২২৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ অক্টোবর ১৪, ২০১৫

অথচ গল্প টা অন্য রকম হতে পারতো। গল্পের মূল চরিত্র যখন আইল্যান্ডের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ভাবতো, উহু, রাস্তা পার ই হবো না আর, এখানেই থাকবো সারাদিন, ঐ পারে আর নতুন কি, সবাই ই এক, তখন একটা আশাবাদী হাত এসে বলতেই পারতো, ধুর বোকা আমি তো আছি।

কখনোই গল্পটার মুল চরিত্র না হতে পারা সাইড নায়ক যখন নিজের লেখা গান গায়, “বিধি বলে পাগল মন রে আয় রে কাছে আয়, আমার কেন উদাস দুপুর ঝরের ই হাওয়ায়” তখন কিংবা এই দারুন দ্বন্দ নিয়ে থমকে থাকা এই মন এর ভেতরের সব গুলো দ্বীর্ঘশ্বাস খরচ করা শেষ, তখন এক জোড়া বড় বড় চোখ তাদের মত করে বলতেই পারত, ধুর গাধা আমি তো আছি।

একটা হিসাব কখনোই মেলে না। এই দুনিয়াটা আসলে কাদের? অনেক চালাক দের? বুদ্ধিমান দের? নাকি এই লিখে লিখে অযথাই আস্ফালন করা বোকাদের? দুনিয়া তে নিজের জায়গা টা কোথায় সেটা বুঝতে পারা খুব জরুরি আমি জানি। সবাই যখন নিজের জীবন যৌবন ইহকাল পরকাল কে গুছিয়ে এনে অন্যকে উপদেশ দেয়ার জায়গায় পৌছে যাচ্ছে তখনো আমি দৌড় এর স্টারটিং লাইন এ দাঁড়িয়ে ভাবছি, আচ্ছা সবাই এমন দৌড় দিল ক্যান? আবার তো ঘুরে আসবে এই খানেই। তাহলে দৌড়াবো ক্যান?

তবু একটা জিনিষ বুঝতে পারি, আমি খুবই বেমানান। সব জায়গা তেই বেমানান। এই “নট ফিটিং ইন” এর ব্যাপার টা এত ঘটছে আর এত ঘটছে যে যতই দিন যাচ্ছে ততই এই ধারনা বদ্ধমুল হচ্ছে যে এই পাজল টা আর মিলবে না। এক সময় ভাবতাম এই পৃথিবীতে সব চেয়ে ইম্পোরটেন্ট জিনিষ হলো দিন শেষে একজন ভাল মানুষ হওয়া। তাই সারাজীবন এর চেয়ে বেশি কিছু হওয়ার চেষ্টাও করি নাই আর। অর্ধেক জীবন যাওয়ার পর রিয়ালাইজেশন আসছে এখন যে শুধু ভাল মানুষ হলে হয় না আসলে। চালাক হতে হয়। নিজেকে এট্রেক্টিভ করতে হয়। নিজের ভাল টা খুব ভাল মত বুঝতে হয়। ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হয়। সেই পরিকল্পনা কে বাস্তব এ কনভার্ট করতে এগ্রেসিভ হতে হয়। অনেক এম্বিশাস হতে হয়।

কিন্তু এতদিনে ভিতরের মুল মন টা তৈরি হয়ে গেছে আসলে। চেষ্টা করলেও এই কোর টা আর পালটানো সম্ভব না। তাই এই বিষয়ে সফল যারা তাদের ঠোট বাকানো, ভদ্রতা করে লুকানো হাসি দেখেই বাকি জীবন কাটায় দিতে হবে। কাউকে বোঝানোও যাবে না এই না হতে পারা, না হতে চাওয়া কিন্তু তবু দেখে দেখে কষ্ট লাগে ক্যান ব্যাপার টা। সব শুনে টুনে সবাই শেষে বলবে, তাহলে তুমিও ওদের মতো হউ, কেউ মানা তো করে নাই।

আমি কাউকে বোঝাতে পারবো না কোথাউ কিছু একটা গোলমাল এর কারনে সব ঠিক ঠাক চলছে না। আমি বলতে পারবো না, সব ঠিক ঠাক চললে আমিও অনেক বুঝদার হতাম। আমি ঠিক ঠাক মেনে নিতে পারতাম এই গল্পটার মুল চরিত্রই আমি না, কখনো ছিলামও না। যারা গল্পটা কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যারা সামনের সারির লোক, এই গল্পটা তাদের নিয়েই আসলে। এই খানে আমি শুধুই একজন সাপোরটিং ক্যারেক্টার। গল্পের প্রয়োজনে আনা চরিত্র। আমার কাজ শুধু জন্মদিন এর দৃশ্যে স্যুট পরে গ্লাস হাতে আরো কিছু মানুষের সাথে মিশে আউট অফ ফোকাস হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা , ঘটনা যা ঘটাবার মুল চরিত্র রাই ঘটাচ্ছে, সবসময় ওরাই ঘটাবে।

এই অদ্ভুত গল্পটা অন্য রকম হলে আমার নিজেকে পৃথিবী নামক গ্রহের এলিয়েন মনে হতো না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *