লেখার তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২, ২০১৫ । ১১.৫৭ পি এম
ময়মনসিংহ বইসা বইসা নোট লিখতাসি। যেই হোটেল এ উঠসি তার নাম হোটেল আমির ইন্টারনেশনাল। একেবারে শহরের প্রান কেন্দ্রে হোটেল। ইশটিশন এর পাশেই। এতখন রিকশা গাড়ির আওয়াজ আসতাসিল। এখন আবার শুনশান। ট্রেন এর আওয়াজ পাইতাসি অবশ্য। সুন্দর জেলা শহর টা ঘুমের প্রস্তুতি নিতাসে। আমিও ঘুমায় যাবো একটু পরে। কালকে সকাল ৯ টায় এইখানের রিজিওনাল অফিসে মিটিং। এট্টু ডর ডর লাগতাসে। এই খানে আসার কথা ছিল আসলে আমার বস এর। মিটিং এ যারা আসবে তারা সবাই ডিজিএম , এজিএম, জি এম লেভেলের লোকজন। মাঝখান দিয়া আমি এক পাতি হাস ঢুইকা কি প্যাক প্যাক করুম বুঝতাসি না।
ভাবসিলাম আজকে সকালে রউনা দিয়া দুপুরের মধ্যে মমেনশিং আইশা পরব। তারপর দুপুরের পর কয়েকটা সাইট দেখতে যাবো সাথে ব্রম্মপুত্র রেও একটা হাই বইলা আসা যাবে। কিন্তু কিয়ের কি। কলিগ আপু বলল, এতু কাজ, আমি ইকা ইকা কেম্নে সবকর্ব, তুমি সকালে আইসো পিলিগ। কি আর করা। সব গাট্টি বুচকা লয়া বাসাবো থিকা বৃষ্টির মধ্যে লোকাল বাস এ ঝুইলা ঝুইলা রউনা দিলাম অফিসের দিকে। পিঠে ব্যাকপেক, এক হাতে ল্যাপ্টপ এর ব্যাগ, আরেখাতে ছাতা। বাস এ অনেক প্রব্লেম হইতাসিল বেলেন্স রাখতে। একবার পইরাই যাইতে নিসিলাম বাস এর হঠাত ব্রেক মারাতে। সাম্নের দুই জন লোক এর অসাধারন রিফ্লেক্স এর কারনে দুই জন খপ কইরা আমার দুই হাত ধইরা ফালাইলো। আর বাইচ্চা গেলাম। এই দুই জন এর কারনে কলিগ আপুর উপর রাগ টা উঠতে গিয়াও ফেইথ ইন হিউমেনিটী রিস্টোরড টাইপ বেপার হইসে। বাস এ মারামারিও লাগসিল। কেন ১০ টাকার ভারা ১৫ টাকা চাইল এই জন্য একটা লোক বাস কন্ডাক্টর পিচ্চি রে চড় দিল একটা। পিচ্চিও সারা শরীর দিয়া খাপায় পড়লো তার উপর। আমি চাইলে দুই জন রে আটকাইতে পারতাম আটকাই নাই। কারন যেই লোক চড় দিসে সে মাইর খাইতাসিল বেশি। একটু পরে বাস এর লোকজন ও তারে মারা শুরু করল আর বাস থেইকা নামায়া দিল। আমি হাত তালি দিলাম। আমার দেখা দেখি সবাই হাত তালি দিল। ফাইন্ড সামোয়ান অফ ইউর ওউন সাইজ টু ফাইট, ইউ লুজার।
অফিসে আস্তে আস্তে জুতার ভিতর পানি ঢুক্সিল। সেই ভিজা জুতা মুজা নিয়াই অফিস করলাম লাঞ্চ পর্যন্ত, তারপর ২ টার দিকে গাড়ি তে উইঠা শান্তি। ড্রাইভার কে বললাম, কান্ট্রি রোড টেক মি হোম। ড্রাইভার বলল, বাইয়া, কি বললেন বুজি নাই। আমি বললাম, চলেন, মমেনশিং চলেন।
রাস্তায় মজা হইসে। আমার কানে তো হেডফোন ছিল। আমি ৭০ আর ৮০ দশক এর ইংরেজি রক গান শুনতে সিলাম। আরামে জুতা খুইলা পা উঠায় দিলাম সাম্নের সিট এর উপ্রে। বিশাল একটা নোয়া মাইক্রো বাস। আমি ছাড়া আর কেউ নাই গাড়ি তে। গান শুনতে শুনতে আর কিছু খেয়ালও নাই। একটু পরে দেখি ঠাশ ঠাশ কাচ নাইমা গেল। আর গাড়ি থাইমা গেল রাস্তার পাশে। আমি ভাব্লাম আয়হায় গাড়ি নশট হয়া গেসে ! অখন কেম্নে যামু মুমেনশিং?
হেডফোন্টা খুইলা ড্রাইভার এর দিকে তাকাইলাম। সে দেখি দরজা খুইলা বাইরে গেল গা। তারপর বাইরে গিয়া পানি তে ডুইবা যাইতে যাইতে উদ্ধার পাওয়া মানুষের মত হাউ হাউ কইরা শাশ নিল। তারপর আমার জানালার কাছে আইসা খুবি লজ্জা লজ্জা গলায় বলল,
“বাইয়া আপ্নের মুজা থিকা গ্যাস বাইর হইতাসে। আমি ফিট অয়া যাইতে নিসিলাম”
আমি না ফার্স্ট এ বুঝি নাই। গ্যাস বাইর হইতাসে মানে কি? কি ভয়ঙ্কর? গাড়ির সি এন জি টেঙ্কি কি ফুটা হয়া গেসে? আমার টুথপেস্ট স্লো তো, তাই বুঝতে টাইম লাগসে। কিন্তু ফাইনালি বুঝসি যে উনার আসলে বলতে লজ্জা লাগতাসে যে, আমার মুজায় বিকট গন্ধ। আর তাতে উনার অজ্ঞান হয়া যাওয়ার অবস্থা হইসিল। সারাদিন ময়লা পানি তে ভিজা মুজা যে এই অবস্থা হইব তা আমার মত বেকুব বুঝেই নাই।
আমি তারাতারি দেশ ও জাতি কে উদ্ধার এ মনোযোগি হইলাম। মুজা দুইটা খুইলা পাশের পুকুরে ফিক্কা মারলাম। কেন কালকে পুকুরের সব মাছ মইরা ভাইসা উঠলো সেই রহস্য কেউ কোনদিন জান্তেও পারবে না। এই উপলক্ষে কবি বলেছেন, মু হা হা।
তারপর গাড়ি চলা শুরু হইল। মমেনশিং পৌছায়ও মজা হইসে আরো। কিন্তু সেই ঘটনা আরেকদিন লিখব নে।