লেখার তারিখঃ অক্টোবর ১৭, ২০১৫
বাস এ বইসা বইসা নোট লিখি। আজকে সারাদিন চান্দের গাড়ির ছাদ এ বইসা থাকতে থাকতে ছাপা ব্যাথা হয়া গ্যাসে। হারাদিন খালি চলার উপ্রেই আসিলাম। এখনো চলার উপ্রেই। ঢাকার দিকে আস্তাসি।
দিন শুরু হইসে ভোর ৪.৪০ এ। তখন সুবেহ সাদিক। সবাইকে ৫ টায় কটেজ এর সামনে রিপোর্ট করতে বলসিল। ৫ টায় দেখা গেল চাইর পাজ্জন আসছে। তখন পুর্ব আকাশে লাল লাল ছোপ লাগানো শুরু করসিল আল্লাহ। আমরা আবছা আবছা আলোয় হাটতে হাটতে একটা মন্দির এর পাশে যেখানে পাহাড় শেষ সেখানে আইসা দাড়াইলাম। অনেক নিচে ঘুম কাতুরে মেঘ গুলা তখনো লেগেছিল পাহাড়ের গায়ে গায়ে।
ততখনে লোকজন এর ঘুম ভাংসে। আইসা বিশাল হম্বি তম্বি শুরু করল। আমরা নাকি ওদের বাদ্দিয়া সব দেইখা ফালাইতাসি। তাই ওদের নিয়া চান্দের গাড়ি দিয়া আরেকটু সামনে যাওয়া হইল। একটা যায়গা পর্যন্ত গাড়ি যায় সেই পর্যন্ত গিয়া তারপর ১ ঘন্টার একটা ট্রেকিং। গন্তব্য কংলাক পাড়া। আমি বুঝসিলাম যে এখন রউনা দিলে সূর্য উঠা দেখতে পারবো না। তাই ওদের আগায় যাইতে দিয়া আমি দাঁড়ায় থাকলাম সুর্য দেখার জন্য। পাহাড়ের সূর্য ধুপধাপ উঠে যায়। একটু পর সুন্দর কমলা একটা কিউট মত সুর্য উকি দিল। আর আমি হাটা দিলাম কংলাক পাড়ার দিকে।
কংলাক পাড়া পর্যন্ত যাই নাই। পাড়ার ঠিক আগে একটা বড় স্টিপ ছিল। দিনের শুরু তেই সব এনার্জি শেষ করতে চাই নাই। তাই উঠি নাই।
ফিরা আসার পর ধুপ ধাপ ব্রেকফাস্ট, তারপর চান্দের গাড়ির ছাদে উইঠা দৌড়। সাজেকে এ যাওয়া আসার সময় আসলে ভিতরে বইসা কোন মজা নাই। ঠাডায়া রইদ ছিল। কিন্তু বাতাস ছিল মজার। তাই গায়ে লাগাই নাই।
খাগড়াছড়ি আইসা আমরা লাঞ্চ করসি “সিস্টেম রেস্টুরেন্ট” এ। বাশ খাইসি জীবনের প্রথম। বাশ মজা আসে। তারপর গেসি রিসাং ঝরনা। তারপর গেসি আলুটিলা গুহা। আলুটিলা জোস। আই লাভ আলুটিলা। আমার চশ্মা আলুটিলা গুহার ভিতরে একজন এর হাতে লাইগা পানিতে পইড়া ডুইবা গেসে। তারপর দেখি চারদিকে দুনিয়া ঘুলা ঘুলা। হাতায় হাতায় পার হইসি। কিন্তু তবু অনেক ভাল্লাগসে। ফটোগ্রাফিকালি অনেক কিছু করার আছে গুহাটা নিয়া।
সব জায়গার একটা কমন জিনিষ ছিল। স্পিড এর বোতল, প্রান লাচ্ছি এর বোতল, নাটি বিস্কুট এর প্যাকেট প্রায় ই দেখসি লোকজন ফালায়া রাখসে ইচ্ছা মত। সাজেক এ একটা দল গেসে, তারা লাঞ্চ করসে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক এর প্লেট এ। তারপর সব প্লেট গুলা পাহাড়ের গায়ে ফালায়া রাইখা গেসে।
ওদের দল এর একজন কে আমি বলসি, ভাই, প্লেট গুলা পরিষ্কার করলেন না? উনি আমাকে বলসে, আরে বিজিবি আর মিলিটারি আছে না। ওদের আর কাজ কি। ওরা করবে। একটা মিলিটারি ডাইকা আইনা ওরে দেখাইতে পারলে ভালইত মিলিটারির কাজ কি।
আমি স্থানীয় কিছু চাকমা লোকজন এর সাথে কথা বইলা জায়গাটার ব্যাপারে জানার ট্রাই করসি। সাজেক একটা নদীর নাম। নদীর এই পারে বাংলাদেশ। ওই পারে লুসাই পাহাড় যেইটা থেইকা কর্নফুলি নদীর জন্ম। কর্ণফুলী থেইকা মোট চারটা শাখা নদী হইসে, যার মধ্যে একটা সাজেক। এই নদীর নামেই সাজেক ইউনিয়ন। সাজেক আসতে খাগড়াছড়ি হয়া আসতে হইলেও এইটা আসলে রাঙামাটি জেলায় পরসে।
এখন ঘুমায় যাবো। বাস কালকে ভোর এ ঢাকা পৌছাবে। তারপর অফিসে যাইতে হবে।