৪৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ এপ্রিল ১৫, ২০১৫ । ১০.১৩ পি.এম

মন খারাপের কোন মা বাপ নাই। মন খারাপ একটা এতিম বাবু। মন খারাপ হঠাত কইরা জন্ম ন্যায় আর তারপর তারে কেউ কোলে নিতে চায় না। তাই সে কান্তেই থাকে কান্তেই থাকে। তার মুখে ফিডার গুইজা দেওয়ার ও কেউ নাই, তার সামনে ঝুন ঝুনি নারানির ও কেউ নাই, তারে কান্দে ফালায়া ও ও বইলা ঘুম পারানির ও কেউ নাই।

এক সময় বিরক্ত লাগে। আরে ব্যাডা থামস না। আর কত। কিন্তু হে তবু থামে না। মন খারাপ হইতে থাকলে হইতেই থাকে হইতেই থাকে। মাঝে মাঝে মন খারাপের বাপ বা মা কিছু একটা পাওয়া যায়। বুঝা যায় যে, হ এই কারনে মন খারাপ হইসে। কিন্তু বেশির ভাগ সময় ই ঠিক কখন থেইকা যে মন খারাপ টা শুরু হইল চিন্তা কইরাও পাওয়া যায় না।

হয়তো সারাদিন ভাল খারাপ মিলায় যেম্নে হোক গেসে, নিজেরে সাম্লায়া রাখা গেসে। বাসায় ফিরনের সময় রাস্তা পার হইতাসি। মাঝ রাস্তায় আইসা ওই পাশের গাড়ি আসা আর থামেই না। ব্যাস। গেল মন খারাপ হয়া। আমি জীবনেও পার হইতে পারুম না। সবাই তো পার হয়া গেলো। আমিই ই খালি পারলাম না। আমার লগেই ক্যান এরম হয়। গাড়ি গুলার ক্যান কুনু ফিলিংস নাই। আমারে ক্যান কেউ পার করায়া দিতাসে না। ইতং বিতং ঘ্যান ঘ্যান আর প্যান প্যান। মানে অসহ্য। মন খারাপের গালে একটা চড় দিয়া সব দাত ফালায়া দিয়াও লাভ হয় না। কেলাইতে কেলাইতে আবার ফিরা আসে।

মন খারাপ হইলে প্রথমেই এটাক করে সেলফ পিটিনেস। আমি কত অসহায়। আমি কত মাসুম, কত ইনোছেন্ট, আমার কি দোষ, আমি ক্যাম্নে বুঝুম এক্সপেক্টেশন এত বেশি ছিল, আমি না হয় নাবুঝ কিন্তু সে ক্যান অবুঝ। এই সব মনে হয়া হয়া অবস্থা আরো খারাপ কইরা দ্যায়। মানে মন ই মন রে আরো খারাপ করে। আমি না।

মন খারাপ হইলে আমি পুরাই হ্যাং করি। আমার শরীর এর কিছু কিছু প্রসেস ও হ্যাং করে। যেমন খিদা লাগে না। ঘুম এর কুন অসুবিধা নাই কিন্তু খিদা লাগে না। বা লাগ্লেও আমার লগে এরুম হইল ক্যান, খামুই না যাহ ভাইবা বুঝ দিতে পারি। ঘুম এর কুন অসুবিধা হয় না। চোখ বন্ধ করলেই ঘুম।

ঠিক হয়ার জন্য আমি অপেক্ষা করি। আমার মনে হয় কিছু একটা হবে আর আমার মন ভাল হয়া যাবে। এই কিছু টা অনেক ছোট কিছু। হয়তো প্রথম চেশটা তেই রিক্সা পায়া যাওয়া বা অফিসের সাম্নের রাস্তার সাদা কুকুর টার মাথায় হাত বুলায় দিতেই ওর লেজ নারানো। ওর বিস্কুট খুব পছন্দ। রুটি খায় না। রুটি দিলে মুখে কইরা ওর গারলফ্রেন্ড এর জন্য নিয়া যায়।

যেহেতু মন খারাপ হইলে আমি হ্যাং করি তাই আমার জন্য কারো মন খারাপ হইলেও আমি হ্যাং করি। আমি জানি না কিভাবে মন ভাল করতে হয়। আমার আহারে বইলা মাথায় হাত বুলাইতে ইচ্ছা করে। কিন্তু তাতে যদি আবার কিছু মনে করে। তাইলে কি সরি সরি বলতে বলতে মাটিতে গড়ায় গড়ায় ওলট পালট খামু? তাইলে আবার পাগল ভাইব্বা উলটা দিকে দৌড় দিতে পারে।

আমি তাই পারি খালি ডাইভারশন ক্রিয়েট করতে। হুদাই অন্য কিছু লয়া আলাপ শুরু করতে। হয়তো প্রেম ভালবাসা নিয়া কারো মন খারাপ, আমি তখন বিটিভি টাইপ ঈদগড়ে শশা ও বেগুনের বাম্পার ফলন নিয়া আলাপ করলাম। কেউ হয়তো অফিস টফিস লয়া হতাশ তারে জিগাইলাম, ভাই নোরা জোন্স এর গান আপ্নের কেরুম লাগে? এ ছাড়া আর কিছু পারি না।

অনেক সময় লুকজন মন খারাপ এর কারন কইতেও চায় না। খালি কয় হমমমম, আচ্ছা, এম্নেই, ইচ্ছা করতাসে না ইত্যাদি। তখনা আরো বিপদে পরি । ক্যামনে কি করতাম? আইচ্চা থাক, বইলেন না? অনেকে আবার আশা করে আমি চাপা চাপি করুম জানার জন্য, তাইলেই কয়া দিব। আমি এইডা বুঝলে চাপা চাপি করি বলার জন্য। কিন্তু বেশির ভাগ সময় ই আমার বুদ্ধি সুদ্ধি অইত্যাধিক কম হওয়ার কারনে আমি কয়েক বছর পরে গিয়া বুঝি যে অ অ , অয় আসলে চাইতাসিল আমি অমুকটা করি। এরুম প্রায় ই হয়। আই সাক এট মানুষের মন ভাল কইরা দেওয়া।

মন খারাপ এর সময় আমার ক্ষেত্রে দুইটা জিনিস খালি কাজ করে। এক, আমি নিজেরে বিজি কইরা ফালাই। যাতে মন খারাপ এর মুম্বাতি জলতে জলতে এক সময় নিভ্যা যায় অটো।

আর দুই, ইন্সপাইরেশন খুঁজি। যেইখানে যেইখানে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে সব খানে। বই এর ভিতর, ইন্টারনেট এ, গান এর ভিতর, পেইন্টিং এ এরম আরো জায়গায়। একটা না একটা জায়গায় কিছু একটা ক্লিক করেই। আর আমি ওইখানেই দাঁড়ায় যাই। কিছুক্ষণ খেলি ওইটাকে নিয়া মাথার ভিতর। তারপর আমি ইন্সপাইরেশন টাকে এক্সপ্রেস করি। সেইটা লেখা হইতে পারে, ছবি হইতে পারে, কাগজে দাগাদাগি হইতে পারে, একটা স্ট্যাটাস ও হইতে পারে, এনিথিং।

পয়েন্ট টা হইল ইন্সপাইরেশন টা আমাকে ঠেইলা একটা কিছু সৃষ্টি করার ঠিক আগের জায়গাটায় নিয়া যায়। এই খানে আমি কিছু সৃষ্টি করতে পারি, অথবা পিছায় “থাক কি দরকার” ভাইবা চইলা আস্তে পারি। কিন্তু আই অলওয়েজ গো ফর দি ফার্স্ট ওয়ান। কারন আমার মনে হয় কিছু একটা সৃষ্টি করার ইচ্ছা মানেই একটা এক্সাইটমেন্ট তৈরি হওয়া। আর যেখানে উত্তেজনা, সেখানে মন খারাপ থাকে না, কখনোই থাকতে পারে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *