১৯২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৫ । ১২.০০ এ এম

 

ছোটদের পিয়ানো শিক্ষা ১

 

পিয়ানো একটা অসাধারণ ইন্সট্রুমেন্ট। আর শেখাও অনেক সহজ। শেখার রাস্তাটা এত বড় যে হাটতে হাটতে হাটতে অনেক দূর চইলা যাওয়া যায়। আমি যদিও এখনো গলি পার হয়া রাজপথেই আস্তে পারি নাই তবু যা পারি, যট্টুক ই পারি শিখানোর  ট্রাই করি একটা । এইটা যদি একজন মহান পিয়ানো প্লেয়ার এর পিয়ানো নিয়া পড়া প্রথম পাঠ হয়, ক্ষতি কি? না হয় সেই ম্যাচ এর কাঠি টাই হই, যে আলোর মিছিলের প্রথম মোমবাতিটা জালাইসিল।

 

যাই হোক,  পিয়ানোর দিকে তাকালে আমরা কি দেখি? উত্তর টা প্রশ্নের মধ্যেই আছে। পিয়ানোর দিকে তাকাইলে আমরা “কি” দেখি। সাদা কি আর কালো কি। অনেক গুলা কালো আর সাদা লম্বা লম্বা কি থাকে পর পর সাজানো। এই রকম।

 

 

প্রথম বার দেখলে মনে হবে, ও.মো.খো (ওরে মোর খোদা) এত্তগুলা কি ক্যান? এত্তডি ক্যামনে শিখুম? কিন্তু মনে আসে কোন কিছু কঠিন লাগলে কেমনে শিখতে বলসিলাম? কঠিন জিনিশ টারে ভাইঙ্গা ছোট ছোট টুকরা করতে, তারপর টুকরা গুলা একটা একটা কইরা শিখতে। এবার আমরা পিয়ানো কি গুলারে ভাঙ্গি। প্রথমে তাকাই কালো কি গুলার দিকে। খেয়াল কইরা দেখেন কালো কি গুলা দুইটা কালো কি পর পর, তারপর একটু গ্যাপ, তারপর তিনটা কালো কি পর পর, তারপর আবার দুইটা কালো কি এমনে আছে। অর্থাৎ কিনা কালো কি গুলা ২,৩,২,৩ এমনে আছে। তাইলে এই প্যাটার্নটাকে কাজে লাগাইয়া আমরা পিয়ানোর কি গুলারে কয়েকটা টুকরায় ভাগ করতে পারি। ধরলাম একটা টুকরায় ২,৩ এই প্যাটার্ন টা নিলাম। দুইটা কালো কি এর ঠিক আগের সাদা কি টা থেইকা শুরু কইরা ডান পাশের আবার যেখানে দুইটা কালো কি আছে তার বামের সাদা কি টা পর্যন্ত নিয়া একটা সেকশন নিলাম। একদম এই রকম

 

 

 

 

 

একটা বড় পিয়ানোর ছবি বাইর কইরা যদি দেখি, তাইলে দেখবো আমাদের নেওয়া এই সেকশন টাই বার বার রিপিট হইসে বাম থেইকা ডান পর্যন্ত। এই এক একটা সেকশন কে বলে এক এক টা “অক্টেভ”। যেমন এই যে একটা অক্টেভ

 

 

 

 

পিয়ানোর সাইজ এর উপর ডিপেন্ড কইরা এই অক্টেভ এর সংখ্যা কম বেশি হইতে পারে। একেবারে বাচ্চাদের খেলনা কি বোর্ড এর যেমন ২টা বা ৩টা অক্টেভ থাকতে পারে। আমার কি বোর্ড Yamaha PSR E313 বাচ্চাদের কি বোর্ড এর চেয়ে একটু উন্নত মানের। এইটা তে ৫ টা অক্টেভ আছে।

 

 

 

 

একটু যদি গইনা দেখি তাইলে দেখবো প্রত্যেক্টা অক্টেভ এ মোট ১৩ টা কি আছে। ৮ টা সাদা কি আর ৫ তা কালো কি । ওই ৮ টা সাদা কি এর জন্য এইটার নাম “অক্টেভ”।

 

একটা অক্টেভ এর প্রত্যেকটা কি এর আবার নাম আসে । A থেইকা G পর্যন্ত এই নাম গুলা দেওয়া হয়। পৃথিবী এর যাবতীয় সুর এই সাত টা লেটার এর মধ্যেই থাকে। এই গুলা বলা হয় এক একটা নোট। মানে A একটা নোট, B একটা নোট এইরকম। তাইলে কি দাঁড়াইল। এক এক টা কি আসলে একটা একটা নোট।

 

 

বেশি জটিল চিন্তা করার দরকার নাই। আমরা আস্তে আস্তে এই সব গুলা নোট এর নাম ই শিখবো আর পিয়ানো তে এই নোট গুলা কুনটা কই থাকে তাও শিখব। মূলত সাদা কি গুলাকেই A থেইকা G পর্যন্ত নাম দেওয়া হয়া থাকে। কালো কি গুলার নাম তাদের আগের বা পরের সাদা কি এর নাম অনুসারে হয়া থাকে।

 

যে কোণ সাদা কি এর ডান পাশে যদি কোন কাল কি থাকে, তাইলে ওই কালো কি টার নাম হয় সাদা কি এর নাম+শার্প। শার্প বুঝাইতে আমরা # চিনহ টা ব্যাবহার করি। যেমন উপরে আমরা যেই অক্টেভ এর ছবি দিসি তার একদম প্রথম কি টা, অর্থাৎ দুইটা কালো কি এর ঠিক বাম পাশের সাদা কি/নোট টার নাম যদি C হয় তাইলে C এর ডান পাশের কালো কি/নোট টার নাম C Sharp.  আবার C এর পাশের সাদা নোট টার নাম যদি D হয় তাইলে D পাশের কালো নোট টার নাম D sharp.  এই ভাবে আগে বারলে সব গুলা নোট আর তার শার্প এর নাম গুলা হবে এরকমঃ

 

 

 

 

আবার যদি পিছন দিকে চিন্তা করি তাইলে D নোট এর আগের কালো নোট কে বলব D Flat. E নোট এর আগের কালো নোট টাকে বলব E Flat এরকম। ফ্ল্যাট বুঝাইতে আমরা b এই সিম্বল টা ইউজ করি, যেমন Db, Eb, Gb মানে ডি ফ্ল্যাট, ই ফ্ল্যাট, জি ফ্ল্যাট ইত্যাদি ।

 

 

 

 

যেই সাদা নোট এর পরে কালো নোট নাই, তার কোন শার্প ও নাই। যেমন উপরের ছবি থেইকা আমরা বলতে পারি E এবং B এর কোণ শার্প নাই। আবার যেই সাদা নোট এর আগে কালো নোট নাই তার কোন ফ্ল্যাট ও নাই। যেমন C এবং F এর কোন ফ্ল্যাট নাই।

 

আজকে এই পর্যন্তই থাক। এগুলা শিখতে হইলে নিজের পিয়ানো বা কি বোর্ড থাকতে হইব এমন কোন কথা নাই। নেট এ Online Virtual Keyboard দিয়া সার্চ দিলেই অনেক অনলাইন কি বোর্ড পাওয়া যাবে। অগুলা তে জিনিশ গুলা একটু চর্চা করলে শিখাটা আরো শক্ত হইব আরকি।

 

আর না শিখতে ইচ্ছা করলে তো হইলই। ফরগিভ, ফরগেট এন্ড মুভ অন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *