লেখার তারিখঃ নভেম্বর ৮, ২০১৫, ১১.২১ পি এম
আজকে সকালে আম্মার হার্ট এ স্টেন্ট পরানো হইসে । বাম পাশের অলিন্দে একটা ব্লক ছিল, আপাতত সেইটাকে সাইজ করা হইসে। এখন আম্মা পোস্ট অপারেটিভ অব্জার্ভেশন এ আসে। কালকে ইনশাল্লাহ কেবিন এ দিবে আর পরশু রিলিজ।
এই খানে দিনে দুইবার ঢুক্তে দ্যায়। একবার সকালে। তখন বাবা গেসিল। আর আরেকবা সন্ধ্যায়। আমি গেসিলাম। আম্মা অনেক ভয় পাইসিল অপারেশন এর আগে, এখন একটু শান্ত হইসে। আমি আম্মাকে জিজ্ঞেস করলাম আম্মা কেমন লাগে? আম্মা বলসে খুব হালকা লাগতাসে, বুকের মদ্ধে রক্ত চলাচল করতাসে সুন্দর কইরা, টের পাইতাসি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন অসুবিধা হইতাসে থাকতে? আম্মা বলল, এক বেড পরের এক বুড়া লোক সারাক্ষন নিজে নিজে কথা বলে। ঘুমাইতে পারি না আওয়াজ এ। আমি দেখলাম সত্যিই কথা বলে লোক্টা নিজে নিজে। তাও আস্তে আস্তে না। জুরে জুরে। আমি গিয়া বল্ললাম, আঙ্ককেল একটু আসতে কথা বলেন, আমার আম্মার ঘুমাইতে প্রব্লেম হইতাসে। লোক্টা তখন কিছু বলে নাই। আবার আম্মার কাছে চইলা আসার পর শুনি চিল্লা চিল্লি লাগায় দিসে,
“ হু ইজ হি? সে একজন ভিজিটর হওয়া আমাকে উপদেশ দিতে আসে? সে জানে আমি কে? আমি একজন ফ্রিডম ফাইটার। আমি এই দেশ স্বাধীন করসি। তার দাদার বয়স কত? আমি তার দাদার চেয়েও বেশি বয়েস। আমাকে সে উপদেশ দিতে আসে?”
আম্মা বলল, যাও গিয়া সরি বইলা বল যে আমি আমার আম্মার জন্য বলসি। আমি যাই নাই। আমি ক্যান সরি বলব। উনি মুক্তিযোদ্ধা হইতেই পারেন, তার জন্য সকল শ্রদ্ধা । কিন্তু এই সব কথা বইলা কি উনি নিজেরে আরো হাল্কা করলেন না ? আম্মা যেই কারণে যাইতে বলসে, আমি সেই কারণেই যাই নাই। আমি ক্যান সরি বলব? আমি আমার আম্মার জন্য বলসি।
রিয়েকশন ফিল করা এক জিনিশ আর রিয়েকশন প্রকাশ করা আরেক জিনিশ। আমার একটা জিনিশ ভাল নাই লাগতে পারে। তাই বইলা সেইটা প্রকাশ কইরা আমার তো নিজেকে তার লেভেলে নামায়া আনার দরকার নাই। ধরেন আপ্নের এক্স ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখলো, “আল্লাহর কাছে হাজার শোকর যে আমি আর তার সাথে নাই”। পইড়া আপনার মনে হইল, এত বড় সাহস। আজকে ওরে ভাইঙ্গা লামু, চুইরা লামু টাইপ কিছু এক্টা। কিন্তু তাতে আপ্নের আর তার মধ্যে পার্থক্য কি থাক্লো।
সে স্টাটাস লিখা টিখা খুব মনে মনে বাশ দিসে ভাইবা আহলাদিত। হোক আহলাদিত। আপ্নে রিয়েকশন দেখায়া তার জবাব দেয়ার তো দরকার নাই।
কোন রিয়েকশন না দেখানো টাই আসল পরীক্ষা।