২৪৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ নভেম্বর ২, ২০১৫

অতি প্রাকৃত প্রকৃতি

১.

ইদ্রিস তাকিয়ে ছিল মাটির দিকে। তার আধ ভেজা লুঙ্গি থেকে ফোটায় ফোটায় পানি পরে মিশে যাচ্ছিল মাটির সাথে। পানির একটা ছোট ধারা একে বেকে এগিয়ে যাচ্ছিল পাশের ঘাস জন্মানো জায়গা টার দিকে। ইদ্রিস এর মনে হচ্ছিল ঘাস গুলো মনে হয় অনেক তৃষ্ণার্ত। তাই পানি কে ডাকছে আর পানিও তার খয়ে যাওয়া শরীর নিয়ে ছুটে যেতে চাচ্ছে ঘাসের কাছে। কিন্তু শেষ মেষ পৌছাতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। কারন তার আগেই তাকে খেয়ে নিচ্ছে মাটি। অল্প ভেজা মাটি একটা বৃষ্টি বৃষ্টি গন্ধের ভ্রান্তি তৈরি করছে ইদ্রিস এর মনে। কিন্তু ইদ্রিস এখন বৃষ্টির কথা ভাবতে চাচ্ছে না। তাহলে ওর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভেজা ছাড়া কিছু করার থাকবে না।

একটু পরেই সন্ধ্যা নামবে। বিকেল বেলার বৃষ্টি সদ্য প্রেমে পরা বা প্রেম থেকে বের হওয়া মানুষের কাছে খুব অর্থপূর্ন হলেও ইদ্রিসের জন্য এই মুহুর্তে আবেগি কিছু ভাবা একটু কঠিন ই। বিশেষ করে তাকে যখন কোমরের সাথে শক্ত দড়ি দিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখা হয়েছে।

পরিকল্পনা টা খুব সহজ সরল ছিল। তিন দিন জরে ভোগা ইদ্রিস দুপুরে জ্বর থেকে উঠে তার ভাঙ্গা ঘরের বাইরে ছায়ায় এসে বসে। এই তিন দিন কাজ এ যেতে পারে নি তাই ঘরে চুলাও জলেনি। খিদে মুখের মধ্যে আছে শুধু সে আর তার মা। অন্ধ মা শুধু তার মাথার পাশে বসে দোয়াই করে গেছে আর কোথাও যেতে পারে নি। ইদ্রিস বুঝলো তার দ্রুত কিছু টাকা যোগার করে আজকের জন্য খাবার এর ব্যাবস্থা করতে হবে। কাল হয়তো কোন কাজ এর ব্যবস্থা করা গেলেও যেতে পারে।

বিকেলে হাটে মাছ ধরে নিয়ে বিক্রি করলে ভাল দাম পাওয়া যায়। এর আগেও মোল্লা বাড়ির দিঘি থেকে দু একবার মাছ ধরেছে সে বিপদে পড়লে , তাই পুরো ব্যাপারটির খুটিনাটি ইদ্রিস একদম চোখের সামনে দেখতে পায়। কয়েকটা মাছ ধরে বিক্রি করে দিলে আজকের মত খাবার এর ব্যবস্থা হয়ে যাবে। অভাবে স্বভাব এর দিকে তাকিয়ে বিলাসিতা করার অবস্থায় নেই ইদ্রিস আজকে।

সব ই ঠিক ছিল। মাছ ও ধরা পরেছিল গোটা তিনেক। শুধু বাধ সাধলো মোল্লা সাহেবের দুই পালক পুত্র। দুপুরে আজাহার মোল্লা আর আফসার মোল্লা, ইদ্রিস কে মাছ সহ হাতে নাতে পাকরাও করে নিয়ে আসে। আর এই “উচ্চারন অযোগ্য নারীর সন্তান” ইদ্রিস কে জিজ্ঞাসাবাদ করে তৎখনাত কিছু উত্তম মধ্যম দিয়ে পুকুর পারেই একটা জাম গাছের সাথে শক্ত করে বেধে রাখা হয়। এমন ভাবে বাধা হয় যাতে ইদ্রিস বসতে না পারে। দিঘির মালিক জনাব আসগর আলী মোল্লা বিশেষ একটি মোকদ্দমা সামলাতে শহরে গেছেন। তিনি না ফেরা পর্যন্ত মোল্লা ভাইয়েরা কোন সিন্ধ্যান্তে আসতে পারছিলো না। কি করলে ইদ্রিস এর উচিত শিক্ষা হবে, শরিয়তি বিধানে কিভাবে মারলে তাদের সোয়াব বেশি হবে তাই নিয়ে দুই ভাই অনেক তর্ক বিতর্ক হলো। শেষমেশ তারা তাদের মনস্থির করার জন্য সারা রাত ইদ্রিস কে “মাইরের ওপর” রাখার সিদ্ধান্ত নিল।

[গল্প শেষ হয় নাই, আরো আছে, এই গল্পের প্লট ঘুরতেসে মাথায় অনেক দিন থেকে। কিন্তু লেখা হয় নাই। তাই আজকে ভাব্লাম লিখে ফেলি কি আছে দুনিআয়। আগামিকাল গল্পটার আরো কিছুদুর লিখতে পারবো বলে মনে করি। ]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *