লেখার তারিখঃ এপ্রিল ২২, ২০১৫ । ১১.৪৫ পি.এম
সেকেন্ড ইয়ার এ উঠনের পর আমি যখন পাঠশালা ড্রপ আউট করি তখন অনেক কষ্ট লাগতো। বন্ধুরা পাঠাশালায় ক্লাস করত আর আমি বড় বড় দীর্ঘ শ্বাস ফালাইতাম। ওগোরে খুটায় খুটায় জিগাইতাম আইজকা ক্লাস এ কি পড়াইসে। তাই ওগোরে যখন ক্লাস এ আর্ট এর ঈজম গুলা পড়ানো শুরু করল তখন আমার আফসুস এর সীমা ছিল না। আমি ভাবসিলাম, থাক, গুগল আসে না। সব এক সার্চ মাইরা জাইনা ফালামু। কিন্তু কিয়ের কি। আর জানাই হয় নাই অগুলা।
এখন আমিই আবার আর্ট এর ইজম গুলা নিয়া পড়া শুরু করসি। পড়তে গিয়া বুঝলাম, এই গুলার মধ্যে সবচেয়ে ইনফ্লুএনশিয়াল ধরা হয় কিউবিজম রে। তার আগে এক্টু পরিষ্কার কইরা লই ইজম জিনিশ টা কি। মিউজিক এর মধ্যে যেরুম জনরা (Genre) আসে , লাইক মেটাল, অল্টারনেটিভ, ব্লুজ, জ্যাজ এরুম আর্ট এর মধ্যেও ইজম আসে। ইজম গুলা আসলে শুরু হইসিল এক এক টা মুভমেন্ট হিসাবে পরে সেইটা একটা স্টাইল হয়া গেসে। । কোন একটা সময়ের কিছু আর্টিস্ট ঠিক করসে নাহ চালু ট্রেন্ড এর মায়েরে বাপ, আইজা থিকা আমি আমার মত আকুম । এই রকম এক রকম ভাবে আঁকা পেইন্টিং গুলা একটা মুভমেন্ট এর অংশ। একটা প্রচলিত স্টাইল রে চ্যালেঞ্জ কইরা আরেকটা স্টাইল তৈরি করার ব্যাপার গুলারেই আর্ট হিস্টোরিয়ান রা এক এক টা ইজম বইলা নাম দিসে। এরম অনেক অনেক ইজম আসে যেরুম, রিয়ালিজম, সুরিয়ালিজম, দাদাইজম, ইম্প্রেশনিজম এরুম। তয় ওই ডি লয়া আলাদা আলাদা ভাবে লিখুম নে সামনের কিছু লেখায়।
কিউবিজম এ ফেরত আসি। কিউবিজম মুভমেন্ট টা প্রথম শুরু করেন দুই জন আর্টিস্ট। এক জন বহুল প্রচারিত পাবলো পিকাসো (Pablo Picasso) আরেকজন জর্জেস ব্রক (Georges Braque)। এরা প্যারিস এ ১৯০৭ থেইকা ১৯১৪ সাল এর মধ্যে যেই ছবি গুলা আঁকেন সেগুলা কিউবিজম এর স্টাইল এই আঁকেন। তাদের সাথে এই মুভমেন্ট এ যোগ দেন, Jean Metzinger, Albert Gleizes, Robert Delaunay, Henri Le Fauconnier, Fernand Léger and Juan Gris। এটাও বলা হয়া থাকে সিজ্যান (Paul Cézanne) এর শেষের দিককার কিছু কাজ দিয়াও কিউবিজম প্রভাবিত হইসিল।
এত গেলো ভুং ভাঙ। এহন আসল ব্যাপার এ আসি। কিউবিজম এ আর্টিস্ট প্রথমে তার সাবজেক্ট কে ভেঙ্গে ফেলেন। একদম যারে কয় টুরকা টুরকা কইরা ফালানি। তারপর আলাদা পারট কে এনালাইজ করেন। শেষে আবার সব পারট কে জুড়া লাগান।কিন্তু আগের মত না। দেখলে মনে হইব প্রত্যেকটা পার্ট আলাদা আলাদা জায়গা থেইকা দেখতাসি। ফর এক্সাম্পল, হয়তো ছবির সিঁড়ি টা এক দিক থেকে আঁকা হইসে তো টেবিল টা পুরাই অন্য ভিউ থেইকা দেখা মনে হইতাসে। আবার এই জোড়া লাগানো টা একেবারে টু/থ্রি ডাইমেনশনাল এর মধ্যে ঘরের ছবি আইকা দেওয়ার মত না। আমার মনে হইসে কিউবিজম শিল্পী কে ওই স্বাধীনতা দ্যায় যে সে তার নিজের মত কইরা একটা ধারনা, একটা অনুভূতিকে ইচ্ছা মত ফর্ম দিতে পারেন।
কিউবিজম এই ধারনা প্রথমেই বাতিল কইরা দ্যায় যে আর্ট বানাইতে হইলে সেইটা প্রকৃতি তে যেমন দেখা যায় এমন একদম পারস্পেক্টিভ মাইনাই বানাইতে হবে। কিউবিজম এ আলাদা আলাদা ভাবে অবজেক্ট গুলারে ঠিক ই বুঝা যায় কিন্তু একটা জ্যামাতিক আঁকার আকৃতির মধ্যে চইলা আসে। কিছু কিছু পেইন্টিং এ অবশ্য দেখলেও বুঝা যায় না যে এইডা আসলে কি আকসে। সেই ক্ষেত্রে আর্টিস্ট বিভিন্ন ক্লু দিয়া দ্যান ছবি তে। সেইটা কালার দিয়া হইতে পারে, ফর্ম দিয়া হইতে পারে আবার শুধু ক্যাপশন দিয়াও হইতে পারে।
কিউবিজম দিয়া যে শুধু পেইন্টিং ই হয় তা না। কিউবিজম ইন্সপায়ারড অনেক অনেক ভাস্কর্য আসে, বিল্ডিং এর ডিজাইন আসে, পটারি, ফারনিচার এমন কি মিউজিকও আসে।
আমি কিউবিজম নিয়া লিখলাম কিন্তু একটা ছবিও দিলাম না। ইচ্ছা কইরাই দেই নাই। যার আগ্রহ হইব সে নিজেই এখন গুগুলে আস্তে আস্তে কইরা লিখব Cubism. তার পর রেজাল্ট এ আসা ছবি গুলা দেইখা উত্তেজিত হয়া যাইব। আর মিলাইয়া দেখবে যা কইসি তা ঠিক কইসি কিনা।