লেখার তারিখঃ জুলাই ২৬, ২০১৫ । ৯.২০ পি.এম
ফেরদুইচ্চার গায়ে হলুদ এ বয়া বয়া নোট লিখি। এহনো শুরু হয় নাই কিছু। আমার মনে হয় যদি রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করি তাইলে হয়ত আর আজকে নোট লেখা হবে না। তাই এখনি লিখা ফালাই। আমি আজকে সকালে চিটাগাং আসছি। ফেরদৌস আর লরার বিবাহ খাইতে। আজকে আকদ পড়ানো হইসে একটু পরে গায়ে হলুদ এ যাবো। আর কালকে বিয়া।
আসার সময় বিরাট প্যাসপুস লাগসিল। আরেকটু হইলে ফ্লাইট মিস হয়া যাইত। ঘটনা হইল, ফেরদৌস গাড়ি পাঠাইসে ভোর পাচটায়। কথা ছিল গাড়ী আমাড়ে সুভাস্তু থিকা উঠাবে, তারপর আমরা ফেরদৌস রে মিরপুর থিকা উঠাবো। দেন আমরা এয়ারপোর্ট যাবো।
সব ই ঠিক ছিল, ড্রাইভার ফোন দিসে ঠিক পাচটায়, ভাইয়া আমি আস্তেসি নামেন। আমি রেডি ই ছিলাম। তালাতুলা মাইরা নাইমা আইসা ড্রাইভার রে ফুন্দিমু, আর লাইগা গেল ডিসেস্টার। ফোন এর ডায়ালার হ্যাং করসে। না পারতাসি কল করতে না পারতাসি ধরতে। এদিকে সময় চইলা যাইতাসে। গাড়ীও খুইজা পাইতাসি না। এখন কি করুম? একা একাই যামুগা এয়ারপোর্ট এ? ফেরদুস রে কেম্নে খবর পাঠামু তাইলে।
হঠাত মনে পরল ফেসবুক এ ট্রাই করি। ওরে কইলাম অবস্থা। ও আমারে একটা জায়গায় দার করাইল। ড্রাইভার আমারে না পায়া ওরে তুলতে গেসিল গা। সেই গাড়ি আবার বেক কইরা আইসা আমারে তুল্ল, দেন ফেরদৌস রে পিক্কল্লাম। দেন এয়ারপোর্ট।
ঢাকার সকাল বেলার লাইট অনেক সুন্দর ছিল আজকে। একদম ঝকঝক করতাসিল সব। আমাদের টেক অফ অনেক স্মুথ ছিল। টেন থাউজেন্ড ফিট পর্যন্ত একদম ক্লাউডলেস স্কাই। ঝামেলা টা শুরু হইল আমরা যখন প্রবাব্লি ফেনির উপর। অনেক রেইন ক্লাউড আর মাঝখানে মাঝখানে এয়ার পকেট। ল্যান্ডিং এর সময় অল্মোস্ট ৯০ ডিগ্রি ক্রসউইন্ড। পাইলট দুইজন এর খবর হয়া গেসে টাচডাউন করাইতে। ড্যাশ এইট এর মত প্লেন রানওয়ের একেবারে শেষে গিয়া থামসে। তারপর ব্যাক্ট্রেক কইরা আইসা টেক্সিওয়েতে ঢুকসে। চিটাগাং এয়ারপোর্ট এয়ারপোর্ট এর লেংথ ইজ লাইক টেন থাউজেনড ফিট। তইলে কত খানি রানওয়ে লাগসে থামতে, আল্লাহ। গেসিল আজকে আরেকটু হইলে।
এইখানে আজকে সারাদিন বৃষ্টি। কুত্তা বিলাই স্টেজ পার হিয়া গরু মহিষ স্টেজ এ গেসে গা। এয়ারপোর্ট থিকা ফিরার সময় একটা মজা হইসে। একটা সি এন জি গরতে পইরা কাইত হয়া গেসিল। ভিতরের আপা এত ভয় পাইসে। দরজা খুলতাসিল না উনার সাইড এর। উনি পাল্ডা সুদ্ধা সি এন জির দরজা খুইলা পানির উপ্রে দিয়াই যেই দোউট্টা দিল দরজাটা হাতে নিয়া। ব্রাভো।
রাস্তায় বৃষ্টির কারনে অনেক জ্যাম ছিল। বাই দা টাইম আমরা ফেরদুস এর বাসায় পৌছাইসি আমি খুদার্ত, শিতার্ত, মুতার্ত সব। আন্টি মনে হয় বুঝসিল। মায়ের মন তো। আমারে এক ডিব্বা রুডি আর দুই বাটি গরুর মাংস দিয়া বহায় দিল। আমি হাল্কা খায়া লাইলাম আরকি সব।
আমাগো গাড়ির আবার হর্ন নষ্ট। সেই জন্য উনার দুক্ষের শেষ নাই। আমি বুদ্ধি দিলাম, একটা সি এন জি ভাড়া কইরা সামনে চালাইতে কন। আর ফুনে যুগাযুগ রাখেন। যায়গামত খালি ঠেলা দিবেন পিসে দিয়া আর ফুনে কইবেন হর্ন দে, হর্ন দে। বেচারা গাড়ি। হর্নি হইতে চাইতাসে, হর্নি হইতে পারতাসে না।
তারপর হোটেল এ আয়া গইরানি। দুপুরে আরেক দফা হাল্কা লাঞ্চ। এইবার তিন রকম ভাবে রান্ধা গরুর মাংস। খায়া দায়া মসজিদে আইলাম। মসজিদের নাম জামাতুল আলফালাহ। এইখানে হুজুর দেখি উর্দু বলে। বিয়া পড়ানির সময় ফেরদুস এর শশুর কে বলসে, কাহো, দে দিয়া। আর উনিও বলসে, দে দিয়া। আমি ছবি তুলার সময় এই হুজুর অনেক ভুরু কুচকানি দিসে আমার দিকে।
অনেক ভাল্লাগসে মসজিদ টা। অনেক বাতাস আর শান্তি শান্তি লাগে। এই মসজিদ এর সাম্নেই ডেল স্টেইন সেল্ফি উঠাইসিল ফুটবল খেলান্তিস গো লগে। আজকেও খেলতাসিল দেখসি পোলাপান, পাশে বিশাল সাইনবোর্ড, “এখানে খেলাধুলা করা নিষেধ”
এখন লেখা থামাই। এট্টু পরে বডি ইয়েলোয়িং অনুষ্ঠান শুরু হইব। তামশা দেখি গা।