১০২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জুন ৯, ২০১৫ । ৮.৫৩ পি.এম

ঢাকা শহর ভর্তি খালি রিকশা আর রিকশা। মোট রিকশার সংখ্যা কত তা সিটি কর্পোরেশন নিজেও জানে না। প্রত্যেক দিন আরো যোগ হয় এই সংখ্যাটায়। কিন্তু সে উনিশশ কট কটি সাল এ রিকশা দেখতে যেরুম আসিল এহনো সেই রম ই আসে। হয়তো মাইনসের শরীর বড় হইসে তাই সিটও বড় হইসে কিন্তু এ ছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং গত ভাবে রিকশার তেমন কোন পরিবর্তন হয় নাই। এইডা ঠিক হয় নাই।

পরিবর্তন বলতে হইসে খালি কিছু চাইনিজ বেটারি চালিত রিকশা আসছে যার নাম যে আসলে কি কেউ বলতে পারে না। কেউ কয় টমটম, কেউ টুকটুক, কেউ অটো রিকশা। আর কিছু কিছু পণ্ডিত মেস্তুরি নরমাল রিকশার বডির পিছনে ব্যাটরি আর সিট এর নিচে মোটর বসাইয়া মোটরাইজড রিকশা বানাইসে দেশিয় প্রযুক্তি তে। কিন্তু এই মোটরাইজড রিকশা গুলা বানানির সময় খালি স্পিড আর ম্যানুয়াল প্যাডেল মারা কইমা মোটর দিয়া চাক্কা ঘুরবে এই ব্যাপার দুইটাই জোর দেয়া হইসে। আর কিছু চিন্তাই করা হয় নাই। খেয়াল করলে দেখবেন এইসব রিকশার ব্রেকিং সিস্টেম আগের মতই আছে। একটা প্যাডেল এ চালানো ১০ কিমি/ঘন্টায় চলা রিকশা আর আর একটা মোটরাইজড ৩০ কিমি/ঘন্টায় চলা রিকশার ব্রেকিং সিস্টেম কখনো এক হইতে পারে? ফলে যা হওয়ার তাই হয়। রিকশার ব্রেক শু খয় হইতে হইতে নাই হয়া যায় আর বেচারা রিকশাওয়ালারে স্পিড কমাইতে রোড এর ফ্রিকশন বা ঘর্ষণ এর উপরেই নীরভর করতে হয়। আবার এই রিকশাগুলা এরো ডাইনামিক ও না। ফলে যে কোন সময় উলটাইয়া যাইতে পারে টার্ন নিতে গেলে।

মনে আসে গত কাল বোয়িং ট্রিপল সেভেন এর কথা বলার সময় ভেরিয়েন্ট এর কথা বলসিলাম? আমার মনে হয় এত দিনে আমাদের রিকশার অনেক গুলা ভেরিয়েন্ট চইলা আসা উচিত ছিল। খোলা ভ্যান গাড়ি , স্কুল ভ্যান, বেকারির কাভারড ভ্যানগাড়ি এগুলারে আমি রিকশার ভেরিয়েন্ট বলতে রাজি না। বরং এগুলারে ভ্যান এর ভেরিয়েন্ট বলা যাইতে পারে।

রিকশার ভেরিয়েন্ট চিন্তা করতে গিয়া আমি নিচের গুলা ভাবতে পারসি। আমি শিউর যাদের মাথায় মস্তিষ্ক আছে তারা আরো নতুন নতুন ভেরিয়েন্ট এর আইডিয়া দিতে পারবেন।

১। এম্বুলেন্স রিকশাঃ

হঠাত জর উঠসে , লেবার পেইন উঠসে, হার্ট এটাক, এক্সিডেন্ট ? তারাতারি এম্বুলেন্স রিকশায় কইরা হাসপাতালে নেওয়া যাবে। দরকার হইলে প্রত্যেক এলাকার মসজিদ এ একটা কইরা এম্বুলেন্স রিকশা থাকবে যাতে দরকার হইলেই এলাকার লোকজন মসজিদ এ দৌড় দিয়া যাইতে পারে।

২। ফরেভার এলোন রিকশাঃ

সিঙ্গেল রাও মানুষ। পাসের সিট টা খালি দেখলে আমাদেরও কষ্ট হয়। তাই এক সিট বিশিষ্ট রিকশা লাগবে। আমি যাইতাসি একলা, ভাড়া দিতাসি দুই জন এর এইডা কিসু হইল? লোড কম হওয়ায় এই রিক্সার ভাড়াও কম হবে।

৩। সাইট সিয়িং রিকশাঃ

এই রিকশার বসার জায়গাটা হবে ট্রান্সপারেন্ট ডোম টাইপ। সান রুফ থাকবে। ইচ্ছা করলে সান রুফ খুইলা দিয়া রিকশায় ভিজতে ভিজতে যাওয়া যাবে। আবার দরকার হইলে লাগাইয়া দিয়া চারপাশ দেখতে দেখতে যাওয়া যাবে। বিদেশিদের জন্য এইটা ভাল হইব। নাইলে রিকশা সিগন্যাল থাম্নে যেমনে হামলায় পরে ফকির আর হকার রা।

৪। মালবাহি রিকশাঃ

রিকশায় মাল নেওনের তেমন যায়গা নাই। আবার ভ্যান গাড়ি তে যুইত মত বসনের যায়গা নাই। এই দুই এর মাঝা মাঝি সমাধান মালবাহি রিকশা। বসার জায়গা থাকবে আবার মাল নেওনের যায়গাও থাকবে। চালক থাকবে দুইজন যাতে চালানোর লোড বেলেন্সিং হয়।

৫। রেন্ট এ রিকশাঃ

এই গুলা দেখতে সুন্দর, স্পোরটস ডিজাইন এর হবে। এগুলারে যে কেউ ভাড়া কইরা এক “রেন্ট এ রিকশা” পয়েন্ট থেইকা অন্য “রেন্ট এ রিকশা” পয়েন্ট পর্যন্ত নিয়া যাইতে পারবে। সেলফ সার্ভিস। নিজের রিকশা নিজে চালান। সুন্দর বইলা চালাইতেও ভাল্লাগবে, মাইনসে কি মনে করল মাথায় আসবে না।

আরেকটা জিনিশ হইল, ক্যাব কোম্পানির মত রিকশা কোম্পানির লাইসেন্স ও দেওয়ার কথা চিন্তা করতে পারে কিন্তু সরকার। এই রিকশা ওয়ালা গুলা হবে ভদ্র, ট্রাফিক আইন মানা, ন্যায্য ভাড়া চাওয়া, কেয়ারিং রিকশা ওয়ালা। নিয়ম না মানলে কোম্পানিরে জরিমানা করা হবে।

যাই হোক, সব কিছুর পরেও আই লাভ রিকশা মোর দেন এনিথিং। আর আমার আম্মা যেইখানেই যায় সবার সাথে গুটুর গুটুর আলাপ কইরা ফ্রেন্ড বানায় ফেলে তো, তাই আম্মার থেইকা শিখসি যে, রিকশায় উঠলে রিকশাওয়ালকে বলতে হয়, আপনের দেশের বাড়ি কই, পরিবার কয় জন এর, ঢাকায় কই থাকেন, কত দিন ধইরা রিকশা চালান। আর নামার পর বলতে হয় থেঙ্কিউ, অনেক কষ্ট করলেন। আর সব সময় রিকশাঅলারে আপনি বলতে হয়। আপনি যত বড় হেডম ই হন, আমি যদি শুনি আপনি রিকশাঅলারে রে বলসেন, “ওই যাবি ?” , তাইলে ইউ জাস্ট লস্ট অল দা রেস্পেক্ট আই হেভ ফর ইউ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *