২৬১/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ১৫, ২০১৫, ১১.২০ পি এম

ফোক ফেস্ট এ নর্থ এন্ড এর দুকানের সামনে দাঁড়ায় দাড়ায়া ফ্রি ফ্রি কফির স্মেল নিতাসি এমন সময় একটা তেজি ধরনের ছেলে আইসা বলল, ইথার ভাই, আপনি আমারে চিনবেন না, কিন্তু আমি আপনার লেখা পড়ি। আমি এই ধরনের পরিচয় এ অভ্যস্ত না, কোনদিন হইতেও পারুম না, তাই আমি এক্কেরে বিগলিত হইয়া গেলাম। হে হে , থেংকিউ, হে হে, কষ্ট কইরা পড়সেন, হে হে এই টাইপ এর বেকুব মারকা কাজ কাম ছাড়া কিছুই করতে পারি নাই। ছেলেটা আমারে নাম বলসিল কিন্তু আমি এজ ইউজুয়াল ভুইলা গেসি।

ছেলেটা আমারে বললো আমার কিলো ফ্লাইট নিয়া লেখা গুলা তার সবচেয়ে বেশি ভাল্লাগসে আর কি জানি একটা সমাবেশ এ আমার কিলো ফ্লাইট নিয়া লেখা গুলা পইড়াও শুনাইসে সবাইরে। ও আমারে অনুরোধ করসে কিলো ফ্লাইট নিয়া লেখা গুলা যাতে কন্টিনিউ করি। এই লেখা তার অনুরোধেই।

যতদুর মনে পরে আমি শেষ লিখসিলাম কিলো ফ্লাইট এর বিমান গুলার মিশন গুলা নিয়া। শুরু করসিলাম এলুয়েট-III হেলিকপ্টার এর মিশন গুলা লেখা আর ৩রা ডিসেম্বর নারায়ঙ্গঞ্জের গোদনাইলে তেলের ডিপো কিভাবে উড়ায়া দিসিল তা নিয়া লিখসিলাম। আরো কিছু মিশনের তথ্য পড়সি । সেগুলা এইখানে লিখা রাখি ভুইলা যাওয়ার আগেই।

ছোট্ট কইরা বইলা রাখি, “কিলো ফ্লাইট” হইল একাত্তর এর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনির প্রথম এবং একমাত্র ইউনিট। তিনটা বিমান নিয়া এই ইউনিট গঠিত হইসিল। একটা Alouette-III হেলিকপ্টার, একটা DHC-3 Otter বিমান আর একটা DC-3 বিমান নিয়া গঠিত হইসি কিলো ফ্লাইট। এই হেলিকপ্টার টার ৩রা ডিসেম্বর এর মিশন নিয়া আমি এর আগে একটা নোট এ লিখসি। আজকে তার আরো কিছু মিশনের তথ্য লিখব। কোন টাই আমার নিজের বানানো লেখা না। সব সংগৃহীত তথ্য।

৫ই ডিসেম্বর, ১৯৭১

কুলাউড়া এর শমসেরনগরে দুইটি মিশন হয় । এই দুই টা মিশন করেন স্কোয়াড্রন লীডার সুলতান মাহমুদ এবং ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম। মিশন দুইটার বিস্তারিত জানতে পারি নাই।

৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১

১। ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম এবং ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সিংলা একটি মিশন করেন মৌলভীবাজার

২। ফেঞ্ছুগঞ্জ আর শমসেরনগর এ আর্মড রেকি করা হয় এই হেলিকপ্টার দিয়ে। গ্রুপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিংহ এই মিশনে ছিলেন

৩। স্কো লি সুলতান মাহমুদ এবং ক্যাপ্টেন সাহাব মৌলভিবাজার এ পাকিস্তান আর্মির ৩১৩ ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার আক্রমন করেন। তারা সাতবার ঘুরে ঘুরে প্রতিবার দুটি করে ১৪টি রকেট ফায়ার করেন। শত্রুর প্রচন্ড গুলিবর্ষনের মধ্যেও তারা রকেট ফায়ারিং অব্যাহত রাখেন। হেলিকপ্টার এর মেশিনগান থেকেও ফায়ার করা হয়।

৪। স্কো লি সুলতান মাহমুদ এবং ক্যাপ্টেন সাহাব শমসেরনগর আক্রমন করেন রকেটের সাহায্য। তারা ২০০ রাউন্ড মেশিনগান এর গুলিও বর্ষণ করেন

৭ই ডিসেম্বর, ১৯৭১

১। ক্যাপ্টেন সাহাব এবং ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সিংলা গ্রুপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিং সকাল ৮.৪০ মিনিটে হেলিকপ্টার নিয়ে সিলেটে আসেন। উদ্দ্যেশ্য সিলেট শত্রু মুক্ত কিনা জানা। ক্যাপ্টেন সাহাব ছিলেন পাকিস্তান ইন্টারনেশনাল এয়ারলাইন্স এর রেগুলার পাইলট। যাত্রিবাহী ফকার এফ টুএন্টি সেভেন নিয়ে তিনি নিয়মিত সিলেট এ আসতেন। তাই তার জন্য সিলেটে ল্যান্ড করাটা একদম মুখস্তি ছিল। কিন্তু এই রুটিন ল্যান্ডিং ও পালটে যায় যুদ্ধের সময়। তারা যখন ফাইনাল এপ্রোচ এ তখনি পাকিস্তান মিলিটারি প্রচন্ড ফায়ারিং শুরু করে তাদের উপর। তারা সাথে সাথে পালটা রকেট ফায়ার করতে থাকেন অনবরত আর সাথে সাথে উপরে উঠতে থাকেন। হেলিকপ্টারে ১৫ টি গুলি লাগে কিন্তু তারা নিরাপদেই ফেরত আসেন।

২। ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম আর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সিংলা কুলাউরা, সিলেট এলাকায় ৭ টি মিশন করেন।

৮ই ডিসেম্বর, ১৯৭১

ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম আর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সিংলা কুলাউরা, সিলেট এলাকায় ৫ টি মিশন করেন।

৯ই ডিসেম্বর, ১৯৭১

মিশনে যাওয়ার পথে ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম আর ক্যাপ্টেন সাহাব ফ্লাইং এর সময় হঠাত ফুয়েল ওয়ারনিং লাইট জ্বলে ওঠে। তারা তারাতারি কুমিল্লা বিমানবন্দর এর রানওয়েতে নামতে বাধ্য হোন। তাদের সৌভাগ্য যে তখন কুমিল্লা বিমান বন্দর ছিল ভারতীয় সেনা বাহিনীর দখলে। তাদের নামার খবর রাজাকার রা পাকিস্তানিদের জানালে তারা দূর থেকে শেলিং করতে থাকে। তারা বাধ্য হয়ে স্থানীয় লোকজন এর সহায়তায় কেরোসিন সংগ্রহ করে তা দিয়েই হেলিকপ্টার কে সচল করেন এবং কুমিল্লা থেকে ফ্লাই করে আগরতলায় চলে যান।

আর দুই দিন এর মিশনের কথা লেখা বাকি আছে। ১০ই ডিসেম্বর আর ১১ই ডিসেম্বর। আজকে এই পর্যন্তই থাক।

২৬০/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ১৪, ২০১৫, ১১.৪৮ পি এম

মন্দির চুপচাপ

মসজিদ ও নিশ্চুপ

গির্জায়, প্যাগোডায়

নিরব ধোয়া ধুপ

কেউ তো কোথাউ নেই

সবার সবাইকে মারা শেষ

ধর্ম যে কার জিতেছিল

জানে মৃত চোখ অনিমেষ

আমি নোট লিখতে বসছিলাম কিন্তু এই কবিতা টা ছাড়া আর কিছুই লিখতে পারলাম না। এই যে ধর্মের নামে প্রত্যেকদিন এত মানুষ মাইরা ফালাইতাসে প্রতিদিন এই টা থামানো তো আমাদের জন্য কোন ব্যাপার হওয়ার কথা না। তবু আমরা অপেক্ষা কইরা আছি , একদিন থাইমা যাবে এই সব ‘গন্ডগোল’। কেউ একজন লাল বিছানার চাদ্দর পিছনে ঝুলায়া আইসা সব থামায় দিবে। কিন্তু তা কখণোই হয় না আর এই সব হত্যা কান্ড একটা “হইবই তো, আমার কি” ব্যাপারে পরিনিত হয়।

আমার কিছু না আসলে। আমি ঠিক ই ফোক ফেস্ট এ যাবো, বাসায় আইসা খায়া দায়া ঘুমায় যাবো, কালকে অফিসে যাবো, কলিগ এর সাথে আমি কত আপডেটেড প্রমান করার জন্য বলবো , দেখসেন প্যারিস এ কত মানুষ মাইরা ফালাইল। তারপর মাথা নারাবো। কারন এই মাথা নারায়াই আমি নিজেরে ফিল করাবো, আমি দুনিয়াতে আমার পার্ট টুকু কইরা ফালাইসি, আর কিছু করার নাই আমার। আমি চিনি না জানি না ফরাসি লোকজন এর জন্য মাথা নারাইসি ! অফ ম্যান, আমি তো কুল !

তারপর ফেসবুকে দেখবো এই ঘটনা নিয়া কে কি বলতাসে। দেখবো এই ঘটনায় কি সুন্দর আমাদের একদল চুক চুক শব্দ কইরা মাথা নারাইতাসে, এক দল “কই সিরিয়ার সময় তো চুক চুক শব্দ শুনলাম না” বইলা চশমা নাকের উপর তুলতাসে, আর একদল আরে অশিক্ষিত লোকজন, ফ্রান্স এর পতাকা যে প্রোফাইলে দিলি, বুইঝা দিসস? বইলা পারার মোড়ল এর দায়ীত্ব পালন করতে মাঠে নাইমা পরসে।

আমার খুব ইচ্ছা করতাসে ফেসবুক যেই প্যারিস এটাকের পর আমি সেফ আসি বলার এপ টা চালু করসে ওইটাতে নিজেরে সেফ বইলা ঘোসনা দেই । ফয়সাল আকরাম ইথার ইজ সেফ ফ্রম থে প্যারিস এটাক। ফয়সাল আকরাম ইথারের অনেক মন খারাপ হইসে কিন্তু সে সেফ আসে। সে সুখী, সুন্দর, সম্ভ্রান্ত মুস্লিম পরিবারের আস্তিক, নিরাপদ, নির্বোধ জীবন যাপন করতাসে।

২৫৯/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ১৪, ২০১৫, ২.০০ এ এম

আজকে ফোক ফেস্টিভ্যাল এর দ্বিতীয় দিন ছিল। আমরা আজকে আগে আগে গিয়া লাইন এ দাড়াইসি। তাই বেশি খন লাগে নাই ঢুক্তে। পনের মিনিট মাত্র দাড়াইতে হইসে লাইন এ। কিন্তু লাইনে দাড়ায়া দাড়ায়া নানান কিসিমের মানুষ দেখার সুযোগ হইসে।

যেমন আমি যেই লাইন এ দাড়াইসিলাম, সেই লাইনে আমার সামনে দুইডা সুট স্যুট পড়া লোক আইসা দাড়াউল। কোট দেইখাই বুঝা যাইতাসিল বংশ পরম্পরায় প্রাপ্ত স্যুট। দাদা পরসে , বাবা পরসে, এখন তারো পড়া লাগবে। এবং শুধু তাই নয়। সন্ধ্যা বেলার লো লাইট এ তাদের সান গ্লাস পইড়া লাইন এ দাড়ায়া থাক্তেই হবে।

পাশে দিয়া কয়েক্ত ছেলের একটা দল গলায় গামসা দিয়া যাইতাসিল।, এই দুই জন সুট পরা লোক ওদের দেইখা হাসাহাসি করতাসিল। ওরা বলতাসিল , দেখসস গামসে পরসে হে হে হে

একটু পর এক লোক মেগা ফোন নিয়া আইসা মাতবরি শুরু করল। লাইন সুজা করেন, লাইন ব্যাকা করেন, মুবাইল মানিব্যাগ সব হাতে ন্যান ইত্যাদি। এই লাইনে বেশি লোক হইইয়া যাওয়াতে উনি চাইতাসিল, অন্য লাইন এ লোকজন কিছু শিফট করতে। এইটারে উনি শুদ্ধ কইরা চিল্লানি শুরু করসে মাইক এ । আর লাগসে প্যাচ।

হঠাত শুনি এই কুতুব এনাউন্স করতাসে , “আমরা যারা লম্বা লাইন এ আছেন, তারা ১৪ নম্বর গেট ব্যবহার করেন। ১৪ নম্বর খালি আছে। “ এই সেন্টেন্স এর “আপ্নরা যারা লম্বা” এই লাইন বলার সময় উনি এত আসতে বলসে যে পোলাপান শুন্সে,

“আপ্নারা যারা লম্বা, তারা ১৪ নাম্যাবার গেট এ যান”

আর সব হুর মুর কইরা অন্য দিকে গেসে গা। আমারে ছ্যুট পরা ভাইজান বলসে, বাইয়া, লম্বা দের তো আলাদা লাইন, যান যান। আমি বলসি, থাক গা। দুঃখ কইরা লাভ নাই। আল্লাহ বাইট্যা বানাইসে, বাইট্যাই থাকি। বইলা একটা ফেক দীর্ঘশ্বাস ফালায়া ফাকা হওয়া যাওয়া লাইন দিয়া ঢুইকা গেসি ভেন্যু তে।

ভিতরের কাহিনী আরেকদিন বলব নে। তিন দিন এর কন্সার্ট শেষ হোক।

২৫৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৮, ২০১৫, ২.৪৮ এ এম

বাসায় ফিরসি একটু আগে। ফোক ফেস্টিভাল এ গেসিলাম। আজকে ছিল ফেস্টিভাল এর প্রথম দিন। ৬ টা দল এর পারফরমেন্স। বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা হইসে। ঘুমায়া যাওয়ার আগে দেখি কতদুর সেগুলা লিখতে পারি।

অফিস ছিল, তাই অনেক গুলা রুট হপিং করতে করতে যখন আর্মি স্টেডিয়াম এর সামনে পৌছাইলাম তখন বাজে প্রায় সাড়ে ছয় টা। ফুটপাথ দিয়া যখন গেটের দিকে হাটতাসি তখন এক ব্যাডা খুবি হাসি হাসি মুখে আগায়া আসলো। আমি ভাবসি পরিচিত হয় তো কেউ। ওই বেডায় আমার মুখের দিকে তুলি আগায় দিয়া বলল, স্যার , অনুষ্ঠান উপলক্ষে আঁকায় দেই। আমি তারাতারি ব্যাডারে কোন মতে ডজ দিয়া গেট এর কাসে আয়া পড়লাম। এই খানে সব গুলা চেইন খুলায় (শুধু ব্যাগ এর) চেক করল। তারপর বল্লো, জা আ আ ন। থুক্কু, পুলিশ আমারে জান বলবে ক্যান। বলল, যান যান। এই যে পুলিশ চেক করল এবং ব্যাগ নিয়া যাইতে বলল, এইটা তথ্য টা মনে রাখা প্রয়োজন। একটু পরে কাজে দিবে।

আমি ৬ টা ৩২ এ লাইন এর শেষ খোজার জন্য হাটা শুরু করলাম। এবং যখন পৌছাইলাম তখন বাজে ৬ টা ৪১। আচ্ছা থাক, এত কোটি কোটি মানুষ। সময় তো লাগবেই। যখন সাপের মত আইকা বাইকা আগাইতে আগাইতে গেট এর কাছে আশ্লাম, তখন বাজে সন্ধ্যা ৭ টা ৪৫। আরেকটু পরেই ঢুক্তে পারবো। কিন্তু বাধ সাধলো পুলিশ।

একজন সাব ইন্সপেক্টর আইসা ধমকা ধামকি লাগায় দিল। ক্যান আমরা ব্যাগ আন্সি। পোলাপান চিল্লা চিল্লি করতেসিল। তাদের একটা হাবিলদার দিয়া ধইরা নিয়া গেল। বলল, ওই , ধর এইটারে। এরেস্ট কর। বেশি গলাবাজি করতাসে এইডা। অথচ এগুলা কিছুই লেখা ছিল না টিকিট এ যে ব্যাগ আনা যাবে না ।

আমার এত মন খারাপ হইসিল। আমি চুপ চাপ আইসা মিশুক এর নিচে বইসা ছিলাম। কিছু পরিচিত লোক জন দেখলাম। দুর্বা কে দেখলাম হাস্তে হাস্তে ঢুক্তে। রোয়েনা রাসনাত রে দেখলাম দুইটা মেয়ের সাথে হাইটা যাইতাসে। ডাক্তার ফাহমিদ ভাই এর লগে দেখা হইসিল। ফারাহ দিবা তাস্নিম আমারে হোন্ডা থেইকা হাই দিসে। আমি বেকুব এর মত হা কইরা তাকায় ছিলাম। আর দুই টা পিচ্চি মেয়ে আমারে ইথার ভাই ভাল আসেন বলসে, তবে এদের নাম মনে নাই।

একটু পরে আইসা উদ্ধার করলো মহান রাশা। ও গাড়ি নিয়া আসছিল আর আমি ব্যাগ রাখার একটা জায়গা পাইলাম। ততখনে আজকের প্রথম পারফোরমার ফরিদা পারভিন এর গান শেষ। বাইরে থেইকাই শুনতে যত মধুর লাগতাসিল।

আমরা যখন বসার জায়গার কাছি কাছি আসলাম তখন ২য় পারফরম্মিং দল , চন্দনা মজুমদার আর কিরন চনদ্র রায় গান গাওয়া শুরু করলেন। উনাদের গান গুলা ভালই লাগসে। ৩য় পারফরমেন্স ছিলেন দা অর্ক মুখার্জি। ইনার গান ভালই তবে এরে বেশি সময় দিয়া ফালাইসে। দুই তিনটা গান শোনার পর আর ভাল্লাগতাসিল না।

ধুরো চোখ ভাইঙ্গা ঘুম আইতাসে। ঘুমের জন্য লিখতেই পারতাসি না। আবার কালকে রাইত আট্টার সংবাদের পর লিখুম নে।

২৫৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৮, ২০১৫, ১১.৪৫ পি এম

ছেলেবেলায় আকাশের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে বারণ করা হতো ছোটদের৷ তখন কি আর অভিভাবকরা জানতেন, ঐ আকাশ দেখা, মেঘ দেখাটা আসলে একটা হবি, যার একটা রীতিমতো ইংরিজি নাম আছে: ক্লাউডস্পটিং Cloud Spotting৷

২০০৫ সালে গ্যাভিন প্রিটর-পিনি তাঁর ‘‘ক্লাউড অ্যাপ্রিসিয়েশন সোসাইটি” বা ‘মেঘ চর্চা সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করেন৷ এদের ওয়েবসাইট এর ঠিকানা https://cloudappreciationsociety.org/ । সদস্যসংখ্যা আজ পঁয়ত্রিশ হাজার৷ সমিতির কাজ হল: ‘‘ক্লাউডস্পটিং”৷


গ্যাভিন খানিকটা ঠাট্টা করেই বললেন: ‘‘এ কাজে বিশেষ সরঞ্জাম চাই: দু’টো চোখ আর একটা বিশেষ চারিত্রিক গুণ: পারিপার্শ্বিকের প্রতি নজর দেওয়ার ক্ষমতা৷ তারপর হেসে বলেন, না, আমি ঠাট্টা করছি৷ আসলে বিশেষ কিছুরই দরকার পড়ে না৷ শুধু উপলব্ধি করতে হবে যে, সৌন্দর্য আর চমকপ্রদ বস্তু খুঁজে পাওয়ার জন্যে দুনিয়া চষে বেড়ানোর দরকার নেই৷”


গ্যাভিন এর বন্ধু রন ওয়েস্টারমাস ইংল্যান্ড এর সমারসেটশায়ারের মাঠেঘাটে মেঘ দেখে বেড়ান৷ অন্যান্য ক্লাউডস্পটারদের মতো তিনিও সাথে ক্যামেরা রাখেন৷ রন-এর পরামর্শ হল: ‘‘সবসময়ে নিজের সাথে ক্যামেরা রাখবেন আর আকাশের দিকে তাকিয়ে হাঁটবেন৷ কেননা সাথে ক্যামেরা থাকলে আর আকাশের দিকে চোখ রাখলে ইন্টারেস্টিং কিছু একটা চোখে পড়তে বাধ্য৷ তারপর শুধু ক্লিক করলেই হল: চমৎকার একটা মেঘের ছবি পাওয়া যাবে৷”

একটু কল্পনাশক্তি থাকলে ক্লাউডস্পটারদের ইন্টারনেটে পোস্ট করা ছবিগুলোতে নানা অদ্ভুত জিনিস দেখতে পাওয়া যায়৷ গ্যাভিন প্রিটর-পিনি এই সব ছবি সংকলন করে একটি বইও বার করেছেন৷

বার্লিন ফ্রি ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া বিশারদ হেনিং রুস্ট-এর কাছে মেঘ দেখাটা শুধু সময় কাটানোর পন্থা নয়৷ তিনি মেঘ দেখে আবহাওয়ার পরিস্থিতি বুঝতে পারেন৷ তিনি জানেন, বিভিন্ন ধরনের মেঘ কী ভাবে তৈরি হয়।

আমরা ছোটবেলায় পড়েছিলাম কিন্তু মেঘ এর প্রকারভেদ মনে আছে? মনে না থাকলে আরেকটু মনে করায় দেই। নিচের ছবিতে মেঘ এর প্রকারভেদ গুলা উচ্চতা অনুসারে দেওয়া আছে। আমি কিছু কিছু চিনি এখন দেখলে। তবে অন্য সব কিছুর মত ক্লাউড স্পটিং ও চর্চার ব্যাপার

image

২৫৬/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ১১, ২০১৫, ১২.১৭ এ এম

***মুজিব ব্যাটারী-বাংলাদেশের প্রথম আর্টিলারী ইউনিট***

মুজিব ব্যাটারির নাম আমি প্রথম শুনি জ্যাজ কন্সার্ট এ গিয়া। কি অদ্ভুত ব্যাপার। আমার বয়স এখন ৩৩। এই ৩৩ বছরে কেউ আমারে “মুজিব ব্যাটারি” শব্দ টা পর্যন্ত বলে নাই। ঠিক যেমন কেউ বলে নাই মুক্তিযুদ্ধে আমাদের একটা এয়ার ফোর্স ও ছিল। তিনটা বিমান এর খাটি বাংলাদেশি এয়ার ফোর্স ইউনিট, যারা আকাশ পথে মুক্তিযুদ্ধ করসে। যাদের নাম ছিল “কিলো ফ্লাইট”। “কিলো ফ্লাইট” নিয়া এর আগে লিখসি অনেক গুলা নোট।

যাই হোক, মুজিব ব্যাটারির কাহিনী বলি। জ্যাজ ফেস্টিভাল হইতাসিল আর্মি মিউজিয়াম এ। গেট খুলবে ৬ টায়, আমি আর অ ৫ টায় গিয়া বইসা আসি উৎসাহের চোটে। এদিক সেদিক হাটা হাটি করতে করতে মিউজিয়াম এর বিল্ডিং এর দিকে গেলাম। দেখি উপরে লেখা “মুজিব-ব্যাটারি কর্নার”। আমি ভাবলাম, ব্যাটারি আবার দেখনের কি আসে। আমি যে কত বেকুব তা একটু পরেই বুঝতে পারলাম। ওই দিন খালি দেইখা আসছি। আজকে গুগল কইরা যা পাইলাম তা এইখানে তুইলা দিলাম।

আমার মত কেউ যদি প্রথম বার এর মত মুজিব ব্যাটারি সম্পর্কে এই লেখা পইড়া জানতে পারে তাইলেই এই লেখা স্বার্থক হইসে বইলা মনে করুম।

রনাঙ্গনের বিধাতা বলা হয় আর্টিলারী বা ভারী অস্ত্র সম্বলিত ইউনিটকে। মুক্তিযুদ্ধের মত একটি ফুল ফেজ যুদ্ধে আর্টিলারীর প্রয়োজনীয়তা ছিল আপরিসীম।তাই ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই ৬টি কামান নিয়ে ভারতের কোনাবান অঞ্চলে প্রথম প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারি ইউনিট – মুজিব ব্যাটারি।

১৯৭১ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি এই কামান মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আসে। ৯ আগস্ট ২ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে এই কামান ব্যবহারের বিষয়ে চিঠি লেখেন।

বিডি/০০২২/জি স্মারক নম্বরের ওই চিঠিতে মেজর খালেদ মোশাররফ জেনারেল ওসমানীকে লেখেন,

“আমাদের ছেলেরা ৩ দশমিক ৭ ইঞ্চি মাউন্টেন গানের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে। ১০ আগস্ট এই কামান উদ্বোধনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আমি এর নাম দিয়েছি ‘মুজিব ব্যাটারি’। আমি ইতিমধ্যে এই কামান তত্ত্বাবধানের জন্য দুজন অফিসারকে নিযুক্ত করেছি। ১০ আগস্ট থেকে সম্পূর্ণ আমাদের তত্ত্বাবধানে, আমাদের অফিসার ও সৈনিকদের দ্বারা এই ব্যাটারি পরিচালিত হবে।”

যে দুজন অফিসার এই কামান তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পান, তারা হলেন ক্যাপ্টেন আব্দুল আজিজ পাশা ও সেকেন্ড লেফটেনেন্ট কাইয়ূম।

জন্মের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই মুজিব ব্যাটারীর কামান গর্জে ওঠে এবং সাফল্যজনকভাবে রণাঙ্গনে শত্রুকে ধ্বংস করার কাজে নিয়োজিত হয়। মুক্তিযুদ্ধকালে এ ইউনিটটি কাইয়ুমপুর, কসবা, সালদানদী, আখাউড়া, নাজিরহাট ইত্যাদি উলেস্নখযোগ্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে লক্ষ্যভেদী ফায়ারের মাধ্যমে মুক্তিবাহিনীর বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।

সেই ৬টি কামানের মধ্যে ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা ‘মুজিব ব্যাটারি’ নামের ২টি কামানকে পুনরায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে উপহার হিসেবে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী গত ২১ জুন ২০১১ সালে।

মুজিব ব্যাটারির কামান গুলো দেখা যাবে, বিজয় সরনীর কোনায় যে আর্মি মিউজিয়াম টা আছে সেটার গেট দিয়ে ভিতরে ঢুক্লে মাঠ এর ওই পারে একটা দো তালা বিল্ডিং আছে। এই বিল্ডিং এর নিচ তালায় ডান পাশেই আছে “মুজিব ব্যাটারি” কর্নার যেখানে “মুজিব ব্যাটারি” এর ব্যবহার করা কিছু কামান।

আমি এক্টা কামান এর মুখে হাত দিয়া হুদাই দাঁড়ায় ছিলাম কিছুক্ষণ। এক মিলিটারি লুক আইসা ভুরু কুচকায় লুক দিতে নিসিল আমি তারাতারি ডরে আয়া পরসি। এই কামান পাকি মারসে, এই কামান মুক্তিযুদ্ধ দেখসে, কি দুর্দান্ত ব্যাপার স্যাপার। এই যাদুঘর এ প্রবেশ ফি নাই। ফ্রি। সবার একবার হইলেও দেইখা আসা উচিত।

২৫৫/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৯, ২০১৫, ১১.৪৯ পি এম

আজকে আম্মাকে কেবিন এ দিসে। কালকে ইনশাল্লাহ রিলিজ দিয়া দিবে। আম্মা ভাল আসে এখন। আমি দুপুরে যাইতে পারি নাই অফিসের কাজ এর চাপের কারনে। অফিসের পর সাতটার দিকে গেসিলাম । তখন আবার মহান রাশা ফুন্দিসে। অয় আইসিল এপোলর নিচে। অরে নিয়া উপ্রে গেলাম আম্মার কেবিনে। আম্মা অরে দেইখা অনেক খুশি হইসে। আম্মা বাবা আর রাশা মিলা অনেক আড্ডা উড্ডা মারলো তারপর আমি রাশা রে আগায়া দিতে নিচে নাম্লাম।

এই সময় একটা মজা হইসে। রাশা ওয়াশ রুমে গেসিল আর আমি বাইরে দারায়া মুবাইল গুতাইতাসিলাম। আমার পাশেই আরেক আপায় বইসা ফোন এ কথা বলতাসিল। আমি অত এটেনশন দেই নাই কিন্তু আপায় এত জোরে জোরে কথা বলতাসিল যে নিচের লাইন গুলা কানে আস্লো আর নগদে ভিম্রি খায়া উল্টায়া পরতাম আরেকটু হইলে। ওই পাশ থেইকা কি বলসে তো শুনি নাই, এই পাশ থেইকা যা বলসে তা ছিল এমন,

– আরে তুই এত ভয় পাইতেসিস ক্যান

– শুধু তো সেক্স চেঞ্জ এরই ব্যাপার

– তুই শুধু যাবি যা করার ওরাই করবে

– তোর কিছু করা লাগবে না, ওরাই কাইটা মেলটা কে ফিমেল বানায় দিবে

– না আমি চেক করে দেখসি, মেল আসে এখনো।

– দুই ঘন্টা লাগবে বড়জোর

– তারপর বাসায় আইসা রেস্ট নিস

আমার তো ভয়ে বড় বড় হয়া গেসিল (চোখ)। কি ভয়ংকর ব্যাপার স্যাপার। বাংলাদেশ এত আগায় গেসে। হতাশা গ্রস্ত আপারা সেক্স চেঞ্জ কইরা ব্যাডা হওয়া যাইতাসে। তাইলে যুবক ও বিবাহিত ভাই দের কি উপায় হবে। আমি ভাবতাসিলাম আচ্ছা এ আবার “স্বেচ্ছায় সেক্স চেঞ্জ” টাইপ এর গ্রুপ এর সদস্য না তো। ওই দিন আমারে কুন হালায় যানি “স্বেচ্ছায় কিডনি দান” গ্রুপ এ এড কইরা দিসে। আমি ডরে তারাতারি আন্সাবস্ক্রাইব কইরা দিসি। যাউকগা ভাবলাম সেক্স চেঞ্জ টাই কি হাল জামানার কুল থিং টু ডু কিনা।

তবে সকল আশার চিনি তে পানি ঢাইলা দিল, সেই আপার উচ্চারিত শেষ কথা,

“ আমি বুঝি না সেক্স চেঞ্জ ত একটা সামান্য ব্যাপার। এইখানে মেল কেটে ফিমেল বানাইতে ক্যান পাস্পোর্ট অফিস পর্যন্ত যাওয়া লাগবে ক্যান”

হুয়াআ আ আ আট ! পাস্ফুট অপিশ ! আমি আরো কত কিছু ভাইবা ফালাইলাম।

২৫৪/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৮, ২০১৫, ১১.২১ পি এম

আজকে সকালে আম্মার হার্ট এ স্টেন্ট পরানো হইসে । বাম পাশের অলিন্দে একটা ব্লক ছিল, আপাতত সেইটাকে সাইজ করা হইসে। এখন আম্মা পোস্ট অপারেটিভ অব্জার্ভেশন এ আসে। কালকে ইনশাল্লাহ কেবিন এ দিবে আর পরশু রিলিজ।

এই খানে দিনে দুইবার ঢুক্তে দ্যায়। একবার সকালে। তখন বাবা গেসিল। আর আরেকবা সন্ধ্যায়। আমি গেসিলাম। আম্মা অনেক ভয় পাইসিল অপারেশন এর আগে, এখন একটু শান্ত হইসে। আমি আম্মাকে জিজ্ঞেস করলাম আম্মা কেমন লাগে? আম্মা বলসে খুব হালকা লাগতাসে, বুকের মদ্ধে রক্ত চলাচল করতাসে সুন্দর কইরা, টের পাইতাসি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন অসুবিধা হইতাসে থাকতে? আম্মা বলল, এক বেড পরের এক বুড়া লোক সারাক্ষন নিজে নিজে কথা বলে। ঘুমাইতে পারি না আওয়াজ এ। আমি দেখলাম সত্যিই কথা বলে লোক্টা নিজে নিজে। তাও আস্তে আস্তে না। জুরে জুরে। আমি গিয়া বল্ললাম, আঙ্ককেল একটু আসতে কথা বলেন, আমার আম্মার ঘুমাইতে প্রব্লেম হইতাসে। লোক্টা তখন কিছু বলে নাই। আবার আম্মার কাছে চইলা আসার পর শুনি চিল্লা চিল্লি লাগায় দিসে,

“ হু ইজ হি? সে একজন ভিজিটর হওয়া আমাকে উপদেশ দিতে আসে? সে জানে আমি কে? আমি একজন ফ্রিডম ফাইটার। আমি এই দেশ স্বাধীন করসি। তার দাদার বয়স কত? আমি তার দাদার চেয়েও বেশি বয়েস। আমাকে সে উপদেশ দিতে আসে?”

আম্মা বলল, যাও গিয়া সরি বইলা বল যে আমি আমার আম্মার জন্য বলসি। আমি যাই নাই। আমি ক্যান সরি বলব। উনি মুক্তিযোদ্ধা হইতেই পারেন, তার জন্য সকল শ্রদ্ধা । কিন্তু এই সব কথা বইলা কি উনি নিজেরে আরো হাল্কা করলেন না ? আম্মা যেই কারণে যাইতে বলসে, আমি সেই কারণেই যাই নাই। আমি ক্যান সরি বলব? আমি আমার আম্মার জন্য বলসি।

রিয়েকশন ফিল করা এক জিনিশ আর রিয়েকশন প্রকাশ করা আরেক জিনিশ। আমার একটা জিনিশ ভাল নাই লাগতে পারে। তাই বইলা সেইটা প্রকাশ কইরা আমার তো নিজেকে তার লেভেলে নামায়া আনার দরকার নাই। ধরেন আপ্নের এক্স ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখলো, “আল্লাহর কাছে হাজার শোকর যে আমি আর তার সাথে নাই”। পইড়া আপনার মনে হইল, এত বড় সাহস। আজকে ওরে ভাইঙ্গা লামু, চুইরা লামু টাইপ কিছু এক্টা। কিন্তু তাতে আপ্নের আর তার মধ্যে পার্থক্য কি থাক্লো।

সে স্টাটাস লিখা টিখা খুব মনে মনে বাশ দিসে ভাইবা আহলাদিত। হোক আহলাদিত। আপ্নে রিয়েকশন দেখায়া তার জবাব দেয়ার তো দরকার নাই।

কোন রিয়েকশন না দেখানো টাই আসল পরীক্ষা।

২৫৩/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৮, ২০১৫ ১.১৯ এ এম

আজকে জ্যাজ ফেস্টিভাল এর শেষ দিন ছিল। ফাইনালি আমি আর মহান রাশা এক সাথে কন্সার্ট দেখতে যাইতে পারসি। বেচারা রাশা ফুড পয়জনিং এ দুই দিন বাসায় পইড়া ছিল। তাই প্রথম দুই দিন যাইতে পারে নাই। ওর উপর দিয়া অনেক ঝড় ঝাপটা যাইতাসে। ফাশ্টে ঠ্যাং এ মুচুরা খাইলো বাসায় পইড়া থাক্লো এক মাশ। এহন যহন এট্টু ক্রাচ ছাড়া হাটা চলা করতাসে তহন আবার এই ফুড পয়জনিং। অরে একটা তাবিজ টাবিজ কিসু বাইন্দা দিতে হইব কোমরে। লগে একটা ঝুন ঝুনিও বাইন্দা দিত হইব। যাতে লারা ছারা করলে ঝেন ঝেন শব্দ হয়।

ঝেঝ এন্ড ভুলুজ ফেস্টিভাল ভালাই লাগসে। Soulmate বইলা একটা শিলং এর ব্যান্ড আসছিল। ভোকাল এক মহিলা। কাপাইসে পুরা। সে এপলজাইস করসে যে তার গলা ভাঙ্গা তাই ঠিক মত গাইতে পারতাসে না। কিন্তু এই ভাঙ্গা গলা লয়াও সে যা গাইল, এক্কেরে শরীরের লুম্বা উম্বা খারায়া গেছে গা।

এর পর মঞ্চে আসে একটা ব্রাজিলিয়ান জ্যাজ ব্যান্ড। আমার মনে ময় আমার জ্যাজ শোনার কান টা ঠিক তৈরি হয় নাই। ব্লুজ তাও ধরতে পারি। জ্যাজ যে কই থিকা কই যায়গিয়া ঠাহর করতে পারি না। আমরা তাই হাটা হাটি করতাসিলাম । অনেক খাওন দাওন আর কফির দুকান খুলসে। আমরা Sbarro তে পিজ্জা খাইলাম, Live Kitchen এর বারগার খাইলাম আর নর্থ এন্ড এর কফি খাইলাম। অনেক পরিচিত লোকজন এর লগে দেখা হইসে। গতকাল ব্লুজ ব্রাদারস এর সাথে কাপাইলো যে মেয়েটা, কাশফিয়া, সে আবার রাশার পরিচিত। তার লগে দেখা হইসে, আড্ডা উড্ডা হইসে অনেক খন। কাশফিয়া বলসে, ইথার ভাই, আমি আপ্নের লেখা অনেক আগে থেইকা ফলো করি। ইউ আর সো ফানি। আমি তো খুশি তে পারলে তখনি বিশ্ব দন্ত প্রদর্শনী শুরু কইরা দেই। কিন্তু পরে ডরায়া যাইতে পারে লুকজন, তাই আর ক্যালাইনাই।

আমাদের সাথে আর্টসেল এর এরশাদ ভাই এর সাথে দেখা হইসে। উনি কইল, ব্রাজিলিয়ান জ্যাজ ব্যান্ড যে কি বাজাইলো, কিছুই তো বুঝলাম না। শুইনা শান্তি পাইসি। আহা। এরশাদ ভাই ই যদি না বুঝে তাইলে আমি কোন তুচ্ছাতিতুচ্ছ ধুল পরিমান।

এরপর মঞ্ছে আসেন এ বি ব্লুজ। আউয়ুব বাচ্চু এর ব্লুজ প্রজেক্ট। উনার মিউজিক নিয়া তো আমার বলার মত স্পরধা করা উচিত না। তবে উনার বেজিস্ট স্বপন ভাই রে দেইখা খুশি লাগসে। স্বপন ভাই আমার ফ্রেন্ড লিস্ট এ আসে ফেসবুক এর। মনে হইতাসিল এই যে এ এ , স্ব প অ অ অ ন ভ্যা আ আ আ ই আমি এখানে এ এ এ বইলা হাত পাও মাথা সব নারি। কিন্তু এত দুড় থেইকা আমারে দেখা পসিবল না , বিরাট আফসুস। এরপর থিকা টচ লাইট লয়া যামু। যার দ্রিশটি আকর্ষণ করা লাগবো তার চোখ বরাবর টচ মারুম। না দেইক্কা যাবি কই।

এরপর আমরা আয়া পরসি। আর দেখতে ইচ্ছা করতাসিল না। রাশা আমারে জিজ্ঞেস করসে ব্লুজ এর লিরিক্স বাংলায় লেখা পসিবল কিনা। কারন অনেক কিছু ভাব সাব ওলা ইংলিশ আছে যেগুলা ব্লুজ এ খুব ভাল যায়, কিন্তু বাংলা করলে ঠিক যুইতের হইব না। রাশা কইল এই যে বি বি কিং এর দা থ্রিল ইজ গন গান টার কথা ধর। এইটা বাংলা করলে কি হইব? আমি কইলাম, “মজা গেসে গা”। রাশা খুবি বিরক্ত। ব্লুজ নিয়া ফাইজলামি!

সে আমারে ইগ্নোর কইরা কইলা, তারপর ধর “ওন্ট ইউ গিভ মি ইওর লাভ বেবি” এইটার ফিল ওলা বাংলা কি করা সমভব? আমি কইলাম সম্ভব তো। এইটার বাংলা হইব, “ভালবাসা দিবি কিনা বল”।

রাশা অধিক শোকে নীল রঙ এর পাথর হয়া গেল।

২৫২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৭, ২০১৫, ১.৩২ এ এম

এতক্ষণ একটা ভিডু করসি তাই লিখতে আসতে দেরি হইসে। বিটলস এর “হেই জুড”। সেরম বেসুরা গাইসি আর লগে ভুল ভাল লিরিক্স। মাঝখান দিয়া ক্যাসপার আইসা মুবাইল ফালায় দিসে থাবা মাইরা । খুব কিছুই হয় নাই ভাব কইরা আবার বাজানি শুরু করসি। আমার গলা ক্যান এট্টু ভাল হইল না, কেনু কেনু কেনু।

আজকে জ্যাজ ফেস্টিভাল এ গেসিলাম। ভালা লাগসে। দুই টা দল এর পারফরমেন্স দেইখা আইসা পরসি। আজকে ছিল ডে টু। প্রথমে স্টেজ এ আসলো ফ্রান্স এর Florian Antier আর বাংলাদেশ এর Razef Khan এর ডুয়ো। তারা দুই জন ই ইয় ভুমা সাইজ এর দুইডা চেলো নিয়া উঠসিল। চেলো দিয়া যে এত কিসু বাজানি যায় তা আগে ইউটিউব এ দেখলেও লাইভ এই পরথম দেখলাম। আর বাংলাদেশের কেউ চেলো বাজায় এইটা তো দেইখাই খুশি হয়া গেসি।

তারা শুরু করসে আমার অনেক প্রিয় একটা গান AC/DC এর Thunderstruck দিয়া। এরপর মাইকেল জ্যাকসন এর স্মুথ ক্রিমিনাল এর চেলো ভার্শন, আরেকটা কি জানি “নাম ভুইলা গেসি” গান গাইল। উনারা শেষ করলো নিরভানা এর স্মেলস লাইক টিম স্পিরিট দিয়া। অনেক ভাল্লাগসে। শো এর পর উনাগো লগে গিয়া হাত মিলাইসি আর ফটুক ও তুলসি।

এরপর মঞ্ছে আসেন The Blues Brothers. আমার ওদের অনেক ভাল্লাগে। তিনটা পরিচিত মানুষ আছে এই ব্যান্ড এ। ড্রামার পান্থ কানাই ভাই, গিটারিস্ট দিপ্ত ভাই আর ভোকাল কাশফিয়া। আমি দিপ্ত ভাই রে স্টেজ এ দেইখাই, এইযে এ এ এ দিপ্ত ভ্যা আ আ আই, আমি এখানে, দি ই ইপ তো ভ্যা আ আ ই বইল্লা চিল্লান দিসি। আফসুস, এত দূর থেইকা আমারে দেখার কথা না। Blues Brothers শুরু করসে বি বি কিং এর Thrill is Gone দিয়া। কাশফিয়া এর গলার যেই রেঞ্জ। আজকে সে কাপায় ফালাইসে সব কিছু গান গায়া।

বাংলাদেশে কত ডায়নামিক মিউজিশিয়ান্স আসতাসে এখন। ভাবতেই কত ভাল্লাগে যে আমি বাংলাদেশ এর মিউজিক সিন এর ট্রান্সফরমেশনটা একদম কাছা কাছি থেইকা দেখতাসি। এখন পুরা ইন্ডাস্ট্রি ইজ মুভিং ইন্টু ডিজিটাল মিউজিক। শুধু রক না, ব্লুজ আর জ্যাজ শোনার মত কান ও আমাদের তৈরি হইতাসে। কি জোস ব্যাপার শ্যাপার।

ভবিস্যত এ আমরা পাতাল রেল স্টেশন এ বিশাল চেলো নিয়া হন্ত দন্ত হওয়া হাইটা যাওয়া চেলো প্লেয়ার দেখবো, স্কুল এর মাঠে ভায়োলিন বাজানো পিচ্চি দের দেখবো, স্কেক্সোফোন হাতে নিতেই মেয়েরা দলে দলে ক্রাশ খায়া পইরা যায় এরকম ছেলেদের দেখবো। আহা, দাত পইরা যাইবো হয়তো, চোখেও ঠিক মত দেখুম না, কিন্তু কান ঠিক ই মনে করায় দিব, অনেক অনেক দিন আগে আমরা মাঠে বইসা ব্লুজ আর জ্যাজ শুন্সিলাম খোলা আকাশের নিচে।

কালকে শেষ দিন জ্যাজ আর ব্লুজ ফেস্টিভাল এর। কালকে আবার যামু ইনশাল্লাহ।