লেখার তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ১২, ২০১৬, ১২ঃ৪২ এ এম
বুক রিভিউঃ “যে প্রহরে নেই আমি”
এই মাত্র পড়া শেষ করলাম রাসয়াত রহমান ওরফে জিকো ভাই এর ৫ম বই “যে প্রহরে নেই আমি”। এই উপন্যাস টি এইবার মানে ২০১৬ বই মেলায় আদী প্রকাশন (স্টল নম্বর ৫০০) থেকে প্রকাশিত হইসে। বইটা শেষ করতে আমার চারদিন লাগসে যদিও বইটা মাত্র ১১১ পৃষ্ঠার।
এর একটা কারণ হইতে পারে আমি একজন স্লো রিডার। আর আরেকটা কারন হইতে পারে বইটা এই ভাবে পইড়াই পুরাপুরি স্বাদ টা নেয়া সম্ভব। এক নিঃশ্বাসে পুরাডা পইড়া লাইলাম, এক দম এ সব বুইঝা লাইলাম ক্যাটাগরির বই এইটা না। এই বই পড়তে হবে নিয়মিত বিরতি তে। প্রত্যেক্টা অধ্যায় এর পর অন্তত পাচ মিনিটের একটা বিরতি নিতে হবে। টানা পইড়া গেলে এই বইটা ঠিক উপভোগ করা যাবে না।
এই বই এ মুক্তিযুদ্ধ এর কথা আছে। কিন্তু এই টা মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি ইতিহাসের বই না। এর ভিত্তি অনেকগুলা । এই বই এর ভিত্তি পারিবারিক বন্ধন, এই বই এর ভিত্তি মুক্ত চিন্তা, এই বই এর ভিত্তি নিজের সীমাবদ্ধতাকে ছাড়িয়ে যাওয়া। এই উপন্যাস ইতিবাচকতা কে সেলিব্রেট করে। ভাল দের সাথে ভাল হয়, খারাপ রা শেষ এ গিয়ে ভালর রাস্তায় চলে আসে।
এর চরিত্রগুলো শুরু তে আমাদের সাথে যেভাবে পরিচয় করিয়ে দেন লেখক শেষ হতে হতে তারা আর শুধু তারা থাকেন না, আকাশের তারা দের মত কিছু একটা হয়ে যান। গৃহবধু নায়লা সারা বাংলাদেশের গৃহবন্দি, পরিবারবন্দি নারীদের সিম্বল হিসাবে আমাদের কাছে ইন্ট্রোডিউসড হলেও তার শেষ টা কিন্তু আমেরিকায় তুষার পাত কে পিছনে রেখে সেলফি তে।
২য় মূল চরিত্র রাজু নদীর পারে হারিয়ে যাওয়া দিয়ে আমাদের কাছে আসলেও শেষ দৃশ্যে তাকে দেখা যায় সফলতার অশ্রুসিক্ত অবস্থা তে। এভাবে প্রত্যেটা চরিত্র কে যদি আলাদা আলাদা ভাবে দেখা যায় , তাহলে দেখা যাবে , পৃষ্ঠা পরিক্রমায় যা কিছু অশুভ এসেছিল, তারা কাউকে শেষ পর্যন্ত জিততে দেন নি লেখক।
শেষ পর্যন্ত এই চারদিন এর জন্য “যে প্রহরে নেই আমি” একটি উপভোগ্য বই ছিল। লেখকের এর আগের সবগুলো বই ই আমার পড়ার সৌভাগ্য হইসে। আগের গুলোর চেয়ে এই বই এ লেখকের তীক্ষ্ণ রস বোধের ছোয়া খুব কম পাওয়া যায়, যেটা তার কিছু কিছু ভক্ত এবং পাঠক কে মন খারাপ করাবে মনে করি। আশা করছি এই মন্দা জিকো ভাই আমাদের আগামি বই এর মাধ্যমে পুষিয়ে দেবেন।