৮৫/৩৬৫

লেখার তারিখঃ মে ২৩, ২০১৫ । ১০.৩৯ পি.এম

আজকের লেখার টপিক সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট এবং এইটাতে স্টিক থাকার তরিকা । মানুষ যখন বলে “জাস্ট বি ইউরসেলফ” তখন আসলে সে বলতে চায় “আমি আসলেই জানি না তোমারে আর কি বলব”। “জাস্ট বি ইউরসেলফ” হইল দা ওরস্ট উপদেশ এভার। আপনি যদি সত্যি চান কাউরে ভাল উপদেশ দিতে তাইলে তার উপরে দিয়া উড়া উড়ি না কইরা তারে সরাসরি বইলা দেন যে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব তয় তার আগে তার নিজের কিছু কিছু জিনিষ বদলাইতে রাজি আছে কিনা? শিউর থাকেন তার যেই মনের অবস্থা তাতে সে “হ হ ১০০ বার” কইবই। কিন্তু সেইটা এক্টা “আমার নতুন বছরের রেজুলিউশন” এর মতই মিথ্যা কথা। ৮০ ভাগ মানুষ জানুয়ারি শেষ হউনের আগেই নিউ ইয়ারস রেজুলিউশন ভুইলা গুইলা খাইয়া বয়া থাকে। তাই তার দুঃখ একটু কমলে সেও যে সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট এর এই উদ্যোগ টা তে স্টিক থাকবে সেইটা সবার আগে শিউর করতে হইব।

এখন এই শিউর টা করবেন কেমনে? আগেও হয়তো সে অনেক বার কইসে, এইবার আমি বদলায় যামু দোস্ত, এক্কেরে নতুন মানুষ হয়া যামু। কিন্তু কিয়ের কি, দুইদিন পরে আবার আগের অবস্থায় ফিরত গেসে। সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট এর কোনই শর্টকাট ক্র্যাশ কোর্স টাইপ কিছু নাই। যদি বেটার লাইফ চান তাইলে আপনের ঘটনার গভীরে ঢুকতেই হইব আর জিনিস গুলা নিয়া কামের কাম কিছু করতে হইব। কিন্তু , হ, আমি আমার জীবন থিকা শিখসি যে এই কঠিন কামডা সুজা আর কম স্ট্রেস্ফুল করনের কিছু তরিকা আছে। আজকে এডি লয়াই লিখতে বইসি।

১। সবার প্রথমেই বিশ্বাস করতে হইব, “নিজেকে বদলানো সম্ভব”

এই টা শুনতে এত অভিয়াস লাগে যে মনে হয় এইডা কউনের কি আছে। কিন্তু বাস্তব জীবনে দেখবেন যে যেসব মানুষ আপনের কাছে সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট এর উপদেশ চাইতে আইসে তারা আসলে উপদেশ বা সাহায্য চাইতে আসে নাই। অবচেতন ভাবে তারা চাইতে আইসে “ভ্যালিডেশন”। তারা আসলে শুনতে আইসে, “হ এইরম আসলে আগে কখনো ঘটে নাই, তোমার ক্ষেত্রেই পরথম, সিস্টেমটাই আসলে আনফেয়ার, দুনিয়াটাই আসলে খারাপ, তোমার আসলে কিছুই করার নাই” এই সব ব্লা ব্লা ব্লা। তারা আসলে বুঝতাসে নিজের কিছু একটা চেঞ্জ করন দরকার। কিন্তু আপনের কাছে পারমিশন চাইতে আইসে যাতে চেঞ্জ না হউন লাগে।

ঠিক আসে। যদি সে চেঞ্জ হইতে না চায় তাইলে ঠিক আসে। থাকুক এমনি। কিন্তু সে যদি তাই করে যা সে অলওয়েজ কইরা আসছে, তাইলে তো তার লগে তাই হইব যা অলওয়েজ হয়া আসছে তাই না? কিছু একটা তো আছেই যা চেঞ্জ করা দরকার। তারে বলা দরকার যে, যাই হোক, প্রেম ভাইঙ্গা যাক, বস বকুক, শ্বশুর কথা হুনাক সব কিছুর শেষে তার জীবন এর কন্ট্রোল তাগো কারো হাতে না, তার নিজের হাতে। তারে কইতে হইব, দ্যাখ, এইডাই সবচেয়ে কঠিন স্টেপ, তার পরের গুলা রিলেটিভ্লি সুজা। নিজেকে বদলানোর দায়িত্ব টা নিজের ঘারেই নিতে হইব কেউ আইসা চুম্মা দিয়া, ফু দিয়া বা জাদুর কাঠি দিয়া পোক কইরা নিজেরে বদলাইয়া দিয়া যাইব না। নিজেই নিজেকে বদলানো সম্ভব। চাইলেই সম্ভব।

২। যে সব চেঞ্জ মাপা যায় সেটার উপর ফোকাস করা প্রথমে

সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট ইনিশিয়েটিভ নিলে বেশিরভাগ মানুষ একটা কমন ভুল করে তা হইসে ইম্প্রুভমেন্ট এর চেয়ে রেজাল্ট এর দিকে বেশি ফোকাস করে। “আমি শুকামু” এর অর্থ কি অথবা “আমি অরে পটামু” এর অর্থ কি? যদি কোন প্ল্যান না থাকে যে আপনে কেমনে বুঝবেন আপনে শুকাইতাসেন অথবা হ সে আপনের দিকে ইন্টারেস্টেড হইতাসে তাইলে কেমনে বুঝবেন এগুলা আসলেই হইতাসে কিনা? নিজেরে প্রথমেই জিগাইতে হইব কুন সময় আমি আসলেই কইতে পারুম “হ শুকাইসি” বা “হ পটাইসি (সাবাস)” ।

যখন নিজের ভাল ভার্সন টা বানানোর কাজে কেউ মাঠে নামতাসে তখন তার উচিত
মাপা যায় এরম চেঞ্জ এর দিকে ফোকাস করা । “আমি শুকামু” টাইপ এর হাওয়া হাওয়া গোল এর দিকে ফোকাস করলে খুব তারাতারি হতাশ হয়া যাওয়া লাগবে। যদি মাপা যায় এরম ইম্প্রুভমেন্ট গুলা দেখতে দেখতে আগানো যায় তাইলে দেখা যাইব এই ছোট ছোট রেজাল্ট গুলা, ছোট ছোট ডেটা গুলা পরের স্টেপ টা নিতে ইন্সপায়ার করতাসে।

এই ২ লম্বরটা ১ লম্বর তরিকারও সাপোর্ট হিসাবে কাজ করবে। কারন তখন তো একজন “নিজেরে বদলানো সম্ভব” এই ধারনা পাকা পোক্ত করতে মনের লগে হেভি যুদ্ধ করতাসে। যখন ছোট ছোট ইম্প্রুভমেন্ট গুলা তার কাছে ভিজিবল, মেজারেবল হবে তখন সেই যুদ্ধ টা করা আরো সহজ হবে। দিন শেষে সে লুজার হয়া ফেরত আসবে ঠিক ই, কিন্তু চোখখের সামনে এই আগানো গুলা থাকলে পরের দিন কিন্তু জাইগা উঠবে একজন উইনার ই। যখন বদ লোক টা বলতাসে “আমি পাহাড়ে এক লাফে উইঠা গেসি” তখন না হয় সে বলল “ আমি আজকে এক পা উঠসি পাহাড়ে, কালকে আরেক পা উঠবো” । এটলিস্ট সে তো কমিটেড হইল নিজের গোল এর ব্যাপারে।

৩। একবারে শুধু একটাই, সব একবারে না

আমাদের ধৈর্য কম। আমরা সব কিছু মাল্টি টাস্কিং করতে চাই। এইটাতে আমাদের স্ট্রেস বাইরা যাওয়া ছাড়া আর কিছু লাভ হয় না। সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট এর ক্ষেত্রেও আমরা এত গুলা বিষয় নিয়া এক বারে কাজ করতে যাই যে শেষ মেষ আমাগো মস্তিষ্ক সব কিছুর শর্টকাট শিখা ছারা আর কিছু শিখে না। একটা দিনে অনেক গুলা ঘণ্টা থাকে। একটা সপ্তাহে কত্তগুলা দিন। এক মাসে কত্ত গুলা সপ্তাহ। মাস ও তো মাশাল্লা কম না একটা বছর এ। সব আজকেই কইরা লাইতে হইব, সব এখনি দেইখা লাইতে হইব, সব বই এই মাসেই পইড়া শেষ কইরা লাইতে হইব তা তো না। জীবনের মজা টা ই এই খানে। লিমিটেড টাইম, অনেক অনেক কিছু করার আছে যা সারা জীবন করলেও শেষ হবে না। তাইলে কেননা আমরা একটা একটা কইরা ইম্প্রুভ করি নিজেদের। যদি নতুন একটা ল্যাঙ্গুয়েজ শিখা শুরু করি তাইলে এই মাসে ওইটাতেই ফোকাস করি, সাইকেল শিখা টা না হয় দুই মাস পিছায় দেই। যদি এই মাসে আমার ওজন কমানো শুরু করার জন্য হাটাহাটি শুরু করার প্ল্যান থাকে তাইলে নতুন কম্পোজিশন এর কাজ না হয় পরের মাস এ করলাম। একটা নতুন জিনিষ শুরু করার সময় আমাদের অনেক উৎসাহ থাকে আর অনেক আনন্দ ও থাকে। কেন না আমরা এই আনন্দটাকে সারা বছর জুইরা ছড়াইয়া দেই রেদার দ্যান সব যাইত্তা যুইত্তা “এখন” এর মধ্যে ঢুকায় দেওয়া।

সময় এর মত “ফোকাস” ও কিন্তু একটা লিমিটেড রিসোর্স। আসেন আমরা ব্রেইন রে একটা লিমিটেড র‍্যাম কম্পিউটার এর মত চিন্তা করি। একই কম্পিউটার এ একই সময় এ ফটোশপ আর আফটার এফেক্ট আর ত্রিডি ম্যাক্স তো আপনে চালাইতেই পারবেন কিন্তু আউটপুট পাইতে হারাজীবন লাইগা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবো না। আপনার সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট এর মন্ত্রে উত্তেজিত ফ্রেন্ড রে খালি বলেন “ওয়ান এট এ টাইম বেবি, ওয়ান এট এ টাইম”

৪। পচ্চুর পচ্চুর এবং পচ্চুর ব্যারথতা আসবে কিন্তু ব্যাপার না

এইটার মুল কারণ হইল অনেক উৎসাহ নিয়া শুরু করার পর আমাদের মনে হয়, এহ হে, এইডা তো যত সুজা ভাবসিলাম অত সুজা না। আমাদের মনে হয়, আইচ্চা আমি তো আর এক্সপার্ট হইতে যামু না। আমার মুটামুটি পারলেই চলব। কিন্তু করতে গিয়া যখন দেখি ওই মুটামুটি লেভেলে যাওয়াও কঠিন আসে তখন মনে হয়, দুরু, আই সাক, এইটা আমার জন্য না আসলে।

আমরা এইটা খুব রেয়ারলি বুঝতে পারি যে ব্যারথতাও শিখার একটা অংশ। “আমি পারি না” এই ধারনা টা আমরা নিতে পারি না। আমাদের নিজেদের লুজার লাগে যদি আমরা ভাবি “আমি পারি না”। কিন্তু ঘটনা হইল আমরা তো জীবনেও করি নাই এরম একটা জিনিষ ই করতে আইসি তাই না। এইডা তো জানা কথাই যে ফেইল করুম। একদম সুজা সুজা বেসিক গুলাও আমাগো কঠিন মনে হইব। কিছু কিছু কেস এ দিন দিন অবস্থা আরো খারাপ হইব।

কিন্তু দিন দিন অবস্থা খারাপ হইব এই কারনেই যাতে দিন দিন অবস্থা ভাল হয়।হাটতে শিখার সময় কি আমরা ধুপ ধাপ পইড়া যাই নাই? কত বার পরসি ? কত দিন লাগসে হাটা শিখতে । তহন যদি ধুর আমারে দিয়া হইব না ভাইবা বয়া থাকতাম তাইলে এত দিনে কত হট পোলা মাইয়া হামাগুড়ি দিয়া ভার্সিটি আর অপিশে যাইত চিন্তা করেন?

আপনে ফেইল করবেনই। এইটা মাইনা লন। ভুল করবেন, ভুল থেইকা শিখবেন, আর আবার ট্রাই করবেন। এই ভাবেই সব কিছু হয়া আসছে আর হবেও। শুরুর দিকের ফেলিউর গুলা দেইখা ভয় পাওয়া মানে এইটা মেক শিউর করা যে আপনে জীবনেও বেটার কিছু করতে পারবেন না। ব্যর্থতা মাইনা নিলেই দেখবেন যে যেসব তরিকায় কাজ করলে কাজ হয় না তা এভয়েড কইরা নতুন তরিকা খোজা শুরু করসেন আর তা হয়ত শেষ মেশ কাজ ও কইরা যাইতে পারে।

৫। আল্লাহ যখন কারো জন্য একটা দরজা বন্ধ কইরা দ্যায়, তারে চুপিচুপি দেয়াল ভাইঙ্গা ভিত্রে ঢুকার শক্তিও কিন্তু দিয়া দ্যায়

এইটা মাইনা নিতেই হইব যে কিছু জিনিষ কখনোই বদলানো সম্ভব না। আপনি নিজের চেহারা রাতারাতি চেঞ্জ কইরা ফেলতে পারবেন না। আপনে যদি ইন্ট্রোভারট হন তাইলে কালকেই পারটি এনিমেল হয়া যাইতে পারবেন না। কিছু মানুষ জীবনে কোনদিন ই ম্যারাথন শেষ করতে পারবেনা। আপনার হয়তো কোনদিন ও সেই রকম টাকা পয়সা হবে না যাতে খুব অসম্ভব একতা ইচ্ছা পুরন করতে পারেন। হয়তো যতই চেষ্টা করেন কোন একটা ব্যাপারে গিয়া ইউ উইল অলওয়েজ সাক।

আমি আপনারে বলতেসি এইগুলা মাইনা নিয়াও সব কিছুই করা যায়। যখন একটা কিছু তে আটকায় যান তখন আপনের সামনে দুইটা রাস্তা খোলা থাকে। এক, আপনে হাল ছাইরা দিয়া চইলা আস্তে পারেন আর দুই, আপনে বাধাটার পাশে দিয়া ঘুইরা যাওনের একটা রাস্তা খুইজা বাইর কইরা ফালাইতে পারেন।

ম্যারাথন যে শেষ করতে পারে সে হয়তো সাইকেল চালাইয়া চিটাগাং চইলা যাইতে পারে। কেউ হট লুকিং মডেল টার মত না হইতে পারলেও সে হয় তো তার ব্যাক্তিত্য কে এমন কইরা ফালাইতে পারে যাতে মানুষ তার দিকে আগুনের দিকে আগায় যাওয়া পোকার মত হা কইরা লুল ফালাইতে ফালাইতে ছুইটা আসে।

হয়তো পুরাই উলটা রাস্তায় হাটসেন এতদিন। আপনের জন্য যা না তার পিছনেই দোউরাইসেন। ভুল পথে যাওয়াটা বোকামি না। বোকামি হইল পথ টা ভুল বুঝতে পাইরাও সামনে নিশ্চয়ই ঠিক পথ আছে ভাইবা চলতেই থাকা। থামেন, ঘুরেন, উলটা পথে শুরুর যায়গায় ফেরত আসেন, তারপর আবার চলতে শুরু করেন। হয়তো ফটোগ্রাফি আপনার জন্য না, হয়তো আপনে ভিডিও গ্রাফিতে দুনিয়া কাঁপায় ফেলতে পারবেন, অথবা আপনার জন্য যা ঠিক সেই টাইপ এর ফটোগ্রাফি আপনে এখনো ট্রাই ই করেন নাই। অথচ ভাবতাসেন ইউ সাক এত ফটোগ্রাফি। কম্পিউটার জিনিষ টা আপনের কোনদিন ই ভাল লাগে নাই অথচ বাপ মা ভর্তি করাইসে আইনা সি.এস.সি তে। আপনার যদি অল্প একটুও ভাল লাইগা যায় প্রোগ্রামিং আর আপনে মনে করেন যে পারবেন চেষ্টা করলে তাইলে স্টিক টু ইট। নাইলে বাইর হইয়া আসেন এখনি, নিজের রাস্তাটা বাইর করেন তাড়াতাড়ি।

প্রিয় বন্ধু আমার, লাইফ ইজ টু শর্ট টু গেট স্টাক ইন এ রং প্লেস 🙂

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *