১৯৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫ | ১২.০০ এ এম

 

আজকের দিন এর হাইলাইট একটাই। ক্যাসপার। আমার বিড়াল ছানা। সব মন খারাপ সব হতাশা সব ডিপ্রেশন কই যে উবে গেসে কখন নিজেও জানি না। কি যে লক্ষী ও । আর অনেক আদুরে। ছোট ছোট পা নিয়া গুট গুট কইরা সারা বাসা হাইটা বেড়ায়। আবার বেশি দূর যায় না। একটু পরে আইসা আবার আমার সাথে ঘেশলা ঘেশ্লি করে।

ওকে পাওয়ার কাহিনী টা বলি একটু। আমি অফিস থেইকা ফিরতেসিলাম। সুভাস্তু তে লিফট পর্যন্ত আস্তে হয় বেজমেন্ট দিয়া। যেখান দিয়া গাড়ি গুলা উঠে ওই টা দিয়া নামার পর দেখি রাস্তার মধ্যে একটা ছোট্টওওওও বাবু বিড়াল বইসা আসে। আর ওই পাশ থেইকা একতা পাঁজারও আস্তাসে। পাজারোর যে হাইট তাতে এতো ছোট বিড়াল জীবনেও দেখবে না ড্রাইভার। আমি দুই হাত উঁচা কইরা দৌড় দিয়া গেলাম। ড্রাইভার ভাল ছিল। গাড়ি থামায় দিসিল আমার হাত নারানি দেইখা। আমার দৌড় দেইখা দারোয়ান ভাবসে কি জানি হইসে। এই দারোয়ান ভাল আসে। আমারে দেখলেই বিশাল সালাম দ্যায়। আমার পিছে পিছে উনিও না বুইঝা বাশি ফু দিতে দিতে দৌড় দিল। লোকজন জড় হয়া গেল কি জানি হইসে ভাইবা। আমি গাড়ি তামার পর বইসা ওর দিকে হাত বাড়ায় দিলাম। কি আশ্চর্য ও চুপ চাপ আমার দিকে চইলা আসলো।

ওকে সাইডে আনার পর গাড়ি যাওয়ার রাস্তা হইল। যাওয়ার সময় দেখি ড্রাইভার আর গাড়ির লুকজন বিরাট ভুরু কুঁচকানি লুক দিতাসে। আমিও আমার বিখ্যাত ভ্যাবলা মার্কা হাসি দিলাম। অদের ভুরু আরো কুঁচকায় গেলো। যারা বাসি শুইনা তামশা দেখতে জরো হইসিলো তারাও দেখি, ও বিড়ালের বাইচ্চা, ভাইজানের মনে হয় মাথায় সমস্যা এই টাইপ এর কথা বলতে বলতে চইলা গেল। থাকলাম শুধু আমি আর ও।

রাস্তার পাশের একটা খালি পারকিং এ বইসা পরলাম মাটিতেই। ওর গলার নিচে হাত বুলাইতে বুলাইতে বললাম, কিরে ভয় পাইসিশ? আরে ব্যাপার না, এই সব পাজারোর বেইল আসে? ভয় পাইশ না। আমি আসি না। ও দেখি হাত পা ছড়ায়ে আমার কোলে শুয়া পড়ল। আর ভড়ড়ড় ভড়ড়ড় আওয়াজ করতে লাগলো। আমি বুঝলাম ওকে এইখানে রাইখা যাওয়া আর আমার পক্ষে সম্ভব না।

বুকের সাথে লাগায় রাইখা নিয়া আসলাম বাসায়। দুধ আর রুটি কিনা আনলাম। ওরুর জন্য কেনা খাবার এর বাটি ছিল। সেইটাতেই দিলাম দুধ। আর পাউরুটি ছিরা ছিরা কিছু দিলাম দুধের সাথে আর কিছু দিলাম দুধের বাটির আসে পাশে। ও যেভাবে খাইলো , বুঝলাম অনেক খিদা লাগসিল বাচ্চা টার।

এখন ও আমার সাথে গা ঘেঁষায় ঘুমাচ্ছে। মাঝে মাঝে উইঠা দ্যাখে আমি আছি কিনা। তারপর আমার আঙ্গুল চেটে দ্যায়। আবার ঘুমায় যায়। আমি মনে হয় বুঝতেসি বাচ্চা কাচ্চা ভালমত খায়ে দায়ে ঘুমাইতে দেখলে বাবা মার মনে কেমন শান্তি শান্তি অনুভূতি টা হয়।

ওর রঙ সাদা আর লেজটা কালো। ওর এমন হঠাত আভির্ভাব আমার লাইফ এ। আর কালপুরুষ দার ছেলেটার প্রতি অনেক অনেক ভালবাসা। সব মিলায় ওর নাম রাখসি ক্যাসপার।

ও এখনো বিপদ মুক্ত না। অনেক ছোট তো, আর দুর্বল অনেক। আমি যার কাছ থেকে বিড়াল বিষয়ক পরামর্শ নেই সেই মহান জান্নাত প্রিয়ম আপু বলসেন ও এখনো শঙ্কা মুক্ত না। এত দিন খাইতেই পায় নাই ঠিক মত। জানি না আবারো আমাকে কষ্টের সাগরে ভাসাবে কিনা। কিন্তু দেখা যাক। আমি যতটা পারি আগলায় রাখবো ওকে। বাকি টা আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *