৭৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ মে ১৫, ২০১৫ । ১০.৪৬ পি.এম

আমি ঠিক শিউর না। কিন্তু স্কুল এ থাকতে যখন মাঝে মাঝে অনেক বেশি ইন্সপায়ারড হই আমরা, তখন হয়তো সবাই ই ভাবে যে আমি এই দেশ টাকে পালটায় ফালামু। আমিও ভাবতাম। যেইখানে আমি জানি সমস্যা গুলা কোথায়, এই যে বই ভর্তি কত রচনা তাইলে ওই জায়গায় বিশেষ “গুরুত্ব” দিয়া কাজ করলেই হয়। স্কুলে থাকতে কেন জানি গুরুত্ব কথাটা অনেক বেশি লেখা লাগতো রচনায়। খুবি গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ ভাষনে তিনি বলেন এইরম। তখন খুব ভাব গাম্ভীর্য ওলা লাগলেও এহন আর গুরুত্বপূর্ণ শুনলে বেশি গুরুত্ব দিতে মুঞ্চায় না। আই গেস গুরুত্ব হ্যাস লস্ট ইটস গুরুত্বনেস।

যাউকগা, আমি অনেক ভাবতাম কেমনে দেশ পালটায় ফেলা যায়। মাথায় রাখতে হবে যে এই গুলা একটা ক্লাস থ্রি এ পড়া ছেলের চিন্তা ভাবনা। এইটা করা যায় , ওইটা করা যায়, এই প্ল্যান সেই প্ল্যান। কিন্তু সব কিছু থামতো আইসা টাকা আর ক্ষমতায়। কিন্তু এইটা করতে তো অনেক টাকা লাগবে, কিন্তু এইটা তো পুলিশ করতে দিবে না, কিন্তু এইটা তো সারা দেশ এর মানুষ জানবেই না এইরকম প্রব্লেমগুলায় আইসা ঠেকতাম। তখন ঠিক করসিলাম, না দেশের প্রেসিডেন্ট হইতে হবে। তাইলে আমি যা বলি তাই হবে আর বাংলাদেশ এর চেহারাই পালটায় যাবে যদি এই সব করতে পারি।

ওই সময় ই স্কুল এর ক্লাস এ স্যার এর মনে হয় পড়াইতে ইচ্ছা করতেসিল না অর সামথিং, উনি সবাইরে জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কে কি হইতে চাও বড় হয়া এক জন এক জন কইরা সামনে আইসা বল। আমার পালা যখন আসলো , আমি গেলাম। আর খুবি স্বাভাবিক ভাবে বললাম, আমি বড় হয়া এরশাদ হইতে চাই। বলার সাথে স্যার ঠা ঠা ঠা কইরা হাসতে হাসতে চেয়ার থেইকা পইড়া গেল। আর সেইটা দেইখা ক্লাস এর পোলাপান ও হাসতে হাসতে ক্লাস ফাটায়া ফালাইল। আমি বেকুবের মত দাঁড়ায় দেখলাম। আমার অনেক কান্দা আস্তাসিল, কিন্তু কান্দি নাই। কাম ওন। আমি ক্লাস থ্রি তে পড়ি। আমি কেমনে জানুম যে এরশাদ একটা নাম, পোস্ট না। আমি জানতাম বাংলাদেশের এরশাদ, ইন্ডিয়ার এরশাদ, আমেরিকার এরশাদ এমন হয় মনে হয়।

এই দেশ রে নিয়া কিছু করার চিন্তার ভুত টা ঘাড় থেইকা আর নামেই নাই। এমন না যে আমি একদম অনেক কিছু করতাসি । আমি মহান দেশ প্রেমিক টাইপ কিছু । এমন কিছু। আমার শুধু মনে হয় জিনিশ গুলা করা অত কঠিন ও না। আমাদের শুধু একজন নেতা দরকার। এমন একজন নেতা যার কথা শুনলে মনে হবে, না এই টা নেতার ইচ্ছা না, এইটা আমার ইচ্ছা। অফিস করতে করতে একটা জিনিশ শিখসি যে আপনি কার জন্য কাজটা করতাসেন সেইটা খুব ইম্পরট্যান্ট। সেইটার উপর কাজ এর বাউন্ডারি, কোয়ালিটি আর এফরট চেঞ্জ হয়া যায়। আমাদের এক জন নেতা দরকার যার জন্য কাজ কইরা আমরা ভাল ফিল করব। তাইলেই দেশ চেঞ্জ হয়া যাবে। এজ সিম্পল ইজ দ্যাট।

আন্ডার গ্র্যাড এ পড়ার সময়ের এরকম একটা আইডিয়ার কথা দিয়া শেষ করি। খুবি শিশুতোষ আইডিয়া। খুব বেশি ডিটেইল চিন্তা করি নাই। বাট এরকম কিছু হইলে ভাল হইতো ভাইবা আই ফেলট গুড।

আমি তখন দেখতাসিলাম যে ভার্সিটির আর কলেজের পোলাপান এর হাতে প্রায় ই কিছু ফ্রি টাইম থাকে। যখন নতুন সেমিস্টার এর ক্লাস শুরু হয়, যখন সেমিস্টার ফাইনাল শেষ হয়, সন্ধ্যার পর, কিছু কিছু ছুটির দিনে এমন। আবার আমরা প্রায় ই শুনি সরকারি কাজ এ অনেক দেরি হয়, লোকজন এফিসিয়েন্ট না এরকম। তো আমি চিন্তা কইরা দেখলাম এমন হইলে কেমন হয় যে সব সরকারি অফিসে সেকেন্ড শিফট চালু হবে। সন্ধ্যা ৬ টা থেইকা রাত ১০ টা। এই সময় কাজ করবে এই সব আন্ডারগ্র্যাড পোলাপান। সিনিয়রিটি দেখা যাইতে পারে লাইক থার্ড/ফোরথ ইয়ার এর স্টুডেন্ট রা মোর ম্যানেজেরিয়াল রোল এ আর ফাস্ট/সেকেন্ড ইয়ার এর পোলাপান হবে মুল ওয়ারকফোরস। এদের কে ট্রেইন আপ করবে ওই পজিশন এ যে দিন এর বেলা কাজ করতেসে সেই মানুষ টাই।

কি পরিমাণ পেস আসবে কাজে চিন্তা করা যায়। ২য় শিফট এর লোকজন অভিয়াস্লি অনেক নতুন নতুন আইডিয়া নিয়া আসবে কাজ এ, যেগুলা ১ম শিফট এর লোকজন কে অনেক অনেক হেল্প করবে। আর পাস করার পর ছেলে মেয়ে গুলা অলরেডি অভিজ্ঞতা নিয়া বাইর হইতাসে। দেখা যাবে ওই অফিসের বস ই হয় তো খুশি খুশি গলায় বলতাসে, ইয়ে কুদ্দুস, তোমার তো গ্রেজুয়েশন শেষ, অমুক সাহেব ও আগামী মাস থেকে এলপিআর এ যাচ্ছেন, হয়াই নট ইউ কাম টুমরো এট দা ডে শিফট? তারপর দেখা যাবে অনেক বাসায় বাবা গম্ভীর মুখে মেয়ে কে সেমিস্টার ফি এর টাকা জমা দেওয়ার ডেট জিজ্ঞেস করতে গেসেন, আর মেয়ে টা সব গুলা দাত বাইর কইরা বলতাসে, এএএহ, তুমি এত দিনে জিজ্ঞেস করতে আসছো বাবা? সেমিস্টার ফি আমি কঅঅবে দিয়া দিসি। আমি তো এখন পারি দিতে, ভুইলা যাও ক্যান? ইভেন সরকার এর দেখা দেখি প্রাইভেট কোম্পানি গুলা যদি এই কাজ শুরু করে, আর কত জোস হবে ব্যাপার টা।

আমি জানি অনেক লুপ হোলস আছে এই আইডিয়ায়, কিন্তু সেগুলা দূর করার জন্য আমাদের অনেক মাথা ওলা লোকজন ও তো আছেন। এই দেশ এর খালি একটা ভাল বস দরকার। ব্যাস তারপর সব সল্ভ হয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *