১১০/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ১৭, ২০১৫ । ১০.২২ পি.এম

এয়ারবাস কোম্পানির তৈরি করা প্রথম প্লেন ছিল Airbus A300। একটা প্লেন এর তৈরি হওয়ার ডেট আর সেইটা কমারশিয়ালি ফ্লাই করার ডেট এক না। প্রথম টা মেনুফেকচারার বানায় যাতে হেইডা দেখাইয়া এয়ারলাইন্স গুলা থিকা অর্ডার আনতে পারে। তারপর অর্ডার মত বানানির পর প্রথম যেদিন সেইটা আকাশে উড়ে সেইটা ওই জাত এর প্লেন এর অপারেশন এ আসার ডেট।

A300 বানানি শেষ হইসে ১৯৭২ সালে আর কমার্শিয়াল সার্ভিস এ আসছে ৩০শে মে, ১৯৭৪। প্রথম কাস্টময়ার এয়ার ফ্রান্স। আর হইবই না ক্যান। এয়ারবাস কোম্পানির এর জন্মই তো ফ্রান্স এ। ২০০৭ এর জুলাই মাসে Airbus A300 আর বানানই হইব না বইলা ঘোষণা করে এয়ারবাস। অর্থাৎ এখন জেডি চলতাসে চলুক। আর বানানোর দরকার নাই। এইটা যখন বাজারে আসে তখন এর কম্পিটিশন দারাইসিল DC-10, Tristar এদের সাথে। উহারা কেউই এখন আর জীবিত নাই।

আমি বাংলাদেশে A300 আস্তে দেখসি কেবল মাত্র একটা এয়ারলাইন্স এর। সেইটা হইল কুয়েত এয়ারলাইন্স। আগে যখন অনেক ভোরে চোখ মুছতে মুছতে স্পটিং এ যাইতাম তখন দিন্ডা শুরুই হইত কুয়েত এয়ারলাইন্স এর A300 দিয়া। তিনটা রেজিস্ট্রেশন আস্তো। 9K-AMA, 9K-AMB ar 9K-AMC

A300 এর একটা প্রধান বইশিষ্ট হইল এইটা দুনিয়ার প্রথম দুই ইঞ্জিন এর ওয়াইড বডি এয়ারক্র্যাফট। ওয়াইড বডির সংজ্ঞা তো আগে একটা লেখায় দিসি, তবু বলি, যে প্লেন এ সিট এর দুই পাশে রাস্তা থাকে অর্থাৎ ডাবল আইল থাকে তারে বলে ওয়াইড বডি এয়ারক্র্যাফট। A300 দুনিয়ার প্রথম প্লেন যার এক একটা পার্টস এয়াবাস কোম্পানির বিভিন্ন পার্টনার দেশে তৈরি হইসে। তারপর আইন্না সব জুরা লাগানি হইসে। এমনে কইরা এয়ার বাস কোম্পানি হিসান কইরা দেখাইসে যে এক জায়গায় উথপাদন করলে যেই খরচ, এক এক পার্টস এক এক দেশে থিকা বানায়া আইন্না জুরা লাগাইলে তার থেইকা কম পরে।

A300 এর কয়েকটা ভ্যারিশন আসে। এগুলা হইল, A300B1, A300B2, A300B4, A300-600 আর A300F

A300 সব মিলায় প্রায় ২৬৬ জন যাত্রী নিতে পারে। আর এর রেঞ্জ হইল ফুল্লই লোড অবস্তায় সাড়ে সাত হাজার কিলোমিটার এর মত (৭৫৪০ কিমি)। এয়ারক্র্যফট এর রেঞ্জ মানে একবার ফুয়েল লইলে এইডা কদ্দুর যাইতে পারে তার পরিমাণ।

আর ইচ্ছা করতাসে না লিখতে। এদ্দুর ই থাক । আরো জানতে চাইলে গুগল করা লাগবে। থাক, গুগুলেত্তে বেশি না বুঝি।

১০৯/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ১৬, ২০১৫ । ১১.২৩ পি.এম

প্যারিস এর Le Bouret এ গতকাল থিকা শুরু হইসে International Paris Air Show 2015 এই শো চলব এই মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত। মজার জিনিষ হইল এই প্যারিস এয়ার শো এর সাথে Airbus কোম্পানি ফর্ম হওয়ার একটা বড় সম্পর্ক আসে। আগের লেখা গুলায় আমি বোয়িং এর ইতিহাস এর গল্প বলসি। বোয়িং এর একটা প্লেন, বোয়িং ট্রিপল সেভেন নিয়াও বলসি। মার্কেটের ২য় প্লেয়ার এয়ারবাস নিয়াও বলা দরকার মনে করতাসি। তাইলে তারপর এয়ারবাস এর প্লেন গুলা নিয়া নিয়াও একে একে লেখা যাবে।

এয়ারবাস এর ইতিহাস বলা শুরু করার আগে একটা সাধারণ কনফিউশন দূর করা ভাল। অনেকে মনে করেন এয়ারবাস একটা এয়াক্রাফট এর টাইপ। বিদেশ ফেরত একজন কে জিজ্ঞেস করসিলাম, সে কোন এয়ারক্র্যাফট এ দেশে আসছে? উনি বলসিলেন, কি জানি, বাস এর মত সিট, এয়ারবাস? আমি তারপর আরো কিছু টুক টাক প্রশ্ন কইরা বাইর করসি যদিও কোন এয়ারক্র্যাফট কিন্তু ঘটনা টা মনে রাখসি। উনি পারে নাই দেইখা আমার বিন্দুমাত্র উপহাস আসে নাই উনার প্রতি। এইটা খুবি স্বাভাবিক। নীলক্ষেত এ ফিসিক্স এর বই বেঁচে এরম কাউরে যদি আমি জিগাই, আচ্ছা বলেন তো CERN এর Large Hadron Collider এর কাজ কি? আর উনি যদি না পারে তাইলে বেকুব কে? উনি না আমি? তাই এয়ারবাস বিষয়ক কনফিউশন দূর করা আমার পবিত্র দায়িত্ব। এইটা পইড়া কারো কনফিউশন দূর না হইলে সেই দোষ পুরাপুরি আমার লেখার।

যাই হোক, এয়ার বাস হইল ইউরোপের কয়েকটা বড় বড় প্লেন বানানোর কোম্পানির একটা কনসরটিয়াম। মানে হইল গিয়া ইউরোপ এর কিছু কোম্পানি এক সাথে হয়া টেকা টুকা ইনভেস্ট কইরা একটা সমিতি মত কইরা বিরাট বিরাট কিছু প্রজেক্ট রান করায়া বিরাট কিছু প্লেন তৈরি করসে, যা কিনা একা তৈরি করার মত সামরথ ছিল না কারো। এই সমিতি বা ভদ্র ভাষায় কনসরটিয়াম এর নাম ই “Airbus Company”

১৯৫৯ সালের দিকে Hawker Siddeley নামের একটা কোম্পানি একটা যাত্রীবাহী বিমান এর ডিজাইন প্রস্তাব করে। বিমান এর নাম মাশাল্লাহ বিশাল। Armstrong Whitworth AW.660 Argosy। বোয়িং ৭৪৭ এর সাথে ককপিট টার মিল আসে কিন্তু। এইডা মূলত মিলিটারির অনুরধে ট্রান্সপোর্ট প্লেন হিসাবে ডিজাইন করা হইলেও Hawker Siddeley একটা ডিজাইন প্রেসেন্টেশন কইরা দেখান যে যদি কয়েকটা কোম্পানি এক হয়া এইটারে একতা যাত্রীবাহী বিমান হিসাবে বানায় তাইল এইখানে ব্যাবসা আসে।

১৯৬৫ সালে প্যারিস এয়ার শো চলাকালীন সময়ে বিমান প্রস্তুতকারক কোম্পানি গুলা ইনফরমালি আলোচনা শুরু করে কিভাবে প্রায় ১০০ যাত্রী বহন করতে পারে এমন বিমান লো কষ্ট এ বানানো যায়।

১৯৬৬ সালে কয়েকটা কোম্পানি এই লক্ষ্যে এক সাথে কাজ শুরু করে। কোম্পানি গুলা হইল, Sud Aviation, later Aérospatiale (France), Arbeitsgemeinschaft Airbus, later Deutsche Airbus (Germany) আর Hawker Siddeley (UK) । তিনটা দেশ এর ফান্ডিং পাওয়ার পর শুরু হয় গবেষণা।

১৯৬৯ সালে ব্রিটিশ রা মনে করে এই প্রজেক্ট এ থাইকা আমাগো ফায়দা নাই। তাই তারা এই বছর ই বাইর হয়া যায়। তাদের শেয়ার গুলা সব কিনা ন্যায় জার্মানি।

১৮ই ডিসেম্বর ১৯৭০ সালে এয়ারবাস কোম্পানি অফিসিয়ালি তার যাত্রা শুরু করে।এর পিছনে চালিকা শক্তি হিসাবে ছিল তিন টা দেশের সরকার। ফ্রান্স, জার্মানি আর ইউ কে। এয়ারবাস তখন একটা নন অফিশিয়াল টার্ম ছিল, যা কিনা তখন কার লোকেরা ছোট ছোট প্লেন বুঝাইতে হেল্প করত।

এয়ারবাস এর প্লেনগুলার মডেল গুলা সব শুরু হয়া 3 দিয়া। A300. A310, A319, A320, A321, A330, A340, A380. এর মধ্যে এয়ারবাস কোম্পানির সব চেয়ে প্রথম প্রজেক্ট ছিল Airbus A300. সেই গল্প আরেকদিন বলব নে।

নেক্সট যেদিন পেলেন নিয়া লিখব সেদিন Airbus er কোন এর প্লেন নিয়া লিখব।

১০৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ১৫, ২০১৫ । ৯.৪৮ পি.এম

আমার শীত কাল পছন্দ না। কন কনে ঠাণ্ডা আমি সহ্য করতে পারি না। শীতকাল শুরুর আগে সন্ধ্যা বেলা যেই ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা বাতাস টা শুরু হয় ওইটার গন্ধ আমার ভিতরে কেমন খালি খালি কইরা দিয়া যায়। মনে হয় এখনি বাসায় যাইতে হবে এখনি। শীতকালের শীত বাদে বাকি এলিমেন্ট আবার আমার ব্যাপক পছন্দ। মুখ দিয়া ধুয়া বাইর হওয়া। সিগারেট খাইতাছি ভাব নিলেও কেউ পাত্তা পুত্তা দ্যায় না যদিও। জানে যে আমি খাই না। তারপর কম্বল। আহা কম্বল। শীতকাল গেলেগাও কম্বল এর প্রতি ভালবাসা শেষ হয় না।

আমার পছন্দ বর্ষা। সবচেয়ে পছন্দ বর্ষা। আমার জন্ম হইসে বর্ষা কালে। তখন আষাঢ় মাস ছিল। আমি যেই রাশি (কর্কট) সেইটা একটা ওয়াটার সাইন। তাই বর্ষা ঋতুর সাথে আমার হাত ধরা ধরি ছোট বেলা থেইকাই। বৃষ্টি নামলে আমার কেমন পাগল পাগল লাগে। আমি আকাশের দিকে হাত বাড়াই, আর আকাশ আমার দিকে মেঘ বাড়ায়।
আজকে পহেলা আষাঢ়। আষাঢ় কে স্বাগত জানানোর মত কিছু করতে পারি নাই। ভাবসিলাম কবি গুরু যেহেতু বলসেন মেঘ নীল বেশ পরা যাক। আলমারি ঘাইটা দেখি সব হয় কালা গেঞ্জি নাইলে লাল গেঞ্জি। আর কুনু কালার এর গেঞ্জি নাই। ডুবুরির মত মাথা ডা চুবাইয়া দিয়া হাত দিয়া সরায় সরায় তলা থিকা একটা নীল মত গেঞ্জি বাইর করলাম। ওইটা পরার পর দেখি উপরে দিয়া সুন্দর ফিট হইলেও মহান গেঞ্জি বুকের নিচে নাইমা শেষ হয়া গেসে। আর আমার সুগোল ভুড়িডা ভারটিকাল গম্বুজ এর অনবদ্য নিদ্রশন সরূপ সামনের দিকে সগর্বে বাইর হয়া রইসে। এই সুডু বেলার গেঞ্জি এই খানে কেমনে আসলো সে এক বিরাট রহস্য। এই ভাবে ত আর অফিস যাওন যায় না। আজকে তাই অফিস যাই নাই। বেক পেইন ছিল। সুজা হয়া বয়া থাকতে পারতামও না অফিস গেলে। তাই ছুটি নিসি।

আষাঢ় মাসের প্রথম দিন ভাল গেসে। হঠাত আষাঢ় মাসটাকে বেশ আশার মাস মনে হইতাসে। যিনি দুয়া করসিলেন, “ভালবাসা তোমার ঘরে বৃষ্টি হয়ে নেমে আসুক” তার দুয়া কবুল হইসে। আমি নামাজ পরা শুরু করসি। উনি তো আমার উপর রহমত কম করেন নাই। উনার কাছে এইবার ফেরত যাই একটু।

পারে লয়ে যাও আমায়…

১০৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ১৪, ২০১৫ । ১১.৫২ পি.এম

বাংলায় ঢাকা বিমানবন্দরের ইতিহাস

৩য় এবং শেষ পর্ব

১৯৬৫ সাল থেকে PIA পূর্ব পাকিস্তান এর বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ রুট এ Sikorsky হেলিকপ্টার দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। বাংলাদেশের ভিতর এটাই ছিল প্রথম আকাশ পথে কোন এয়ারলাইন্স এর আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা। এদিকে তেজগাঁও এয়ারপোর্ট এ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ফলে এর উপর চাপ বাড়তে থাকে এবং স্বাভাবিক ভাবেই গ্রাউন্ড হেন্ডলিং, কারগো ইত্যাদি সুযোগ সুবিধা সব রকম চাহিদা পরিপূর্ণ ভাবে পুরন করতে হিমশিম খেতে থাকে।

১৯৬৬ সালে কুর্মিটোলার উত্তর দিক এর জায়গাটা ২য় বিমানবন্দর এর জন্য নির্বাচন করা হয় এবং একটি টার্মিনাল ভবন এবং রানওয়ে নির্মাণ এর জন্য ফরাসি কারিগরি সহায়তায় টেন্ডার আহবান করা হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তখনো এই রানওয়ে এবং টার্মিনাল ভবন নির্মানাধিন ছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় কিলো ফ্লাইট এবং ইন্ডিয়ান বিমান বাহিনী পাকিস্তানী বাহিনীর বিমান, রসদ ও সেনা চলাচল বন্ধের উদ্দ্যেশ্যে আকাশ পথে যেসব আক্রমণ চালায় তাতে এই নতুন বিমানবন্দর প্রজেক্ট এর অনেক জায়গা আঘাত প্রাপ্ত হয়।

স্বাধীনতার পর দেখা যায় যে এই প্রজেক্ট এর কনসাল্টেন্ট এবং নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রজেক্ট টি পরিত্যাক্ত রেখেই দেশ ত্যাগ করেছেন। এই অবস্থায় স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত ন্যায় এই বিমানবন্দর কেই দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হিসাবে গড়ে তোলা হবে। এজন্য ফ্রান্স এর Aéroports de Paris নামক প্রতিষ্ঠান কে নতুন কনসাল্টেন্ট হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়।

১৯৮০ সালে এই বিমানবন্দর টির মুল রানওয়ে এবং প্রথম টার্মিনাল ভবন টি নির্মাণ শেষ হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই বিমান বন্দর এর উদ্বোধন করেন। তখন এর নাম করন করা হয়েছিল “Dacca International Airport”

১৯৮০ সালে উদ্বোধন হলেও প্রজেক্ট এর কাজ তখনো পুরোপুরি শেষ হয় নি। পুরো প্রজেক্টটি শেষ হতে আরো তিন বছর লেগে যায় এবং ১৯৮৩ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রজেক্ট এর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে দেশের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক পটভূমি তে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান কে হত্যা করা হয়। তাই তার স্মরণে ১৯৮৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্দুস সাত্তার বিমানবন্দরটির পুনঃউদবোধন করেন এবং এর নাম করন করেন “Zia International Airport”

১৯৯২ সালে টার্মিনাল এরিয়া আরো বড় করা হয় এবং বোর্ডিং ব্রিজ এবং তার ইকুইপমেন্ট যোগ হয় এই বিমানবন্দরে।
২০১০ সালে বিমানবন্দর টির নাম পরিবর্তন করে Shahjalal International Airport রাখা হয়।

২০১২ সালে আমি এই এয়ারপোর্ট এ প্লেন স্পটিং শুরু করি। আপনি যদি আরো ডিটেইল ডাটা সহ ইনফরমেশন চান তাহলে উইকিপেডিয়ার এই পেজ https://en.wikipedia.org/wiki/Shahjalal_International_Airport টা ভিজিট করতে পারেন। ডান দিকে খেয়াল করলে কিছু বিমান এর ছবি দেখতে পারবেন যার অধিকাংশ গুলা এই অধম এর তোলা যা আমার জন্য অনেক গর্বের বিষয়।

১০৬/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ১৩, ২০১৫ । ৮.০০ পি.এম

আজকে একটা ভাল কাজ করসি। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভারসিটির গলি তে উল্টা পাশ থেইকা আশা এক্টা সি এন জির এক চাক্কা গরতে পইরা এক সাইড কাইত হয়া গেল। ভিত্রে দুই জন নানা আর নানি ছিল। তারা ভয়ে অস্থির। সবাই দেখি দাড়ায় দাড়ায় তামশা দেখে আর সি এন জি অলা কেন দেইখা চালাইলো না তা নিয়া বিজ্ঞ মতামত দ্যায়। সি এন জি দেয়াল এর দিকে কাইত হয়া যাওয়ায় দরজা খুইলা বাইর ও হইতে পারতাসে না।

আমি রিকশা থেইকা নাইমা গিয়া পিছন থেইকা ঠেলা শুরু করলাম।এইটা সিনামা বা গেঞ্জির এড হইলে এক ঠেলা তেই সি এন জি এক হাতে উঠায় ফালাইতাম। আর নাইকা দৌড় দিয়া আইসা চুমা দিত, নাইলে ভাব সাব লয়া ছেন্ডো গেঞ্জি দেখায়া কইতাম “আসল পুরুষের পছন্দ, ছেন্ডো।”

কিন্তু আফসুস। অনেক ঠেলা ঠেলি কইরাও এট্টুও লারাইতে পারলাম না। মজার জিনিষ হইল এক্টু পরে দেখি আরেক্টা ছেলে আইসা ঠেলা ঠেলি তে হাত লাগাইসে। তারপর আরেকজন দাড়িওয়ালা হুজুর। তারপর আরো লোকজন। ভিকারুন্নিসা স্কুল ছুটি হইসিল তখন। কইথিকা স্কুল ড্রেস পরা কতগুলা পিচ্চি আইসা ওরাও ঠেলা শুরু করল। আমরা সবাই মিল্লা সি এন জি টাকে ঠেইলা উঠায় দিলাম। আর সমবেত তামশা দেখক জনতা হাত তালি দিল।

ব্যাপারটা করতে পাইরা ভাল্লাগসে অনেক। কিন্তু ঘটনার এক্টু পর থেইকা প্রচন্ড ব্যাক পেইন শুরু হইসে। এখন লম্বা হয়া শুয়া শুয়া “গ্রেট এরোপ্লেন্স অফ দা ওয়ারল্ড” পড়ি। কাল্কে অফিস যাইতে পারুম কিনা বুঝতাসি না।

১০৫/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ১২, ২০১৫ । ৯.৪১ পি.এম

বাংলায় ঢাকা বিমানবন্দরের ইতিহাস।

পর্ব-২

১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর তেজগাঁও হয় পূর্ব পাকিস্থানের প্রথম সিভিল এয়ারপোর্ট। ১ম পর্বে উল্লেখিত “ওরিয়েন্ট এয়ারলাইন্স” তখন এই তেজগাঁও থেকে ডিসি থ্রি ডাকোটা বিমান দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। এই ফ্লাইট গুলোর রুট ছিল করাচি-দিল্লী-ঢাকা, ঢাকা-কলকাতা, ঢাকা-রেংগুন।

১৯৪৮ সালে তেজগাও এয়ারপোর্ট এ সরকার এর পক্ষ থেকে “ঈস্ট পাকিস্তান ফ্লায়িং ক্লাব” প্রতিষ্ঠিত হয়। উদ্দ্যেশ্য ছিল স্থানীয় তরুনদের কে বিমান চালনায় প্রশিক্ষণ দেয়া। প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য বিমান বলতে ছিল কয়েকটা Tiger Moth বিমান। প্রতি বছর পাকিস্তান এর জাতীয় দিবসে এই সব Tiger Moth ঢাকার আকাশে অনবদ্য ডিসপ্লে প্রদর্শন করত। এছাড়া বকশি বাজার এর এয়ারফোর্স এর রিক্রুটমেন্ট সেন্টার এর মাধ্যমে হাজার হাজার আবেদনকারীর মধ্য থেকে অনেক জন কে মিলিটারি ট্রান্সপোর্ট বিমানে করে ফ্রি আকাশ ভ্রমন এর স্বাদ দেয়া হতো। ঢাকার এয়ার স্পেস এর এই ঐতিহ্য কিন্তু এখনো আছে। প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বিমান বাহিনীর চৌকশ পাইলট রা এয়ার শো তে তাদের কারিশমা দেখান।

১৯৫০ সালে পাকিস্তান সরকার সিভিল এভিয়েশন এর দায়ীত্ব নেয় এবং একে পাব্লিক সেক্টর হিসাবে ঘোষনা করে। প্রতিষ্ঠিত হয় Pakistan International Airlines (PIA). যা কিনা পাকিস্তান এর জাতীয় এয়ারলাইন্স হিসাবে স্বিকৃত হয়। আরো বড় বিমান পরিচালনার জন্য তেজগাও বিমানবন্দর এর এয়ারস্ট্রিপ কে আরো লম্বা এবং চওড়া করা হয়। টারমিনাল ভবন কেও এসময় রেনোভেট করা হয়।

৭ই জুন ১৯৫৪, করাচি বিমানবন্দর থেকে তেজগাও বিমানবন্দর পর্যন্ত PIA তাদের Super Constellation বিমান দিয়ে প্রথম সরাসরি ফ্লাইট সফলতার সাথে পরিচালনা করে। কুর্মিটোলা এয়ারস্ট্রিপ তখনো পাকিস্তান বিমান বাহিনীর মালিকানায়।

১০৪/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ১১, ২০১৫ । ৮.২৯ পি.এম

বাংলায় ঢাকা বিমানবন্দরের ইতিহাস।

পর্ব-১

সাল ১৯৪১। ২য় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। মিত্র বাহিনীর সাথে সমান তালে লড়ছে জাপান। ভারতের নাগাল্যান্ড এর কোহিমা আর বার্মা তে শুরু হয়েছে আগ্রাসন। ভারতীয় বৃটিশ সরকার এই সব যুদ্ধ ক্ষেত্র কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য ঢাকার তেজগাও (ততকালিন জায়গার নাম দাইনদ্দা) এ একটি মিলিটারি বেজ এবং এয়ারস্ট্রিপ তৈরি করলেন। এয়ারস্ট্রিপ মানে হল যুদ্ধবিমান, STOL (short take off and landing) বিমান বা হাল্কা বেসরকারি বিমান ওঠানামার জন্য তৈরি করা ছোট রানওয়ে।

তেজগাও ছাড়াও ভারতীয় বৃটিশ সরকার আরো একটি এয়ারস্ট্রিপ তৈরি করলেন ঢাকার উত্তরে কুর্মিটোলা (ততকালিন নাম বালুর ঘাট) এ। তেজগাও এবং কুর্মিটোলা, দু’জায়গাতেই ফাইটার প্লেন উঠা নামা এবং এদের স্টোরেজ এ রাখার ব্যাবস্থা ছিল। অর্থ্যাৎ কেমোফ্লাজ করা হ্যাংগার এবং আন্ডার গ্রাউন্ড বাংকার ছিল।

১৯৪৩ সালেও এই এয়ারস্ট্রিপ দু’টি এক্টিভ ছিল। এই সময়কাল এ লেখা সাহিত্যে/ইতিহাস এএ ঢাকা-টংগি রেল লাইন দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় তেজগাও এয়ারস্ট্রিপ এর ফাইটার প্লেন গুলো সারি সারি দাড়িয়ে থাকার কথা পাওয়া যায়।

১৯৪৬ সাল। তেজগাও এয়ারস্ট্রিপ থেকে কলকতা বেজড ইসপাহানি গ্রুপ “ওরিয়েন্ট এয়ারলাইন্স” নামে একটা বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা শুরু করেন যাদের হোম বেজ বা ঘাটি ছিল তেজগাও এয়ারস্ট্রিপ। “ওরিয়েন্ট এয়ারলাইন্স” এর বিমান ছিল DC-3 Dacota বিমান।

মনে আছে আগের একটা লেখায় বিমান বাহিনীর ইতিহাস বলার সময় ডাকোটা বিমান এর কথা বলসিলাম? আইডিবি ভবনের উল্টা পাশে বিমান বাহিনীর যাদুঘরে DC-3 Dakota বিমান রাখা আছে এক্টা। পারলে গিয়া দেইখা আইসেন।

১০৩/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ১০, ২০১৫ । ১০.৪১ পি.এম

বিমান বন্দর আমার খুব প্রিয় জায়গা। কারন প্লেন দেখা যায়। আমার ছোট বড় মাঝারি সব বিমান বন্দর ভাল্লাগে। এমন কি খালি বিমান বন্দর ও একটা খুবি এক্সাইটিং প্লেস কারন কখন কি সারপ্রাইজ আসে বলা যায় না। আর আপনি যখন একজন প্লেন স্পটার, তখন সারপ্রাইজ আপনার কাছে একটা রেগুলার ব্যাপার। এই সারপ্রাইজড হওয়াটা তখন নেশার মত হয়া যায়। সব দিন সারপ্রাইজ আসে না। কিন্তু যখন আসে, তার রেশ টা সাইস্টেইন করে পরের বার সারপ্রাইজড হওয়ার আগ পর্যন্ত।

ঢাকায় বিমানবন্দর আছে দুই টা। তেজগাঁও পুরাতন বিমান বন্দর যার ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন কোড (ICAO Code) VGTJ আর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যার ICAO Code হইল VGHS । আমি ইচ্ছা কইরা এই আইকাও কোড এর কথাডা ফার্স্ট এ কইসি, যাতে পরে দিয়া খালি VGTJ বা VGHS কয়া চালাইয়া দিতে পারি। কোন এয়ারপোর্ট যদি ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অরগানাইজেশন দিয়া স্বীকৃত হয় তইলে তার একটা ICAO কোড থাকে।

২০১২ এর প্লেন এর ছবি তুলা শুরু করার পর আমি একটা বিরাট এমাউন্ট অফ সময় এই VGHS এর আশে পাশে দিয়া কাটাইসি। তাই এখন আমার কাশে জায়গাটা অনেক বাসা বাসা লাগে। কুরিল ফ্লাই ওভার এ উঠলে আমি সারাক্ষণ এয়ার পোর্ট এর দিকের আকাশেই তাকায় থাকি। আজ পর্যন্ত জানিনা উলটা পাশটায় কি আসে। কারন জীবনে ওইদিকে তাকাই ও নাই।

VGHS ছাড়া আমি বাংলাদেশের আর তিনটা এয়ারপোর্ট এ গেসি। যশোর বিমান বন্দর (VGJR ), চিটাগাং এয়ার পোর্ট (VGEG) আর কক্সবাজার এয়ারপোর্ট (VGCB). বাকি এয়ারপোর্ট গুলাতেও যাওনের ইচ্ছা আসে। দেখা যাউক যাইতে পারি কিনা।

VGHS নিয়া ভালবাসার কারণে মনে হইল এইটার ইতিহাস টা জানা দরকার। ইন্টারনেট এ এত ইনফরমেশন কিন্তু কোনটা ঠিক কমপ্লিট না। সুজা কইরা লেখাও না। পড়তে গিয়া মনে হইসে এই বিমানবন্দর এর ইতিহাস বাংলায় লিখা রাইখা যাওয়া খুবি দরকার।

তাই আমি VGHS এর ইতিহাস নিয়া পড়ালেখা আরম্ভ করসি আজকে থেইকা। কেমনে কি হইল, কেমনে শুরু হইল, এই সব। এই রিসার্চ এ আমার ৯০ ভাগ কাজ কইরা দিতাসেন মহান কারিব ভাই। উনি না থাকলে আমি “এ এ এয়ারপোর্ট মানে বিমান বন্দর। উউউ বিমাআআন” এই টুকু তেই শেষ হয়া যাইত । সব তথ্য আর গবেষণা উনারই করা। আমি শুদু কেমনে সুজা কইরা লেখন যায় এবং বাংলায় সেই কাজ করতাসি।

ইনশাল্লাহ আগামী কোন লেখায় VGHS এর ইতিহাস নিয়া লেখা শুরু করতে পারব। চরম মজা পাইতাসি এই ইতিহাস পইড়া।

১০২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ৯, ২০১৫ । ৮.৫৩ পি.এম

ঢাকা শহর ভর্তি খালি রিকশা আর রিকশা। মোট রিকশার সংখ্যা কত তা সিটি কর্পোরেশন নিজেও জানে না। প্রত্যেক দিন আরো যোগ হয় এই সংখ্যাটায়। কিন্তু সে উনিশশ কট কটি সাল এ রিকশা দেখতে যেরুম আসিল এহনো সেই রম ই আসে। হয়তো মাইনসের শরীর বড় হইসে তাই সিটও বড় হইসে কিন্তু এ ছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং গত ভাবে রিকশার তেমন কোন পরিবর্তন হয় নাই। এইডা ঠিক হয় নাই।

পরিবর্তন বলতে হইসে খালি কিছু চাইনিজ বেটারি চালিত রিকশা আসছে যার নাম যে আসলে কি কেউ বলতে পারে না। কেউ কয় টমটম, কেউ টুকটুক, কেউ অটো রিকশা। আর কিছু কিছু পণ্ডিত মেস্তুরি নরমাল রিকশার বডির পিছনে ব্যাটরি আর সিট এর নিচে মোটর বসাইয়া মোটরাইজড রিকশা বানাইসে দেশিয় প্রযুক্তি তে। কিন্তু এই মোটরাইজড রিকশা গুলা বানানির সময় খালি স্পিড আর ম্যানুয়াল প্যাডেল মারা কইমা মোটর দিয়া চাক্কা ঘুরবে এই ব্যাপার দুইটাই জোর দেয়া হইসে। আর কিছু চিন্তাই করা হয় নাই। খেয়াল করলে দেখবেন এইসব রিকশার ব্রেকিং সিস্টেম আগের মতই আছে। একটা প্যাডেল এ চালানো ১০ কিমি/ঘন্টায় চলা রিকশা আর আর একটা মোটরাইজড ৩০ কিমি/ঘন্টায় চলা রিকশার ব্রেকিং সিস্টেম কখনো এক হইতে পারে? ফলে যা হওয়ার তাই হয়। রিকশার ব্রেক শু খয় হইতে হইতে নাই হয়া যায় আর বেচারা রিকশাওয়ালারে স্পিড কমাইতে রোড এর ফ্রিকশন বা ঘর্ষণ এর উপরেই নীরভর করতে হয়। আবার এই রিকশাগুলা এরো ডাইনামিক ও না। ফলে যে কোন সময় উলটাইয়া যাইতে পারে টার্ন নিতে গেলে।

মনে আসে গত কাল বোয়িং ট্রিপল সেভেন এর কথা বলার সময় ভেরিয়েন্ট এর কথা বলসিলাম? আমার মনে হয় এত দিনে আমাদের রিকশার অনেক গুলা ভেরিয়েন্ট চইলা আসা উচিত ছিল। খোলা ভ্যান গাড়ি , স্কুল ভ্যান, বেকারির কাভারড ভ্যানগাড়ি এগুলারে আমি রিকশার ভেরিয়েন্ট বলতে রাজি না। বরং এগুলারে ভ্যান এর ভেরিয়েন্ট বলা যাইতে পারে।

রিকশার ভেরিয়েন্ট চিন্তা করতে গিয়া আমি নিচের গুলা ভাবতে পারসি। আমি শিউর যাদের মাথায় মস্তিষ্ক আছে তারা আরো নতুন নতুন ভেরিয়েন্ট এর আইডিয়া দিতে পারবেন।

১। এম্বুলেন্স রিকশাঃ

হঠাত জর উঠসে , লেবার পেইন উঠসে, হার্ট এটাক, এক্সিডেন্ট ? তারাতারি এম্বুলেন্স রিকশায় কইরা হাসপাতালে নেওয়া যাবে। দরকার হইলে প্রত্যেক এলাকার মসজিদ এ একটা কইরা এম্বুলেন্স রিকশা থাকবে যাতে দরকার হইলেই এলাকার লোকজন মসজিদ এ দৌড় দিয়া যাইতে পারে।

২। ফরেভার এলোন রিকশাঃ

সিঙ্গেল রাও মানুষ। পাসের সিট টা খালি দেখলে আমাদেরও কষ্ট হয়। তাই এক সিট বিশিষ্ট রিকশা লাগবে। আমি যাইতাসি একলা, ভাড়া দিতাসি দুই জন এর এইডা কিসু হইল? লোড কম হওয়ায় এই রিক্সার ভাড়াও কম হবে।

৩। সাইট সিয়িং রিকশাঃ

এই রিকশার বসার জায়গাটা হবে ট্রান্সপারেন্ট ডোম টাইপ। সান রুফ থাকবে। ইচ্ছা করলে সান রুফ খুইলা দিয়া রিকশায় ভিজতে ভিজতে যাওয়া যাবে। আবার দরকার হইলে লাগাইয়া দিয়া চারপাশ দেখতে দেখতে যাওয়া যাবে। বিদেশিদের জন্য এইটা ভাল হইব। নাইলে রিকশা সিগন্যাল থাম্নে যেমনে হামলায় পরে ফকির আর হকার রা।

৪। মালবাহি রিকশাঃ

রিকশায় মাল নেওনের তেমন যায়গা নাই। আবার ভ্যান গাড়ি তে যুইত মত বসনের যায়গা নাই। এই দুই এর মাঝা মাঝি সমাধান মালবাহি রিকশা। বসার জায়গা থাকবে আবার মাল নেওনের যায়গাও থাকবে। চালক থাকবে দুইজন যাতে চালানোর লোড বেলেন্সিং হয়।

৫। রেন্ট এ রিকশাঃ

এই গুলা দেখতে সুন্দর, স্পোরটস ডিজাইন এর হবে। এগুলারে যে কেউ ভাড়া কইরা এক “রেন্ট এ রিকশা” পয়েন্ট থেইকা অন্য “রেন্ট এ রিকশা” পয়েন্ট পর্যন্ত নিয়া যাইতে পারবে। সেলফ সার্ভিস। নিজের রিকশা নিজে চালান। সুন্দর বইলা চালাইতেও ভাল্লাগবে, মাইনসে কি মনে করল মাথায় আসবে না।

আরেকটা জিনিশ হইল, ক্যাব কোম্পানির মত রিকশা কোম্পানির লাইসেন্স ও দেওয়ার কথা চিন্তা করতে পারে কিন্তু সরকার। এই রিকশা ওয়ালা গুলা হবে ভদ্র, ট্রাফিক আইন মানা, ন্যায্য ভাড়া চাওয়া, কেয়ারিং রিকশা ওয়ালা। নিয়ম না মানলে কোম্পানিরে জরিমানা করা হবে।

যাই হোক, সব কিছুর পরেও আই লাভ রিকশা মোর দেন এনিথিং। আর আমার আম্মা যেইখানেই যায় সবার সাথে গুটুর গুটুর আলাপ কইরা ফ্রেন্ড বানায় ফেলে তো, তাই আম্মার থেইকা শিখসি যে, রিকশায় উঠলে রিকশাওয়ালকে বলতে হয়, আপনের দেশের বাড়ি কই, পরিবার কয় জন এর, ঢাকায় কই থাকেন, কত দিন ধইরা রিকশা চালান। আর নামার পর বলতে হয় থেঙ্কিউ, অনেক কষ্ট করলেন। আর সব সময় রিকশাঅলারে আপনি বলতে হয়। আপনি যত বড় হেডম ই হন, আমি যদি শুনি আপনি রিকশাঅলারে রে বলসেন, “ওই যাবি ?” , তাইলে ইউ জাস্ট লস্ট অল দা রেস্পেক্ট আই হেভ ফর ইউ।

১০১/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ৮, ২০১৫ । ১১.২১ পি.এম

আজকে একটু প্লেন এর গল্প করি। এত দারুণ সব প্লেন দুনিয়া তে । তাদের কথা কিছু তো সুজা কইরা লেইখা যাওয়া উচিত কারো। আমি কিছু কিছু কইরা ট্রাই করব সামনেও কিছু বিখ্যাত প্লেন এর সাথে পরিচয় করায় দিতে। বইলা রাখা ভাল যে আমি অনেক কিছুই জানি না, কিন্তু যত টুকু জানি তা দিয়া যদি অন্য একজন এর মধ্যে জানার আগুন টা জালায় দিতে পারি, তাইলে এক সময় সে আমার থেইকাও অনেক বেশি জানবে। এই টাই উদ্দ্যেশ্য।

আমি ফিল করসি এই গুলা জানার মধ্যে একটা অন্যরকম আনন্দ আছে। তাই সেই আনন্দময় জগত টারে আরেকজন এর সাথে পরিচয় করায় দিইতে চাইতাসি। সবার যে ভাল্লাগবো এমন কোন কথা নাই। আমি তা আশাও করি না। যার ভাল্লাগবো তার জানার আগ্রহও থাকব শুধু এই টা জানি।

আর একটা কথা বইলা রাখা ভাল যে আমি লেখার সময় প্রথমে মুল ব্যাপার টা বলব তারপর প্রচুর বেসিক টার্ম ব্যাখ্যা করতে করতে যাব। কারন আমি এমনেই পড়সি জিনিশ গুলা। পরা শুরু করসি। একটা নতুন টার্ম আসছে যা জীবনেও হুনি নাই। তখনি ওইটা জানার জন্য ঝাপ দিয়া পরি নাই। প্রথমে মুল ব্যাপার টা বুঝসি, তারপর নতুন টার্ম গুলার ডিটেইল এ ফেরত গেসি। লেখার ট্রাই করতাসি ও এমনেই।

আজকের প্লেন বোয়িং ৭৭৭।

আমি খেয়াল করসি সবাই মোটামুটি বোয়িং, এয়ারবাস এই টার্ম দুইটা জানে। একেবারেই প্লেন নিয়া ইন্টারেস্ট নাই এরম বিদেশ ফেরত মানুষ রে যখন জিজ্ঞেস করসি, কি প্লেন এ আসছেন? তখন অনেকেই জবাব দিসে, বোয়িং। আবার কেউ কেই জবাব দিসে, প্লেন এর সিট গুলা ছোট ছোট ছিল, বাস এর মত, ওইটা মনে হয় এয়ারবাস ছিল। সবার জানা থাকা উচিত যে , বোয়িং আর এয়ারবাস এই দুইটা কোন এয়ারক্র্যাফট এর টাইপ না। প্রস্তুতকারক কোম্পানি। যেমন আপনের দোস্ত যদি জিজ্ঞেস করে দোস্ত নতুন গাড়ি কি কিন্সস শুনলাম? কি গাড়ি কিনলি? আপনে ভেবাচেকা খাইয়া ভাবলেন খাইশে গাড়ির আবার রকম কি। বড় গাড়ি, ছোট গাড়ি, চুখখা গাড়ি, ভুতা গাড়ি এ তো। তার পর আমতা আমতা করতে করতে বন্ধু রে কইলে … আমমমমমম … টয়োটা গাড়ি দোস্ত।

এহন টয়োটা তো পিক আপ ট্রাক ও বানায়। তৈলে যে প্রশ্ন করসে হে কেমনে বুঝব যে এইটা টয়োটা গাড়ি মানে পিক আপ না সেডান না অন্যকিছু? সেই রকম এইডা বোইং বললে বুঝন যাইব না এইডা আসলে কি প্লেন। বোয়িং এরও অনেক মডেল এর প্লেন আসে। তার মদ্যে সর্বাধিক বিক্রিত মডেল হইল বোয়িং ৭৭৭।

বোয়িং ৭৭৭ রে অনেকে আদর কইরা আরেকটা নামে ডাকে। ট্রিপল সেভেন বা টি সেভেন। একটা বিমান ব্যখ্যা করতে তার ফিচার গুলা বলা লাগে। আর যেহেতু এখন সেই ফিচার গুলা বলব , তাই তার আগে কুনটার মানে কি বইলা নেয়া ভাল।

রেঞ্জঃ প্লেন এর ক্ষেত্রে রেঞ্জ হইল এই প্লেন এক বারে কত টুক যাইতে পারে উইদাউট এনি রিফুয়েলিং। বিভিন্ন রেঞ্জ এর প্লেন আসে। শর্ট রেঞ্জ, লঙ রেঞ্জ, এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ এরম। বোয়িং ৭৭৭ এর রেঞ্জ হইল ৯৬৯৫ থেইকা ১৭৩৭২ কিলো মিটার। এই জন্য ট্রিপল সেভেন রে লঙ রেঞ্জ/ এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ এয়ারক্রাফট হয়।

ওয়াইড বডিঃ যেই বিমান গুলায় এক এর অধিক আইল (সিট গুলার পাশে দিয়া হাটার রাস্তা) থাকে তাদের কে বলে ওয়াইড বডি এয়ারক্রাফট। টি৭৭৭ একটা ওয়াইড বডি এয়ারক্রাফট। একটা টি৭৭৭ প্রায় ৪৫১ জন পর্যন্ত যাত্রী নিয়া ফ্লাই করতে পারে।

টুইন ইঞ্জিন জেট প্লেনঃ টুইন ইঞ্জিন মানে হইল গিয়া এই পেলেন এ দুই খান ইঞ্জিন আসে আর এই ইঞ্জিন দুইটাই জেট ইঞ্জিন। সেই হিসাবে টি সেভেন একটা টুইন ইঞ্জিন জেট প্লেন। টি সেভেন এর ইঞ্জিন এর বেপারটা মজার।

ট্রিপল সেভেন ৩০০ইআর এ ব্যাবহার করা হয় জিই ৯০ ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিন এর মুখটা এত বড় যে এইটা দিয়া আরেকটা বোয়িং ৭৩৭ এর ফিউজালাজ (পেলেন এর বডি রে বলে ফিউজালাজ) ঢুইকা যাইতে পারে। আর ট্রিপল সেভেন এর ইঞ্জিন এর (জিই ৯০) এর সাউন্ড টা এত ইউনিক যে অফিসে যখন আকাশ এর দিকে তাকাইতে পারি না, তখনো জিপি হাউজের উপর দিয়া ট্রিপল সেভেন গেলে বুঝতে পারি ট্রিপল সেভেন যাইতাসে।

তারমানে দাড়াইল গিয়া ট্রিপল সেভেন একটা লঙ রেঞ্জ, ওয়াইড বডি, টুইন ইঞ্জিন জেট প্লেন। এখন মনে হয় টার্ম গুলা বুঝতে অসুবিধা হয় নাই। এই ভাবে সব এয়ার ক্রাফট কে এই টার্ম গুলা দিয়া ব্যখ্যা করা যায়। খালি সংখ্যার কম বেশি হইব।

ট্রিপল সেভেন হইল বোয়িং এর প্রথম “ফ্লাই বাই ওয়ার – Fly By Wire” প্লেন। ফ্লাই বাই ওয়ার কি? এর আগে প্লেন চালানো হইত মেকানিকালি। পেলেন এর স্টিয়ারিং বা প্লেন এর ক্ষেত্রে যেইটার নাম কন্ট্রোল কলাম, তা ধইরা টান দিলে সেইটার সাথে লাগানো মেকানিকাল জিনিষ গুলা কাজ কইরা একটা কিছু করত (রাডার, এলেরন নাড়াইতো, যা ডানার আর লেজ এর মধ্যে থাকে, আর প্লেন কে উপরে উঠতে আর নিচে নামতে আর ডাইনে বামে কাইত হয়া যাইতে হেল্প করে)। ফ্লাই বাই ওয়ার এ সব টাচ স্ক্রিন টাইপ ফিচার চইলা আসলো। গাড়ির পাওয়ার স্টিয়ারিং টাইপ এর।

এই সিস্টেম এ বিমান এর স্টেয়ারিং ধইরা টান দিলেই বিমান লারা চারা শুরু করে না। আগে কম্পিউটার এর কাছে খবর পৌছায় যে টান দেওয়া হইসে, তখন কম্পিতার ডিসিশন ন্যায়, কোন অংশে এই বার্তা পৌঁছাইতে হবে।

ট্রিপল সেভেন এখন পর্যন্ত ওয়াইড বডি দের মধ্যে সব চেয়ে বেশি সেল হওয়া এয়ার ক্র্যাফট। ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত বোইং এর কাছে মোট ১৮২৭ টা অর্ডার প্লেস করা হইসে। তার মধ্যে বোয়িং সফল ভাবে ডেলিভারি করতে পারসে ১২৬৩ টা। এর মধ্যে আবার সব চেয়ে বড় ক্রেতা হইল অ্যামিরেটস। ইনাদের মোট ১৩৮ টা বোউইং ৭৭৭ আছে।

বাংলাদেশ ও কিন্তু পিছায় নাই। আমাদের মোট ৬টা ট্রিপল সেভেন আসে। এর মধ্যে ৪ টা একেবারেই আমাদের কেনা ৭৭৭-৩০০ইআর। আর দুইটা ইজিপ্ট এয়ার থেইকা ধার নেওয়া ৭৭৭-২০০। এই দুইশ আর তিনশ মানে কি তা এখন ব্যাখ্যা করার ট্রাই করুম।

ট্রিপল সেভেন এর ভেরিয়েন্টঃ

ভেরিয়েন্ট মানে হইল গিয়া একটা বিশেষ মডেল এর বিমান এর প্রকারভেদ। যেমন কোরবানির গরু যদি মেইন মডেল হয়, তাইলে তার ভেরিয়েন্ট হইল গিয়া কালা গরু, সাদা গরু, লাল গরু, হাল্কা গুলাপি গরু ইত্যাদি। আইফোন যদি মেইন মডেল হয়, তাইলে তার ভেরিয়েন্ট হইল আইফোন টু , ত্রিজি, ফোর এস ইত্যাদি। এরম ট্রিপল সেভেন এরও ভেরিয়েন্ট আছে।

একদম প্রথমে রিলিজ পাইল Boeing 777-200, যা অপারেশন এ আসছিল ১৯৯৫ সালে।

১৯৯৭ তে অপারেশন এ আসল Boeing 777-200ER।ই আর মানে হইল এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ। মানে এই টা আগের টার চেয়ে বেশি দূর যাইতে পারতো।

১৯৯৮ সালে ট্রিপল সেভেন লম্বায় আরেকটু বাইরা গেল আর বাজারে আসল Boeing 777-300

২০০৯ এ ট্রিপল সেভেন এর কারগো ভার্শন রিলিজ পায় যার নাম Boeing 777F. এইখানে F স্ট্যান্ডস ফর Freighter. সাধারণ জনগণ যারে কারগো বলে ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্ল্ড এ সেইটার নাম ফ্রেইটার।

২০১৩ তে Boeing 777-200ER এর রেঞ্জ আরো বাড়ায়া আনা হইল Boeing 777-200LR

২০১৩ তে বোয়িং কোম্পানি দুইটা ভেরিয়েশন এর ঘোষণা দ্যায় যারা কিনা ২০২০ সালে বাজারে আসবে, এগুলা হইল 777-8X আর -9X। যেগুলারে এক লগে Boeing 777X বইলা বুঝানো হয়।

২০০৪ তে Boeing 777-300 এর রেঞ্জ বাড়ায়া রিলিজ পাইল Boeing 777-300ER. এইটা বর্তমানে সব চেয়ে জনপ্রিয় ট্রিপল সেভেন ভেরিয়েন্ট।

এছাড়া আরো দুই রকম ভেরিয়েশন আসে ট্রিপল সেভেন এর। ট্রিপল সেভেন এর বিজনেস জেট ভার্সন, যা কিনা ভি আই পি দের জন্য কনফিগার কইরা দেওয়া Boeing 777-300ER আর Boeing 777-200LR।

আরেকটা ভেরিয়েন্ট হইল Boeing 777 Tanker বা KC-777 যা কিনা অখনও অপারেশন এ আসে নাই। এইডা ইউ এস এয়ার ফোরস তাদের এয়ার টু এয়ার রিফুয়েলিং এর কাজে ব্যবহার করবে।

এই হইল ট্রিপল সেভেন এর কাহিনী। আমি খুবি সংক্ষেপে লিখসি। আর অনেক ডিটেইলও বাদ দিসি। আগ্রহী রা একটু নেট ঘাটাঘাটি কইরা আনন্দ খুইজা নিবেন বইলা ধইরা নিতাসি।