ এর গ্লাস। আমাকে একটা গ্লাস এর উপর আরেকটা গ্লাস বসায় ওইটা তে চা ঢাইলা দিল খাইতে । আমি ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্স দেইখা অবাক হয়া গেলাম লোকটার। উপরের গ্লাস টা আসলে ফর দা গ্রিপ আর ফর বেটার প্রটেকশন ফ্রম দা হট টি। নাইসসস।

এমন সময় ছেলে দুইটা ফোন দিল যে ওরা হোটেলের নিচে আসছে। ওদের বললাম একটু দাঁড়াইতে। তারপর এরে ওরে জিজ্ঞেস কইরা হোটেল এর দিকে হাটা ধরলাম।

ফেরার সময় ঠিক আমার সামনে একটা ফলের দোকান থেইকা একটা আপেল মাটিতে পইরা গেল আর ভীর এর পা এর ধাক্কা খাইয়া সামনের দিকে গড়ায়া চইলা গেল। এই খানে নিউটন চাচা থাকলে শিউর উচ্চাকারশন শক্তি (মধ্যাকর্শন তো আবিষ্কার করা শেষ) নিয়া এক খানা “হাই উঠানি ঘুম পারানি” থেউরি আবিষ্কার কইরা ফালাইত। । কিন্তু আমাগো ফল ওয়ালা ইজ নোট ইন্টারেস্টেড ইন সাচ স্টুপিড স্টাফ।

ফল ওয়ালা সাথে সাথে “আপেল গেলগা আপেল গেলগা” বইলা চিল্লাইতে চিল্লাইতে আপেল এর পিছে দৌড় দিল।  আপেল কি আর থামে। পায়ের ধাক্কা খাইয়া সামনে কই কই গেল গা।আপেল ওলা রে দেইখা মনে হইতাসিল একটা সন্যের আপেল হারায়া লাইসে।

হোটেলের নিচে আইসা সেই দুইজন এর সাথে দেখা হইল। কিন্তু সেই গল্প আরেকদিন বলব নে। ঘুম আস্তাসে বেশি। পরে কি লিখতে কি লিখুম।