২৬৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ২৪, ২০১৫

ফাকিবাজি করতে করতে অভ্যাস খারাপ হয়া গেসে। তাই কালকে রাতে নোট না লিখাই ঘুমায় গেসিলাম। মানুষ মদ খায়া মাতাল হয় আর আমি ঘুম পাইলে মাতাল হই। দিন-দুনিয়া-মুনিয়া কিছুই তখন আটকায় রাখতে পারে না। এমন বেহুশের মত ঘুমাই যে ঘুম থেইকা উঠার পর কেমন অপরাধি লাগে। চেক কইরা দেখি কোন কল আশ্ছিল কিনা, মেসেজ আসছিল কিনা। কারন আমার ঘুমের মধ্যে খুব স্বাভাবিক গলায় কথা বার্তা বলা, মেসেজ এর রিপ্লাই দেওয়ার অভ্যাস আসে। সকালে উইঠা এগুলার কিছুই মনে করতে পারি না।

একবার হইসে কি, ইউনিভার্সিটি তে পড়ার সময়, সেকেন্ড ইয়ার এ তখন। পরের দিন সি প্লাস প্লাস পরীক্ষা। আমি পইড়া টইড়া ঘুমাইতে গেসি। আমাদের ক্লাস এর বেশির ভাগ লোকজন এরি প্রোগামিং নিয়া কোন আগ্রহ ছিল না। এদের মধ্যে অনেকেই আবার পুরা কোড মুখস্থ কইরা যাইতো। খালি প্রব্লেম টা কমন পড়লেই হইল , ধুম ধাম লিখা দিয়া আস্তো। এরম একটা কি জানি প্রব্লেম ছিল যেইটা স্যার বলসিল পরীক্ষায় দিতে পারে। পোলাপান রাত জাইগা পড়ত। এরম ই একজন মাসুম বাচ্চা আমারে রাত দুইটায় ফোন দিসে সেই প্রব্লেম এর সমাধান টা করসি নাকি আর করলে কোড টা যাতে তারে বলি। আমি তখন গভীর ঘুমে। কিন্তু তারে আমি পুরা কোড মুখে মুখে বলসি , সে লিখে নিসে, তারপর নাকি অনেক থ্যাঙ্কস, ক্লাস এর কেউ এইটা সল্ভ করে নাই, তুই বস ইত্যাদি বইলা রেখে দিসে।

পরের দিন, ভার্সিটি গিয়া আমি ওই মাসুম বান্দার কাছেই গিয়া বলসি, দোস্ত, অমুক প্রব্লেম টা তো স্যার বলসিল আস্তে পারে পরীক্ষায়,তোরা কেউ করসস? করলে আমারে একটু দে, আমি একবার চোখ বুলাই। সাথে সাথে পুরা ক্লাস সাইলেন্ট হয়া গেল। মনে হইল ঘরে ফেরেশ্তা ঢুক্সে। আর সবাই এমন লুক দিল , এরম লুক মনে হয় মিরজাফর এর দিকে সিরাজুদ্দোউলাও দ্যায় নাই।

মাসুম পোলা ডা আস্তে আস্তে কইল, “তুমি কালকে রাতে কোড টা বইলা দেওয়ার পর সেইটা সারা ক্লাস এ ছড়ায়া গেসে। আমরা সবাই ওইটাই পইড়া আসছি। আর তুই এহন এই কথা কস? ফাইজলামি পাইসস?”

এরকম যে কত হইসে। আমি কারে জানি ঘুমের মদ্ধে বলসিলাম, ডিম সিদ্ধ করার পর খোসা ফালায় দিবা না। আলাদা কইরা ভিজায় রাইখা রাতের বেলা খাবা। স্কিন ভাল থাকবে । দেখবা ডিম এর স্কিন কত স্মুথ।

স্বপ্ন দেইখা ঘুসি মাইরা হাতের নাকলস ছিল্লা ফালাইসি যে কত বার। একবার দেশের বাড়ি তে গন বিছানায় ঘুমাইসি সব কাজিন রা। মাঝরাতে উইঠা দেখি এক কাজিন আর এক কাজিন রে বাতাস করতাসে, মাথায় পানি ঢালতাসে। জিগাইলাম আয় হায় কি হইসে ওর? এই পিচ্চি ভাইয়া না আমার পাশেই ঘুমায় ছিল? উত্তর আসলো আমি নাকি তারে ঘুমের মধ্যে এমন কনি মারসি, যে পোলা এখন শ্বাস নিতে পারতাসে না ঠিক মত।

ঘুম কি অদ্ভুত রহস্যময় একটা একটা জিনিষ। আমি বড় হয়া সুপার হিরো হইলে নাম রাখুম ঘুম ম্যান। ঘুম ম্যান খুবি নিরিহ ব্যাড এস সুপার হিরো। বিপদ আসলেই ঘুমায় যায়। জরুরী সময় আসলেই ঘুমায় যায়। প্রেমিকার মনে প্রেম প্রেম ভাব উঠলেই ঘুমায় যায়। আর পরের দিন অপরাধি অপরাধি গলায় বলে, না ইয়ে মানে, কালকে রাত্রে ফোন দিসিলা? আমি কি কথা বলসিলাম? উলটা পালটা কিছু বলসি?

কত ভাল ঘুম ম্যান। সাইধা সাইধা ঝারি খায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *