২৬৪/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ১৯, ২০১৫

এই মুহুর্তে এই নোট যখন লিখতেসি তখন বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যান করে রাখা হইসে অনির্দিষ্ট কালের জন্য। এই নোট লিখতে রাখতাসি এখন অফলাইন এ। পরে সু্যোগ পাইলে পোস্ট করুম। অন্য সময় হইলে আমার অনেক অস্থির লাগতো। কিন্তু এখন যে কি শান্তি লাগতাসে। মনে হইতাসে ভাল হইসে। খুবই ভাল একটা কাজ হইসে। এইরকম প্রত্যেক মাস এ হঠাত হঠাত বন্ধ কইরা দেওয়া উচিত।

আমরা আনপ্লাগড থাকতে ভুইলা যাইতেসি। আমরা ভুইলা যাইতাসি ফেসবুক ছাড়াও আরো অনেক অনেক কিছু আছে জীবনে। যেগুলা এবং যারা ভার্চুয়াল না। জীবন্ত , প্রানবন্ত মানুষ। যাদের সাথে টাইপ করে না মুখ দিয়ে কথা বলা যায়। আমার কল্পনা করতে ভাল লাগতাসে যে অনেক দিন পর প্রিয় বন্ধুকে হয় তো ফোন দিসে কেউ। “কিরে কি করিস? ফেসবুক তো ডাউন। কেমন লাগতেসে? নতুন সিনেমা দেখসিস কোন?”। শুরু হয়া গেলো কনভারসেশন।

রেস্টুরেন্ট এ অর্ডার নিতে আসা ওয়েটার অবাক হয়া দেখলো তার কাস্টোমার রা যার যার ফোন এর দিকে তাকায়া নাই। তারা কথা বলতেসে। গুড অল্ড ফ্যাশন্ড ওয়ান টু ওয়ান টক। শেষ কবে এই জিনিষ দেখসিল তার মনে নাই। আমরা সোশাল অকোয়ার্ডনেস এরানোর জন্য সোশাল নেটওয়ার্ক এ মুখ লুকায়া দিন দিন কত সোশালি অকোয়ার্ড হয়া যাইতাসি সেইটা নিজেরাও রিয়েলাইজ করি না আন্টিল আমরা নিজেদের ফোন টা একটু নামায়া রাখি।

হয়তো কোন মা অবাক হয়া দেখতাসে তার নিশাচর ছেলে টা বা মেয়েটা হটাত আজকে একটা গল্পের বই হাতে নিয়া শুইতে গেসে বিছানায় আর অভ্যাস না থাকায় এক পাতা পইড়াই অভ্যাস না থাকার কারণে বই এর উপরেই ঘুমায় গেসে। বই এর উপর লুল পইড়া ভাইসা যাইতাসে।

আমি জানি হিরোয়িঞ্ছি হেরোয়িন না পাইলে যেমন ডি টক্সিফিকেশন এ ভোগে সেরকম ভুগতেসে এখন হাজার হাজার মানুষ। একটু পর পর মোবাইল টা হাতে চলে আস্তেসে, ফেসবুক এপ টাতে টিপ পরে যাইতেসে নিজের অজান্তেই। আই হোপ এই সময় টা মানুষ জন রিয়ালাইজ করতেসে যে নিউজফিড এর দিকে সম্মোহিতের মত তাকায়া থাকাটাই জীবনের সব না।

অনেক লোক টেকনোজির ফাক ফোকর বের করতে বসে গেসে। প্রক্সি সাইট, ভি পি এন এপ সব নামানো শেষ। চিপা গলি দিয়া ফেসবুকে ঢুক্তে পাইরা ব্যাপক আনন্দ ও পাইতাসে অনেকে। কিন্তু ক্যানো। একটা রাত, কিংবা হয়তো আরো কয়েকটা দিন এবং রাত ফেসবুক এ না আসলে কি কমে যাচ্ছে জীবনের? আমার তো মনে কমার বদলে বাড়ছে আরো অনেক কিছু। সৃজনশীলতা চর্চার সুযোগ বাড়ছে, মন স্থীর করার সুযোগ বাড়ছে, অসমাপ্ত অনেক কাজ শেষ করার সুযোগ বাড়ছে, “খুজে পাওয়া নিজেকে আবার” এর সুযোগ বাড়ছে।

এই বেড়ে যাওয়ার সুযোগ টা নেওয়া উচিত। মনোযোগ অনেক মুল্যবান একটা রিসোর্স মানুষের। আর একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই রিসোর্স টা লিমিটেড ও। মানে আমি বলতে চাচ্ছি আমাদের একটা নিদ্দ্রিষ্ট পরিমান মনোযোগ জন্ম ন্যায় ভিতরে। এর বেশির ভাগ টাই যদি আমরা ফেসবুকে দিয়ে দেই তাহলে অন্য সব কিছু তে কম পরবে এটাই সত্য।

ফেসবুকের এই হঠাত ব্যান কে স্বাগত জানাই এবং আমাদের মত তারাহুরান্তিস এবং মাল্টীটাস্কিংবাজ দের মনে এবং জীবনে যেন স্থীরতা আসে সেই প্রার্থনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *