লেখার তারিখঃ জুন ৩০, ২০১৫ । ৯.২৫ পি.এম
এর থেকে তো সহজ ছিল ভোর দেখা। সারা রাত জেগে থেকে পরে, ভোর আসতো সব ভাল আর আলো নিয়ে। ঘুমিয়ে যাওয়ার আগে ভাবা যেত, পরাজিত হয়ে ঘুমাতে যাচ্ছি না আজ।
অথচ এখন শুধু দিন শুরু আর শেষ হয় অন্ধকারে। সারাদিন বেসরকারি বাতাসের নিচে বসে আঙ্গুল নড়ে চরে যায় কিছু অক্ষরের উপর। তাতেই বেতন হয়। তাতেই ভাত হয়। তাতেই বেনিয়া মালিক আয় করে অর্থ অনেক। আর কবির জীবনের অর্থ মুছে যায় ক্রমশ। কবি কে চেনে না তারা। দেখাইনি আমি। চেনে এক আঙ্গুল চালানো যন্ত্রমানব কে শুধু। ফরমায়েশ এর পর ফরমায়েশ আসে। আর কবির উপরে মুখোশ চাপানো যন্ত্রমানব এর গতি বেড়ে যায় আঙ্গুলের। আরো কিছু অক্ষর, আরো কিছু বাক্য আর সংখ্যা যোগ হয় বেনিয়ার ভাণ্ডারে।
অথচ এই অক্ষর বিক্রি হবার কথা ছিল না। এই চোখ আটকে থাকার কথা ছিল না এক তরিত তাড়িত দূরদর্শন এ। দূর থেকে নিকটে চলে এসেও জীবন দর্শন কে যা করে দ্যায় আর দূর।
কি হতো যদি না হতাম স্বেচ্ছা গোলাম? যন্ত্রে নয়, না হয় কলমেই লেখা হতো। হয়তো বা মাস শেষে পেন্সিলেও। তবু তো লেখা হত অমর কাব্য কোন। কাগজের পাতা থেকে উঠে এসে সেই বিনামূল্য তবু অমূল্য বাক্য বসে যেত হৃদয়ে হৃদয়ে। মানুষ ভাবত এতো আমারই বাক্য, আমারই স্লোগান। এই বার তবে মুঠো হাতে প্রতিবাদ হোক। শেষ হতে হবে শাসনের যুগ। মাথা উঁচু করে বলা হতো হয়তো, আমার মালিক তুমি না মহাজন। আমার মালিক আমি। এই দ্যাখ লিখে গেছে আমাদের কবি। তোমাদের পক্ষের কবি কই?
তাই আমাকে আমি তবু মরে যেতে দেই নি। আমার সময় কে ওরা কিনে নিলেও আমার সত্তা কে কিনতে পারে নি। এখনো দিনের শুরু তে আর শেষে আশ্রয় খুঁজে নেয়া হয় কবিতা তেই। পাবলো নেরুদা আর জীবনানন্দ মাথার কাছে বসে থাকে কখনো হাতে তুলে নেব বলে। যখন ক্ষমতার আস্ফালন দেখি, অর্থের নির্লজ্জ প্রদর্শনী দেখি, “তুমিও তো আলাদা নউ কিছু” “তুমি অত আলাদা নউ কিছু” বলে চেনা প্রতিফলনের উপহাস করা দেখি, মনে মনে এখনো মন্ত্র পড়ি ভাল থাকার,
শুধু সাগর ভাল লাগে নি বলে
তীরে ছুটে এসেছিল ঢেউ
আমি এই ভীর এর নই তো কেউ
আমি এই ভীর এর নই তো কেউ