লেখার তারিখঃ অক্টোবর ০৬ , ২০১৫
ছোটদের ফটোগ্রাফি শিক্ষা ৫
যেহেতু টার্ম গুলা মোটামুটি জানেন, তাইলে এখন আমি বলতে পারি এক্সপোজার (Exposure) হইল অ্যাপারচার(Aperture), শাটার স্পিড(Shutter Speed) আর আই.এস.ও(ISO) এই তিন এর কম্বিনেশন। এই তিনটারে কমায়া বা বাড়ায়া একটা ফটোরে আপনি কারেক্ট এক্সপোজারে তুলতে পারবেন। এখন প্রশ্ন হইলো কারেক্ট এক্সপোজার(Correct Exposure) কি? কারেক্ট এক্সপোজার হইলো একটা সাবজেক্ট থেইকা যেই লাইট টা রিফ্লেক্ট করতাসে, ঠিক ওই লাইটটারেই ফ্লিম/সেনসর বন্দি করা। এর চেয়ে কম লাইটও না, বেশী লাইটও না ।
ছবিতে যদি বেশী লাইট চইলা আসে তাইলে কি হইবো? তাইলে ছবিটা এট্টু সাদা সাদা হইয়া যাইবো বা ওভার এক্সপোজ্ড (Over Exposed) হইবো। আর যদি মূল আলোটার চেয়ে কম আলো ফ্লিম/সেনসরের উপর পরে তাইলে ছবিটা এট্টু অন্ধকার আসবো বা আন্ডার এক্সপোজ্ড (Under Exposed) হইবো ।
এখন একটা ছোট্ট বাড়ির কাজ দেই। আজ পর্যন্ত যতো ছবি তুলসেন, সেগুলা নিয়া একটু বসেন। এরপর প্রত্যেকটা দেইখা দেইখা একটু চিন্তা করেন যে, ছবিটা কি ওভার এক্সপোজ্ড না আন্ডার এক্সপোজ্ড না ওই সময় ওইখানে যে আলোটা ছিলো তাই আসছে? ছবি গুলা জুম কইরা দেখেন ছবিতে গ্রেইন বা নয়েজ আসছে কিনা। গ্রেইন থাকলে বুঝতে পারবেন ওই সময় ক্যামেরার আই.এস.ও খুব হাই হইয়া গেসিলো। অটো মোডে তুললে ঠিক এক্সপোজার পাওয়ার জন্য, ক্যামেরা নিজে নিজেই আই.এস.ও হাই কইরা দেয়। তাই ছবিতে গ্রেইন চইলা আসে।
নিশ্চই এই প্রশ্নটা এতক্ষনে ভাবা শুরু করসেন যে, ছবি তোলার পর তো বুঝতাসি কিন্তু ছবি তোলার সময় কেমনে বুঝুম যে ছবিটা আন্ডার/ওভার এক্সপোজ্ড হইতাসে কিনা ? এইটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে যেই যন্ত্রটা, তার নাম “লাইট মিটার”। লাইট মিটার আপনার ক্যামারার লগে আলাদা কইরা কিনতে হইবো না। যদিও আলাদা কিন্তে পাওয়া যায়, কিন্তু সব ক্যামেরাতেই একটা বিল্ট ইন লাইট মিটার থাকে। সেইটা দিয়া কেমনে লাইট মাপন যায় আর ঠিক এক্সপোজারে ফটুক তুলন যায় সেইটা আমরা এখন দেখুম।
আসেন তাইলে পরথমে দেখি লাইট মিটার কেমনে কাজ করে আর এইডা দেখতেইবা কেমন। এক এক ক্যামেরাতে লাইট মিটারের ইন্ডিকেটর এক এক রকম থাকে যদিও সবগুলার কাজ একি। লাইট মিটার একটা সিনের লাইট মাপে আর আমাদের এক্সপোজার দেখায়। আপনি যদি ক্যামেরা টারে মেনুয়াল মোড এ রাইখা, সাবজেক্টের দিকে ক্যামেরা তাক কইরা, যে সুইচটা টিপ দিলে ফটো উঠে (এইটারে কয় Shutter Release Button) ওইটাতে পুরা টিপ না দিয়া অর্ধেক টিপ দেন, তাইলে ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরায় ডিসপ্লেতে ধরা যাক নিচের মতো একটা কিসু দেখাইবোঃ
এর মানে হইলো ক্যামেরার লাইট মিটার সামনের আলোটারে মাপসে, আর দেখাইতাসে যে, ঠিক এক্সপোজারের চেয়ে একটু কম আসে এক্সপোজার। যেহেতু কাটাটা মাইনাস “-” এর দিকে তারমানে ক্যামেরায় আলো কম ঢুকতাসে। তাইলে আলো বেশি ঢুকাইতে হইলে আমরা কি করুম? ৩টা কাজ করন যায়:
এক) এপারচারটা আরেকটু খুইলা দেওন যায়। মানে এখন f এর যেই ভ্যালু দেখাইতেসে (ধরেন f/4) তার চাইতে এক স্টপ কমায় f/2.8 করন যায়। আশা করি মনে আসে যে f এর ভ্যালু যত কমে এপারচার তত বড় হয়। এপারচার খুলা মানে বেশি আলো ঢুকা। সো মিটার এর কাটে ডানে সরবে যদি এপারচার কমাই মানে এক্সপোজার বাড়বে।
দুই) শাটার স্পিড এক স্টপ কমায় দেয়ন যায়। যদি 1/125 থাকে তাইলে 1/100 করন যায়।
তিন) আই.এস.ও এক স্টপ বাড়ায় দেওন যায়। যদি iso 200 থাকে তাইলে iso 400 করন যায় (ডিজিটাল এ)
এই ৩টা করার কোন সিরিয়াল নাই। প্রয়োজন অনুসারে, কোনটা বাড়াইতে আর কোনটা কমাইতে হবে এইটা ঠিক করা হয়। এইখানে “প্রয়োজনটা কি” এইটা ৩টা জিনিষ বুঝানোর সময় কিছুটা বলসি, সামনে আরো বলবো। উদাহারন হিসাবে বলা যায়, আপনে চাইতাসেন ছবিতে একটা ফোয়ারার পানি ফ্রিজ করতে। এইখানে এক্সপোজার ঠিক করতে গিয়া আপনে যদি শাটার স্পিড কমায় দেন তাইলে তো আর ফ্রিজ হইবো না। তাই কমাইতে হইবো f ভ্যালু অথবা বাড়াইতে হইবো আই.এস.ও।
আপনাদের বাড়ির কাজ হইল, পাচ টা ছবি কারেক্ট এক্সপোজার এ তোলা। আজকে তাইলে রাকি। বাই বাই।