লেখার তারিখঃ জুলাই ১৯, ২০১৫ । ১১.৪৮ পি.এম
বিদেশ বইসা লেখা প্রথম নোট। আজকে স্থানীয় সময় বেলা দুইটা আর বাংলাদেশ সময় শুয়া দুইটায় আমরা নেপাল আয়া নামছি। জার্নি টা খুবি দুর্দান্ত ছিল। সিকিউরিটি রিজনে সব বলতে পারতাসি না তয় শুধু এইটুক বলতে পারি ককপিট থেইকা ভিউ টা খুবি মারাত্মক ছিল।
এয়ারপোর্ট এ বেশি টাইম লাগে নাই 🙁 আফসুস। আমি ভাবসিলাম আরেকটু থাকুম। আহা এয়ারফুট। ঠুশ ঠাশ সিল মাইরা ছাইরা দিসে। প্রি পেইড ট্যাক্সি দিয়া আইসা পরসি হোটেল এ। আমাগো হোটেল এর নাম হোটেল ফ্রেন্ডস হোম। ছোটখাট ছিমছাম হোটেল। ৫০% ডিস্কাউন্ট এ ট্রিপ এডভাইসর থেইকা বুকিং দিয়া আসছিলাম। বেশ ভাল ইউজার রেটিং পাওয়া হোটেল। নাথিং ফ্যান্সি কিন্তু ব্রেকফাস্ট ফ্রি, ওয়াই ফাই ফ্রি, আর কি লাগে।
রুমে আইসা এট্টু গইড়ায় টইড়ায় আমরা পাটি পাটি হা হা করতে বাইর হইলাম। এই এলাকার নাম “থামেল”। আমরা কুন ম্যাপ ট্যাপ এর ঝামেলায় যাই নাই। যেদিক মুঞ্চাইসে হাটা দিসি। আমি চাইতেসিলাম যাতে রাস্তা হারায় ফেলি। একটা অচেনা শহরে রাস্তা হারায় ফেলা বেপারটা কত থ্রিলিং হইত। কিন্তু হারাই নাই।
হাত্তে হাত্তে একদম গলি টলির ভিতরে ঢুইকা গেসিলাম। আমার কাসে খুবি শাখারিবাজার টাইপ লাগসে। ঘুইরা টুইরা একটা চত্তর মত জায়গায় আসলাম। কত রকম মানুষ। কিছু দেখতে ইন্ডিয়ান দের মত, কিছু বাংলাদেশি দের মত, কিছু চাইনিজ দের মত। গলি হইলেও সামনে যদি একটা গাড়ী ঘুরায় তাইলে আরেকটা গাড়ি হর্ন বাজায়া মাথা খারাপ কইরা ফালায় না। চুপ চাপ অপেক্ষা করে। এইটা ভাল্লাগসে।
আমরা গলির একটা দুকানে ঢুইকা মমো খাইলাম। ফ্রাইড মমো আর স্টীমড মমো। মজা লাগসে। দুই পেলেট খায়া লাইসি এক বসায়। তখন বাইরে ঝুম বৃষ্টি। খায়া বাইর হয়া দেখি বিষ্টি এট্টু কমসে। দুইজন দুই ছাতা লয়া আবার গলি ঘুরান্তিস দিলাম।
একটা জায়গা পার হউনের সময় কিছু লুকজন আয়া আমারে কইল ফিস ফিস কইরা কইল গুড গার্ল, গুড গার্ল। আমি তো খুশি হয়া গেসিলাম আবার কনফিউজড ও হইসিলাম। আমারে গুড গার্ল কইল কেরে। অনেক পরে বুঝসি ওরা আসলে কি কইতে চাইসিল। তউবা তউবা।
স্পিকিং অফ তউবা তউবা, নেপালে মদের দোকান অনেক। কিন্তু ড্রানক লুকজন দেখি নাই। আর কিছু জায়গায় দেখলাম “আন্ডারগ্রাউন্ড শো গার্লস”, “ড্যান্স বার” এগুলা লেখা। বাইরে দিয়া গেলে চিপা দিয়া রঙ বেরং এর লাইট দেখা যায় আর জোরে মিউজিক এর আওয়াজ পাওয়া যায়। যদিও ভিত্রে যাওয়ার সাহস হয় নাই।
আমাগো হুটেলে চা কফি কম্পলিমেন্টরি আর আনলিমিটেড। তাই বাইরে চা কফি না খায়া হুটেলে আবার আইসি ফিরি চা খাইতে। মসল্লা চা খায়া, আবার রুমে আয়া গইড়ানি। নয়ডা বাজে মনে হইল ডিনার খাইতে যাওয়া দরকার।
আমাদের হোটেল থেইকা যেখানে খাওয়া সাজেস্ট করসিল, ওইখানে গিয়া দেখি ওইটা খুবি ফ্যান্সি একটা রেস্টুরেন্ট আর ওইখানে ইউরোপিয়ান কুজিন পাওয়া যায়। নেপাল আয়া ইউরোপিয়ান কুজিন খাইব কুন বেক্কল এ। এইটা কক্সবাজার গিয়া কে এফ সি খাওয়ার মত একটা স্টুপিডিটি হইব। তাই আমরা একটা লোকাল হোটেল খুইজা বাইর করসি। বিশাল ঝাল দেওয়া মুরগি, আর ভাত ভাজি দিয়া খায়া দায়া আয়া পরসি আবার হুডেলে।
এই মুটামুটি নেপালে প্রথমদিন। কালকে আমরা নাগোরকোট যাবো। ওইখানে দুই দিন থাকার প্ল্যান।