১৬৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ১৪, ২০১৫ । ১১.৫৮ পি এম

 

মন,মাথা সব কেমন জানি ভারি ভারি হয়া আসে। কিছু লিখতে ইচ্ছা করতাসে না। আজকে মনে হয় হাল্কার উপর দিয়াই চালায় দিমু। এই টা স্কুল এর ক্লাস হইলে পোলাপান রে কইতাম বই খুইলা অমুক পেজ থেইকা তমুক পেজ রিডিং পড় সবাই। আফসুস এইডা স্কুল না। স্কুল এর কথায় একটা জুক্স মনে পরসে। একবার এক মাস্টার সাব ক্লাসে ঢুইকা দেহে দুই পোলায় হেবি ঝগড়া করতাসে। উনি ধমক দিয়া জিগাইলো, ওই তোগো সমস্যা কি? পোলা দুইডা কইল, স্যার, আমরা আজকে ক্লাস এর ফ্লোর এ একটা পাঁচশ টাকার নোট কুড়াইয়া পাইসি। অখন আমরা কে টাকাডা নিমু ওই ডা লইয়া আলাপ করতাসি। আমরা ঠিক করসি আমাগো মধ্যে যে সবচেয়ে বড় মিথ্যুক সেই টাকাডা পাইবো। শুইনা তো স্যার হেবি চেইত্তা গেল। এই মারে তো সেই মারে। আর কইল, আরে তোরা আগামী প্রজন্ম, আর এই সব মিথ্যা বলা শিখতাসস। এই শিখাইসি এদ্দিন তোগো রে। জানোস, তোগো বয়সে থাকতে আমরা মিথ্যা কি ওইডাই যানতাম না। পোলা দুইডা একে অন্যের দিকে চাইলো, তারপর কইল, স্যার আপনে জিতসেন। এই লন পাঁচশ টেকা।

আমাদের স্কুল এও স্যার রা হুদাই মারতো। কোন কারন লাগতো না। বই আনি না ক্যান, মাইর। পড়া পারি নাই ক্যান, মাইর। এগুলা তো নরমাল। ক্যান বেতনের রশিদে ছাত্রের সাক্ষর এর জায়গায় নাম না লিখা পেচাইন্না সাইন করলাম ওই জন্যও মাইর খাইসি। আমি কত কষ্ট কইরা একটা পেচাইন্না মার্কা সিগনেচার বাইর করসিলাম। আর স্যার চর মাইরা কইসে, ফাইজলামি করস, আমার লগে ফাইজলামি করস? এই সব কি বিসরি জিনিষ আকসস সাক্ষর এর ঘরে।

স্পিকিং অফ বিসরি, একবার বাসে এক লোকের পাশে আইসা এক আপায় বসলো। আপার কোলে একটা পিচ্চি। আপারে দেখলেই বুজা যাইতাসিলো আপার মন খারাপ। পাশের লোকটা জিজ্ঞেস করলো, আপা কি হইসে? মন খারাপ কেন? আপায় কান্না কান্না গলায় বলল, জানেন ভাই, ওই সামনের লোক গুলা আমার পিচ্চি কে নিয়া হাসাহাসি করসে। বলসে এরম বদসুরত বাচ্চা নাকি ওরা জীবনে দ্যাখে নাই। শুইনা তো লোক টা চেইতা গেল। কিইইহ ! এত্ত বড় সাহস ওদের। আপা, আপনে আপনের পোশা বান্দর টারে আমার হাতে দ্যান। আপনে গিয়া ওদের চর দিয়া আসেন দুইটা। জীবনে এরম বান্দর পালতে দ্যাখে নাই নাকি ফালতু গুলা।

পিচ্চি কালে এরুম ইন্সাল্ট আমারেও অনেক শুনতে হইসে। একবার বাসায় কেউ নাই। আমারে রাইখা সবাই মার্কেটে গেসে। আমি বাসায় একলা। তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। খিদা লাগসিল অনেক কিন্তু খাওয়ার কিছু নাই বাসায়। এমন সময় হঠাত কলিং বেল । দরজার ফুটা দিইয়া দেখি এক বুড়া লোক হাতে একটা মিষ্টির প্যাকেট হাতে দাঁড়ায় আসে। আমি তো আর বাকি কিছু দেখার প্রয়োজন ই বোধ করলাম না। দরজা খুইলা আসেন আসেন করতে ড্রইং রুম এ বসাইলাম। ওই লোক জিগাইল, তুমার আব্বা বাসায় নাই? আমি বলসি বসেন, আইসা পরবে একটু পড়েই। আর হা কইরা তাকায় রইসি মিষ্টির পেকেটের দিকে।

লোক টা আমার দিকে মিষ্টির প্যাকেট টা আগায় দিয়া বলল, এইটা ভিতরে নিয়া যাও আর আজকের পেপার টা দিয়া যাও। আমি কোন মতে পেপার টা উনার দিকে ছুইরা মাইরা মিষ্টির প্যাকেট নিয়া বইসা পড়লাম ডাইনিং রুম এ খাইতে। প্যাকেট যখন প্রায় অর্ধেক খালি তখন ওই লোক ডাকলও, আচ্ছা এই টা আজাহার সাহেবের বাসা তো ঠিক না? আমি বললাম, না উনি তো উপরের তলায় থাকে।

লোক টা খুবি বিব্রত হয়া গেল। বলল, এহে, ভুল হয়া গেসে। বাবা, আমার প্যাকেট টা দাও, আমি যাই। আমি তো দেখলাম কাম সারসে, অখন কি করুম? তারাতারি ভিত্রে আইসা ফ্রিজ থেইকা কয়েকটা শশা আর মুলা নিয়া প্যাকেট এ ভইরা ওজন বাড়াইয়া আবার দিয়া দিলাম।

উপরের তালায় কি হইসে তারপরে আর জানার সাহস হয় নাই। মিশটি গুলা মজা আসিল অবশ্য।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *