২৭০/৩৬৫

লেখার তারিখঃ ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫

আজ ১৭ই ডিসেম্বর। আজকে প্রথম পাইলটেড প্লেন এর ১১২ তম বার্ষিকী। ১৯০৩ সালের এই দিনে উইলবার এবং অরভিল রাইট সুচনা করেন প্রথম পাওয়ারড ফ্লাইট এর। যদিও তার আগে হট এয়ার বেলুন এবং জ্যাপ্লিন কে পাওয়ার দিয়ে চালানো কে পাওয়ারড ফ্লাইট বলা যাবে কিনা তা নিয়া বিতর্ক আসে, তবু ইনারাই প্রথম তিনটা এক্সিস ( X,y আর z এক্সিস) রে কন্ট্রোল কইরা তাদের আবিষ্কৃত গ্লাইডারে ইঞ্জিন যুইরা দিয়া আর সেই পেলেন রে আকাশে সফলতার সাথে উড়ায়া সুচনা করেন এক নয়া যুগের।

রাইট ব্রাদারস আর তাদের কাহিনি নিয়া অনেক কিসু লিখতে মুঞ্চাইতাসে, কিন্তু লুকজন পড়তে গেলে ঘুমায়া পড়ব তাই নিজের উত্তেজনারে দমন কইরা রাখলাম। যার কবিতা ভাল্লাগে না, তারে গীতাঞ্জলী পইড়া হুনানি টাইপ ব্যাপার হইব একটা। তবু কিসু কই, ইচ্ছা করতাসে অনেক, ওই দিন এর গল্প টা কউনের. এইটা একটা জয় এর গল্প, মানুষের নিজেকে অতিক্রম করার গল্প।

উইলবার রাইট একবার বলসিলেন, “It is possible to fly without motors, but not without knowledge and skill.” তাদের কাজ কামেও এই কথার মাজেজা বুঝন যায়। তিনারা দুই বাই যহন ঠিক করলাইন যে আকাশে উইড়াই ছাড়বাইন, তহন হেরা এই বিষয়ে পড়ালেহা আরম্ভ করলাইন। হেরা আসিল সাইকেল বানানির মেস্তুরি, তাই পুরা বিষয় ডাই এগো কাসে নতুন আসিল। এরা Cayley এর এরোনিটিক্স এর কাজ সম্পর্কে পড়লেন, Otto Lilienthal এর Hand Glider বিষয়ক লেখা গুলা পড়লেন, Langley এর থিউরি গুলা পড়তে পড়তে ভাজা ভাজা করলেন। তারা আম্রিকার তখনকার আমলের রেইলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার Octave Chanute ( যারে কিনা এখন Aviation এর অন্যতম Pioneer বলা হয়) এর সাথে তাদের আইডিয়া গুলাও শেয়ার করলেন। শুরু হইল তাদের পেলেন বানানির কাম কাইজ।

১৯০০ সালে তারা তাদের প্রথম গ্লাইডার বানান যেইটা ঘুড্ডির মত উড়াইতে হইত। এইটার উইং স্প্যান বা ডানার ব্যাপ্তি ছিল ১৭ ফিট। টেস্ট করার জন্য তারা নর্থ ক্যারলাইনার কিটি হক কে বাইছা নিলেন। কারনে এইহানে বালির মরুভুমি আসিল আর বাতাস ও থাক্তো বহুত। তাগো এই গ্লাইডার এর পরীক্ষা সফল হইসিল।

১৯০১ সাল। এক বছর ধইরা তারা আগের গ্লাইডার টার আরো কিছু ভুং ভাং উন্নতি করলেন আর বানাইলেন আরেকটা গ্লাইডার। এইডা আগেরটার চাইতে বড়। ডানার ব্যাপ্তি ২২ ফিট। কিন্তু এইডা তাদের মন মত কাম করল না। দুই ভাই এতই হতাশ হইসিলেন যে উইলবার তার ডাইরি তে লিখসিলেন “It would be a thousand years before humans would learn to fly.”

১৯০২ সাল। তারা আবারো ফিরা গেলেন কিটি হক এ। নতুন একটা গ্লাইডার লয়া। এইটা আগেরটার চেয়ে আরো বড়। উইং স্প্যান ৩২ ফিট। সাথে নতুন যোগ করসেন Rudder বইলা একটা নতুন জিনিশ । এইবার তাদের গ্লাইডার আশানুরূপ কাম করল। তারা এখন তইরি তাগো গ্লাইডারে মটর লাগাইয়া এইডারে ডিঙ্গি নৌকা থিকা কলের জাহাজ বানানির।

১৯০৩ সাল। ইতিমধ্যে তারা তাদের পেলেন এর জন্য একটা ১২ হরস পাওয়ার এর ইঞ্জিন বানাইসেন। আরো বানাইসেন দুনিয়ার প্রথম বিমানের প্রপেলার আর যেইটা বাইসাইকেল এর চেইন দিয়া যুক্ত ছিল ইঞ্জিন্টার সাথে। সেপ্টেম্বর মাসে তারা কিটি হক এ আবার আসেন তাদের বানানো নতুন পেলেন নিয়া। এইটার উইংস্প্যান ৪০ ফিট। ওজন ৩১৭ কেজির একটু বেশি।

১৪ই ডিসেম্বর, ১৯০৩ সাল। দুই ভাই কয়েন টস করলেন। জিতল উইলবার। কিন্তু উনি চালাইতে গিয়া এট্টু উলটা পালটা কইরা লাইলেন আর পেলেন আয়া গোত্তা খাইল বালির লগে। বাড়ি বুড়ি খায়া যা নষ্ট হইল পেলেন এর, ঠিক করতেই গেল গা তিন দিন।

১৭ই ডিসেম্বর, ১৯০৩ সাল। দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। এইবার চান্স পাইসে অরভিল। হে জানত উইলবার এর কি ভুল হইসিল। তাই খুব খিয়াল কইরা পেলেন ছাইরা দিল সকাল ১০ টা ৩৫ মিনিট এ। আর আল্লাহর রহমতে আর কুনু পেস পুস না লাগায়াই ১২০ ফিট উইড়া গিয়া সুন্দর মত নাইমা পড়ল মাটিতে। দুই ভাই মিল্লা ঝিল্লা আরো তিনবার ( মতান্তরে চাইর বার আর যেহেতু এক এক বই এ এক রকম লিখসে তাই আমিও শিউর না) পেলেন ডা চালাইসিলেন। বুঝাই যায় চালাইতে হেগো সিরাম মজা লাগতাসিল আর তারা আস্তে আস্তে চালানিতে ওস্তাদ ও হয়া উঠতাসিলেন। শেষ বার হেরা অতিক্রম করসিলেন ৮৫২ ফিট।

রাইট ভাই গো পেলেন এর নাম আসিল The Flyer. The Flyer আর কখনোই উড়বে না কারন শেষ বার উড়নের পরে বাতাসের ধাক্কায় অইডা উল্ডায় যায় আর Damaged Beyond Repair হয়া যায়। হেরা কিন্তু অইডা বেইচ্চা কডকডি খায় নাই। Washington DC এর Smithsonian Air and Space Museum এ যত্ন কইরা রাইখা দিসে।

আরো একটা মজা হইসে যে কিছু কিছু ব্লগ এ লিখসে অইডা নাকি আসল “The Flyer” না। কিন্তু আমি ওই মিউজিইয়াম এর কিউরেটর এর সাথে যুগাযুগ করসি আর তিনি জানাইসেন যে ওই টাই রিয়েল The Flyer.

আমার কপালে আসে কিনা জানি না, আপ্নেগো কারো সৌভাগ্য হইলে আম্রিকা গিয়া দেইখা আইসেন আর আমার জন্য একটা ফটুক তুইলা নিয়া আইসেন।

দুনিয়ার সকল পেলেন এর জন্য ভালবাসা…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *