১৬৩/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ০৯, ২০১৫ । ১০.৫২ পি এম

 

আজকে জীবনে প্রথম বার এর মত এন্ড্রয়েড ফোন রুট করলাম। রুট করা মানে হইল এন্ড্রয়েড এর অপারেটিং সিস্টেম এ কিছু অদল বদল করা যাতে কইরা ফোন এর অনেক গুলা রেসট্রিকশন উইঠা যায়, অনেক গুলা অপশন ওপেন হয়। এইটা করলে ফোন এর কোম্পানির দেওয়া ওয়ারেন্টি ও ভয়েড হয়া যায়, তাই নতুন ফোন এ এইডা করাডা একটু কলিজার ব্যাপার। আমার কলিজা আসে, তয় এদ্দিন ফোট রুট করার কুন কারন পাই নাই। আচ্ছা, যা আসে তো চলতাসেই, কি দরকার রুট করার। কিন্তু আজকে বাধ্য হইসি আমার ১ বছর ৫ বাস বয়সের ওয়াল্টন জেড এক্স ফোন রে রুট করতে। কেমনে কি করলাম সেই গফটা কই।

আজকের পাটি পাটি হা হা তে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার হাটার পর যখন রিকশায় উঠার আগে এন্ডোমোন্ডো থেইকা পাওয়ার বাটন আর ভলিউম ডাউন বাটন চাইপা স্ক্রিন শট নিতে যামু দেখি কাম সারসে। ভলিউম বাটন তো কাম ই করে না। ভলিউম আপ বাটন ও না, ডাউন বাটন ও না । তইলে অকন কেম্বায় স্ক্রিন শট নিবাম।

বাসায় আইতে আইতে নেট এ যত ডি তরিকা আসে সব ট্রাই করলাম, কিসসু কাম করে না। তারপর ভাবলাম আইচ্ছা দেখি কোন এপ আসে কিনা যেইটা দিয়া স্ক্রিন শট নেওয়া যায়। সব ফাউল। এপ ইনস্টল করার পরে কয়, পাওয়ার বাটন আর ভলিউম ডাউন বাটন ক্লিক কর, তারপর ছবিটা আমরা ক্রপ করতে হেল্প করুম। আরে ছাতার মাথা আমি যদি ভলিউম ডাউন বাটন টিপতেই পারি তাইলে কি আরে তরে ইন্সটল করতাম?

খুপ চিন্তায় পইড়া গেলাম। অখন কি করুম। আজকের স্ক্রিনশট কি তাহলে নেওয়াই হবে না। মন থেইকা একটা ভয়েস বলতাসিল, বাদ দে বাদ দে, বাসায় আইসস, টিভি দ্যাখ। ঘুমা। কি দরকার স্ক্রিনশট এর। কিন্তু আমি মন রে বললাম, না, যা ঠিক করসি তা কইরাই ছারুম। পড়ালেখা শুরু করলাম ফোরাম গুলাতে।

পইরা বুঝলাম যে যেইসব এপ গুলা বাটন ছাড়া স্ক্রিনশট লইতে দ্যায় সেগুলা একটাও ফোন রুট করা না থাকলে কাম করে না। তখন আমি ঠিক করলাম। ঠিকাসে তাইলে রুট ই করুম। নেট এ পড়ালেখা করলাম যে রুট কি, কেমনে করে, করলে কি ফোন বরবাদ হয়া যাইব কিনা । তারপর সবচেয়ে সুজা উপায় টা খুইজা বাইর করলাম।

একটা সফটওয়ার আছে নাম Kingo Root. এই টা দিয়া সব চেয়ে সহজ রুট করা। প্রথমে Kingo Root সফটওয়ার টা নামায় ডেস্কটপ, ল্যাপটপ এ ইন্সটল কইরা নিতে হবে। তারপর সফটওয়্যার টা ওপেন কইরা ফোন এর ইউ এস বি ডিবাগিং মোড টা অন করতে হইব। এর ফোন টারে একটা ইউ এস বি কেবল দিয়া ডেস্কটপ/ল্যাপ্টপ এর লগে কানেক্ট করতে হইব। এরপর যা কাম করার King Root ই কইরা লইব। এমনকি মোবাইলের ড্রাইভারটা যদি ইন্সটল না থাকে তাইলে ও নিজেই খোজ কইরা ড্রাইভার ডাউনলোড কইরা ইন্সটল কইরা নিবে।

তারপর সফটওয়ার এ হোম পেজ এ একটা বাটন আসে “স্টার্ট রুত” । ফোন টা লাগনো অবস্থায় থাকলে শুরু হয়া যাবে রুটিং । কিচ্ছু করা লাগবে না। ১৫ মিনিট সময় লাগবে। ফোন রুট করা শেষ হইলে ওই শব্দ কইরা আওয়াজ দিবে, আর মেসেজ উঠবে মনিটর এ যে রুট করা ডান। তখন ইউ এস বি খুইলা ফালালেও হবে।

রুট করার পরে আমি সেই স্ক্রিনশট নেওয়ার এপটা ইন্সটল করলাম। এরপর এন্ডোমন্ডো খুইলা সাকসেসফুল্লি স্ক্রিনশট নিয়া পাটি পাটি হা হা এলবাম এ পোস্ট কইরা দিলাম।

অল দিস বিকজ আই আম আ আইলসা। ফোন এর বাটন ঠিক করাইতে যাওয়ার কশট এভয়েড করার জন্য রুট ই কইরা ফালাইলাম ফোন।

স্পিকিং অফ আইলসা। আইজকা আমার বস এর বস একটা গল্প বলসে। ভাল্লাগসে গল্প টা। একবার জাপানের এক বড় সড় লাইট ব্যাবসায়ী ঢাকায় আসলেন ঢাকায় কেমনে ফিলিপ্স বাত্তি বানানো হয় তা দেখতে। সব দেইখা তিনি খুব তাচ্ছিল্য নিয়া বললেন, “হেহ, তোমরা দেখিই এখন হাত ব্যবহার কইরা প্যাকেট এ ভর বাল্ব গুলা। মিসিং হয় না কোন? আমাদের দেশে হয়, প্রায় ই দেখা যাইত বাল্ব এর প্যাকেট এর ভিতর বাল্ব নাই।

এই সমস্যা দূর করার জন্য আমরা জাপানে একটা সেন্সর লাগানো রবোটিক আর্ম ইন্সটল করসিলাম। সেইটা প্রত্যেকটা প্যাকেট চেক করতো যে তার ভীতর বালব আছে কিনা। তোমারা এই সমস্যা ফেস কর নাই?”

বাল্ব কোম্পানির ম্যানেজার মুচকি হাইসা বললেন, অবশ্যই করসি, আসেন আমার সাথে। গিয়া দেখাইল, একটা জায়গায় মাত্র প্যাকেট করা বাল্ব গুলা আনা হইতাসে। ওই খানে এক দারোয়ান একটা টেবিল ফ্যান হাতে নিয়া দাঁড়াইয়া আসে। বাল্ব গুলারে মাটীতে রাখা আর দরজা বন্ধ কইরা দেয়ার পর টেবিল ফ্যান ছাইড়া জুততে জুততে বাতাস দিতাসে বাল্ব গুলারে। যেই প্যাকেট এর ভিতরে বাল্ব নাই সেই প্যাকেট টা উইরা চইলা যাইতাসে। আর ভরা প্যাক্যাট গুলা থাক্তাসে। বিদেশি পুরাই ব্যাক্কল হয়া গেল।

এই গল্পের সারমর্ম হইল, সব চেয়ে কঠিন কাজ টা সব চেয়ে আইলসা পারসন রে দেওয়া উচিত। তাইলে সে একটা শর্টকাট উপায় বাইর করবই।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *