লেখার তারিখঃ এপ্রিল ১, ২০১৬, ১১:৫৬ এ এম
আমি অনেক আইলশা হয়া গেসি। না থুক্কু। কারে কি বুঝাই। আমি ত শুরু থেইকাই আইলশা। নতুন কইরা কি আর হমু। তবে হ্যা লেভেল আপ হইসে বলা যাইতে পারে। দিন দিন আমি অনেক পরিশ্রমি (!) আইলশা হয়া যাইতাসি। আইলসামি করতেও যে কত পরিশ্রম করা লাগে এইটা একমাত্র খান্দানি আইলশা রাই বুঝবো। কত কথা, কত খোটা, কত রিস্ক নেওয়া লাগে আইলশামি করতে তা যদি এক্টিব সমাজ বুঝতো।
যাউকগা। আমি আবার নিয়মিত নোট লিখব বইলা মন-অস্থির করসি। একটা ঝামেলা ছিল সময় বাইর করা। সেইটা আপাতত সল্ভ হইসে। চিন্তা কইরা নোট লেখার একটা টাইম বাইর করা গেসে। আমি চিন্তা কইরা দেখলাম, আমার সপ্তাহের রবি থেইকা বৃহস্পতিবার এর রুটিন হইল, আমি সকালে উইঠা ফজরের নামাজ পইরা একটা দেড় ঘন্টার ঘুম দেই। তারপর উইঠা জোম্বির মত অপিশ যাই। অপিশেই যোহর, আসর, মাগ্রিব পরি। তারপর বাসায় আইসা ভাত রান্দি, এশা পরি, খায়া দায়া ভুড়ি ডা দেয়ালের লগে ঠেক দিয়া উফফ, নো টাইম ইন লাইফ ফর এনিথিং ভাবতে ভাবতে ঘুমাই পরি। আর শুক্র শনি আমি বাসাবো আহি, আর বিছানায় গইরাই আর গইরাই। মাঝে মাঝে উইঠা নামাজ পরি, খাই, অ এর লগে দেখা করি, তারপর আবার গড়া গড়ি। নোট নুট লেখার টাইম কই এর মধ্যে।
কিন্তু না। উপায় থাকিলেই ইচ্ছা হয়। আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করা শুরু করলাম। তারপর ঘুমায়া গেলাম (ইয়ে মানে চিন্তা ভাবনা ইজ হার্ড ওয়ার্ক ইউ নো)। ঘুম থেইকা উইঠা আমার মনে হইল , আইচ্চা এই যে ফজর এর পর সকাল ৬ টা থেইকা ৭ টা এই টাইম টা না ঘুমায়া যুদি নুত লেখা, আঁকা আকি পেক্টিস, পিয়ানো পেক্টিস ইত্যাদি কাজে আত্ম নিয়গ করি তইলেই ত হয়। এমনি তে অই ঘুম টা খারাপ । উঠলে অনেক জোম্বি জোম্বি লাগে আর অফিস ক্যান এখনো ভুমিকম্পে ভাইঙ্গা যাইতাসে না কামনা করাও তো ঠিক না। আর তা ছাড়া এই টাইম টা সাত দিন এর জন্যই কমন। এই সময়টাই তাই ভেশট টাইম নিজেকে দেওয়ার।
লাইফ এ একটা বড় চেঞ্জ আশ্চে এর মধ্যে। ফেব্রুয়ারির ১৮ তারিখ থেইকা আমি নামাজ পরা শুরু করসি পাচ ওয়াক্ত। এইটা এক দিন এ হয় নাই। প্রথম এক সপ্তাহ আমি শুধু ফযর এর নামাজ টা পরসি। তারপরের সপ্তাহ টা ফজর এবং যোহর। তারপরের সপ্তাহ ফজর, যোহর, আসর। তারপরের সপ্তাহ ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব। তারপরের সপ্তাহ ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব, এশা। এখন পাচ ওয়াক্ত পরি। এখন এক ওয়াক্ত নামাজ বাদ গেলে কেমন যানি লাগে। বড় কোন অপরাধ কইরা ফালাইসি টাইপ অনুভুতি।
এই রকম ভাবে নামাজ এর অভ্যাস করাটা কোন শরিয়ত সম্মত উপায় না আমি জানি। কিন্তু আমি আমার সিস্টেম চিনি। আমি জানি যে আমি যদি একবারেই পাচ ওয়াক্ত শুরু কইরা দিতাম তাইলে আমার কাছে কঠিন লাগতো আর আমি কন্টিনিউ করতে পারতাম না। তাই আমি আস্তে আস্তে নিজের সিস্টেম এর মধ্যে নিয়া আসছি নামাজ টারে।
রাশা আমারে জিজ্ঞেস করসিল আমার নামাজ পড়ার পিছনে মটিভেশন কি? অ বলসে পরতে? আমি ওরে বলসি, দ্যাখ, আমি চিন্তা কইরা দেখলাম, আল্লাহ তো আমাদের কথা সব সময় ই শুন্তাসেন। আমাদের কাজ কর্ম দেখতাসেন। আমাদের দোয়া ও কিছু কিছু কবুল করতাসেন। তাইলে হোয়াই নামাজ? তারপর আমি ভাবলাম সব কিছুর একটা প্রপার চ্যানেল আছে। নাইলে ব্যাপারটা বিশৃঙ্খলা ছাড়া আর কিছু হয় না। নামাজ আমার কাছে সেই চ্যানেল টা লাগে। তাই আমি নামাজ পরি। যাতে আল্লাহর প্রতি আমার আনুগত্য আমি সেই প্রসেস এর মধ্যে দিয়া গিয়া বুঝাইতে পারি।
যেমন রাশা একজন শিক্ষক। সে নৃ ত্ত্ব (এনথ্রোপলজি) পড়ায়। কিন্তু সে কি রাস্তায় দাড়ায়া সবাইরে নৃ তত্ব পড়ায়। বা যে একজন ছাত্র যে নৃ ত্ত্ব সম্পর্কে জানতে চায়, সে তো ইন্টারনেট ঘাইটাও জানতে পারে। কিন্তু তাতে কি তার শিক্ষা টা সম্পুর্ন হয়। তাকে একটা শ্রেনীকক্ষে যাইতে হয়, শুনতে হয়, শিখতে হয়, শিখার পর পরীক্ষা দিতে হয় নিজের জন্য এবং সবাইকে জানানোর জন্য যে সে নিজে কিছু শিখসে এবং তার শিক্ষা টারে আরেকজন স্বীকৃতি দিসে তারে একটা সারটিফিকেট দিয়া। ইন্টারনেট ঘাইটা যে শিখলো তার জানা মিথ্যা না, কিন্তু পরিপুর্ন ও না।
এই রকম অনেক ভালমানুষ আছে যারা নামাজ পরে না। তাদের ভাল কাজ গুলা অর্থহীন না, কিন্তু নামাজ পড়লে আল্লাহর সাথে তার একটা প্রপার চ্যানেল হইল তার ভাল কাজ গুলা জানানোর। তার আকাঙ্ক্ষা গুলা জানানোর। তার আক্ষেপ গুলা জানানোর।
কিছু মানুষ নিজের স্বার্থেই ইসলাম কে অনেক আলাদা কিছু, অনেক এক্সট্রিম কিছু, অনেক লাইফস্টাইল চেঞ্জিং কিছু বইলা রিপ্রেজেন্ট করে। এইটাই মূল কারন আমাদের ইসলাম কে জীবনের থেইকা আলাদা কিছু মনে কইরা নিয়া এই ধারনা জন্মানোর যে, “ইসলাম পালন করতে হইলে আমার জীবনের অনেক কিছু চেঞ্জ কইরা ফালাইতে হবে, যা কিনা কষ্টকর”। কিন্তু দরকার তো নাই এইভাবে ভাবার। অন্যভাবেও ভাবা যায়। আমি কোন আলেম ওলামা না। তারা তাদের মত কইরা ভাবসেন। আমার জ্ঞ্যান কম। আমি আমার মত কইরা ভাবি। সহজ কইরা। সরল কইরা।
আমি আমার মত স্পিড এ ইসলাম কে আমার সিস্টেম এর মধ্যে ঢুকাবো। আমি শুরু তেই বলসি, আমি অনেক আইলশা। আমি তারাহুরা করতে পারি না কিছু তে। অনেকে রেডিক্যালি, রাতারাতি চেঞ্জ কইরা ফালাইসে জীবনকে, আমি সেরকম পারবো না। আমি আস্তে আস্তে যাবো।
শেষ সীমানায় হয়ত সবার শেষে পৌছাবো, কিন্তু পৌছাব এইটা জানি।