লেখার তারিখঃ আগস্ট ১০, ২০১৫ । ১০.৫৮ পি এম
আজকাল অফিস থেইকা বাইর হইতে হইতে ছয়টা সাড়ে ছয়টা বাইজা যায়। তখন হাটা শুরু করলে চারিদিকে সন্ধ্যা নামে । আমি যত হাটি সন্ধ্যা তত গাড় হয়। আমি কল্পনা করি আমি সন্ধ্যা নামাইতাসি।
বসুন্ধরার যত ভিতরে যাই রাস্তা গুলা আরো নির্জন হয়। ভিতরের দিকে রাস্তার উপরে সোডিয়াম লাইট নাই। টিউব লাইট লাগানো রাস্তার লাইট আছে। মজা লাগে দেখতে। আর আছে জোনাকি পোকা। আহা কয়েকটা জায়গা খুইজা বাইর করসি। এত জোনাকি পোকা মিট মিট করে যে হাটা থামায়া এদের দাঁড়ায়া দাঁড়ায়া দেখা লাগে কিছুক্ষণ।
আমার এক সময় মনে হয় আমি আকাশ দেখতে পাইতাসি পায়ের নিচে আর ওরা মিট মিট করা তারা। জি ব্লক এর শেষ মাথায় তিনশ ফিট রাস্তায় উঠার গেট টার পাশে একটা জায়গা আছে বড় বড় ঘাস ওয়ালা। ওই খানে যখন জোনাকি পোকা দেখি মনে হয় দুই হাত দুই দিকে ছড়ায়া ধপ কইরা পইরা যাই ঘাসের মধ্যে।
আজকে হাটতে হাটতে একটা হেডফোন অনেক মিস করতেসিলাম। আমার টা রাশার কাসে আর ও হাইবারনেশন এ গেসে। কোন খবর নাই। হেডফোন এর কথা মনে হওয়ার পর একটা ঘটনাও মনে পড়লো। তখন আমার অফিস ছিল গুলশান সেলিব্রেশন পয়েন্ট এ। বাসাবো থেইকা অফিস করতাম। একবার সি এন জি গুলশান এক এ ঢুকার সময় পুলিশ চেকপোস্ট এ থামাইলও। আমি দেখতে খুবি বদখত তো তাই আমারে প্রায় ই চেকপোস্ট এ থামাইতো। সি এন জি নামার পর এক শুকনা মত হাবিলদার আইসা আমারে হাতায়া হাতায়া সার্চ করলো। পকেটে পাইলো হেডফোন। আমারে জিজ্ঞেস করলো, “এইটা কি?” আমি বলসি, হেডফোন, গান শুনে। পুলিশ করলো কি হেডফোন টা নিয়া কানে গুইজা দিল। আমি তখনো বুঝি নাই সে আসলে কি করতে চাইতাসে। আমি বেক্কল এর মত দাঁড়ায় থাকলাম পুলিশের দিকে তাকাইয়া। প্রায় ১০ মিনিট পর পুলিশ বলল, কই বাজে না তো কিছু, গান কই? আমি তারে বুঝাইলাম যে দেখেন, কানে হেডফোন দিয়া দাড়ায়া থাকলে তো কিছু শুনা যাবে না। এই পাশে মুবাইল নাইলে এম পি থ্রি নাইলে রেডিও লাগাইতে হবে। হে কি বুঝলও আল্লায় জানে, বিরক্ত হয়া আমারে কইল, বুঝসি, নষ্ট, যান যান।
আমাদের দেশ এর লোক গুলা জে কি পরিমাণ সরল তা আমাদের মত প্রত্যেকদিন নতুন নতুন ধান্দাবাজি করা লোকজন এর পক্ষে বোঝা সম্বব না। একবার নানু বাড়ি গেসি। তখন একটা বিশকাপ চলতাসে। সারা গ্রাম এ খুবি উত্তেজনা। আর সবাই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার । মসজিদে আর্জেন্টিনার জয় কামনায় মিলাদ ও পড়ানো হইসে । ঐ ম্যাচে আর্জেন্টিনা হাইরা যায়। এরপর হঠাত শুনি গ্রাম এর লোকজন মিছিল বাইর করসে। আশে পাশের গ্রাম থেইকা লোকজন আইসা পরসে মিছিল এ যোগ দিতে। মিছিলের শবচাইতে জোরে যে স্লোগানটা বলা হইতাসিল তা হইল,
“আর্জেন্টিনা হারলো কেন, খালেদা জিয়া জবাব চাই”