লেখার তারিখঃ জুলাই ২৪, ২০১৫ । ১০.২৩ পি.এম
মৃত্যু চিন্তা আমার খুব একটা আসে না। ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং লাগে। কি আছে ওইপার? বিশেষ কইরা জান্নাত জাহান্নাম ব্যাপারটা খুব ভাল্লাগে। জান্নাত এর সুযোগ সুবিধা শুইনা আপ্লুত হই। কি কি চামু তখন তার লিস্ট করতে ভাল্লাগে। আর জাহান্নাম এর শাস্তি এর কথা শুইনা আগে অনেক ভয় পাইতাম, আইডিয়াল স্কুল এ পড়ার সময়, এখন কেন জানি কিছু লাগে না। আচ্ছা দিব নে শাস্তি, পোড়াইব নে কি আর করা, এমন মনে হয়।
যারা জাহান্নাম আর মরতে একদিন হবে বইলা আমারে হেদায়াত করতে আসে তারা খুব হতাশ হয়। যদিও আমি সরাসরি তর্কে যাই না কখনো তাদের সাথে। আমি নাস্তিক না। আবার নিয়মিত নামাজ পড়া মুসলমান ও না। নামাজ না পড়লে আমার গিলটি লাগে। কিন্তু কারো কথায় নামাজ পরতেও চাই না। মন থেইকা আসলে তখন পড়তে চাই। মন এই ব্যাপারে খুবি সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট দিতাসে আমারে।
এই জীবনে মানুষ যা চাবে তার সবকিছু পাবে না এই ব্যাপারটা মাইনা নিতে কোন লজিক ছাড়াই কষ্ট হয় আমার। ক্যান পাবে না? একটু না হয় পাইলই। সব কিছু কেমন টাকা পয়সায় আইসা ঠেকে। টাকা নাই তাই ছেলেটা ফ্লাইং স্কুল এ ভর্তি হইতে পারবে না। টাকা নাই তাই মেয়েটা বাইরে পড়তে যাইতে পারবে না। ক্যান, টাকা আমাদের নিয়ন্ত্রন করবে ক্যান? আজকেও আমার বাপ আমারে বলসে, আমি ঘুরাঘুরি কইরা টাকা উড়াইতাসি। টাকা জমাই না ক্যান। টাকা জমায়া কি হবে আসলে? এইটা সবাই বুঝে, আমি বুঝি না ক্যান। সবাই কত জমায় টমায় ফালায়, ফ্ল্যাট গাড়ি, ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র কইরা ফালায়। আমার এগুলা আছে কিন্তু সবার মত বড় স্কেল এ নাই। আর আমি তাতে কোনো সমস্যাও নাই। কিন্তু আমি আজকে শুন্সি আমি একটা ব্যাক্কল, আমার সারাজীবন এম্নেই উড়নচন্ডি কাটবে, তারপর শেষ বয়সে ধুইকা ধুইকা যাবে। আচ্ছা কি আর করা, গেলই না হয়। আমি কোন প্রতিবাদ করি নাই। থাক। আব্বা তো, বলুক। কষ্ট লাগে আরকি তবু।
গতকাল ঢাকায় আসার পর থেইকা বাসাবো তেই আছি। আমি নেপাল থেইকা বাসার জন্য তেমন কিছু আনতে পারি নাই। টাকার জন্য না, কিছু আনার মত পাই নাই তাই। আম্মারে বলসি তোমাকে নিয়া যাবো নে, তখন যা কিনার কিন্নো। আমার বিদেশ থেইকা কেউ কিছু আনছে ব্যাপারটাই এত জোস লাগে। ছোটবেলায় বিদেশ থেইকা মামা রা ফিরতো আর তাদের স্যুটকেস খুলা বেপারটা একটা ঈদ এর মত বেপার সেপার ছিল। সবাই ঘিরা বসতো আর মামা একটা একটা কইরা জিনিষ বাইর কইরা দিয়া বলতো, এইটা তোমার জন্য, এইটা অমুকের জন্য এমন। আর সব কিছুতে কেমন বিদেশ বিদেশ গন্ধ। একেবারে গেদা কালের যেই অল্প কয়টা স্মৃতি মনে আছে তার মধ্যে একটা হইল মামার আনা বিদেশি জিনিষ পত্র আমি স্মেল নিতাসি একটা একটা কইরা অনেক্ষন।
স্পিকিং অফ অনেক্ষন, বিখ্যাত ছড়াকার অনিক্ষাণ কয়দিন আগে আমার জন্য বারথডে গিফট পাঠাইসেন। আমি যে কি অবাক হইসি। উনি আমেরিকা গেসিলেন যে সেইখানে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স এর জিনিষ্পত্র আমার জন্য আলাদা কইরা রাইখা দিসিলেন। আবার একটা মডেল প্লেন এর সেট ও দিসেন। সাথে একটা ছোট চিঠি। চিঠি পইড়া মন ভাল হয়া যায়। আর সব কিছু তে বিদেশ এর সেই গন্ধটা। আল্লাহ উনার হায়াত দারাজ করুক। উনি যখন আরো বিখ্যাত হয়া যাবে তখন আমি এই চিঠির ফটকপি বিক্রয় কইরা কুটিপুতি হয়া যামু। মু, হা, হা।
খুব কাছের লোকজন সবাই জানে যে ছোটবেলায় আমি খুব অল্প তেই কাইন্দা দিতাম। হয়তো বিদেশ থেইকা কোন আত্মীয় আসছে তাই আম্মা আব্বা গেসে দেখা করতে। আমি আম্মা কে ফিস ফিস কইরা জিজ্ঞেশ করলাম, আম্মা, আমার জন্য কি আনছে? আম্মা বলতো, চুপ থাক আদেখলা। ওদের বাসার জন্য আনছে। তোর জন্য আনবো ক্যারে? আমি ঠোট কাম্রায়া কোন মতে কান্দা সাম্লাইসিলাম। আর নাক টান্তে টান্তে আর লাল হয়া যাওয়া চোখ মুছতে মুছতে বাসায় ফিরার সময় মনে মনে ঠিক করসিলাম, একদিন আমিও বিদেশ যাবো। আর এক সুটকেশ ভর্তি খালি আমার জন্যি জিনিষ আনবো। আর বাইর কইরা কইরা নিজেরে দিব, এই নাও ইথার, এইটা তোমার, এই নাও ইথার ওইটা তোমার, এই নাও ইথার, সব তোমার।
দুনিয়া ভাইংগা কান্দা আসা ওই বেক্কল পিচ্চিটার জন্য কষ্ট লাগে প্রায় ই।