৬৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ মে ৫, ২০১৫ । ১১.৫২ পি.এম

আজকে একটু আবার আর্ট হিস্টরি তে মুভমেন্ট গুলা বা ইজম গুলা নিয়া কথা বলা যাক। এর আগে কিউবিজম আর ইম্প্রেশিনিজম নিয়া প্যাঁচাল পারসিলাম। ইচ্ছা ছিল এর পর সারিয়ালিজম(Surrealism) নিয়াও কথা কমু। কিন্তু পড়তে গিয়া দেখলাম সারিয়ালিজম (Surrealism ) মুভমেনট টা আসছে দাদাইজম (Dadaism) থিকা । তাই বুঝলাম যে দাদাইজম না পইড়া সারিয়লিজম বুঝতে যাওয়াটা ইশকুলে না পইড়া এক্কেরে কলেজে ভর্তি হউনের মত হইব। তাই আজকের আলু”ভরতা”চনার বিষয় দাদাইজম (Dadaism) ।

আমি ফাস্ট এ মনে করসিলাম কি, দাদাইজম মুনে লয় কারো দাদা থিকা ইন্সপায়ার হয়া আইসে । আই মিন কুনু বুইরা আরটিশ দাদায় কৈসে ওই অখন থিকা এমনে আঁকবি। আর শুরু হয়া গেসে দাদাইজম। কিন্তু আসল ঘটনা তা না। দাদা ইজম এর লগে দাদা, পরদাদা কারোরই কুনু সম্পর্ক নাই।

আগে একটু ইতিহাস কই, তারপর দাদাইজম কি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতাসি। দাদা শব্দটার আসলে কোন মানে নাই। অনেকে বলেন এইটা দাদা ইজম এর দাদাজ অর্থাৎ রোমানিয়ান আর্টিস্ট ত্রিস্তান যারা (Tristan Tzara) আর মারসেল জেকো (Marcel Janco) এর রোমানিয়ান ভাসায় হ হ অর্থাৎ দা দা বলা থিকা আসছে। আবার কেউ কেউ বলেন এক দল লোকের মিটিং এর সময় একটা পেপার নাইফ আতকা একটা ফ্রেঞ্চ টু জার্মান ভাষার ডিকশনারি তে আটকায় গেসিল দাদা শব্দ টার উপর, একটা জার্মান শব্দ যার অর্থ শখের ঘোড়া।

দাদাইজম এর উৎপত্তি হয় ১৯১৬ সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হইসে তখন। আর্টিস্ট দের মনে তখন যুদ্ধের ভয়াবহতার ছাপ। এত নিষ্ঠুরতা দেখার পর স্বাভাবিক ভাবেই আর্টিস্ট দের বাস্তবতা কে আর বাস্তবতা মনে হইতাসিল না। তাদের মনে হইতাসিল কি হবে এই সব নন্দন তত্ত দিয়া , কি হবে এই সব সুন্দর সাজানো গোছানো আর্ট দিয়া যদি শেষ পর্যত্ন সবই ধ্বংস হয় মানুষের হাতে। তাই তারা এই ধ্বংস কে , এই সব নিয়ম, এই সব যুক্তি কে ভাইঙ্গা ফেলা নিয়া আসা শুরু করলেন তাদের সৃষ্টি তে। আর এই নিয়ম কে বুড়া আঙ্গুল দেখানো আর্ট মুভমেন্ট এর নাম ই হইল দাদাইজম।

দাদাইজম একটা নেগেটিভ প্রতিক্রিয়া সব ভয়াবহতার বিরুদ্ধে। এই খানে শিল্পী প্রতি ধাপে আর্ট অবজেক্ট তৈরির প্রচলিত ধারনা কে ভাঙ্গেন। দাদাইজম “কারন” এবং “যুক্তি” কে বাতিল কইরা দ্যায়। বরং অর্থহীনতা, অযৌক্তিকতা আর মনের স্বাধীনতা কে মাথায় তুলে রাখে। দাদাইজম মুভমেন্ট এর ছবি দেখলে মনে হয়, শিল্পীর মনে হয় মাথা খারাপ। এরম ভাইঙ্গা লামু চুইরা লামু ছবি আক্সে ক্যারে?

কিন্তু দাদা ইজম এইটাই। ভাঙ্গা নিয়ম রে “কচুডাহ” দেখায়া নিয়ম ভাঙ্গা। দাদাইজম স্টাইল এ কয়েকটা জিনিষ খুবি প্রমিনেন্টলি দেখা যায়। একটা হইলে কোলাজ (Collage)। দাদাইস্ট রা প্রায় ই অনেক ছবি কাইটা টাইটা জুরা লাগাইয়া একটা নতুন ছবি বানান। আরেকটা হইল মন্টাজ(Montage) । দাদা ইস্টরা তুলি আর রঙ খুবি কম ব্যাবহার করে । বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় দাদা ইস্ট রা রঙ তুলির বদলে কুড়াইয়া পাওয়া জিনিশ , কাগজ কাটা , ছবি কাটা ইত্যাদি দিয়া একটা মন্টাজ তৈরি করেন। ওইটাই তাদের আর্ট এর প্রচলিত ধারনা ভাঙ্গার চেষ্টা।

দাদা ইজম এর আরেক নাম তাই এন্টি আর্ট। যাদের হাত ধইরা দাদা ইজম এর পথ চলা শুরু তাদের কিছু নাম দিয়া এই লেখা শেষ করি। পারলে গুগুলে সার্চ দিয়া তাদের কাজ দেইখেন। Hugo Ball যিনি দাদা ইজম এর বাপ বলা যায় , Emmy Hennings, Tristan Tzara, Jean Arp, Marcel Janco, Richard Huelsenbeck, Sophie Täuber, আর Hans Richter।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *