লেখার তারিখঃ মার্চ ৩১, ২০১৫ । ১১.০৮ পি.এম
আইয়ুব বাচ্চু ভাই এর একটা গান আছে। উনি ওইখানে বেশ দরদ দিয়া গাইসেন, “গগনের তারা গুলো, নিভে যাওয়া এক রাতে, এলোমেলো জীবনের পথ, হারালো ভুল পথে। হঠাত দেখা তোমার সাথে। তুমি কে? তুমি কে? হবে কি বন্ধু আমার? তুমি কে? তুমি কে?” এই গান ডা আসলে আগের লেখাটার সাথে বেশি যাইত, যেইখানে আমি আম্নে কে নিয়া বেশ ভাবের আলোচনা করসি। ওইখানে আমি কইসিলাম একটা মানুষ দেখলে আমাদের প্রথম জিজ্ঞাসা থাকে, আম্নে কেঠা? আর পরের প্রশ্ন টা থাকে, কি চান?
এই কি চাই লয়াই আজকের ঘুম আনানিয়া আলুচনা। এই আলুচনা পড়লে আপ্নে আরো জানতে পারবেন, কিভাবে পড়তে পড়তে ঘুম আসে। (ইনসেটে বিকট শব্দে হাই তোলার ছবি, ভিডিও সহ 😛 )। অনেক ডিপ থ্রোট (কপিরাইট জিকো ভাই), এন্টেনার উপ্রে দিয়া যাওয়ার মত আলুচনা আছে, তাই আগেই সাবধান করলাম।
আমি কি চাই এইটা আশ্চর্য জনক ভাবে আমার কাছে সবসময় ই একটা জটিল প্রশ্ন লাগে। বিশেষ কইরা এই প্রশ্ন টা যখন প্রেম ভালবাসার ব্যাপারে করা হয়। আমরা পপুলার কালচারে এত বেশি ডুইবা থাকি আমরা অবচেতন ভাবে সবার সব রকমের আচার আচরন এবং বিশ্বাস কে নিজের অজান্তেই “আমি কি চাই” তা ঠিক করার মালিক বানায়া দেই।
আমরা সেক্স, মনোগামি, লাইফস্টাইল, সৌন্দর্য এই সব নিয়া ক্রমাগত পরস্পর বিরোধি বক্তব্য শুনতে শুনতে বড় হই। আমাদের বার বার বলতে বলতে আর দেখাইতে দেখাইতে টেক্সটবুক ডেফিনেশন অফ বিউটি শিখানো হয়। আর বুঝানো হয়, এইডা হইল স্ট্যান্ডারড, বুঝসস। এগুলা এগুলা চাইতে হয়।
মেয়েদের ব্যাপারটা বলতে চাই না । কিন্তু ছেলেরা এগুলা শুনতে শুনতে বড় হয় যে, এইটা প্লে বয়রা করে, এইটা ডিভোটেড ফ্যামিলি ম্যান রা করে, “দি ওয়ান” রে খুইজা বাইর করাই জীবনের একমাত্র উদ্দ্যেশ্য, ওই মেয়েটা হট, এই মেয়েটা হট না, আরে তুই কি বুইজ্জা ওই মেয়েরে লাইক করস? ওর কি আসে? ইত্যাদি ইত্যাদি।
এগুলা যে শুধু বন্ধুরা কয় তা না। ফ্যামিলি থেইকাও অনেক ইনপুট আসে। আমার কাসে মনে হয় এই গুলা তৈরি ই হইসে আমাগো কনফিউজ করার জন্য। আর কেউ যদি সতর্ক না থাকে, যেইটা বেশিরভাগ মানুষই থাকে না, আমরা এই ধারনা নিয়া বড় হই যে আমি তাই চাই যা সবাই মনে করে চাওয়া উচিত। আর আমি যদি বুঝতে না পারি সবাই কি চায়, তাইলে আমি কনফিউজড থাকি আর শেষ মেষ সবার চাওয়ারেই নিজের চাওয়া ভাবতে থাকি।
আমি আসলে কি চাই, ওইটা চিন্তা করার অভ্যাস আমাদের করানো হয় না। কারন আমাদের শেখার প্রসেস্টাই এমন। “আমি বলুম, তুমি শিখবা। শ্যাষ। নিজে খুইজা বাইর করতে যাইয়ো না ভুল হবে।“ আমাদের ভুল করতে দেওয়া হয় না।
যতখন না এই চাওয়া দেশের কোন আইন ভাংতাসে না, ততখন আমরা এইটারে ঠিক ই আসে ধইরা নেই। আর আমি কইতাসিও না যে ফেমেলির কথা মত চায়েন না, নিজের ইচ্ছা মত চান। আমি শুধু এতক্ষণ এর ভেরভেরানি তে এই পয়েন্ট টাই বুঝাইতে চাইতাসি যে,
নিজে কি চান শিওর হন এবং ওইটাতে স্টিক থাকেন। সেইটা পূর্ণ আত্ম বিশ্বাস এর সাথে নিজের চাওয়া বইলা দাবি করতে পারেন, ওই লেভেল এ স্টিক থাকেন। আমার মত, “না মানে ইয়ে মানে ভাল্লাগে তো, হইলে ভালো হইতো তো” এই টাইপ ম্যান ম্যান করলে হইব না।
সাথে সাথে এইটাও মনে রাইখেন যে আমাদের চাওয়া পরিবর্তনশীল। এইটা হবেই। এইটা স্বীকার কইরা নেওয়া টাই সুখ, শান্তি। রালফ ওয়াল্ডো এমারসন (Ralph Waldo Emerson) বইলা এক আম্রিকান ব্যাডা আসে। উনি একজন ফিলোসফার। উনার “Self-Reliance” নামে একটা বিখ্যাত লেখা আসে। ওই খানের একটা লাইন আমার ব্যাপক পছন্দ।
Foolish consistency is the hobgoblin of little minds.
মানে হইল গিয়া, খুদ্র মনা মানুষ গুলা এই চিন্তা দিয়াই প্রতিবন্ধি হয়া থাকে যে তাগোরে হারা জীবন কন্সিস্টেন্ট থাকতে হইব, জীবনেও মন রে চেঞ্জ করন যাইবো না। কারন তাতে হয়তো মানুষ ভুল বুঝতে পারে।
কিন্তু এইডাতে যে হেগো আরো খারাপ হইতাসে ওইডা হেরা বুঝে না। তাই এমারসন চাচায় কইসে, ভুল বুঝলে বুঝুক গা, তবু মন চেঞ্জ হইব না এইডা ধইরা বয়া থাইক্কেন না। আপ্নের ছায়া আর আপ্নের মধ্যে তইলে পারথক্ক কি থাক্লো যদি আপ্নের চাওয়া কি ওইডা না জানেন? জগতে কোন বিখ্যাত মানুষটারে দুনিয়ার লুকজন প্রথমে ভুল বুঝে নাই? এমারসন চাচার কথা গুলা এতই ভাল্লাগসে যে হুবুহু তুইলা দিলাম,
“A foolish consistency is the hobgoblin of little minds, adored by little statesmen and philosophers and divines. With consistency a great soul has simply nothing to do. He may as well concern himself with his shadow on the wall. Speak what you think now in hard words, and to-morrow speak what to-morrow thinks in hard words again, though it contradict every thing you said to-day. — ‘Ah, so you shall be sure to be misunderstood.’ — Is it so bad, then, to be misunderstood? Pythagoras was misunderstood, and Socrates, and Jesus, and Luther, and Copernicus, and Galileo, and Newton, and every pure and wise spirit that ever took flesh. To be great is to be misunderstood”