লেখার তারিখঃ আগস্ট ১৫, ২০১৫ । ১১.১৮ পি এম
অনেক দিন পর আমি আজকে সিনেমা দেখতে বসছিলাম। সিনেমার নাম “Unbroken”. ২০১৪ সালের সিনেমা। ডাইরেক্টর এঞ্জেলিনা জোলি। কাহিনীর সময়কাল ২য় বিশ্বযুদ্ধ। একটা ইটালিয়ান ফ্যামিলি আমেরিকাতে আসে ভাগ্য অন্বেষণে। সেই ফ্যামিলির একটা ছেলে লুইস জ্যাম্পেরিনি অনেক কষ্ট করার পর একজন ভাল দৌড়বিদ হন। উনাকে আমেরিকার পক্ষ থেইকা অলিম্পিকেও পাঠানো হয়। কিন্তু এর পর ২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হোয়াতে তাকে চইলা আস্তে হয় যুদ্ধে। বোম্বার প্লেন এর বোম্বার হিসাবে নিয়োগ পান। কিন্তু তাদের প্লেন একটা মিশনে থাকার সময় সাগরে ক্র্যাশ করে। ৪৫ দিন নানা রকম সংগ্রাম কইরা টিকা থাকার পর তাদের কে একটা জাপানি জাহাজ পিক কইরা নিয়া যায় আর তাদের যুদ্ধবন্দি বানানো হয়। আর তার উপর শুরু হয় অমানুষিক অত্যাচার।মুল কাহিনী শুরু এই খান থেইকা।
আজকার সিনেমা দেখা অনেক কইমা গেসে। টিভি সিরিজ দেখা হইতাসে বেশি। আমি ফ্রেন্ডস আবার পুরাটা দেখা শেষ করসি। হাউ আই মেট ইউর মাদার পুরাটা দেখা শেষ করসি। তারপর ব্রেকিং ব্যাড দেখা শুরু করসিলাম আবার। আজকে হঠাত ইক্টু টাইম পাওয়াতে আর হার্ড ডিস্ক এর এক কোনায় এই সিনেমাটা খুইজা পাওয়াতে দেখা শুরু করসি। ভাল লাগতাসে। ২য় বিশ্বযুদ্ধ নিয়া সিনেমা আমার ভাল্লাগে।
আমি আজকে ভাবতাসিলাম, আমার আল্লাহর উপর কত টা কৃতজ্ঞ থাকা উচিত । তিনি আমাকে পরিচিত কিছু মানুষের মত চালাক আর ধান্দাবাজ কইরা বানায় নাই। বেক্কল আর অসীম সহ্যশক্তি দিয়া পাঠাইসেন। এই দুইটা জিনিষ না থাকলে আমার মনে হয় আমি এত দিনে হয় খুন হয়া যাইতাম নাইলে জেলে থাকতাম। কারন মানুষের শয়তানি সহ্য করতে পারতাম না। যার উপর রাগ উঠত, মাটিতে ফালায়া গলায় পারা দিয়া দাড়ায়া থাকতাম আর ফেসবুকে লিখতাম ফিলিং গ্রেট।
আমি একটা মিথ্যাবাদী লোক রে চিনি। লোকটা আমার অফিসে কাজ করে। সবাই জানে সে মুখের উপর মিথ্যা কথা বইলা দ্যায় আর এই জন্য তার কোন লজ্যা বোধ ও হয় না। ইথিক্স বইলা যে একটা শব্দ আছে সেইটা সে জীবনে কোনদিন শুনসে বইলা মনে হয় না। তার ক্ষমতার কারণে অথবা উপর মহলে তার আত্মীয় স্বজন থাকার কারণে কিনা জানি না, কেউ তারে ঘাটায় না। আমি খুব প্রতিবাদী কেউ না। কিন্তু আমি রাস্তায় একটা গাড়ি অনেক খন হর্ন বাজাইলে গাড়ি থামায়া গাড়ীর ড্রাইভার কে গিইয়া বলি, কি সমস্যা? এত হর্ন দ্যান ক্যান? ফুটপাথে হোন্ডা ওয়ালা আইসা পিছে থেইকা পিপ পিপ করলে তারে ধইরা রাস্তায় নামায় দেই।
কিন্তু এরে কিছু বলতে পারি না আমি। তার কাজ কর্মে যত টা না আমি রাগে কাপতে থাকি তার চেয়ে বেশি কাপতে থাকি তারে কিছু বলতে পারতেসি না এই ব্যার্থতায়। মুখের উপর কিছু একটা শুনায় দিতে মুখ নিষ পিষ করে। কিন্তু বলি না। আমিও কর্পোরেট জগতের মেরুদণ্ডহীন দাবার গুটি হয়া বাঁচি। এই ব্যাপারটা আমাকে অনেক মনকষ্টে রাখসে ইদানীং। শুধু আল্লাহর উপর ছাইড়া দেওয়া ছাড়া কিছুই করার নাই আপাতত।
স্কুলে থাকতেই ভাল আসিল। কারো উপর মেজাজ খারাপ হইলে দল বাইন্ধা পিটানি যাইত। আমাদের একটা দল ছিল। টিভি সিরিক ডার্ক জাস্টিস এর ছায়া অবলম্বনে গঠিত দল, ব্ল্যাক জাস্টিস। আমরা ছিলাম গরীবের বন্ধু। কেউ কাউরে হুদাই স্যার এর হাতে মাইর খাওয়াইলে ব্ল্যাক জাস্টিস এর লোকজন গিয়া ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করতো। হাজার হাজার প্ল্যান করা হইলেও, বাস্তবায়ন করসি খালি একটা।
একবার ক্লাস এর একটা পোলা আবেগে গদ গদ হয়া স্যার এর কাছে বিচার দিসে যে আমরা কয়জন নাকি স্যার আসার আগে ক্লাসে গল্প করতেসিলাম। স্যার আমাদের কয়জন রে ডাইকা হেভি পিডাইল। ওই পোলার দুর্ভাগ্য যে যেই তিন জন রে ও ফাসাইসে তারা সবাই ব্ল্যাক জাস্টিস এর সদস্য। আমরা বুঝলাম ওকে শাস্তি পেতেই হবে।
অপারেশনটা খুবি সিম্পল ছিল। ছুটির পর সবার সাথে ওই পোলা নামতাসে সিঁড়ি দিয়া। যেহেতু অনেক ভিড় তাই আস্তে আস্তে নামতাসে। আমাদের মধ্যে একজন ওরে সিঁড়ি তে ফালায় দিল ল্যাং এক্সপার্ট। তারপর ভুতের মত উদয় হইল ব্ল্যাক জাস্টিস এর আরো দুইজন। ওরা তাকে উপুর্জপরি দিল আরকি। আই মিন পারাইলও বেশ কিছুক্ষণ। আমি কি করমু বুঝতে না পাইরা একজন এর একটা মেটাল ফ্লাক্স ছিল, ইউ এস আরমি টাইপ। ওইটার স্ট্রেপ এ ধইরা ঘুরাইতে ঘুরইতে দিলাম চার পাঁচ টা বাড়ি। সেই পোলা আর জীবনে কোনদিন আমাদের সাথে ঝামেলা করে নাইই।
দেখি। একটা স্টিল এর ফ্লাক্স কিনতে হবে ইদানীং আবার মনে হইতাসে।