২৫৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৮, ২০১৫, ১১.৪৫ পি এম

ছেলেবেলায় আকাশের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে বারণ করা হতো ছোটদের৷ তখন কি আর অভিভাবকরা জানতেন, ঐ আকাশ দেখা, মেঘ দেখাটা আসলে একটা হবি, যার একটা রীতিমতো ইংরিজি নাম আছে: ক্লাউডস্পটিং Cloud Spotting৷

২০০৫ সালে গ্যাভিন প্রিটর-পিনি তাঁর ‘‘ক্লাউড অ্যাপ্রিসিয়েশন সোসাইটি” বা ‘মেঘ চর্চা সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করেন৷ এদের ওয়েবসাইট এর ঠিকানা https://cloudappreciationsociety.org/ । সদস্যসংখ্যা আজ পঁয়ত্রিশ হাজার৷ সমিতির কাজ হল: ‘‘ক্লাউডস্পটিং”৷


গ্যাভিন খানিকটা ঠাট্টা করেই বললেন: ‘‘এ কাজে বিশেষ সরঞ্জাম চাই: দু’টো চোখ আর একটা বিশেষ চারিত্রিক গুণ: পারিপার্শ্বিকের প্রতি নজর দেওয়ার ক্ষমতা৷ তারপর হেসে বলেন, না, আমি ঠাট্টা করছি৷ আসলে বিশেষ কিছুরই দরকার পড়ে না৷ শুধু উপলব্ধি করতে হবে যে, সৌন্দর্য আর চমকপ্রদ বস্তু খুঁজে পাওয়ার জন্যে দুনিয়া চষে বেড়ানোর দরকার নেই৷”


গ্যাভিন এর বন্ধু রন ওয়েস্টারমাস ইংল্যান্ড এর সমারসেটশায়ারের মাঠেঘাটে মেঘ দেখে বেড়ান৷ অন্যান্য ক্লাউডস্পটারদের মতো তিনিও সাথে ক্যামেরা রাখেন৷ রন-এর পরামর্শ হল: ‘‘সবসময়ে নিজের সাথে ক্যামেরা রাখবেন আর আকাশের দিকে তাকিয়ে হাঁটবেন৷ কেননা সাথে ক্যামেরা থাকলে আর আকাশের দিকে চোখ রাখলে ইন্টারেস্টিং কিছু একটা চোখে পড়তে বাধ্য৷ তারপর শুধু ক্লিক করলেই হল: চমৎকার একটা মেঘের ছবি পাওয়া যাবে৷”

একটু কল্পনাশক্তি থাকলে ক্লাউডস্পটারদের ইন্টারনেটে পোস্ট করা ছবিগুলোতে নানা অদ্ভুত জিনিস দেখতে পাওয়া যায়৷ গ্যাভিন প্রিটর-পিনি এই সব ছবি সংকলন করে একটি বইও বার করেছেন৷

বার্লিন ফ্রি ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া বিশারদ হেনিং রুস্ট-এর কাছে মেঘ দেখাটা শুধু সময় কাটানোর পন্থা নয়৷ তিনি মেঘ দেখে আবহাওয়ার পরিস্থিতি বুঝতে পারেন৷ তিনি জানেন, বিভিন্ন ধরনের মেঘ কী ভাবে তৈরি হয়।

আমরা ছোটবেলায় পড়েছিলাম কিন্তু মেঘ এর প্রকারভেদ মনে আছে? মনে না থাকলে আরেকটু মনে করায় দেই। নিচের ছবিতে মেঘ এর প্রকারভেদ গুলা উচ্চতা অনুসারে দেওয়া আছে। আমি কিছু কিছু চিনি এখন দেখলে। তবে অন্য সব কিছুর মত ক্লাউড স্পটিং ও চর্চার ব্যাপার

image

২৫৬/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ১১, ২০১৫, ১২.১৭ এ এম

***মুজিব ব্যাটারী-বাংলাদেশের প্রথম আর্টিলারী ইউনিট***

মুজিব ব্যাটারির নাম আমি প্রথম শুনি জ্যাজ কন্সার্ট এ গিয়া। কি অদ্ভুত ব্যাপার। আমার বয়স এখন ৩৩। এই ৩৩ বছরে কেউ আমারে “মুজিব ব্যাটারি” শব্দ টা পর্যন্ত বলে নাই। ঠিক যেমন কেউ বলে নাই মুক্তিযুদ্ধে আমাদের একটা এয়ার ফোর্স ও ছিল। তিনটা বিমান এর খাটি বাংলাদেশি এয়ার ফোর্স ইউনিট, যারা আকাশ পথে মুক্তিযুদ্ধ করসে। যাদের নাম ছিল “কিলো ফ্লাইট”। “কিলো ফ্লাইট” নিয়া এর আগে লিখসি অনেক গুলা নোট।

যাই হোক, মুজিব ব্যাটারির কাহিনী বলি। জ্যাজ ফেস্টিভাল হইতাসিল আর্মি মিউজিয়াম এ। গেট খুলবে ৬ টায়, আমি আর অ ৫ টায় গিয়া বইসা আসি উৎসাহের চোটে। এদিক সেদিক হাটা হাটি করতে করতে মিউজিয়াম এর বিল্ডিং এর দিকে গেলাম। দেখি উপরে লেখা “মুজিব-ব্যাটারি কর্নার”। আমি ভাবলাম, ব্যাটারি আবার দেখনের কি আসে। আমি যে কত বেকুব তা একটু পরেই বুঝতে পারলাম। ওই দিন খালি দেইখা আসছি। আজকে গুগল কইরা যা পাইলাম তা এইখানে তুইলা দিলাম।

আমার মত কেউ যদি প্রথম বার এর মত মুজিব ব্যাটারি সম্পর্কে এই লেখা পইড়া জানতে পারে তাইলেই এই লেখা স্বার্থক হইসে বইলা মনে করুম।

রনাঙ্গনের বিধাতা বলা হয় আর্টিলারী বা ভারী অস্ত্র সম্বলিত ইউনিটকে। মুক্তিযুদ্ধের মত একটি ফুল ফেজ যুদ্ধে আর্টিলারীর প্রয়োজনীয়তা ছিল আপরিসীম।তাই ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই ৬টি কামান নিয়ে ভারতের কোনাবান অঞ্চলে প্রথম প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারি ইউনিট – মুজিব ব্যাটারি।

১৯৭১ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি এই কামান মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আসে। ৯ আগস্ট ২ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে এই কামান ব্যবহারের বিষয়ে চিঠি লেখেন।

বিডি/০০২২/জি স্মারক নম্বরের ওই চিঠিতে মেজর খালেদ মোশাররফ জেনারেল ওসমানীকে লেখেন,

“আমাদের ছেলেরা ৩ দশমিক ৭ ইঞ্চি মাউন্টেন গানের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে। ১০ আগস্ট এই কামান উদ্বোধনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আমি এর নাম দিয়েছি ‘মুজিব ব্যাটারি’। আমি ইতিমধ্যে এই কামান তত্ত্বাবধানের জন্য দুজন অফিসারকে নিযুক্ত করেছি। ১০ আগস্ট থেকে সম্পূর্ণ আমাদের তত্ত্বাবধানে, আমাদের অফিসার ও সৈনিকদের দ্বারা এই ব্যাটারি পরিচালিত হবে।”

যে দুজন অফিসার এই কামান তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পান, তারা হলেন ক্যাপ্টেন আব্দুল আজিজ পাশা ও সেকেন্ড লেফটেনেন্ট কাইয়ূম।

জন্মের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই মুজিব ব্যাটারীর কামান গর্জে ওঠে এবং সাফল্যজনকভাবে রণাঙ্গনে শত্রুকে ধ্বংস করার কাজে নিয়োজিত হয়। মুক্তিযুদ্ধকালে এ ইউনিটটি কাইয়ুমপুর, কসবা, সালদানদী, আখাউড়া, নাজিরহাট ইত্যাদি উলেস্নখযোগ্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে লক্ষ্যভেদী ফায়ারের মাধ্যমে মুক্তিবাহিনীর বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।

সেই ৬টি কামানের মধ্যে ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা ‘মুজিব ব্যাটারি’ নামের ২টি কামানকে পুনরায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে উপহার হিসেবে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী গত ২১ জুন ২০১১ সালে।

মুজিব ব্যাটারির কামান গুলো দেখা যাবে, বিজয় সরনীর কোনায় যে আর্মি মিউজিয়াম টা আছে সেটার গেট দিয়ে ভিতরে ঢুক্লে মাঠ এর ওই পারে একটা দো তালা বিল্ডিং আছে। এই বিল্ডিং এর নিচ তালায় ডান পাশেই আছে “মুজিব ব্যাটারি” কর্নার যেখানে “মুজিব ব্যাটারি” এর ব্যবহার করা কিছু কামান।

আমি এক্টা কামান এর মুখে হাত দিয়া হুদাই দাঁড়ায় ছিলাম কিছুক্ষণ। এক মিলিটারি লুক আইসা ভুরু কুচকায় লুক দিতে নিসিল আমি তারাতারি ডরে আয়া পরসি। এই কামান পাকি মারসে, এই কামান মুক্তিযুদ্ধ দেখসে, কি দুর্দান্ত ব্যাপার স্যাপার। এই যাদুঘর এ প্রবেশ ফি নাই। ফ্রি। সবার একবার হইলেও দেইখা আসা উচিত।

২৫৫/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৯, ২০১৫, ১১.৪৯ পি এম

আজকে আম্মাকে কেবিন এ দিসে। কালকে ইনশাল্লাহ রিলিজ দিয়া দিবে। আম্মা ভাল আসে এখন। আমি দুপুরে যাইতে পারি নাই অফিসের কাজ এর চাপের কারনে। অফিসের পর সাতটার দিকে গেসিলাম । তখন আবার মহান রাশা ফুন্দিসে। অয় আইসিল এপোলর নিচে। অরে নিয়া উপ্রে গেলাম আম্মার কেবিনে। আম্মা অরে দেইখা অনেক খুশি হইসে। আম্মা বাবা আর রাশা মিলা অনেক আড্ডা উড্ডা মারলো তারপর আমি রাশা রে আগায়া দিতে নিচে নাম্লাম।

এই সময় একটা মজা হইসে। রাশা ওয়াশ রুমে গেসিল আর আমি বাইরে দারায়া মুবাইল গুতাইতাসিলাম। আমার পাশেই আরেক আপায় বইসা ফোন এ কথা বলতাসিল। আমি অত এটেনশন দেই নাই কিন্তু আপায় এত জোরে জোরে কথা বলতাসিল যে নিচের লাইন গুলা কানে আস্লো আর নগদে ভিম্রি খায়া উল্টায়া পরতাম আরেকটু হইলে। ওই পাশ থেইকা কি বলসে তো শুনি নাই, এই পাশ থেইকা যা বলসে তা ছিল এমন,

– আরে তুই এত ভয় পাইতেসিস ক্যান

– শুধু তো সেক্স চেঞ্জ এরই ব্যাপার

– তুই শুধু যাবি যা করার ওরাই করবে

– তোর কিছু করা লাগবে না, ওরাই কাইটা মেলটা কে ফিমেল বানায় দিবে

– না আমি চেক করে দেখসি, মেল আসে এখনো।

– দুই ঘন্টা লাগবে বড়জোর

– তারপর বাসায় আইসা রেস্ট নিস

আমার তো ভয়ে বড় বড় হয়া গেসিল (চোখ)। কি ভয়ংকর ব্যাপার স্যাপার। বাংলাদেশ এত আগায় গেসে। হতাশা গ্রস্ত আপারা সেক্স চেঞ্জ কইরা ব্যাডা হওয়া যাইতাসে। তাইলে যুবক ও বিবাহিত ভাই দের কি উপায় হবে। আমি ভাবতাসিলাম আচ্ছা এ আবার “স্বেচ্ছায় সেক্স চেঞ্জ” টাইপ এর গ্রুপ এর সদস্য না তো। ওই দিন আমারে কুন হালায় যানি “স্বেচ্ছায় কিডনি দান” গ্রুপ এ এড কইরা দিসে। আমি ডরে তারাতারি আন্সাবস্ক্রাইব কইরা দিসি। যাউকগা ভাবলাম সেক্স চেঞ্জ টাই কি হাল জামানার কুল থিং টু ডু কিনা।

তবে সকল আশার চিনি তে পানি ঢাইলা দিল, সেই আপার উচ্চারিত শেষ কথা,

“ আমি বুঝি না সেক্স চেঞ্জ ত একটা সামান্য ব্যাপার। এইখানে মেল কেটে ফিমেল বানাইতে ক্যান পাস্পোর্ট অফিস পর্যন্ত যাওয়া লাগবে ক্যান”

হুয়াআ আ আ আট ! পাস্ফুট অপিশ ! আমি আরো কত কিছু ভাইবা ফালাইলাম।

২৫৪/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৮, ২০১৫, ১১.২১ পি এম

আজকে সকালে আম্মার হার্ট এ স্টেন্ট পরানো হইসে । বাম পাশের অলিন্দে একটা ব্লক ছিল, আপাতত সেইটাকে সাইজ করা হইসে। এখন আম্মা পোস্ট অপারেটিভ অব্জার্ভেশন এ আসে। কালকে ইনশাল্লাহ কেবিন এ দিবে আর পরশু রিলিজ।

এই খানে দিনে দুইবার ঢুক্তে দ্যায়। একবার সকালে। তখন বাবা গেসিল। আর আরেকবা সন্ধ্যায়। আমি গেসিলাম। আম্মা অনেক ভয় পাইসিল অপারেশন এর আগে, এখন একটু শান্ত হইসে। আমি আম্মাকে জিজ্ঞেস করলাম আম্মা কেমন লাগে? আম্মা বলসে খুব হালকা লাগতাসে, বুকের মদ্ধে রক্ত চলাচল করতাসে সুন্দর কইরা, টের পাইতাসি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন অসুবিধা হইতাসে থাকতে? আম্মা বলল, এক বেড পরের এক বুড়া লোক সারাক্ষন নিজে নিজে কথা বলে। ঘুমাইতে পারি না আওয়াজ এ। আমি দেখলাম সত্যিই কথা বলে লোক্টা নিজে নিজে। তাও আস্তে আস্তে না। জুরে জুরে। আমি গিয়া বল্ললাম, আঙ্ককেল একটু আসতে কথা বলেন, আমার আম্মার ঘুমাইতে প্রব্লেম হইতাসে। লোক্টা তখন কিছু বলে নাই। আবার আম্মার কাছে চইলা আসার পর শুনি চিল্লা চিল্লি লাগায় দিসে,

“ হু ইজ হি? সে একজন ভিজিটর হওয়া আমাকে উপদেশ দিতে আসে? সে জানে আমি কে? আমি একজন ফ্রিডম ফাইটার। আমি এই দেশ স্বাধীন করসি। তার দাদার বয়স কত? আমি তার দাদার চেয়েও বেশি বয়েস। আমাকে সে উপদেশ দিতে আসে?”

আম্মা বলল, যাও গিয়া সরি বইলা বল যে আমি আমার আম্মার জন্য বলসি। আমি যাই নাই। আমি ক্যান সরি বলব। উনি মুক্তিযোদ্ধা হইতেই পারেন, তার জন্য সকল শ্রদ্ধা । কিন্তু এই সব কথা বইলা কি উনি নিজেরে আরো হাল্কা করলেন না ? আম্মা যেই কারণে যাইতে বলসে, আমি সেই কারণেই যাই নাই। আমি ক্যান সরি বলব? আমি আমার আম্মার জন্য বলসি।

রিয়েকশন ফিল করা এক জিনিশ আর রিয়েকশন প্রকাশ করা আরেক জিনিশ। আমার একটা জিনিশ ভাল নাই লাগতে পারে। তাই বইলা সেইটা প্রকাশ কইরা আমার তো নিজেকে তার লেভেলে নামায়া আনার দরকার নাই। ধরেন আপ্নের এক্স ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখলো, “আল্লাহর কাছে হাজার শোকর যে আমি আর তার সাথে নাই”। পইড়া আপনার মনে হইল, এত বড় সাহস। আজকে ওরে ভাইঙ্গা লামু, চুইরা লামু টাইপ কিছু এক্টা। কিন্তু তাতে আপ্নের আর তার মধ্যে পার্থক্য কি থাক্লো।

সে স্টাটাস লিখা টিখা খুব মনে মনে বাশ দিসে ভাইবা আহলাদিত। হোক আহলাদিত। আপ্নে রিয়েকশন দেখায়া তার জবাব দেয়ার তো দরকার নাই।

কোন রিয়েকশন না দেখানো টাই আসল পরীক্ষা।

২৫৩/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৮, ২০১৫ ১.১৯ এ এম

আজকে জ্যাজ ফেস্টিভাল এর শেষ দিন ছিল। ফাইনালি আমি আর মহান রাশা এক সাথে কন্সার্ট দেখতে যাইতে পারসি। বেচারা রাশা ফুড পয়জনিং এ দুই দিন বাসায় পইড়া ছিল। তাই প্রথম দুই দিন যাইতে পারে নাই। ওর উপর দিয়া অনেক ঝড় ঝাপটা যাইতাসে। ফাশ্টে ঠ্যাং এ মুচুরা খাইলো বাসায় পইড়া থাক্লো এক মাশ। এহন যহন এট্টু ক্রাচ ছাড়া হাটা চলা করতাসে তহন আবার এই ফুড পয়জনিং। অরে একটা তাবিজ টাবিজ কিসু বাইন্দা দিতে হইব কোমরে। লগে একটা ঝুন ঝুনিও বাইন্দা দিত হইব। যাতে লারা ছারা করলে ঝেন ঝেন শব্দ হয়।

ঝেঝ এন্ড ভুলুজ ফেস্টিভাল ভালাই লাগসে। Soulmate বইলা একটা শিলং এর ব্যান্ড আসছিল। ভোকাল এক মহিলা। কাপাইসে পুরা। সে এপলজাইস করসে যে তার গলা ভাঙ্গা তাই ঠিক মত গাইতে পারতাসে না। কিন্তু এই ভাঙ্গা গলা লয়াও সে যা গাইল, এক্কেরে শরীরের লুম্বা উম্বা খারায়া গেছে গা।

এর পর মঞ্চে আসে একটা ব্রাজিলিয়ান জ্যাজ ব্যান্ড। আমার মনে ময় আমার জ্যাজ শোনার কান টা ঠিক তৈরি হয় নাই। ব্লুজ তাও ধরতে পারি। জ্যাজ যে কই থিকা কই যায়গিয়া ঠাহর করতে পারি না। আমরা তাই হাটা হাটি করতাসিলাম । অনেক খাওন দাওন আর কফির দুকান খুলসে। আমরা Sbarro তে পিজ্জা খাইলাম, Live Kitchen এর বারগার খাইলাম আর নর্থ এন্ড এর কফি খাইলাম। অনেক পরিচিত লোকজন এর লগে দেখা হইসে। গতকাল ব্লুজ ব্রাদারস এর সাথে কাপাইলো যে মেয়েটা, কাশফিয়া, সে আবার রাশার পরিচিত। তার লগে দেখা হইসে, আড্ডা উড্ডা হইসে অনেক খন। কাশফিয়া বলসে, ইথার ভাই, আমি আপ্নের লেখা অনেক আগে থেইকা ফলো করি। ইউ আর সো ফানি। আমি তো খুশি তে পারলে তখনি বিশ্ব দন্ত প্রদর্শনী শুরু কইরা দেই। কিন্তু পরে ডরায়া যাইতে পারে লুকজন, তাই আর ক্যালাইনাই।

আমাদের সাথে আর্টসেল এর এরশাদ ভাই এর সাথে দেখা হইসে। উনি কইল, ব্রাজিলিয়ান জ্যাজ ব্যান্ড যে কি বাজাইলো, কিছুই তো বুঝলাম না। শুইনা শান্তি পাইসি। আহা। এরশাদ ভাই ই যদি না বুঝে তাইলে আমি কোন তুচ্ছাতিতুচ্ছ ধুল পরিমান।

এরপর মঞ্ছে আসেন এ বি ব্লুজ। আউয়ুব বাচ্চু এর ব্লুজ প্রজেক্ট। উনার মিউজিক নিয়া তো আমার বলার মত স্পরধা করা উচিত না। তবে উনার বেজিস্ট স্বপন ভাই রে দেইখা খুশি লাগসে। স্বপন ভাই আমার ফ্রেন্ড লিস্ট এ আসে ফেসবুক এর। মনে হইতাসিল এই যে এ এ , স্ব প অ অ অ ন ভ্যা আ আ আ ই আমি এখানে এ এ এ বইলা হাত পাও মাথা সব নারি। কিন্তু এত দুড় থেইকা আমারে দেখা পসিবল না , বিরাট আফসুস। এরপর থিকা টচ লাইট লয়া যামু। যার দ্রিশটি আকর্ষণ করা লাগবো তার চোখ বরাবর টচ মারুম। না দেইক্কা যাবি কই।

এরপর আমরা আয়া পরসি। আর দেখতে ইচ্ছা করতাসিল না। রাশা আমারে জিজ্ঞেস করসে ব্লুজ এর লিরিক্স বাংলায় লেখা পসিবল কিনা। কারন অনেক কিছু ভাব সাব ওলা ইংলিশ আছে যেগুলা ব্লুজ এ খুব ভাল যায়, কিন্তু বাংলা করলে ঠিক যুইতের হইব না। রাশা কইল এই যে বি বি কিং এর দা থ্রিল ইজ গন গান টার কথা ধর। এইটা বাংলা করলে কি হইব? আমি কইলাম, “মজা গেসে গা”। রাশা খুবি বিরক্ত। ব্লুজ নিয়া ফাইজলামি!

সে আমারে ইগ্নোর কইরা কইলা, তারপর ধর “ওন্ট ইউ গিভ মি ইওর লাভ বেবি” এইটার ফিল ওলা বাংলা কি করা সমভব? আমি কইলাম সম্ভব তো। এইটার বাংলা হইব, “ভালবাসা দিবি কিনা বল”।

রাশা অধিক শোকে নীল রঙ এর পাথর হয়া গেল।

২৫২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৭, ২০১৫, ১.৩২ এ এম

এতক্ষণ একটা ভিডু করসি তাই লিখতে আসতে দেরি হইসে। বিটলস এর “হেই জুড”। সেরম বেসুরা গাইসি আর লগে ভুল ভাল লিরিক্স। মাঝখান দিয়া ক্যাসপার আইসা মুবাইল ফালায় দিসে থাবা মাইরা । খুব কিছুই হয় নাই ভাব কইরা আবার বাজানি শুরু করসি। আমার গলা ক্যান এট্টু ভাল হইল না, কেনু কেনু কেনু।

আজকে জ্যাজ ফেস্টিভাল এ গেসিলাম। ভালা লাগসে। দুই টা দল এর পারফরমেন্স দেইখা আইসা পরসি। আজকে ছিল ডে টু। প্রথমে স্টেজ এ আসলো ফ্রান্স এর Florian Antier আর বাংলাদেশ এর Razef Khan এর ডুয়ো। তারা দুই জন ই ইয় ভুমা সাইজ এর দুইডা চেলো নিয়া উঠসিল। চেলো দিয়া যে এত কিসু বাজানি যায় তা আগে ইউটিউব এ দেখলেও লাইভ এই পরথম দেখলাম। আর বাংলাদেশের কেউ চেলো বাজায় এইটা তো দেইখাই খুশি হয়া গেসি।

তারা শুরু করসে আমার অনেক প্রিয় একটা গান AC/DC এর Thunderstruck দিয়া। এরপর মাইকেল জ্যাকসন এর স্মুথ ক্রিমিনাল এর চেলো ভার্শন, আরেকটা কি জানি “নাম ভুইলা গেসি” গান গাইল। উনারা শেষ করলো নিরভানা এর স্মেলস লাইক টিম স্পিরিট দিয়া। অনেক ভাল্লাগসে। শো এর পর উনাগো লগে গিয়া হাত মিলাইসি আর ফটুক ও তুলসি।

এরপর মঞ্ছে আসেন The Blues Brothers. আমার ওদের অনেক ভাল্লাগে। তিনটা পরিচিত মানুষ আছে এই ব্যান্ড এ। ড্রামার পান্থ কানাই ভাই, গিটারিস্ট দিপ্ত ভাই আর ভোকাল কাশফিয়া। আমি দিপ্ত ভাই রে স্টেজ এ দেইখাই, এইযে এ এ এ দিপ্ত ভ্যা আ আ আই, আমি এখানে, দি ই ইপ তো ভ্যা আ আ ই বইল্লা চিল্লান দিসি। আফসুস, এত দূর থেইকা আমারে দেখার কথা না। Blues Brothers শুরু করসে বি বি কিং এর Thrill is Gone দিয়া। কাশফিয়া এর গলার যেই রেঞ্জ। আজকে সে কাপায় ফালাইসে সব কিছু গান গায়া।

বাংলাদেশে কত ডায়নামিক মিউজিশিয়ান্স আসতাসে এখন। ভাবতেই কত ভাল্লাগে যে আমি বাংলাদেশ এর মিউজিক সিন এর ট্রান্সফরমেশনটা একদম কাছা কাছি থেইকা দেখতাসি। এখন পুরা ইন্ডাস্ট্রি ইজ মুভিং ইন্টু ডিজিটাল মিউজিক। শুধু রক না, ব্লুজ আর জ্যাজ শোনার মত কান ও আমাদের তৈরি হইতাসে। কি জোস ব্যাপার শ্যাপার।

ভবিস্যত এ আমরা পাতাল রেল স্টেশন এ বিশাল চেলো নিয়া হন্ত দন্ত হওয়া হাইটা যাওয়া চেলো প্লেয়ার দেখবো, স্কুল এর মাঠে ভায়োলিন বাজানো পিচ্চি দের দেখবো, স্কেক্সোফোন হাতে নিতেই মেয়েরা দলে দলে ক্রাশ খায়া পইরা যায় এরকম ছেলেদের দেখবো। আহা, দাত পইরা যাইবো হয়তো, চোখেও ঠিক মত দেখুম না, কিন্তু কান ঠিক ই মনে করায় দিব, অনেক অনেক দিন আগে আমরা মাঠে বইসা ব্লুজ আর জ্যাজ শুন্সিলাম খোলা আকাশের নিচে।

কালকে শেষ দিন জ্যাজ আর ব্লুজ ফেস্টিভাল এর। কালকে আবার যামু ইনশাল্লাহ।

২৫১/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৫, ২০১৫, ১১.৪০ পি এম

আজকে জ্যাজ ফেস্টিভাল এর প্রথম দিন ছিল। আমার আর রাশার যাওয়ার কথা ছিল। আমরা যাই নাই। মহান রাশার ফুড পয়জনিং হইসে। তাই সে শয্যাশায়ী। আর আমি ব্যস্ত ছিলাম আম্মাকে নিয়া। আম্মাকে রিলিজ দিয়া দিসে আজকে। ওরা যখন এপলো থেইকা বাসার উদ্দেশ্যে রউনা দিসে তখন বাজে সন্ধ্যা ৭ টা। তাই আমার আর একা একা জ্যাজ ফেস্টিভাল দেখতে যাইতে ইচ্ছা করলো না। কাল্কেও আসে। কাইল্কা যামুনে যদি রাশা যাইতে পারে।

আজকে অনেক দিন পর লন্ডন পার্ক এ সকালের নাস্তা খাইতে গেসিলাম। আজিব ব্যাপার হইল ওরা আমারে মনে রাখসে। ওয়াটার বয় পিচ্চি টা বড় হয়া গেসে। আমারে আইশা জিজ্ঞেস করসে মামা ভাল আসেন? আর আসেন না যে এদিকে?

এই টুকু লেখার পর মনে হইসে আর কি লিখব। সারাদিন তো লেখা শেষ। তারপর মনে হইল অনেক দিন তো উঠাই না নতুন কিছু। উকুলেলে টা নিয়া একটা নতুন গান উঠাই। একটা নতুন গান উঠানো একটা টাইম মেশিন এর মত। শুরু করলে কই যে যায়গা সময়। ঠুস ঠাস মাঝরাত হয়া যায়। এই লেখার প্রথম প্যারা আর তৃতীয় প্যারার মধ্যে তাই দূরত্ব ২ ঘন্টার। এই দুই ঘন্টা আমি একটা নতুন গান উঠাইসি। যদি লিরিক্স ঠিক ঠাক মুখস্থ হয় তাইলে হয়ত একদিন ভিডূ কইরা পোস্ট ও করব। আনন্দ লাগতাসে গান টা উঠাইতে। আই উইশ আমার গলা ভাল হইত আর যুইত মত গাইতে পারতাম।

আম্মার অবস্থা এখন বেটার। ডাক্তার বলতে বাসায় নিয়া যাইতে। রবিবার আবার আসতে হবে । হার্ট এ একটা অল্প সল্প ব্লক আসে। যেইটা নিয়া আম্মা অনেক টেনশন করে। সাইকোলজিকাল কারণে আরো বেশি অসুস্থ হয়া যায়। তাই রবিবার স্টেন্ট পরানোর জন্য ভর্তি করানো হবে ইনশাল্লাহ। আজকে ছুটি নিসিলাম অফিসে। মনে হয় রবিবার এও নিতে হবে।

২৫০/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৫, ২০১৫

আম্মার শরীর টা অনেক খারাপ করসিল সন্ধ্যা বেলা। কয়েকদিন আগে হার্ট এ ছোট একটা ব্লক পাওয়া গেসে তাই সারাক্ষণ অনেক টেনশন এ থাকতে হয়। বাসায় শুধু ছোট খালা ছাড়া কেউ ছিল না। বাবা নামাজে গেসিল। আমি অফিস থেইকা এম্বুল্যান্স নিয়া যাইতে যাইতে যদি দেরি হইয়া যায়? তাই ওদের কে যত তাড়াতাড়ি পারে একটা ট্যাক্সি/সি এন জি কইরা আইসা পরতে বললাম এপোলো তে।

এপলো তে ইমারজেন্সি তে ভর্তি করসি আমরা তাড়াতাড়ি। ইমারজেন্সি এত অদ্ভুত একটা জায়গা। সবার মুখ থম্থমে তারমধ্যে ডাক্তার আর নার্স দের প্রফেসনাল ট্রেনিং এর কারণে শান্ত থাকা কেমন ভয় লাগ ভিতরে। আম্মার পাশের বেড এ একটা লোক আসলো সাথে তার ওয়াইফ। বিকালে হাটতে গিয়া সেন্সলেন্স হওয়া গেসে, এখন পালস পাওয়া যাইতাসে না। দাড়ায়া দাড়ায়া দেখলাম কিভাবে মেশিন দিয়া পাম্প কইরা, হাত দিয়া পাম্প কইরা ডাক্তার রা একটা মানুষের বাঁচার জন্য যুদ্ধ করতাসে। লোক্টা মারা গেল একদম চোখের সামনে আমার।

তারপর থেইকা আম্মার পাশ থেইকা একইঞ্চি নরি নাই। এখন আম্মার অবস্থা স্টেবল। উনাকে ইমারজেন্সি বিভাগ থেইকা রিলিজ দিয়া দিসে।এখন সি সি ইউ তে আছেন। ডাক্তার বলসে ভয় এর কিছু নাই আজকে অব্জার্বেশন এ রাইখা কালকে ছাইরা দিবে ইনশাল্লাহ।

২৪৯/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৪, ২০১৫

অতি প্রাকৃত প্রকৃতি

আসগর আলি মোল্লা বাড়িতে ফিরেছেন রাত দশটায়। ঘরে ঢোকার আগে তাকে ইদ্রিসকে মাছ সহ হাতে নাতে ধরার খবর দেয়া হয়েছে। তিনি ইদ্রিস কে গাছ থেকে খুলে বাইরের বাংলা ঘরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অন্দর মহলে ঢুকে গেছেন। বাংলা ঘরে কেউ থাকে না। মাঝে মাঝে অতিথি এলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। অন্যান্য সময় এই ঘর ব্যবহার করা হয় শুকনো জ্বালানি আর পাটখরি রাখার জন্যে।

দু ঘন্টা পর তাকে দেখা গেল ইদ্রিস এর সামনে বসে থাকতে। ইদ্রিস এর এক চোখ প্রায় বুজে এসেছে মোল্লা ভাই দের কারো এক জন এর বেমক্কা মার এর কারণে। আরেকটা চোখ দিয়ে সে তাকিয়ে আছে আসগর আলি মোল্লার চোখ এর দিকে।আসগর আলীও চোখ নামিয়ে নেন নি। শুন্য থেকে কোটিপতি হওয়া এই ধুর্ত বৃদ্ধ এই সব দৃষ্টির পরীক্ষা পার করেই এত দূর উঠে আসতে পেরেছেন।

অন্যদিকে আসগর আলী মোল্লা ভাবছিলেন সম্পূর্ন ভিন্ন কথা। তিনি তার পালক ছেলেদের থেকে ইদ্রিস এর মাছ ধরা সম্পর্কে যা শুনেছেন তাতে তার মনে হয়েছিল মোল্লা ভাইয়েরা বলার সময় অনেক রঙ মাখিয়েছে মূল ঘটনার সাথে। গ্রামে খুব বেশি হয় এটা। পানি নেয়ার সময় কলসি ডুবে গেছে এই গল্প মুখে মুখে ঘুরে শেষ মেষ হয়ে যায় পুকুর থেকে অনিন্দ্য সুন্দরি এক কলসি কন্যা উঠে আসে, তারা জলকলী করার সময় গল্পের বক্তা দেখে ফেলায় তারা তারি আবার পানির নিচে ফিরে যায়। কিন্তু ইদ্রিস এর সাথে একটা কোথাও না বলে শুধু চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি সাথে সাথে বুঝতে পারেন তার ছেলেরা তাকে বাড়িয়ে বলেনি। তারা যা যা বলেছে এই লোক এর পক্ষে সব ই সম্ভব। তিনি বুঝতে পারলেন তিনি কিছুটা ভয় ও পেয়েছেন।

কিন্তু তা ইদ্রিস কে বুঝতে দেয়া যাবে না কোনভাবেই। তিনি খুবি শান্ত গলায় কিন্তু আদেশ করার সুরে ইদ্রিস এর সাথে কথোপকথোন শুরু করলেন।

– তাইলে তুই ই ইদ্রিস চোরা

>> জি না আমি ইদ্রিস। শুধু ইদ্রিস

– এহ, চুরি করসস আবার ভাব মারাও? আমার বাড়ির মধ্যে ঢুকসস কোন সাহসে?

>> আপনার পোলাপাইন ধরে আনসে। আমি ঢুক্তে চাই নাই

– তা তো আনবেই। কবে থেইকা এই লাইন এ? শুধু দিনের বেলাতেই চুরি করস? না রাতেও?

>> আমি চুরি করি না। আমি চোর না।

– চোপ হারামজাদা। মাছ সহ ধরা খাইসস। আবার বলস চোর না।

এরপর এর উত্তর টা ইদ্রিস খুবি শান্ত গলায় দিল। কিন্তু আসগর আলী মোল্লা বুঝতে পারলেন তার শিরদাড়া বেয়ে কি যেন একটা ঠান্ডা কিছু নেমে গেল। তিনি মনে মনে আয়তুল কুরসি পরে আবার নিজের অবস্থান টাকে আরেকটু শক্ত করার চেষ্টা করলেন।

– তুই কি পাগল না ভং ধরসস? কি বলস এগুলা। মস্করা করলে তোর এমন অবস্থা করব , তখন বুঝবি আমার সাথে রসিকতা করা কত বড় ভুল ছিল। আবার বল কি বলতে চাচ্ছিস?

>> আমি আপনার পুকুর থেকে মাছ চুরি করি নাই। আমি শুধু পুকুর পারে দাড়ায়ে ডাক দিসি, তারপর ওরা নিজেরাই আমার কাছে চলে আসছে।

আসগর আলী মোল্লা জানেন ইদ্রিস যা বলছে তা সত্য । তার ছেলেরা পাশেই ছিল। তারা দেখেছে। কিন্তু এও যদি সত্য বলে মেনে নিতে হয় তাহলে পুরো পৃথিবীর হিসাব নিকাশেই গোলমাল লেগে যাবে। আজগর আলী মোল্লা ঠিক করলেন ইদ্রিস কে হাত ছাড়া করা যাবেনা। ইদ্রিস নিজেও মনে হয় জানে না তার মুল্য কতটুকু।

২৪৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ২, ২০১৫

অতি প্রাকৃত প্রকৃতি

১.

ইদ্রিস তাকিয়ে ছিল মাটির দিকে। তার আধ ভেজা লুঙ্গি থেকে ফোটায় ফোটায় পানি পরে মিশে যাচ্ছিল মাটির সাথে। পানির একটা ছোট ধারা একে বেকে এগিয়ে যাচ্ছিল পাশের ঘাস জন্মানো জায়গা টার দিকে। ইদ্রিস এর মনে হচ্ছিল ঘাস গুলো মনে হয় অনেক তৃষ্ণার্ত। তাই পানি কে ডাকছে আর পানিও তার খয়ে যাওয়া শরীর নিয়ে ছুটে যেতে চাচ্ছে ঘাসের কাছে। কিন্তু শেষ মেষ পৌছাতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। কারন তার আগেই তাকে খেয়ে নিচ্ছে মাটি। অল্প ভেজা মাটি একটা বৃষ্টি বৃষ্টি গন্ধের ভ্রান্তি তৈরি করছে ইদ্রিস এর মনে। কিন্তু ইদ্রিস এখন বৃষ্টির কথা ভাবতে চাচ্ছে না। তাহলে ওর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভেজা ছাড়া কিছু করার থাকবে না।

একটু পরেই সন্ধ্যা নামবে। বিকেল বেলার বৃষ্টি সদ্য প্রেমে পরা বা প্রেম থেকে বের হওয়া মানুষের কাছে খুব অর্থপূর্ন হলেও ইদ্রিসের জন্য এই মুহুর্তে আবেগি কিছু ভাবা একটু কঠিন ই। বিশেষ করে তাকে যখন কোমরের সাথে শক্ত দড়ি দিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখা হয়েছে।

পরিকল্পনা টা খুব সহজ সরল ছিল। তিন দিন জরে ভোগা ইদ্রিস দুপুরে জ্বর থেকে উঠে তার ভাঙ্গা ঘরের বাইরে ছায়ায় এসে বসে। এই তিন দিন কাজ এ যেতে পারে নি তাই ঘরে চুলাও জলেনি। খিদে মুখের মধ্যে আছে শুধু সে আর তার মা। অন্ধ মা শুধু তার মাথার পাশে বসে দোয়াই করে গেছে আর কোথাও যেতে পারে নি। ইদ্রিস বুঝলো তার দ্রুত কিছু টাকা যোগার করে আজকের জন্য খাবার এর ব্যাবস্থা করতে হবে। কাল হয়তো কোন কাজ এর ব্যবস্থা করা গেলেও যেতে পারে।

বিকেলে হাটে মাছ ধরে নিয়ে বিক্রি করলে ভাল দাম পাওয়া যায়। এর আগেও মোল্লা বাড়ির দিঘি থেকে দু একবার মাছ ধরেছে সে বিপদে পড়লে , তাই পুরো ব্যাপারটির খুটিনাটি ইদ্রিস একদম চোখের সামনে দেখতে পায়। কয়েকটা মাছ ধরে বিক্রি করে দিলে আজকের মত খাবার এর ব্যবস্থা হয়ে যাবে। অভাবে স্বভাব এর দিকে তাকিয়ে বিলাসিতা করার অবস্থায় নেই ইদ্রিস আজকে।

সব ই ঠিক ছিল। মাছ ও ধরা পরেছিল গোটা তিনেক। শুধু বাধ সাধলো মোল্লা সাহেবের দুই পালক পুত্র। দুপুরে আজাহার মোল্লা আর আফসার মোল্লা, ইদ্রিস কে মাছ সহ হাতে নাতে পাকরাও করে নিয়ে আসে। আর এই “উচ্চারন অযোগ্য নারীর সন্তান” ইদ্রিস কে জিজ্ঞাসাবাদ করে তৎখনাত কিছু উত্তম মধ্যম দিয়ে পুকুর পারেই একটা জাম গাছের সাথে শক্ত করে বেধে রাখা হয়। এমন ভাবে বাধা হয় যাতে ইদ্রিস বসতে না পারে। দিঘির মালিক জনাব আসগর আলী মোল্লা বিশেষ একটি মোকদ্দমা সামলাতে শহরে গেছেন। তিনি না ফেরা পর্যন্ত মোল্লা ভাইয়েরা কোন সিন্ধ্যান্তে আসতে পারছিলো না। কি করলে ইদ্রিস এর উচিত শিক্ষা হবে, শরিয়তি বিধানে কিভাবে মারলে তাদের সোয়াব বেশি হবে তাই নিয়ে দুই ভাই অনেক তর্ক বিতর্ক হলো। শেষমেশ তারা তাদের মনস্থির করার জন্য সারা রাত ইদ্রিস কে “মাইরের ওপর” রাখার সিদ্ধান্ত নিল।

[গল্প শেষ হয় নাই, আরো আছে, এই গল্পের প্লট ঘুরতেসে মাথায় অনেক দিন থেকে। কিন্তু লেখা হয় নাই। তাই আজকে ভাব্লাম লিখে ফেলি কি আছে দুনিআয়। আগামিকাল গল্পটার আরো কিছুদুর লিখতে পারবো বলে মনে করি। ]