২৯৬/৩৬৫

লেখার তারিখঃ জানুয়ারি ৩, ২০১৭, ১১:৫৭ এ এম

দা ব্যাটেল অফ বয়রা ( মুক্তিযুদ্ধের প্রথম আকাশ যুদ্ধ ), পর্ব ২

আগের পর্বে একটা সার সংক্ষেপ দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। এই পর্ব থেকে যতটুকু পারি বিস্তারিত লেখা শুরু করলাম।

নভেম্বর মাস, ১৯৭১। স্বাধিনতার জন্য আমাদের বিক্ষিপ্ত যুদ্ধ গুলো তখন অনেক গোছানো হয়ে এসেছে। পাকি সেনারা (আমাদের পাঠ্য বই এ পড়ানো হইত পাক সেনা, আমি এইসব নাপাক দের পাক সেনা বলতে চাই না) বুঝতে পেরেছে আমরা তাদের ভয় পাই না। তাদের আরো কোনঠাসা করতে বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত দিয়ে ইন্ডিয়ান আর্মিও ঢুক্তে শুরু করেছে। আমাদের আজকের কাহিনী এই সীমান্ত এলাকারই একটি জায়গা “বয়রা” নিয়ে।

“বয়রা” ভারতের সীমান্তবর্তি একটা এলাকা যা মুক্তিবাহিনী এবং ইন্ডিয়ান আর্মি মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি “এন্ট্রি পয়েন্ট” বা “ইনগ্রেস পয়েন্ট” হিসাবে ব্যবহার করা শুরু করে। ভৌগলিক ভাবে বয়রার কিছু সুবিধা ছিল। এই জায়গাটা কলকাতা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার আর যশোর শহর থেকে মাত্র ১৭ কিলোমিটার। ভালো ভাবে বোঝার সুবিধার জন্য নিচে একটা ম্যাপ দেয়া হইলঃ

image

১২ নভেম্বর, ১৯৭১। ভারতের গরীবপুর, বাংলাদেশ এর চৌগাছা এবং যশোর শহর পাকি বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করার লক্ষে ইন্ডিয়ার আর্মির 350th Infantry Brigade of 9 Division অপারেশন শুরু করে। কোন রকম বাধা ছাড়াই তারা গরীবপুর পর্যন্ত পৌছায়। ১৮ই নভেম্বর, ১৯৭১ এ 42nd Infantry Brigade যোগ দ্যায় তাদের সাথে।

পাকি ছাগল বাহিনীর এতদিনে গিয়া হুশ হয় যে কিছু একটা করা দরকার। তারা ১৯শে নভেম্বর, ১৯৭১ ইন্ডিয়ান আর্মি কে আক্রমন করার জন্য এয়ার স্ট্রাইক (বিমান আক্রমন) কল করে। ২২শে নভেম্বর, পাকি বাহিনী ইন্ডিয়ান আর্মির উপর তাদের গ্রাউন্ড ট্রুপ এবং M-24 Chaffe Tank নিয়ে ঝাপিয়ে পরে। সাথে পাকি এয়ারফোর্স এর আক্রমন ও অব্যাহত থাকে। কিন্তু পাকিস্তান এয়ারফোর্স এর Sabre বিমান গুলার আক্রমন অনেকটাই রুটিন বাধা ছিল। সেই সময় এর ভারত এর এয়ার মার্শাল শারদ ইয়েশওয়ান্ত সাভুর এর ভাষ্য মতে,

“পাকিস্তান এয়ার ফোর্স অনেকটা রুটিন মাফিক ৩৫০ ব্রিগেড এর উপর আক্রমন করতো। প্রথম আক্রমন টা হতো সকাল ৯ টার দিকে। তারপর ২য় আক্রমন আসতো বেলা ৩ টায়। খুব কদাচিত তারা দুপুর ১২ টার দিকে একটা আক্রমন করতো, সেই ক্ষেত্রে বেলা ৩ টার স্ট্রাইক আর হতো না সেদিন। দুই বা চারটা PAF এর বিমান আসতো, রেসকোর্স প্যাটার্ন এর সার্কিট এ ঘুরতো, তারপর একে একে ডাইভ করতো এবং আক্রমন করে ধীরে সুস্থে ফিরে যেতো”

image

পাকিস্তানি M-24 Chaffe Tank

image

পাকিস্তানি Canadair Sabre Mk6


২১শে নভেম্বর, ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স এর চার টা Gnat বিমান কে Scramble করা হয়। Wikipedia তে Scramble এর সংজ্ঞা হিসাবে বলা আছে, কোন জরুরী অবস্থায় মিলিটারি এয়ারক্র্যাফট কে দ্রুত এয়ারবোর্ন (শুন্যে উড়ানো) করা। সাধারন্ত জরুরী অবস্থা বলতে এখানে শত্রু বিমানের আগ্রাসন কেই বোঝানো হয়েছে। কলকাতার দম দম এয়ারপোর্ট (বর্তমান নাম নেতাজী সুভাস চন্দ্র বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) থেকে সকালে উড্ডয়ন করে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স এর Gnat বিমান গুলো কিন্তু PAF কোন বিমান এর দেখা পাওয়া ছাড়াই সীমান্ত থেকে আবার ফিরে আসে। বিকালে বিমান গুলো কে আবারো Scramble করা হয় কিন্তু এবারো একি অবস্থা হয়। Gnat বিমান গুলো পৌছানোর আগেই Sabre বিমান গুলো পালিয়ে যায়। :

image

ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স এর HAL Folland Gnats বিমান

আগামি পর্বে আমরা দেখবো একটা সামান্য “জী স্যুট” কিভাবে কারো জীবন বদলে দ্যায়।

তথ্য সূত্রঃ

বইঃ Eagles Over Bangladesh. Written by: P.V.S Jagan Mohan and Samir Chopra

image

ইন্টারনেটঃ

বয়রার ম্যাপ ( https://www.google.com/maps/place/B…)
Battle of Garibpur (https://en.wikipedia.org/wiki/Battl…)
Battle of Boyra (https://en.wikipedia.org/wiki/Battl…)

ছবি সূত্রঃ

Mostly Google Image search and various Defence Forums

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *