২৪০/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ২৫, ২০১৫

আলোকচিত্রায়ন বস্তুর চিত্রায়ন নাকি বস্তুর উপর আলোকচিত্রীর চিন্তার পরিবেশন?

আমি মনে করি আলোকচিত্রায়ন মূলত বস্তুর উপর আলোকচিত্রীর চিন্তার পরিবেশন। এর দ্বারা বস্তুর চিত্রায়ন যদিওবা ঘটে কিন্তু তা পুরোপুরিই আলোকচিত্রীর নিজস্ব দেখার ভাষা অনুযায়ী।

আমার এইরুপ দৃষ্টিভঙ্গির কারন ব্যাখ্যা করার আগে এই আলোচনার মূল উপাদান গুলো আমার কাছে কি অর্থ বহন করে তা ব্যাখ্যা করা জরুরি বলে মনে করি। আলোকচিত্র একটি শিল্প এবং যে কোন শিল্প কোন সার্বজনিন বিষয় না। শিল্পমাত্রই শিল্পী কোন বস্তুকে, কোন বিষয়কে বা কোন অনুভুতিকে কিভাবে দেখেন তার একটি প্রতিফলন। আলোকচিত্রও এর ব্যাতিক্রম নয়।

কোন কিছুকে দেখা দর্শকের নিজস্ব বিষয়। তেমনি দেখার বিষয় বস্তু কি হবে তা নির্ভর করে দর্শকের শিক্ষা, অবস্থান আর মননের উপর। এই দেখাকে যখন ক্যামেরা সাহায্যে একটি স্থায়ী রুপ দানের চেষ্টা করা হয় তখন তা হয় আলোকচিত্র। যেহেতু আলোকচিত্র সৃষ্টির মূলে রয়েছে আলোকচিত্রির দৃষ্টিভঙ্গি সেহেতু আলোকচিত্রটিও বস্তুটি আলোকচিত্রির মনে যে ব্যঞ্জনার সৃষ্টি করে তার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।

একটি উদাহরনের অবতারনা ব্যাপারটিকে আরো ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। ১৯৮৯ সালের ৫ই জুন, বেইজিং এর তিয়ানানমেন স্কয়ারে যখন প্রতিবাদী আন্দোলন চলছিল ঠিক তখন আন্দোলনকারিদের দমনের জন্য আনা ট্যাংক গুলোর সামনে এসে দাড়ায় এক নাম না জানা বিপ্লবি। অস্ত্র নয় বরং নিজেকে দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন তিনি ট্যাংক গুলোর সামনে। ঘটনাটি যেখানে ঘটে তার ঠিক সামনেই বেইজিং হোটেলে তখন বিশ্বের নাম করা সব সংস্থার ফটো সাংবাদিকরা অবস্থান করছিলেন। ফলে মুহূর্তের মধ্যেই আলোকচিত্রিরা ক্যামেরা বন্দি করেন এই অসাধারন ঘটনাটি।

জেফ ওয়াইডনার (এপি)

স্টুয়ার্ট ফ্র্যাংকলিন (ম্যাগনাম)

চার্লি কোল (নিউজউইক)

উপরের ছবিগুলোর দিকে তাকালে বুঝতে পারা যায় আলোকচিত্রিগন একই জায়গায় থাকলেও ঘটনাটির ক্ষেত্রে তাদের দেখার দৃষ্টি ছিল ভিন্ন ভিন্ন। প্রথমটিতে জেফ ওয়াইডনার তার ছবিতে স্ট্রিট লাইটের একটা অংশ রেখে শহর, বিপ্লবি এবং রাজপথের মধ্যে একটি সম্পর্ক দেখাতে চেয়েছেন। দ্বিতীয় ছবিতে স্টুয়ার্ট ফ্র্যাংকলিন আরো ওয়াইড এংগেলে গিয়ে ছবিতে যোগ করেছেন আরো কিছু উপাদান যেমন একটি পোড়া বাস, বাইরে থেকে আরো একটি ট্যাংকের আগ্রাসন, ফাকা রাজপথ। চার্লি কোল, যিনি পরবর্তিতে এই ছবির জন্য ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো পুরস্কার পান, তার ছবি তে সরাসরি চলে গিয়েছেন ঘটনার কেন্দ্র বিন্দুতে। তার কাছে একজন নির্ভিক বিপ্লবির প্রতিবাদটাই ছিল মূখ্য। ঘটনার একদম কেন্দ্রে দর্শককে নিয়ে গিয়ে তিনি তুলে এনেছেন সেই নামহীন বিপ্লবির সাহস আর যুদ্ধবিরোধি চেতনাকে।

সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি, আলোকচিত্রি পরিবর্তনের সাথে সাথে আলোকচিত্রও বদলে যায়। ফলে আলোকচিত্র শুধু মাত্র কোন বস্তুর চিত্রায়ন এর মধ্যে আর সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং তা হয়ে ওঠে বস্তুর উপর আলোকচিত্রির অভিজ্ঞতা আর অনুভুতির প্রতিফলন। আলোকচিত্র তখন শুধু তখন শুধুই একটি আলোকচিত্র নয়, তা তখন আলোকচিত্রির মনের ভাব প্রকাশের একটি মাধ্যম, আলোকচিত্রির ভাষা।

২৩৯/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ২৫, ২০১৫

প্যাশনেট মানুষের গল্প – ১

একটা মজা দেখাই? আচ্ছা তার আগে বলি, আজকে ঠিক এই রকম একটা চাঁদ উঠসে না? কত মানুষের এই চাঁদ দেইখাই বুকের ভেতর মাথার ভেতর নইড়া চইড়া গেসে। কত দীর্ঘশ্বাস হাওয়ায় হাওয়ায় মিশে গেছে কেউ জানতে পারার আগেই। কেউ কত মুগ্ধ হয়া হা কইরা উপরের দিকে তাকায় চাঁদ দেখতে দেখতে উষ্ঠা খায়া পইরা গেসে (এখনো পা ব্যাথা করতাসে :()। তবু যাদের প্রতি মুগ্ধতা যায় নাই। এ এক দুরারগ্য মুগ্ধতা।

এমন ক্রনিক মুগ্ধতায় পাইসিলো ব্রিটেনের জন রাসেল (John Russel) সাহেব এরও। ১৭৬৪ থেইকা ১৭৯৪ এই তিরিশ বছর তিনি দুইটা সেকেন্ড হ্যান্ড টেলিস্কোপ দিয়া চাঁদ পর্যবেক্ষন করেন এবং যেহেতু তখনো ফটোগ্রাফির আবিষ্কার হয় নাই, সেহেতু তিনি যা দেখসেন তা ড্রয়িং এর মাধ্যমে লিপিবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ন্যান। লেখার প্রথমে একটা মজা দেখাবো বলসিলাম না? মজাটা হইল, জন রাসেল ছিলেন একজন প্যাস্টেল আর্টিস্ট, আর উপরের ছবিটা তার প্যাস্টেল এ আঁকা The Face of The Moon সিরিজের চাঁদ এর একটা পেইন্টিং।

পরবর্তিতে স্যাটেলাইট ইমেজ এবং এপলো মুন মিশনের ছবি মিলায়ে দেখা গেছে যে জন রাসেল এর আইকা যাওয়া ছবি অনেক একিউরেট। চাঁদের প্রতিটা পাহাড়, প্রতিটা খাদ, আলো এবং ছায়া তিনি দেখসেন ৩০ বছর ধইরা। আর নিখুত ভাবে প্যাস্টেল দিয়া তা আইকা রাইখা গেসেন। কথিত আছে যে, কিছু কিছু যায়গায় তিনি প্যাস্টেল এ ঠিক পারফেক্ট শেড টা আনতে পারতেসিলেন না। তাই তিনি নিজেই অনেক প্যাস্টেল বানায় ন্যান।

তিনি Selenographia নামে গ্লোব এর মত দেখতে চাঁদ এর একটা রেপ্লিকা ও তৈরি করেন। যেখানে চাঁদের সব খাদ, আলো, আধারি দেখানো আছে।

২৩৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ২৩, ২০১৫

প্রিয় পেইন্টিং পরিচিতি – ২

আজ সারাদিন আমি এই পেইন্টিং টার সৌন্দর্যে ডুবে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনে হলো, এত সুন্দর একটা দিন, আমার সুন্দর কিছুতে ডুবে যেতে হবে এক্ষুনি। অ তো কাছে ছিল না , তাই ডুব দিলাম চুমু তে। চুমু মানে The Kiss. এই পেইন্টিং টার নাম । আর্টিস্ট এর নাম Gustav Klimt। আর এই সেই পেইন্টিং :

এটার প্রচন্ড হাই রেজুলিউশন ভার্শন দেখা যাবে নিচের লিঙ্ক এ। আমি সকালের চা খেতে খেতে জুম ইন করে প্রতিটা বর্গ ইঞ্চি খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেছি আর এক সময় মনে হচ্ছিল ভাল লাগা বাড়তে বাড়তে কেমন ঘোর এর জগতে চলে যাচ্ছি।

পেইন্টিং টার ব্যবচ্ছ্যেদ শুরু করি এর ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে।

ছবির ঠিক মাঝখানে যে যুগলটিকে দেখা যাচ্ছে তার চারপাশে যে সোনালি-কালো অংশ তা তৈরি করতে Klimt সত্যিকার এর স্বর্ণের পাতা বা Gold Leaf ব্যবহার করেছেন। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার শিল্পী Klimt । ১৯০৮ থেকে ১৯০৯ সাল এর মধ্যে এই ছবিটি আঁকা হয়। সে সময় পুরো ভিয়েনা তে বইছিল পরিবর্তনের হাওয়া। এই স্বর্ণ দিয়ে কি সেই স্বর্ণ যুগ কে সিম্বোলাইজ করেছেন শিল্পী? করতেই পারেন, কারন Gustav Klimt ছিলেন Symbolist পেইন্টার। এই ছবি আঁকার আগে তিনি ভেনিস আর রাভেনা তে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানকার চার্চ গুলো তে করা বাইজেন্টাইন আমলের পেইন্টিং আর মোজাইকে স্বর্ণের ব্যবহার তাকে অনেক প্রভাবিত করে নিজের ছবিতে স্বর্ণ ব্যবহার করতে। এই ছবি তে ব্যাকগ্রাউন্ড আর মুল সাব্জেক্ট এর মধ্যে পার্থক্য খুব কম। থ্রি ডি ব্যাপার টা অনুপস্থিত। এটা ইন্টেনশনালি ই করা যাতে সাব্জেক্ট কে তার পরিবেশ থেকে আলাদা কিছু মনে না করা হয়। ফ্ল্যাট এবং পারস্পেক্টিভ ছাড়া ব্যাকগ্রাউন্ড বরং স্বর্ণের সৌন্দর্য কে আরো ভিজিবল করে তোলে দর্শক এর কাছে ।

Klimt ছবিটি একেছেন বর্গাকার ফ্রেম এ। যেখানে সাব্জেক্ট এর মাথা উপরের দিকে ফ্রেম এর প্রায় কাছাকাছি। এটাকে গতানুগুতিক ওয়েস্টার্ন স্টাইল (যেখানে পোরট্রেইট এর অনেক হেড স্পেস থাকে) থেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে দূরে সরে জাপানিজ প্রিন্ট স্টাইল এর প্রভাব আয়ত্ত করার নিদর্শন বলা যায়।

ছবিতে লাইন এর বেলায় কিউবিজম এর মত একদম স্কেল দিয়ে টানা ডিসিপ্লিন্ড লাইন এর বদলে ফ্রি ফ্লোয়িং আকানো বাকানো লাইন এর ব্যবহার দেখা যায়। এটা তৎকালীন Art Nouveau মুভমেন্ট এর একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য। Art Nouveau মুভমেন্ট হলো যেখানে শিল্পিরা একাডেমিক ডিসিপ্লিন্ড আঁকা আকি থেকে বেরিয়ে এসে প্রকৃতির মত ফ্রি ফ্লোয়িং লাইন্স আর প্যাটার্ন তাদের সৃষ্টিকর্মের ভিতর ঢুকিয়ে দিচ্ছিলেন। যা পরবর্তি তে Modernism মুভমেন্ট এর জন্ম দ্যায়।

ছবির মুল সাব্জেক্ট নিয়ে লিখতে আমার এক্টু হাত কাঁপছে। কারন আমি জানি না ঠিক ঠাক মত লিখতে পারবো কিনা। একটা যুগল আটকা পরে গেছে এক চুম্বনে। যেখানে কোন অশ্লিলতা নেই শুধু সীমাহীন মায়া আছে। ছেলেটার হাত মুল্যবান কিছু ধরার মত ধরে আছে মেয়েটার মাথা আর চিবুক। আর মেয়েটা চরম নির্ভরতায় এক হাতে জরিয়ে আছে ছেলেটার মাথার চারপাশে আর একটা হাতে আলতো করে স্পর্শ করে আছে ছেলেটার আরেকটা হাত। তারা দুজনেই এক টা ফুলে ফুলে ছাওয়া প্রান্তরের উপর। অনেক্ষন তাকিয়ে থাকলে যেটাকে পাহাড়ের ক্লিফ মনে হয় একটা।

ছেলেটাকে Klimt সাজিয়েছেন রেক্টাঙ্গেল দিয়ে আর মেয়েটাকে সারকেলস দিয়ে। যেখানে রেকাংগেল এর শার্প কর্নার গুলো রিপ্রেজেন্ট করে পৌরুষ এর আর সারকেল গুলো নারীসুলভ নমনীয়তার। এটি একটি ক্লাসিক Symbolism এর উদাহরন।

ছেলেটার মাথায় যেখানে পাতার মুকুট সেখানে মেয়েটার অঙ্গে অঙ্গে জরানো ফুলের গহনা। যে সোনালি গয়না পোশাক ছাড়িয়ে চলে গেছে পায়ের পাতার বাইরে। Klimt সেটাকে সোনালু লতার আদলে জড়িয়ে দিয়েছেন পায়ে , নুপুরের মত।

The Kiss এর প্রভাব যে কত টাইমলেস তা ছবিটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই অনুভব করা যায়। সমাজের , প্রকৃতির সাথে মিশে থেকেও শুধু দু’জনের জন্য দু’জনের মধ্যে মগ্নতার সেই প্রাচীন অনুভূতি টুকু আটকা পরে গেছে এই ছবি তে।

আধুনিক কিছু আর্টিস্ট এর The Kiss কে দেওয়া হোমেজ এর ছবি দিয়ে আজকের লেখা শেষ করি। নিচের ছবিটা একটা Google Doodle এর । যা Gustav Klimt এর ১৫০ তম জন্মদিন, ১৪ জুলাই ২০১২ তে Google তাদের হোম্পেজ এ দিয়েছিল।

আর ২০১৩ এর এই ছবিটা সিরিয়ায় জন্ম নেয়া আর্টিস্ট Tammam Azzam এর। এটি সিরিয়ার একটি যুদ্ধ বিদ্ধস্ত বাড়ির উপর ডিজিটালি সুপার ইম্পোজ করা The Kiss এর ছবি, যার নাম শিল্পি দিয়েছেন Freedom Graffiti.

২৩৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ২৩, ২০১৫

প্রিয় পেইন্টিং পরিচিতি – ১

একটু যদি ভাবি, আমরা থাকি পৃথিবী তে, কিন্তু আমাদের অনেক গুলা জগতে একসেস আছে। আমাদের কেউ কেউ সে সব জগতের এস্ট্রোনাট, কেউ কেউ সেই সব জগতের এলিয়েন। এই জগত হইল বিভিন্ন রকমের আর্ট ফর্ম এর জগত। যেমন, কবিতা একটা জগত, উপন্যাস-গল্প একটা জগত, সংগীত একটা জগত এমন। পেইন্টিং ও এরকম ই একটা বিশাল জগত। কত যে রহস্য আর রস লুকায় আছে এর আনাচে কানাচে তার ইয়ত্তা নাই।

আ্মাদের জ্ঞ্যান আহোরোনের যে প্রসেস, তাতে পেইন্টিং এর ব্যাপার স্যাপার গুলা আমাদের ঠিক মত বুঝানো হয় না। আমরা বড় হই পেইন্টিং মানে একটি গ্রামের দৃশ্য এই ধারনা নিয়া। তাই কবিতার মত পেইন্টিং ও একটা দুরবধ্য কিছু আমাদের কাছে। অথচ এই জগত টা সকল জগত এর চেয়ে বেশি রঙ্গিন। রঙ দিয়ে তৈরি যে, রঙ্গিন না হয়ে উপায় আছে?

এই জিনিষ টা যখন আমি রিয়ালাইজ করলাম তখন আমার মনে হইল যদি এখন থেইকা প্রত্যেকদিন এক ঘন্টা আমি পেইন্টিং নিয়া স্টাডি করি তাইলে সপ্তাহ শেষে ৭ ঘন্টা আর মাস শেষে ৩০ ঘন্টা পাওয়া যাবে পেইন্টিং নিয়া স্টাডি করার। ৩০ ঘন্টা তো অনেক সময়।

আজকে আমি যেই পেইন্টিং টা স্টাডি করসি তার নাম , “A Wheatfield with Cypresses”। এইটা Vincent van Gogh এর আঁকা একটা ছবি। এইটা আঁকা হইসিল ১৮৮৯ সালে। এই ছবি টা ভ্যান গগ মোট ৪ বার আকসেন। প্রথম বার একটা ওয়েল পেইন্টিং, ২য় বার রিড পেন ভার্সন, ৩য় এবং ৪র্থ বার আবারো ওয়েল পেইন্টিং।

পরবর্তি আলোচনায় যাওয়ার আগে পেইন্টিং টা দেখি । এই খানে ৪ টাই পর পর দিলাম।

মে ১৮৮৯ থেকে মে ১৮৯০ সন পর্যন্ত ভিন্সেন্ট ভ্যান গগ, স্বেচ্ছায় এক মানসিক রোগিদের আশ্রয় কেন্দ্র ছিলেন। এই সময়ের জুলাই মাসে তিনি উপরের #১ ভার্সন আকেন। আশ্রয় কেন্দ্রে উনার রুম থেইকা এই ভিউ টা দেখা যাইতো।

মানসিক রোগের আশ্রয় কেন্দ্র থেইকা আসার পর উনি প্রথমে একটা রিড পেন ভার্সন করেন (উপরের #২)। তারপর স্টুডিও তে তেল রং এ আরো দুইটি ভার্সন (#৩ এবং #৪) আকেন। এই দুইটার মধ্যে একটার সাইজ #১ এর সাইজের সমান ছিল। আর পরের টা আরো একটা ছোট ভার্সন।

এই সময় ভ্যান গগ এর সাইপ্রাস গাছ প্রীতি বেশ লক্ষ্যনীয়। কারন এই ছবি আঁকার কিছু দিন আগেই তিনি The Starry Night আঁকা শেষ করেন যার মধ্যে বিশাল এক সাইপ্রাস গাছ দেখতে পাওয়া যায়।


ছবিতে মেঘ আকার জন্য ভ্যান গগ Zinc White ব্যবহার করেছেন। আকাশের জন্য Cobalt Blue । হুইট ফিল্ড এর অংশটার জন্য Chrome Yellow এর শেড, ঝোপঝাড় এবং সাইপ্রাস এর জন্য Viridian এবং Emerald Green, ফোরগ্রাউন্ড এর পপি গুলা আঁকার জন্য Vermilion এবং Synthetic Ultramarine ব্যাবহার করেছেন।


ছবির ধরন বিচার করলে #১ ভার্শন টাকে En Plain Air বলা যার আর #৩ আর #৪ নম্বর কে স্টুডিও ভার্শন। En Plain Air হলো যখন একটা ছবি একেবারে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে সাব্জেক্ট কে সামনে রেখে আঁকা হয় সেটা।

এই এক ছবির ৪ টা ভার্সন কোনটা কোথায় আছে তা বলে লেখাটা শেষ করি।

১। Metropolitan Museum of Art, New York City

২। Van Gogh Museum in Amsterdam

৩। The National Gallery, London

৪। Private collection

২৩৬/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ২১, ২০১৫

এইটা কোন মেধা তালিকা না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের দেয়া সাজেশন, বই ব্লগ, গ্রুপ, গুড রিড এর নিউজফিড ইত্যাদি তে পাওয়া সাজেশন জমতে জমতে এই তালিকা হইসে। অল্প কিছু পড়সি এই তালিকার। অনেক কিছু পড়া বাকি। সেটাই আরো কয়দিন বাইচা থাকার প্রেরণা।

বাংলা সাহিত্যের ১০০ লেখক ও তাদের কিছু অবশ্য পাঠ্য উপন্যাস এর তালিকা।

১. প্যারিচাঁদ মিত্র- আলালের ঘরের দুলাল

২. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়- বিষবৃক্ষ, দুর্গেশনন্দিনী, কপালকুণ্ডলা

৩. মীর মশাররফ হোসেন- বিষাদসিন্ধু

৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর- গোরা, চোখের বালি, যোগাযোগ, শেষের কবিতা

৫. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়- চরিত্রহীন, দেবদাস, শ্রীকান্ত, শেষপ্রশ্ন

৬. বেগম রোকেয়া- মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন

৭. বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়- আরণ্যক, অপুর সংসার, পথের পাঁচালী, চাঁদের পাহাড়

৮. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়- পদ্মানদীর মাঝি, পুতুল নাচের ইতিকথা, দিবারাত্রির কাব্য, চিহ্ন, অহিংসা

৯. তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়- হাঁসুলি বাঁকের উপকথা, নাগিনী কন্যার কাহিনী, কবি, আরোগ্য নিকেতন

১০. জীবনানন্দ দাশ- কারুবাসনা, মাল্যবান

১১. কাজী নজরুল ইসলাম- মৃত্যুক্ষুধা

১২. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী : বেনের মেয়ে

১৩.কমলকুমার মজুমদার- অন্তর্জলী যাত্রা, সুহাসিনীর পমেটম, নিম অন্নপূর্ণা

১৪. অদ্বৈত মল্লবর্মণ- তিতাস একটি নদীর নাম

১৫. বুদ্ধদেব বসু- রাত ভর বৃষ্টি, তিথিডোর

১৬. সমরেশ বসু- প্রজাপতি, গঙ্গা, মোক্তার দাদুর কেতু বধ

১৭. কাজী ইমদাদুল হক- আবদুল্লাহ

১৮. সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ- লালসালু, কাঁদো নদী কাঁদো, চাঁদের অমাবশ্যা

১৯. শওকত ওসমান- ক্রীতদাসের হাসি, জলাঙ্গী

২০. আশাপূর্ণা দেবী- সুবর্ণলতা, প্রথম প্রতিশ্রুতি

২১. মহাশ্বেতা দেবী- হাজার চুরাশির মা

২২. নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়- উপনিবেশ

২৩. সতীনাথ ভাদুড়ী- ঢোঁড়াই চরিত মানস

২৪.প্রমথনাথ বিশী- কেরী সাহেবের মুন্সী

২৫. বিমল মিত্র- কড়ি দিয়ে কেনা, সাহেব বিবি গোলাম

২৬. যাযাবার-দৃষ্টিপাত

২৭. ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়- লুলু, কংকাবতী, ডমরু-চরিত

২৮. মৈত্রেয়ী দেবী- ন হন্যতে

২৯. অমিয়ভূষণ মজুমদার- মধু সাধুখাঁ, মহিষকুড়ার উপকথা

৩০. লীলা মজুমদার- মেঘের সাড়ি ধরতে নারি, নোটর দল

৩১. আবু ইসহাক- সূর্যদীঘল বাড়ি

৩২. রশীদ করীম-মায়ের কাছে যাচ্ছি

৩৩. শংকর- বিত্তবাসনা, চৌরঙ্গী, নিবেদিতা রিসার্চ ল্যাবরেটরি

৩৪. শিবরাম চক্রবর্তী- ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা

৩৫. ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়- শাপ মোচন

৩৬. বনফুল- মৃগয়া

৩৭. সুবোধ ঘোষ- শতকিয়া

৩৮. জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী- মীরার দুপুর

৩৯. শামসুদ্দীন আবুল কালাম- কাশবনের কন্যা

৪০. শহীদুল্লা কায়সার- সংশপ্তক

৪১. জহির রায়হান- শেষ বিকালের মেয়ে, বরফ গলা নদী, আরেক ফাল্গুন, হাজার বছর ধরে

৪২. গজেন্দ্রকুমার মিত্র- পৌষ ফাগুনের পালা, কলকাতার কাছেই

৪৩. সৈয়দ শামসুল হক- খেলারাম খেলে যা, নিষিদ্ধ লোবান

৪৪. আল মাহমুদ- উপমহাদেশ, পুরুষ সুন্দর

৪৫. আনোয়ার পাশা- রাইফেল রোটি আওরাত

৪৬. দেবেশ রায়- তিস্তাপুরাণ, তিস্তাপারের বৃত্তান্ত

৪৭. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়- প্রথম আলো, সেই সময়, পূর্ব-পশ্চিম

৪৮. শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়- কুবেরের বিষয় আশয়, দারাশিকো

৪৯. সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়- কুকুর সম্পর্কে দু একটি কথা যা আমি জানি

৫০. সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ- অলীক মানুষ

৫১. শওকত আলী- প্রদোষে প্রাকৃতজন

৫২. হাসান আজিজুল হক- আগুনপাখি

৫৩. আলাউদ্দীন আল আজাদ- তেইশ নম্বর তৈলচিত্র

৫৪. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস- খোয়াবনামা, চিলেকোঠার সেপাই

৫৫. প্রেমাঙ্কুর আতর্থী- মহাস্থবির জাতক

৫৬. শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়- দূরবীন, পারাপার, মানবজমিন

৫৭. মাহমুদুল হক- জীবন আমার বোন, কালোবরফ, মাটির জাহাজ, খেলাঘর, অনুর পাঠশালা

৫৮. আহমদ ছফা- একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন, অলাতচক্র, পুষ্প-বৃক্ষ-বিহঙ্গপুরাণ, ওঙ্কার, অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী

৫৯. মিহির সেনগুপ্ত- বিষাদবৃক্ষ

৬০. হুমায়ুন আজাদ- পাক সার জমিন সাদ বাদ, ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল, সব কিছু ভেঙে পড়ে, শুভব্রত ও তার সম্পর্কিত সুসমাচার,

রাজনীতিবিদগণ, ১০,০০০, এবং আরো একটি ধর্ষণ

৬১. হুমায়ূন আহমেদ- নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, জোৎস্না ও জননীর গল্প

৬২. আবুল বাশার- ফুলবউ

৬৩. হাসনাত আবদুল হাই- নভেরা

৬৪. রিজিয়া রহমান- রক্তের অক্ষর, বং থেকে বাংলা

৬৫. সমরেশ মজুমদার- অগ্নিরথ, গর্ভধারিণী, সাতকাহন, উত্তরাধিকার

৬৬. সেলিনা হোসেন- কাঠকয়লার ছবি, গায়ত্রী সন্ধ্যা, লারা, নীল ময়ূরের যৌবন, হাঙর নদী গ্রেনেড

৬৭. অভিজিৎ সেন- রহুচণ্ডালের হাড়

৬৮. সেলিম আল দীন- চাকা

৬৯. ইমদাদুল হক মিলন- নুরজাহান

৭০. শেখ আব্দুল হাকিম- অপরিণত পাপ

৭১. বুদ্ধদেব গুহ- হলুদ বসন্ত

৭২. বিমল কর : অসময়, এক অভিনেতার মৃত্যু

৭৩. মুহম্মদ জাফর ইকবাল- আমি তপু, আমার বন্ধু রাশেদ, মহব্বত আলীর একদিন

৭৪. নবারুণ ভট্টাচার্য- হার্বাট

৭৫. তসলিমা নাসরিন- নিমন্ত্রণ

৭৬. চানক্য সেন- পুত্র পিতাকে

৭৭. মলয় রায়চৌধুরী- নামগন্ধ

৭৮. বাসুদেব- খেলাঘর

৭৯. সুবিমল মিশ্র- ওয়ানপাইস ফাদার মাদার অথবা শতাব্দির শেষ ইউলিসিস

৮০. রবিশংকর বল- দোজখনামা

৮১. আলোক সরকার- জ্বালানী কাঠ জ্বলো

৮২. স্বপ্নময় চক্রবর্তী- চতুষ্পাঠী

৮৩. অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়- নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে, অলৌকিক জলযান

৮৪. তিলোত্তমা মজুমদার- রাজপাঠ, বসুধার জন্য

৮৫. আনিসুল হক- মা

৮৬. শহীদুল জহির- জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা, সে রাতে পূণিমা ছিল

৮৭. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও ব্রাত্য রাইসু- যোগাযোগের গভীর সমস্যা নিয়ে কয়েকজন একা একা

৮৮. সুচিত্রা ভট্টাচার্য- কাছের মানুষ

৮৯. সেলিম মোরশেদ- সাপ লুডু খেলা

৯০. নাসরীন জাহান- উড়ুক্কু

৯১. জাকির তালুকদার- মুসলমানমঙ্গল

৯২. শাহীন আখতার- তালাশ

৯৩. সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ- কালকেতু ও ফুল্লরা

৯৪. এবাদুর রহমান- দাস ক্যাপিটাল, গুলমোহর রিপাবলিক

৯৫. পাপড়ি রহমান- বয়ন

৯৬. শ্যামল ভট্টাচার্য- প্রজাপতির দুর্গ

৯৭. শরমিনী আব্বাসী- আমার মেয়েকে বলি

৯৮. শাহরিয়ার কবির- একাত্তরের যীশু

৯৯. মামুন হুসাইন- নিক্রপলিস

১০০. দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়- বিবাহবার্ষিকী

২৩৫/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ২১, ২০১৫

আমার চাওয়া গুলো খুব বড় নয়। দু বেলা দু মুঠো পেলে তারপর এক মুঠোয় আরেক জনের মুঠো চাই বড়জোড়। তার বেশি কিছু নয়। সেই মুঠো টাকেও জোর করি না। আমার জন্য কেউ একজন এটাই তো অনেক কিছু। মুঠো খুলে তাকে শাসন করব এত স্পর্ধা করিনি কোনদিন। যদি দিন শেষে বাড়ি ফেরার সময় কোন তাড়া না থাকে তাহলে বুঝে নেই বাড়ী ফেরার সময় এখনো হয় নি। বাড়ী ফিরতে কারন লাগে যে। চার টা দেয়াল অপেক্ষা করছে এটা তেমন প্রেরনাদায়ক কিছু তো নয়, যে যার জন্য বাড়ি ফিরতেই হবে।

আমার গলার জোর খুব জোরে নয়। আমি কথার মার প্যাচে মানুষ কে ধরাশয়ী করি না। কথা বলার সময় কথাই বলি, কথা দিয়ে কুস্তি করি না। নিজের কথা বলতে আমার অনেক বাধে। আত্মতৃপ্তি পাবার যে কটা উপায় আমি জানি, নিজের ঢোল নিজে বাজানো তার মধ্যে একটা নয়। সব জায়গায় কথাবাজি করে নিজের জায়গা করে নিতে হবে এই মতবাদের অনুসারী হতে পারি নি কোনদিন। আমি বিজ্ঞাপন চাই না, আমি চাই মানুষ আবিষ্কার করুক আমি কি। মাথা তুলে তো বাশ ঝাড় ও জানান দ্যায় সে আছে। আমি না হয় মাটির নিচের বট এর চারাই হলাম।

আমি প্রতিশোধ নিতে চাই না। শুধু কারো খারাপ ব্যাবহার এর ঋণ টুকু শোধ করে যেতে চাই পৃথিবী তেই। হিংসা আমার হয় কিন্ত প্রতিহিংসার পর্যায়ে যায় নি সেটা কখনো। যা কিছু খারাপ , যে যত না-মানুষ, আমি বিশ্বাস করি তার জীবন তত বেশি জটিলতায় ভরপুর। তাদের জীবন যাপনের উদ্দ্যেশ্য আমি অনুবাদ করতে পারি নি কখনোই। একটা মানুষের জীবনে আর কত সাফল্য দরকার হয়? যা পাবার জন্য নিজের সারল্যকে বিষর্জন দিতে হয় এই সব বিষ অর্জন এর বিনিময়ে? আমি জানি, আমি দেখি, তাদের বিষময় মন থেকে বিস্ময় হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। যত টা বেদনা তারা দিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীকে, তাদের জন্য আমার সমবেদনা জমছে তত টাই।

আমি ও রকম হবো না। আমি জীবনে টিকে যেতে চাই না, বেঁচে যেতে চাই। প্রাচুর্য চাই না। প্রাণ চাই। কাউকে কষ্ট দিয়ে উপরে ওঠার চেয়ে আমি বরং নিচেই থাকি। সেই পর্যন্ত কাজ করতে থাকি যখন আর নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না। যখন মানুষ চিনবে “এই ছেলে টা মরে গেছে” বলে না, “এই ছেলেটা বেঁচে ছিল” বলে।

২৩৪/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ২০, ২০১৫

ভালবাসা মানে সে যখন সবসময় আমার জন্য কিছু করতে চায়।

ভালবাসা মানে তার কখনোই আমার কাছে খালি হাতে না আসা।

ভালবাসা মানে একটু একটু জোর করা।

ভালবাসা মানে চল ঘাসের উপর খালি পায়ে হাটি।

ভালবাসা মানে তার কাছে গেলেই ছুটির দিনের আমেজ।

ভালবাসা মানে সবকিছু একটু বেশি মিষ্টি।

ভালবাসা মানে সব কিছুর জন্য একজন আর একজন এর জন্য সব।

ভালবাসা মানে আজ যাত্রা হবে শুভ।

ভালবাসা মানে হঠাৎ এক সাথে ডায়েটিং শুরু।

ভালবাসা মানে স্পর্শে তোমার মন দোলনা।

ভালবাসা মানে উড়ে যাওয়া একসাথে।

ভালবাসা মানে কখনো দূরত্ব হয়ে যায় প্রভাবক।

ভালবাসা মানে তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়া অনেক গুন।

ভালবাসা মানে সমস্যা তার চিন্তা আমার।

ভালবাসা মানে তার শখ গুলো আমার গুলোর চেয়ে আগে পূরন হওয়া দরকার।

ভালবাসা মানে সেই সারা জীবন এর সঞ্চয় মুহূর্ত টা।

ভালবাসা মানে পৃথিবীটা বাঁচাবো এক সাথে।

ভালবাসা মানে ব্যাথার আদরে অবুঝ আঙ্গুল রাখলাম।

ভালবাসা মানে জীবন ঝড়ে আমাদের নোঙ্গর।

ভালবাসা মানে তুমি আমি এক দল।

ভালবাসা মানে জীবনের ছুড়ে দেয়া তীর পাথর থেকে আড়াল।

ভালবাসা মানে ফোন এলে মনের কোণে হাসি।

ভালবাসা মানে ঘুম ঘুম হ্যালো।

ভালবাসা মানে তার বুঝতে না পারা বিষয়ের গল্পও কত ভাল লাগে।

ভালবাসা মানে তার জন্য উপহার কেনার আনন্দ।

ভালবাসা মানে অল্প হেটেই অনেক দূর।

ভালবাসা মানে আমি আছি তো।

ভালবাসা মানে নিজেরা নিজেদের জন্য ঠিকঠাক , বাকি সব জাহান্নামে যাক।

ভালবাসা মানে এখনো চিঠি লেখার অভ্যাস।

ভালবাসা মানে দুজনের অমিল গুলোও যখন থাকা দরকার ছিল মনে হয়।

(টু বি কন্টিনিউড … )

২৩৩/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ১৮, ২০১৫

ঘুমে পইড়া যাইতে যাইতে আন্দা গুন্ডা বিরাট একটা নোট লিখসিলাম। লেখা শেষ ও হইসিল। তারপর কপি করতে গিয়া কি জানি আন্দাজি টিপ্পর্ছে। আর সব গেছে মুইছা। থাক ব্যাপার না, লাইফ ইজ এ শিট, অ্যান্ড লাইফ হ্যাপেন্স।

চোখ ভাইংগা এত ঘুম আসতাসে যে যুদ্ধ করতে হইতাসে নিজের সাথে জাইগা থাকার জন্য। আজকে সব বন্ধ থাক। শুধু ঘুমানোটা জেগে থাক ঘুমায় ঘুমায়।

২৩২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ১৭, ২০১৫

বাস এ বইসা বইসা নোট লিখি। আজকে সারাদিন চান্দের গাড়ির ছাদ এ বইসা থাকতে থাকতে ছাপা ব্যাথা হয়া গ্যাসে। হারাদিন খালি চলার উপ্রেই আসিলাম। এখনো চলার উপ্রেই। ঢাকার দিকে আস্তাসি।

দিন শুরু হইসে ভোর ৪.৪০ এ। তখন সুবেহ সাদিক। সবাইকে ৫ টায় কটেজ এর সামনে রিপোর্ট করতে বলসিল। ৫ টায় দেখা গেল চাইর পাজ্জন আসছে। তখন পুর্ব আকাশে লাল লাল ছোপ লাগানো শুরু করসিল আল্লাহ। আমরা আবছা আবছা আলোয় হাটতে হাটতে একটা মন্দির এর পাশে যেখানে পাহাড় শেষ সেখানে আইসা দাড়াইলাম। অনেক নিচে ঘুম কাতুরে মেঘ গুলা তখনো লেগেছিল পাহাড়ের গায়ে গায়ে।

ততখনে লোকজন এর ঘুম ভাংসে। আইসা বিশাল হম্বি তম্বি শুরু করল। আমরা নাকি ওদের বাদ্দিয়া সব দেইখা ফালাইতাসি। তাই ওদের নিয়া চান্দের গাড়ি দিয়া আরেকটু সামনে যাওয়া হইল। একটা যায়গা পর্যন্ত গাড়ি যায় সেই পর্যন্ত গিয়া তারপর ১ ঘন্টার একটা ট্রেকিং। গন্তব্য কংলাক পাড়া। আমি বুঝসিলাম যে এখন রউনা দিলে সূর্য উঠা দেখতে পারবো না। তাই ওদের আগায় যাইতে দিয়া আমি দাঁড়ায় থাকলাম সুর্য দেখার জন্য। পাহাড়ের সূর্য ধুপধাপ উঠে যায়। একটু পর সুন্দর কমলা একটা কিউট মত সুর্য উকি দিল। আর আমি হাটা দিলাম কংলাক পাড়ার দিকে।

কংলাক পাড়া পর্যন্ত যাই নাই। পাড়ার ঠিক আগে একটা বড় স্টিপ ছিল। দিনের শুরু তেই সব এনার্জি শেষ করতে চাই নাই। তাই উঠি নাই।

ফিরা আসার পর ধুপ ধাপ ব্রেকফাস্ট, তারপর চান্দের গাড়ির ছাদে উইঠা দৌড়। সাজেকে এ যাওয়া আসার সময় আসলে ভিতরে বইসা কোন মজা নাই। ঠাডায়া রইদ ছিল। কিন্তু বাতাস ছিল মজার। তাই গায়ে লাগাই নাই।

খাগড়াছড়ি আইসা আমরা লাঞ্চ করসি “সিস্টেম রেস্টুরেন্ট” এ। বাশ খাইসি জীবনের প্রথম। বাশ মজা আসে। তারপর গেসি রিসাং ঝরনা। তারপর গেসি আলুটিলা গুহা। আলুটিলা জোস। আই লাভ আলুটিলা। আমার চশ্মা আলুটিলা গুহার ভিতরে একজন এর হাতে লাইগা পানিতে পইড়া ডুইবা গেসে। তারপর দেখি চারদিকে দুনিয়া ঘুলা ঘুলা। হাতায় হাতায় পার হইসি। কিন্তু তবু অনেক ভাল্লাগসে। ফটোগ্রাফিকালি অনেক কিছু করার আছে গুহাটা নিয়া।

সব জায়গার একটা কমন জিনিষ ছিল। স্পিড এর বোতল, প্রান লাচ্ছি এর বোতল, নাটি বিস্কুট এর প্যাকেট প্রায় ই দেখসি লোকজন ফালায়া রাখসে ইচ্ছা মত। সাজেক এ একটা দল গেসে, তারা লাঞ্চ করসে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক এর প্লেট এ। তারপর সব প্লেট গুলা পাহাড়ের গায়ে ফালায়া রাইখা গেসে।

ওদের দল এর একজন কে আমি বলসি, ভাই, প্লেট গুলা পরিষ্কার করলেন না? উনি আমাকে বলসে, আরে বিজিবি আর মিলিটারি আছে না। ওদের আর কাজ কি। ওরা করবে। একটা মিলিটারি ডাইকা আইনা ওরে দেখাইতে পারলে ভালইত মিলিটারির কাজ কি।

আমি স্থানীয় কিছু চাকমা লোকজন এর সাথে কথা বইলা জায়গাটার ব্যাপারে জানার ট্রাই করসি। সাজেক একটা নদীর নাম। নদীর এই পারে বাংলাদেশ। ওই পারে লুসাই পাহাড় যেইটা থেইকা কর্নফুলি নদীর জন্ম। কর্ণফুলী থেইকা মোট চারটা শাখা নদী হইসে, যার মধ্যে একটা সাজেক। এই নদীর নামেই সাজেক ইউনিয়ন। সাজেক আসতে খাগড়াছড়ি হয়া আসতে হইলেও এইটা আসলে রাঙামাটি জেলায় পরসে।

এখন ঘুমায় যাবো। বাস কালকে ভোর এ ঢাকা পৌছাবে। তারপর অফিসে যাইতে হবে।

২৩১/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ১৭, ২০১৫

গতকাল রাতে লেখা নোট। নেটওয়ার্ক ছিল না তাই আজকে পোস্ট করতাসি।

একটা ছোট রুমে গাদা গাদি করে শোয়ার ব্যাবস্থা করা হইসে ৮ জন এর। আমি অভ্যাস মত একেবারের কর্নার এর জায়গাটা দখল করসি। সুবিধা হইল আমার মাথার কাছে দুইটা সকেট। দুইটা তে মাল্টিপ্লাগ দিয়া মোট আট্টা ডিভাইস লাগানো হইসে। এর মধ্যে আমার ক্যামেরার ব্যাটারি আরর ফোন ও আছে। আমাদের ডিনার তৈরি হইতেসে এখন। তাই জেনারেটর চালু আছে। বন্ধ হইলেই সবার আত্মার চার্জ ছুইটা যাইবো।

আজকে দিন টা ভালই গেসে। এস ওলয়েজ, দা জার্নি ওয়াস মোর এক্সাইটিং দ্যান দা ডেস্টিনেশন। কারন এইখানে আইসা বুঝলাম সাজেক সাক্স। আই রিপিট সাজেক সাক্স। এত দূর এর পথ পারি দিয়া আইসা শুধু দেখা যাবে কিছু কৃত্তিমতা। পাহাড় এর ভিউ ইজ ওকে। কিন্তু ফুটপাথ অলা পাকা রাস্তায় দাড়ায়া বড় বড় ঘাস এর উপর দিয়া হেইজি পাহাড় এর লেয়ার দেখা জীবনে প্রথম পাহাড় দেখা মানুষের কাছে এক্সাইটিং হইতে পারে। আমার কাছে না।

তাই সাজেক নিয়া কোন গল্প করার আজকে এট লিস্ট আমি কোন ইন্টারেস্ট পাইতাসি না। কালকে ভোর এ উইঠা সবাই মেঘ আর সান রাইজ দেখতে যাওয়ার কথা। সেইটা হয়ত ভাল লাগ্লেও লাগতে পারে। কিন্তু আমি কেউকারাডং এর চুড়ায় রাত্রে থাক্সি, নাগোরকোট এও দুই রাত থাক্সি। এই কৃত্তিম পিকনিক স্পট এর অকৃত্তিম মেঘ আমার কত টা ভাল লাগবে বুঝতাসি না।

এর চেয়ে আসার পথে মজা হইসে বেশি। আমি আসছি একটা ৩৪ জন এর দল এর সাথে যার মধ্যে আমি বাদে তিন জন আমার কলিগ আর তাদের ফেমিলি আরো ২ জন। আর বাকি ২৯ জন রেই চিনি না। অপিরিচিয় সার্কেল এ আমি প্রথমেই কম্ফোরটেবল হইতে পারি না। সময় লাগে। এই সময়টা আমি চুপ চাপ মুচকি মুচকি হাইসা জবাব দেওয়া ছাড়া আর কিছু পারিও না।

আসার সময় আমাদের জন্য দুইটা চান্দের গাড়ি ভাড়া করা হইসে। আমি যে গাড়ি তে দেখলাম চাউলের বস্তা উঠসে সেই গাড়ীর ছাদে গিয়া বইলাম। বেশ হেলান দিয়া বসা যাবে। আর চাউলের বস্থা আমার পিঠ এর সাথে বেশ আরগোনমিকালি কমপেটিবল। একটু পরে সাথের লোকজন আইল। তারাও বেশ এক্সাইটেড উইঠা পাও ঝুলায়া বয়া পরল। ড্রাইভার আইসা সব গুলারে পা উপ্রে উঠাইতে বলল। সাম্নের কিছু দেখাই যাইতাসিল না ইনাদের পা এর জন্য।

গাড়ী ছাড়ার পর শুরু হইল আসল মজা। সব চেয়ে কোনায় যে বসছিল সে শহরের ভিতরে থাক্তেই চিল্লা চিল্লা লাগায় দিল। “আমার ডর করতাছে। আমি পইড়া যামু গা। আমি নিচে যামু”। আবার গাড়ী থামায়া তারে নিচে পাঠায়া আরেকজন রে উপরে আনা হইল।

ছাদে আমার পাশে যিনি বসছিলেন তিনি আরো ইন্টারেস্টিং। উনি আমার সাথে নন্সটপ আলাপ জমানর ট্রাই কইরা গেলেন কিন্তু লাভ হইল না। রাস্তায় এমন কোন জিনিশ নাই যা নিয়া উনি কথা বলে নাই। সব রোড সাইন উনি জোড়ে জোড়ে পইড়া শুনাইসে। হুমমম সামনে স্কুল, হুমমম বামে মোড়, হুমমম স্বাগতম দিঘিনালা উপজলা হুমম।

রাস্তার পাশে ছাগল শুইয়া ছিল। উনি সবাইরে ডাইকা বলসে এই গুলা থেইকা একটা নিয়া যাওয়া যায় কিনা, তাইলে বার বি কিউ করা যাইতো। রাস্তায় যখন আমরা ব্রেক নিতে থামসিলাম, তখন উনি সাথের এক লোকের পিচ্চি রে কোলে নিয়া হাটাহাটি করতেসিল আর গরু দেখায়া বলতাসিল “দেখ বাবু হরিণ, হরিণ”.

উনার সব চেয়ে ডেঞ্জেরাস কাজ ছিল, আর্মি কে কোয়েশ্চান করা। সব চান্দের গাড়ী কেই চেকপোস্ট এ থামতে হয়। আমাদের গাড়ীও থামসিল। উনি এক্সাইটমেন্ট এর চোটে গেসে আর্মির সাথে আলাপ করতে। আমারেও বলসিল, “চলেন ভাই, সেনাবাহিনীর সাথে আলাফ কইরা আসি” আমি সবিনিয় এ প্রত্বাখ্যান করসি।

উনি গিয়া হা কইরা আগে মিলিটারি দেক্সে। তারপর জিজ্ঞেশ করসে এইখানে মিলিটারি ক্যান দরকার। মিলিটারি সৈনিক টা রে বলসে ” আমরা বিভিন্ন অবইধ কাজ প্রতিরোধ করি”. সেই লোক জিজ্ঞেস করসে, ও বুঝসি তাইলে আপ্নারা এইকানে কি অবইদ কাজ করেন? আর্মির লোক যেই লুক দিল।

উনি একটু পর পর আমারে বলসে পিছের ছিনারি যাতে পুরাটা কিলিয়ার আসে অম্নে উনার কয়েকটা স্নেপ তুইলা দিতে। আর জিজ্ঞেস করসে আমার ক্যামেরা ডিজিটাল কিনা