২৮৯/৩৬৫

লেখার তারিখঃ মে ১৮, ২০১৬, ৯:০৭ পি এম

হয়তো একটি রিভিউ

বুক রিভিউঃ হয়তো একটি প্রেমের উপন্যাস – মারুফ রেহমান।

বইটা পড়া শেষ হইসে অনেক আগেই কিন্তু রিভিউ লিখব লিখব বইলা আর লেখা হয় নাই। ইন ফ্যাক্ট অনেক বার লিখতে বসছি। “নাহ, কিছুই হইতাসে না” বইলা বন্ধ কইরা দিসি। আজকে আমার সীমাহীন আইলসামির মাঝখান দিয়া একটু লেখা লেখির মুড আসছে। তাই ভাব্লাম এক টানে নামায় দেই রিভিউ টা।

বলতে লজ্জা লাগতাসে কিন্তু এইটা আমার পড়া মারুফ ভাই প্রথম বই। এর আগের গুলা কিন্সি কিন্তু “আসেই তো, পড়ুম নে” বইলা বই এর স্ট্যাক এ জমা হইসে, তার পর অন্য বই এর নিচে চুপ চাপ হারায় গেসে। কিন্তু এই বইটা ঠিক রাইখা দেওয়ার মত না। নাম এর মধ্যেই একটা রহস্য আছে। “হয়তো একটি প্রেম এর উপন্যাস” ক্যান? “অবশ্যই একটি প্রেমের উপন্যাস” না ক্যান এইসব ভাবসি। ভাবতে ভাবতে কয়েকদিন ব্যাগ এ নিয়া ঘুরসি। তারপর কোন এক ফজর নামাজ এর পর পড়া শুরু করসি আর পড়া শেষ করসি তিন দিন পর।

এই বইটার গল্পটা ঠিক নাটকে দেখা প্রেম এর গল্প এর মত স্মুথ না। সারাক্ষন ই কেমন একটা অসস্তি লাগে পড়তে পড়তে আবার ঠিক পড়া বাদ দিয়া যাওয়াও যায় না। এর একটা কারন এর চরিত্র গুলা অনেক বেশি বাস্তব। নায়ক টা জোর কইরা চাপায় দেয়া ব্যাড বয় ইমেজ মার্কা না আবার নাইকাটা অনিন্দ্য সুন্দরি জাতীয় ক্রাশ মার্কাও না। ইনফ্যাক্ট নায়ক নাইকা টাইপ ব্যাপার গুলা এদের মধ্যে হইতে হইতেও হয় না। এরা দোষ গুন মিলায় থাকা দুই টা চরিত্র। যাদের মনে হয় আমাদের পরিচিত সার্কেল এরি কেউ।

কাহিনির প্রয়োজনে বেশ কিছু পার্শ্ব চরিত্র আসছে। লেখক খুব কারিশ্মা দিয়া এদের একে একে আন্সেন গল্পের মধ্যে। যদিও বেশ ডার্ক টাইপ এর চরিত্র এক একটা। একটা জমাট উপন্যাস পড়ার সময় মানুষ খুব তাড়াতাড়ি কোনও একটা চরিত্রের মধ্যে নিজেকে খুইজা পায় আর সেই চরিত্রের সাথে মিশা গিয়া আগাইতে থাকে। তার হাসি কান্নায় হাসে কাদে , তার মৃত্যু তে হাহাকার করে।

কিন্তু এই বই পড়তে গিয়া আমি বার বার আইডেন্টি ক্রাইসিস এ পড়সি। যখনি আমার মনে হওয়া শুরু হইসে আরে এতো আমার মত পুরা, তখনি কাহিনী পল্টি খাইসে আর আমি “দুরু, এরম করলো ক্যান” মনে কইরা অন্য চরিত্রের দিকে মনোযোগ দিসি। আমার মনে হয় এইটা মারুফ ভাই ইচ্ছা কইরা করসে। যাতে কোন একটা চরিত্রের প্রতি আমরা স্বার্থপর না হয়া যাই আর সেই চরিত্রের আমাদের ইচ্ছা মত কিছু না করতে পারার ব্যার্থতায় উপন্যাস টাই যাতে ব্যার্থ না হয়া যায়।

এই বই এর যে জিনিষ টা খারাপ লাগসে তা হইসে এর শেষটার আগের যায়গাটা। যেইখানে সাধারনত লেখকরা সব পাকানো জট ছাড়ায় দিয়া পাঠক কে সব প্রশ্নের উত্তর দ্যান এবং তারপর উপন্যাস ধাবিত হয় তার নাটকিয় একজিট এর দিকে। কিন্তু এই উপন্যাস এর শেষ এর দিকে আইসা আমার মনে হইসে মারুফ ভাই অনেক তাড়াহুড়া কইরা শেষ কইরা দিসেন। এই শেষ টা আরেকটু লজিকাল, আরেকটু মাখায় মাখায় শেষ করলে মনে হয় আরো ভাল লাগতো।

সব মিলায় ইহা একটি ভাল উপন্যাস। এইটা পইড়া লেখকের বাকি বই গুলাও পড়নের ইচ্ছা হইসে। দেখি শইল্ডারে বুব থুক্কু বুক শেলফ এর দিকে নিতে পারি কিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *