১৭০/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ১৬, ২০১৫ । ১০.৫০ পি এম

 

জীবনে চাওয়ার শেষ নাই। কিন্তু কত টুকু আমি চাই আর কত টুকু পাইলে ভাল না পাইলেও ক্ষতি নাই সেই টা বুঝা তা জরুরি। একটা কমন চাওয়া হইতেসে টাকা পয়সা। এইটা এমন একটা জিনিশ যে কারো কারো স্বভাব কেমন হবে তাও ঠিক কইরা দ্যায় এই চাওয়াটা। টাকা পয়সার জন্য একটা মানুষ খারাপ হইতেও চিন্তা করে না কিছু। নিজেরে সান্তনা দ্যায়, ভাল থাকার জন্য করতেছি। ছেলে মেয়ে বউ রে ভাল রাখার জন্য করতেসি।

এই ভাবনা টা আমার কাছে খুবি অবাক লাগে। একটা সময় দুনিয়াতে টাকা পয়সা ছিল না। তারপর মানুষ তার প্রয়োজনে টাকা পয়সার সিস্টেম চালু করলো। তার পর টাকা পয়সা এমন একটা ব্যপার হয়া গেল যা কিনা মানুষ কে নিয়ন্ত্রণ করে। সব কিছু ঘুরাইয়া পেঁচাইয়া শেষ হয় ওই টাকা পয়সার প্রয়োজন এই। মানুষের তৈরি একটা জিনিশ আজকে মানুষ কে নিয়ন্ত্রণ করে। কি অদ্ভুত।

আমি অফিস যাওয়ার সময় দেখি লোকজন ৬ নাম্বার নাইলে তুরাগ বাস এ উঠার জন্য কত্ত হুড়াহুড়ি পাড়াপাড়ি করে। ক্যান করে? সে কেন একটা রিকশা বা সি এন জি নিয়া যায় না? কারন টাকা পয়সা। অগুলাতে গেলে খরচ বেশি। নিজেকে খরচ করতে অসুবিধা নাই, টাকা পয়সা খরচ করলেই জীবনে প্যাচ লাইগা যাবে। এই যে অফিসে এত কাজ কাম, এত বক বকানি, ত্যানা প্যাচানি সব কিছু চিন্তা করলে দক্ষা যায় এই সব করলে উপরে উঠা যাইব, উপরে উঠলে টাকা ডা একটু বেশি পাওয়া যাইব এই। এ সব লোক আর বসুন্ধরার গেট থেইকা অফিস পর্যন্ত ২০ টাকা ভাড়া চাওয়া রিকশাওয়ালার মধ্যে আমি খুব বেশি পার্থক্য দেখি না। রিকশাওয়ালা বরং বেটার, যা চায় সরাসরি বইলা দ্যায়।

আমাকে নির্লোভ সাধু সমন্ত ভাবার কোনই কারন নাই। টেকা টুকা আমারো দরকার হয়। কিন্তু আমার সমস্যা হইল আমি টেকা টুকা কে অনেক ইম্পরট্যান্ট কিছু ভাবতে পারি না। থাকলে ভাল। না থাকলেও কি আর করা। এই রকম ভাবি। টাকার জন্য আমার এখন রুড হইতে হবে, সবাই এসহোল ভাবলে ভাবুক আমাকে নিচু মন মানুষীকতার হইতে হবে নাইলে আমাকে সবাই ঠকাইয়া নিয়া যাবে এই রকম আমি জীবনে ভাবতে পারিও নাই। পারবো ও না।

টাকা পয়সাই জীবনে সবকিছু না এই ধরনের কথা সাধারণত দুই ধরনের লোক বলে। এক, যার ভালই টাকা পয়সা আছে। আর দুই, যার টাকা পয়সা নাই বললেই চলে। প্রথমটা বিলাসিতা থেইকা বলা আর দ্বিতীয় টা আক্ষেপ থেইকা। টাকা পয়সা এখন আমরা না চাইলেও জীবনের অনেক কিছু। তাই এইটাকে ইগ্ণোর করা যাবে না। কিন্তু আমরা যা করতে পারি তা হইল টাকা পয়সা আমাদের কত টা নিয়ন্ত্রণ করবে এইটা ঠিক করার ক্ষমতা আমার হাতেই।

যাদের বাবার ওঢেল টাকা পয়সা আছে তাদের আমি এই আলোচনায় আনতে চাই না। কারন ব্যাপারটা আমি বললেও জীবনে চেঞ্জ হবে না। আমি অনেক বার অনেক কে বোঝানোর চেষ্টা করসি যে তোমার পরিবার এর আয় করা টাকা তোমার টাকা না। তোমার আয় করা টাকা তোমার । লাভ হয় নাই কোন, বরং শুনসি, “আমার বাবার টাকা আসে তো কি হইসে, এইটা কি আমার দোষ নাকি।“ “আরে বাবার কাছ থেইকা নিবো না তো কার কাছ থেইকা নিবো” । আমার মনে হয় এইটা ঠিক না। আসলে হয় তো ঠিক। কিন্তু আমার কাছে ঠিক না।

আমার মনে হয়, যতটুকু টাকা পয়সা আমি ইনকাম করতেসি তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, ভবিষ্যতে টাকা ইনকাম করা বাড়বে এইটা আশা করা উচিত। কিন্তু কখনোই বর্তমানে টাকা পয়সা নাই ভাইবা পাগলা হয়া নিজের উপর এবং সবার উপর অবিচার শুরু করা টা কাম্য না।

১৬৯/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ১৫, ২০১৫ । ১১.১৮ পি এম

 

অনেক দিন পর আমি আজকে সিনেমা দেখতে বসছিলাম। সিনেমার নাম “Unbroken”. ২০১৪ সালের সিনেমা। ডাইরেক্টর এঞ্জেলিনা জোলি। কাহিনীর সময়কাল ২য় বিশ্বযুদ্ধ। একটা ইটালিয়ান ফ্যামিলি আমেরিকাতে আসে ভাগ্য অন্বেষণে। সেই ফ্যামিলির একটা ছেলে লুইস জ্যাম্পেরিনি অনেক কষ্ট করার পর একজন ভাল দৌড়বিদ হন। উনাকে আমেরিকার পক্ষ থেইকা অলিম্পিকেও পাঠানো হয়। কিন্তু এর পর ২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হোয়াতে তাকে চইলা আস্তে হয় যুদ্ধে। বোম্বার প্লেন এর বোম্বার হিসাবে নিয়োগ পান। কিন্তু তাদের প্লেন একটা মিশনে থাকার সময় সাগরে ক্র্যাশ করে। ৪৫ দিন নানা রকম সংগ্রাম কইরা টিকা থাকার পর তাদের কে একটা জাপানি জাহাজ পিক কইরা নিয়া যায় আর তাদের যুদ্ধবন্দি বানানো হয়। আর তার উপর শুরু হয় অমানুষিক অত্যাচার।মুল কাহিনী শুরু এই খান থেইকা।

আজকার সিনেমা দেখা অনেক কইমা গেসে। টিভি সিরিজ দেখা হইতাসে বেশি। আমি ফ্রেন্ডস আবার পুরাটা দেখা শেষ করসি। হাউ আই মেট ইউর মাদার পুরাটা দেখা শেষ করসি। তারপর ব্রেকিং ব্যাড দেখা শুরু করসিলাম আবার। আজকে হঠাত ইক্টু টাইম পাওয়াতে আর হার্ড ডিস্ক এর এক কোনায় এই সিনেমাটা খুইজা পাওয়াতে দেখা শুরু করসি। ভাল লাগতাসে। ২য় বিশ্বযুদ্ধ নিয়া সিনেমা আমার ভাল্লাগে।

আমি আজকে ভাবতাসিলাম, আমার আল্লাহর উপর কত টা কৃতজ্ঞ থাকা উচিত । তিনি আমাকে পরিচিত কিছু মানুষের মত চালাক আর ধান্দাবাজ কইরা বানায় নাই। বেক্কল আর অসীম সহ্যশক্তি দিয়া পাঠাইসেন। এই দুইটা জিনিষ না থাকলে আমার মনে হয় আমি এত দিনে হয় খুন হয়া যাইতাম নাইলে জেলে থাকতাম। কারন মানুষের শয়তানি সহ্য করতে পারতাম না। যার উপর রাগ উঠত, মাটিতে ফালায়া গলায় পারা দিয়া দাড়ায়া থাকতাম আর ফেসবুকে লিখতাম ফিলিং গ্রেট।

আমি একটা মিথ্যাবাদী লোক রে চিনি। লোকটা আমার অফিসে কাজ করে। সবাই জানে সে মুখের উপর মিথ্যা কথা বইলা দ্যায় আর এই জন্য তার কোন লজ্যা বোধ ও হয় না। ইথিক্স বইলা যে একটা শব্দ আছে সেইটা সে জীবনে কোনদিন শুনসে বইলা মনে হয় না। তার ক্ষমতার কারণে অথবা উপর মহলে তার আত্মীয় স্বজন থাকার কারণে কিনা জানি না, কেউ তারে ঘাটায় না। আমি খুব প্রতিবাদী কেউ না। কিন্তু আমি রাস্তায় একটা গাড়ি অনেক খন হর্ন বাজাইলে গাড়ি থামায়া গাড়ীর ড্রাইভার কে গিইয়া বলি, কি সমস্যা? এত হর্ন দ্যান ক্যান? ফুটপাথে হোন্ডা ওয়ালা আইসা পিছে থেইকা পিপ পিপ করলে তারে ধইরা রাস্তায় নামায় দেই।

কিন্তু এরে কিছু বলতে পারি না আমি। তার কাজ কর্মে যত টা না আমি রাগে কাপতে থাকি তার চেয়ে বেশি কাপতে থাকি তারে কিছু বলতে পারতেসি না এই ব্যার্থতায়। মুখের উপর কিছু একটা শুনায় দিতে মুখ নিষ পিষ করে। কিন্তু বলি না। আমিও কর্পোরেট জগতের মেরুদণ্ডহীন দাবার গুটি হয়া বাঁচি। এই ব্যাপারটা আমাকে অনেক মনকষ্টে রাখসে ইদানীং। শুধু আল্লাহর উপর ছাইড়া দেওয়া ছাড়া কিছুই করার নাই আপাতত।

স্কুলে থাকতেই ভাল আসিল। কারো উপর মেজাজ খারাপ হইলে দল বাইন্ধা পিটানি যাইত। আমাদের একটা দল ছিল। টিভি সিরিক ডার্ক জাস্টিস এর ছায়া অবলম্বনে গঠিত দল, ব্ল্যাক জাস্টিস। আমরা ছিলাম গরীবের বন্ধু। কেউ কাউরে হুদাই স্যার এর হাতে মাইর খাওয়াইলে ব্ল্যাক জাস্টিস এর লোকজন গিয়া ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করতো। হাজার হাজার প্ল্যান করা হইলেও, বাস্তবায়ন করসি খালি একটা।

একবার ক্লাস এর একটা পোলা আবেগে গদ গদ হয়া স্যার এর কাছে বিচার দিসে যে আমরা কয়জন নাকি স্যার আসার আগে ক্লাসে গল্প করতেসিলাম। স্যার আমাদের কয়জন রে ডাইকা হেভি পিডাইল। ওই পোলার দুর্ভাগ্য যে যেই তিন জন রে ও ফাসাইসে তারা সবাই ব্ল্যাক জাস্টিস এর সদস্য। আমরা বুঝলাম ওকে শাস্তি পেতেই হবে।

অপারেশনটা খুবি সিম্পল ছিল। ছুটির পর সবার সাথে ওই পোলা নামতাসে সিঁড়ি দিয়া। যেহেতু অনেক ভিড় তাই আস্তে আস্তে নামতাসে। আমাদের মধ্যে একজন ওরে সিঁড়ি তে ফালায় দিল ল্যাং এক্সপার্ট। তারপর ভুতের মত উদয় হইল ব্ল্যাক জাস্টিস এর আরো দুইজন। ওরা তাকে উপুর্জপরি দিল আরকি। আই মিন পারাইলও বেশ কিছুক্ষণ। আমি কি করমু বুঝতে না পাইরা একজন এর একটা মেটাল ফ্লাক্স ছিল, ইউ এস আরমি টাইপ। ওইটার স্ট্রেপ এ ধইরা ঘুরাইতে ঘুরইতে দিলাম চার পাঁচ টা বাড়ি। সেই পোলা আর জীবনে কোনদিন আমাদের সাথে ঝামেলা করে নাইই।

দেখি। একটা স্টিল এর ফ্লাক্স কিনতে হবে ইদানীং আবার মনে হইতাসে।

 

১৬৮/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ১৪, ২০১৫ । ১১.৫৮ পি এম

 

মন,মাথা সব কেমন জানি ভারি ভারি হয়া আসে। কিছু লিখতে ইচ্ছা করতাসে না। আজকে মনে হয় হাল্কার উপর দিয়াই চালায় দিমু। এই টা স্কুল এর ক্লাস হইলে পোলাপান রে কইতাম বই খুইলা অমুক পেজ থেইকা তমুক পেজ রিডিং পড় সবাই। আফসুস এইডা স্কুল না। স্কুল এর কথায় একটা জুক্স মনে পরসে। একবার এক মাস্টার সাব ক্লাসে ঢুইকা দেহে দুই পোলায় হেবি ঝগড়া করতাসে। উনি ধমক দিয়া জিগাইলো, ওই তোগো সমস্যা কি? পোলা দুইডা কইল, স্যার, আমরা আজকে ক্লাস এর ফ্লোর এ একটা পাঁচশ টাকার নোট কুড়াইয়া পাইসি। অখন আমরা কে টাকাডা নিমু ওই ডা লইয়া আলাপ করতাসি। আমরা ঠিক করসি আমাগো মধ্যে যে সবচেয়ে বড় মিথ্যুক সেই টাকাডা পাইবো। শুইনা তো স্যার হেবি চেইত্তা গেল। এই মারে তো সেই মারে। আর কইল, আরে তোরা আগামী প্রজন্ম, আর এই সব মিথ্যা বলা শিখতাসস। এই শিখাইসি এদ্দিন তোগো রে। জানোস, তোগো বয়সে থাকতে আমরা মিথ্যা কি ওইডাই যানতাম না। পোলা দুইডা একে অন্যের দিকে চাইলো, তারপর কইল, স্যার আপনে জিতসেন। এই লন পাঁচশ টেকা।

আমাদের স্কুল এও স্যার রা হুদাই মারতো। কোন কারন লাগতো না। বই আনি না ক্যান, মাইর। পড়া পারি নাই ক্যান, মাইর। এগুলা তো নরমাল। ক্যান বেতনের রশিদে ছাত্রের সাক্ষর এর জায়গায় নাম না লিখা পেচাইন্না সাইন করলাম ওই জন্যও মাইর খাইসি। আমি কত কষ্ট কইরা একটা পেচাইন্না মার্কা সিগনেচার বাইর করসিলাম। আর স্যার চর মাইরা কইসে, ফাইজলামি করস, আমার লগে ফাইজলামি করস? এই সব কি বিসরি জিনিষ আকসস সাক্ষর এর ঘরে।

স্পিকিং অফ বিসরি, একবার বাসে এক লোকের পাশে আইসা এক আপায় বসলো। আপার কোলে একটা পিচ্চি। আপারে দেখলেই বুজা যাইতাসিলো আপার মন খারাপ। পাশের লোকটা জিজ্ঞেস করলো, আপা কি হইসে? মন খারাপ কেন? আপায় কান্না কান্না গলায় বলল, জানেন ভাই, ওই সামনের লোক গুলা আমার পিচ্চি কে নিয়া হাসাহাসি করসে। বলসে এরম বদসুরত বাচ্চা নাকি ওরা জীবনে দ্যাখে নাই। শুইনা তো লোক টা চেইতা গেল। কিইইহ ! এত্ত বড় সাহস ওদের। আপা, আপনে আপনের পোশা বান্দর টারে আমার হাতে দ্যান। আপনে গিয়া ওদের চর দিয়া আসেন দুইটা। জীবনে এরম বান্দর পালতে দ্যাখে নাই নাকি ফালতু গুলা।

পিচ্চি কালে এরুম ইন্সাল্ট আমারেও অনেক শুনতে হইসে। একবার বাসায় কেউ নাই। আমারে রাইখা সবাই মার্কেটে গেসে। আমি বাসায় একলা। তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। খিদা লাগসিল অনেক কিন্তু খাওয়ার কিছু নাই বাসায়। এমন সময় হঠাত কলিং বেল । দরজার ফুটা দিইয়া দেখি এক বুড়া লোক হাতে একটা মিষ্টির প্যাকেট হাতে দাঁড়ায় আসে। আমি তো আর বাকি কিছু দেখার প্রয়োজন ই বোধ করলাম না। দরজা খুইলা আসেন আসেন করতে ড্রইং রুম এ বসাইলাম। ওই লোক জিগাইল, তুমার আব্বা বাসায় নাই? আমি বলসি বসেন, আইসা পরবে একটু পড়েই। আর হা কইরা তাকায় রইসি মিষ্টির পেকেটের দিকে।

লোক টা আমার দিকে মিষ্টির প্যাকেট টা আগায় দিয়া বলল, এইটা ভিতরে নিয়া যাও আর আজকের পেপার টা দিয়া যাও। আমি কোন মতে পেপার টা উনার দিকে ছুইরা মাইরা মিষ্টির প্যাকেট নিয়া বইসা পড়লাম ডাইনিং রুম এ খাইতে। প্যাকেট যখন প্রায় অর্ধেক খালি তখন ওই লোক ডাকলও, আচ্ছা এই টা আজাহার সাহেবের বাসা তো ঠিক না? আমি বললাম, না উনি তো উপরের তলায় থাকে।

লোক টা খুবি বিব্রত হয়া গেল। বলল, এহে, ভুল হয়া গেসে। বাবা, আমার প্যাকেট টা দাও, আমি যাই। আমি তো দেখলাম কাম সারসে, অখন কি করুম? তারাতারি ভিত্রে আইসা ফ্রিজ থেইকা কয়েকটা শশা আর মুলা নিয়া প্যাকেট এ ভইরা ওজন বাড়াইয়া আবার দিয়া দিলাম।

উপরের তালায় কি হইসে তারপরে আর জানার সাহস হয় নাই। মিশটি গুলা মজা আসিল অবশ্য।

 

 

১৬৭/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ১৩, ২০১৫ । ১১.২১ পি এম

 

আজকে আমি নারায়ণগঞ্জ গেসিলাম। আমার কাছে শহরটা ভাল্লাগে নাই। এত মানুষ। আর এত যানবাহন রাস্তায়। জ্যাম আর জ্যাম। কিন্তু নদীর পারে গিয়া সব ক্ষমা কইরা দিসি। কি সুন্দর একটা নদী। জীবন্ত একদম। রাস্তায় এত গাড়ী আর মানুষ দেইখা যত অস্থির লাগতাসিল নদীতে তার প্রায় সমান নৌকা, বার্জ, লঞ্চ আর মানুষ দেইখা তত টাই ভালা লাগসে। মনে হইতাসিল এই গুলা না থাকলে একটুও মানাইতো না। আর দেখসি অনেক উপর থেইকা। ২০ তালার উপর থেইকা। আমাদের একটা সাইট এ গেসিলাম। ভিউ দেইখা মনে হইসে ওই খানেই থাইকা যাই। সাইট ঝাড়ু টারু দেয়ার লোক নিলে এপ্লাই করুম নাকি ভাবতাসি। সুন্দর কইরা বি টি এস রুম ঝাড়ু দিলাম। নেকরা দিয়া মাইক্রোওয়েভ এন্টেনা মুইছা চক চক কইরা রাখলাম। ঝড় আইলে পোল ধইরা হাগ কইরা থাকলাম যাতে লারা চারা না করে। আর সারাদিন নদীর ছবি তুললাম। আহা কত্ত মুজা হইত।

কালকে শুক্রবার। বাংলার ঘরে ঘরে ছুটি । কিন্তু আমার অফিস যাওয়া লাগবে। আজকে তো সাইটের কাজে গেসিলাম তাই কতগুলা কাজ জমসে। অগুলা কালকে গিয়া করা লাগবে। ভাবতেই অইত্যান্ত আনন্দ হইতাসে। শুক্রবার অফিস করাটা অভ্যাস হয়া যাইতাসে ধীরে ধীরে, ভাবতে ভালই লাগে। ছুটি দিয়া কি হইব। ভেচেলর মাইনসের আবার ছুটি কিয়ের। বাজার করা লাগে না, পোলাপান রে চুল কাটাইতে নিয়া যাওয়া লাগে না, “তুমি আমাকে সময় দেও না” শুনা লাগে না। ঠিকই আসে। আর আমি এ মর্মে প্রত্যায়ন করিতছি যে, আমারে কালকে অফিসে যাইতে কেউ বাধ্য করে নাই। আমিই স্ব-ইচ্ছায়, প্রফুল্ল চিত্তে, মোটিভেটেড মনে অফিসে যাইতেছি। আমি টাইম ম্যানেজমেন্ট এ ভাল না, তাই আমার শুক্রবার এ কাজ কইরা কাভার দিতে হয়। আমার প্রতিটি কলিগ অত্যন্ত এফিসিয়েন্ট এবং আমি যারপরনাই লজ্জিত যে আমি তাদের সাথে খেইলা তাদের মত গোল দিতে পারি না তাই আমার এক্সট্রা টাইম খেলতে হয়।

Lao Tzu মানে ষষ্ঠ শতাব্দীর একজন চৈনিক দার্শনিক বইলা গেসেন,

“”To attain knowledge add things every day. To attain wisdom remove things every day”

আমি মনে হয় নলেজ পার হয়া অয়াইজডম এর স্টেজ এ যাইতেই পারি নাই এই জীবনে। স্পিকিং অফ নলেজ, আজকে একটা জায়গায় পড়তাসিলাম, ইংল্যান্ড এর টেক্সি ড্রাইভার দের লাইসেন্স পাইতে হইলে একটা অনেক কঠিন পরীক্ষা দিয়া পাস করতে হয়। এই পরীক্ষার নাম দা নলেজ। অনেকের নাকি দশ বারো বছর ও লাগসে এই পরীক্ষায় পাস করতে। এই পরীক্ষায় লন্ডনের প্রতিটা গলি, রাস্তা, ল্যান্ডমার্ক এর নাম এবং ঠিকানা জানতে হয় এবং এই পরীক্ষার উদ্দ্যেশ্য হইল ক্যাব ড্রাইভার রা যাতে ম্যাপ বা জি পি এস ছাড়া যে কোন জায়গায় চইলা যাইতে পারে। আর এই পরীক্ষা ইদানিং কালে শুরু হয় নাই। শুরু হইসে ১৮৬৫ সালে। ঘুরার গাড়ির আমলে আই গেস।

আল্লাহ পাক আমার জ্ঞ্যান বৃদ্ধি করুক। রাব্বি জিদনি এলমা। অজ্ঞান লোকজন রে প্রতিদিন সহ্য করারও শক্তি দান করুক। আর সব মহান স্বার্থপর, ব্যাকবাইটিং মানুষ কে আল্লাহ সুখে রাখুক। হেরা এডি কইরা মজা পাইলে পাক। আমি তো আর ওদের লেভেলে নামতে পারি না চাইলেই।

 

১৬৬/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ১২, ২০১৫ । ১১.১৪ পি এম

 

অনেক দিন অর্থ হীন কিছু লেখা হয় না। সব লেখা খুব ফরমেটি হয়ে যাচ্ছে। সারাদিন এর বৃত্তান্ত, নিস্বার্থ গিয়ান বিতরণ হচ্ছে। আমি হইতাসে, যাইতাসি, খাইতাসি না বলে বলছি, হচ্ছে, যাচ্ছি, খাচ্ছি। এই টা হয় যখন আমি আমার চামড়ার ভিতর অনেক আরাম প্রিয় হয়ে যাই। সারাদিন কি করলাম মনে করে করে লিখে দেওয়া। এইটা কে না পারে। এইটাতে নতুন কিছু কই। যেদিন বলার মত কিছু থাকে না সেদিন পুরানো কোন ঘটনা মনে কইরা বইলা দেওয়া। এই ভাবে আর কত দিন। এই গুলা হইল ফাকি বাজি। খাটি নির্ভেজাল ফাকিবাজি।

অথচ এরকম কথা ছিল না। কথা ছিল লেখা হবে যা বলতে পারি না সহজে। লিখতে পারার কথা ছিল কে কি মনে করবে কিছু না ভাইবাই। কিন্তু আমার লেখাকেও ভয় পায় কেউ কেউ এখন। মুখ ফসকে একটা কথা বলে ফেলে আর তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলে, “তুমি আবার এই সব ফেসবুকে লিখে দিও না যেন” আমি লিখলেই কি। এক দুই দিন এর বেশি কে মনে রাখবে সেটা। তবু মানুষ ভয় পায় খবর হওয়ার। এইটার নাম এমনি এমনি নিউজ ফিড হয় নাই। এই খানে আমরা এক একটা হেড লাইন। আমাদের স্ট্যাটাস এক একটা রগ রগে নিউজ। আমাদের উঁকি মারা অন্য একটা জীবনে শুধু নিজের জীবন নিয়া ফিল গুড করার জন্য।

বই পড়াও হইতেসে না ঠিক মত। Stars বই টা পড়া শুরু করসিলাম। পচিশ পৃষ্ঠায় আইসা আটকায় গেসি। আর আগে যাইতে পারতেসি না। কারণ মনে হয় যত টুকু পড়সি সেইটা বুঝসি কিনা বুঝার জন্য লিখে ফেলাটা জরুরি। কিন্তু লিখতে গেলে মনে হয়, উহু কি পড়সি কিছুই তো বুঝতাসি না। তাই আবার একটু পড়ি। একটু পড়লেই আমার মাথা গরম গরম লাগে। তখন আবার থাইমা যাই। এই জন্য প্যারালালি অনেকগুলা বই পড়া শুরু করুম ভাবতাসি। তাইলে একটা ভালা না লাগলে আরেকটা লয়া গড়াগড়ি করুম।

চলার মধ্যে শুধু একটা জিনিশ ই চলতাসে , আর সেইটা হইল হাটা হাটি টা। কিন্তু বাসায় ঢুকার পর অনেক কিছু করুম ভাইবা আসি কিন্তু কিছুই করা হয় না। ঘুমে চোখ ভাইঙ্গা আস্তে থাকে। আমি ঢুলতে ঢুলতে ল্যাপটপ এর মনিটর এর দিকে টাক খাইসি কয়েক বার। তারপর “কোনমতে” আজকের নোট লিখা, ১২ টা বাজার আগে পাবলিশ করা। কি বিসরি রুটিন ।

তাই লেখা লেখি ও “কনোমতে” হয়া যাইতাসে।এইটা পালাটানি লাগবো। ঘুম টা একটু কম হইলে ভালা হইত। ১০ টা না বাজতেই চোখ বন্ধ হয়া আসে। ঘুমের মধ্যে আন্দা গুন্দা কি যে লিখি। কোন দিন দেখা যাবে মাথা মুণ্ডু ছাড়া কিছু শব্দ লিখে রাখসি কারন লেহার মাঝখানে আমি ঘুমায় গেসিলাম। এই টা আমি সম্প্রতি আবিষ্কার করসি আমি ঘুমের মধ্যেও লিখতে পারি। কিন্তু সেইটা কোন বাক্য হয় না। কিছু শব্দ বসে খালি পাশা পাশি।

 

 

১৬৫/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ১১, ২০১৫ । ১১.৫৫ পি এম

 

আজকে সারাদিন সাইট এ সাইট এ ছিলাম। সকাল বেলা বাইর হইসি আর সন্ধ্যা বেলা বাসাবো বাসায় ঢুকসি। আমার যেই কাজ করতে হয় তার মধ্যে সাইট এ যাওয়া খুব কম লাগে। গেলেও ভেন্ডররা যায় বা জুনিয়র রা যায়। কিন্তু আমার অনেক ভাল্লাগে সাইট এ যাইতে। কিছু শিখতাসি মনে হয়। সাইট এ গিয়া আমার কাজ তেমন কিছু না। একটা নতুন ছাদ এ যখন বিটিএস বসে তখন আমাদের আসে পাসের কোন একটা সাইট এর সাথে নতুন টার একটা লিঙ্ক করা লাগে। এই লিঙ্ক টারে বলে ট্রান্সমিশন লিঙ্ক। এই লিঙ্ক টা অনেক কিছু দিয়া হইতে পারে। ফাইবার দিয়া হইতে পারে, মাইক্রোওয়েভ দিয়া হইতে পারে, নন লাইসেন্সড ব্যান্ড যার আরেক নাম আই,এস,এম ব্যান্ড সেই টা দিয়া হইতে পারে। এই ট্রান্সমিশন কেমনে হইব, কত হাইটে কি যন্ত্রপাতি বইব, বহনের পর কুন পোর্ট এ আয়া তার তুর জুরা লাগবো এই কাম গুলা যে প্ল্যান কইরা দ্যায় তার নাম ট্রান্সমিশন প্ল্যানার। আমি একজন ট্রান্সমিশন প্ল্যানার। খুব ভাল মানের প্ল্যানার না। কিন্তু প্ল্যানার।

যেহেতু নতুন সাইট সেহেতু আমাদের সাথে অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট এর লোকজনও যায়। যেমন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার একজন যায় স্ট্রাকচার রিলেটেড প্ল্যান গুলা উনারা করে, একজন রেডিও প্ল্যানার যায় যিনি জিএসএম আর ত্রিজি নেটওয়ার্ক এর জন্য এন্টেনা গুলা কোন কোন দিকে মুখ কইরা বইব তা প্ল্যান করে। সাইট একিউজিশন এর একজন যায় যিনি বাড়িওয়ালার সাথে কন্ট্রাক্ট , ভাড়া ইত্যাদি নিয়া কথা বার্তা বলেন। আমরা সাইটে দাঁড়াইয়া ইনিশিয়াল প্ল্যান টা করি, পরে অফিসে আইসা আরো ডীটেইল এ কাজ করা লাগে। যখন সাইট এ যাই না তখন অন্য কেউ এই সব ইনিশিয়াল প্ল্যান টা আমাদের দ্যায় আমরা বাকি ডিটেইল যোগ করি। সব কিছু ঠিক হইলে পরে রোল আউট এর লোকজন এর কাজ শুরু হয় আমাদের প্ল্যান দেইখা দেইখা।

মজা হয় যে এই টা বাংলাদেশ বইলা বাড়ির মালিক রা অনেক খাতির যত্ন করে। আজকে যেমন এক বাসায় বাড়িওয়ালা ছাদে যতক্ষণ ছিলাম সেভেন আপ আনাইয়া খাওয়াইসে। আমি সোডা এভয়েড করতাসি এই মাস থেইকা তাই খাই নাই। আরেকজন আবার কাজ শেষে জোর কইরা বাসায় ধইরা নিয়া চা, বিস্কুট খাওয়াইসে। শেষ যে বাসার ছাদে গেসি ঐ বাসার বাড়ীওয়ালা তো রাত্রে না খায়া আস্তেই দিবে না। অনেক বুঝায় টুঝায় পরে আস্তে হইসে।

আমাদের সরাসরি কাস্টমারের সাথে ইন্টারেকশন হয় না বইলা এই সব সময় মজা লাগে অনেক। একবার একটা মজা হইসে। অফিস করতাসি হঠাত নানুবাড়ি থেইকা একটা ফোন আসলো। এক নানা ফোন করসে। আমি তো সালাম টালাম দিয়া অস্থির। উনি খুবি প্রভাবশালী আমাদের এলাকায়। সামনেই ইলেকশন এ দাঁড়াবেন। প্রাথমিক কুশলাদি বিনিময় এর পর উনি বললেন, শুন ইথার, আমার জমিতে গ্রামীণ এর একটা টাওয়ার বসায় দাও। যত টাকা লাগে আমি দিব। যত লোক লাগে সব আমি দিব। তুমি খালি টাওয়ার টা পাঠায় দাও।

আমি তো পুরাই, ইয়ে মানে, না মানে, নানা, আমি তো টাওয়ার বসাই না। আপনার ক্যান টাওয়ার লাগবে? নানা প্রথমে বলতে চায় না। তারপর চাইপা ধরার পর বলল, উনার যে প্রতিদ্বন্দ্বী আছে গ্রামে সম্প্রতি সেই লোক এর জমিতে বাংলালিক একটা টাওয়ার বসাইসে। এখন গ্রাম এ নাকি উনার সম্মান সেই জন্য অনেকে বাইরা গেসে। উনার নামের আগে লোকজন টাওয়ার বসাইয়া “টাওয়ার অমুক” ডাকা শুরু করসে। এইটা দেইখা আমার সেই নানার আর সহ্য হইতাসে না। এখন ইজ্জত রক্ষার্থে উনার জমিতে একটা টাওয়ার লাগবই।

আমি উনারে একটু বুঝানির ট্রাই করলাম যে, দেখেন টাওয়ার এ তো আরো অনেক ডিপার্টমেন্ট এর যন্ত্রপাতি থাকে। আমি একলা চাইলে তো হবে না। উনি বললেন, কিচ্ছু লাগবো না। কত টেকা কারে খাওয়ানই লাগবো কউ খালি। বিদ্যুতের খাম্বার মত খালি একটা টাওয়ার বহায় দিবা। এইডাতে নেটোয়ার্ক পরে লাগাইও। তুমি খালি একদিন গ্রামে আইসা আমারে দিয়া ফিতা কাটায়া টাওয়ার উদ্বোধন করাইবা , ব্যাস। তুমার কাম শ্যাস।

আমি জি জি অবশ্যই, আমি ব্যবস্থা করতাসি বইলা ফোন রাইখা দিসিলাম । এরপর অনেক বার ফোন দিসে আমি ধরি নাই। আম্মারে বলসি বলতে আমি দেশে নাই, ঢাকা টু অস্ট্রেলিয়া মাইক্রোওয়েভ লিঙ্ক করতে আমেরিকা গেসি গা।

 

১৬৪/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ১০, ২০১৫ । ১০.৫৮ পি এম

 

আজকাল অফিস থেইকা বাইর হইতে হইতে ছয়টা সাড়ে ছয়টা বাইজা যায়। তখন হাটা শুরু করলে চারিদিকে সন্ধ্যা নামে । আমি যত হাটি সন্ধ্যা তত গাড় হয়। আমি কল্পনা করি আমি সন্ধ্যা নামাইতাসি।

বসুন্ধরার যত ভিতরে যাই রাস্তা গুলা আরো নির্জন হয়। ভিতরের দিকে রাস্তার উপরে সোডিয়াম লাইট নাই। টিউব লাইট লাগানো রাস্তার লাইট আছে। মজা লাগে দেখতে। আর আছে জোনাকি পোকা। আহা কয়েকটা জায়গা খুইজা বাইর করসি। এত জোনাকি পোকা মিট মিট করে যে হাটা থামায়া এদের দাঁড়ায়া দাঁড়ায়া দেখা লাগে কিছুক্ষণ।

আমার এক সময় মনে হয় আমি আকাশ দেখতে পাইতাসি পায়ের নিচে আর ওরা মিট মিট করা তারা। জি ব্লক এর শেষ মাথায় তিনশ ফিট রাস্তায় উঠার গেট টার পাশে একটা জায়গা আছে বড় বড় ঘাস ওয়ালা। ওই খানে যখন জোনাকি পোকা দেখি মনে হয় দুই হাত দুই দিকে ছড়ায়া ধপ কইরা পইরা যাই ঘাসের মধ্যে।

আজকে হাটতে হাটতে একটা হেডফোন অনেক মিস করতেসিলাম। আমার টা রাশার কাসে আর ও হাইবারনেশন এ গেসে। কোন খবর নাই। হেডফোন এর কথা মনে হওয়ার পর একটা ঘটনাও মনে পড়লো। তখন আমার অফিস ছিল গুলশান সেলিব্রেশন পয়েন্ট এ। বাসাবো থেইকা অফিস করতাম। একবার সি এন জি গুলশান এক এ ঢুকার সময় পুলিশ চেকপোস্ট এ থামাইলও। আমি দেখতে খুবি বদখত তো তাই আমারে প্রায় ই চেকপোস্ট এ থামাইতো। সি এন জি নামার পর এক শুকনা মত হাবিলদার আইসা আমারে হাতায়া হাতায়া সার্চ করলো। পকেটে পাইলো হেডফোন। আমারে জিজ্ঞেস করলো, “এইটা কি?” আমি বলসি, হেডফোন, গান শুনে। পুলিশ করলো কি হেডফোন টা নিয়া কানে গুইজা দিল। আমি তখনো বুঝি নাই সে আসলে কি করতে চাইতাসে। আমি বেক্কল এর মত দাঁড়ায় থাকলাম পুলিশের দিকে তাকাইয়া। প্রায় ১০ মিনিট পর পুলিশ বলল, কই বাজে না তো কিছু, গান কই? আমি তারে বুঝাইলাম যে দেখেন, কানে হেডফোন দিয়া দাড়ায়া থাকলে তো কিছু শুনা যাবে না। এই পাশে মুবাইল নাইলে এম পি থ্রি নাইলে রেডিও লাগাইতে হবে। হে কি বুঝলও আল্লায় জানে, বিরক্ত হয়া আমারে কইল, বুঝসি, নষ্ট, যান যান।

আমাদের দেশ এর লোক গুলা জে কি পরিমাণ সরল তা আমাদের মত প্রত্যেকদিন নতুন নতুন ধান্দাবাজি করা লোকজন এর পক্ষে বোঝা সম্বব না। একবার নানু বাড়ি গেসি। তখন একটা বিশকাপ চলতাসে। সারা গ্রাম এ খুবি উত্তেজনা। আর সবাই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার । মসজিদে আর্জেন্টিনার জয় কামনায় মিলাদ ও পড়ানো হইসে । ঐ ম্যাচে আর্জেন্টিনা হাইরা যায়। এরপর হঠাত শুনি গ্রাম এর লোকজন মিছিল বাইর করসে। আশে পাশের গ্রাম থেইকা লোকজন আইসা পরসে মিছিল এ যোগ দিতে। মিছিলের শবচাইতে জোরে যে স্লোগানটা বলা হইতাসিল তা হইল,

“আর্জেন্টিনা হারলো কেন, খালেদা জিয়া জবাব চাই”

 

১৬৩/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ০৯, ২০১৫ । ১০.৫২ পি এম

 

আজকে জীবনে প্রথম বার এর মত এন্ড্রয়েড ফোন রুট করলাম। রুট করা মানে হইল এন্ড্রয়েড এর অপারেটিং সিস্টেম এ কিছু অদল বদল করা যাতে কইরা ফোন এর অনেক গুলা রেসট্রিকশন উইঠা যায়, অনেক গুলা অপশন ওপেন হয়। এইটা করলে ফোন এর কোম্পানির দেওয়া ওয়ারেন্টি ও ভয়েড হয়া যায়, তাই নতুন ফোন এ এইডা করাডা একটু কলিজার ব্যাপার। আমার কলিজা আসে, তয় এদ্দিন ফোট রুট করার কুন কারন পাই নাই। আচ্ছা, যা আসে তো চলতাসেই, কি দরকার রুট করার। কিন্তু আজকে বাধ্য হইসি আমার ১ বছর ৫ বাস বয়সের ওয়াল্টন জেড এক্স ফোন রে রুট করতে। কেমনে কি করলাম সেই গফটা কই।

আজকের পাটি পাটি হা হা তে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার হাটার পর যখন রিকশায় উঠার আগে এন্ডোমোন্ডো থেইকা পাওয়ার বাটন আর ভলিউম ডাউন বাটন চাইপা স্ক্রিন শট নিতে যামু দেখি কাম সারসে। ভলিউম বাটন তো কাম ই করে না। ভলিউম আপ বাটন ও না, ডাউন বাটন ও না । তইলে অকন কেম্বায় স্ক্রিন শট নিবাম।

বাসায় আইতে আইতে নেট এ যত ডি তরিকা আসে সব ট্রাই করলাম, কিসসু কাম করে না। তারপর ভাবলাম আইচ্ছা দেখি কোন এপ আসে কিনা যেইটা দিয়া স্ক্রিন শট নেওয়া যায়। সব ফাউল। এপ ইনস্টল করার পরে কয়, পাওয়ার বাটন আর ভলিউম ডাউন বাটন ক্লিক কর, তারপর ছবিটা আমরা ক্রপ করতে হেল্প করুম। আরে ছাতার মাথা আমি যদি ভলিউম ডাউন বাটন টিপতেই পারি তাইলে কি আরে তরে ইন্সটল করতাম?

খুপ চিন্তায় পইড়া গেলাম। অখন কি করুম। আজকের স্ক্রিনশট কি তাহলে নেওয়াই হবে না। মন থেইকা একটা ভয়েস বলতাসিল, বাদ দে বাদ দে, বাসায় আইসস, টিভি দ্যাখ। ঘুমা। কি দরকার স্ক্রিনশট এর। কিন্তু আমি মন রে বললাম, না, যা ঠিক করসি তা কইরাই ছারুম। পড়ালেখা শুরু করলাম ফোরাম গুলাতে।

পইরা বুঝলাম যে যেইসব এপ গুলা বাটন ছাড়া স্ক্রিনশট লইতে দ্যায় সেগুলা একটাও ফোন রুট করা না থাকলে কাম করে না। তখন আমি ঠিক করলাম। ঠিকাসে তাইলে রুট ই করুম। নেট এ পড়ালেখা করলাম যে রুট কি, কেমনে করে, করলে কি ফোন বরবাদ হয়া যাইব কিনা । তারপর সবচেয়ে সুজা উপায় টা খুইজা বাইর করলাম।

একটা সফটওয়ার আছে নাম Kingo Root. এই টা দিয়া সব চেয়ে সহজ রুট করা। প্রথমে Kingo Root সফটওয়ার টা নামায় ডেস্কটপ, ল্যাপটপ এ ইন্সটল কইরা নিতে হবে। তারপর সফটওয়্যার টা ওপেন কইরা ফোন এর ইউ এস বি ডিবাগিং মোড টা অন করতে হইব। এর ফোন টারে একটা ইউ এস বি কেবল দিয়া ডেস্কটপ/ল্যাপ্টপ এর লগে কানেক্ট করতে হইব। এরপর যা কাম করার King Root ই কইরা লইব। এমনকি মোবাইলের ড্রাইভারটা যদি ইন্সটল না থাকে তাইলে ও নিজেই খোজ কইরা ড্রাইভার ডাউনলোড কইরা ইন্সটল কইরা নিবে।

তারপর সফটওয়ার এ হোম পেজ এ একটা বাটন আসে “স্টার্ট রুত” । ফোন টা লাগনো অবস্থায় থাকলে শুরু হয়া যাবে রুটিং । কিচ্ছু করা লাগবে না। ১৫ মিনিট সময় লাগবে। ফোন রুট করা শেষ হইলে ওই শব্দ কইরা আওয়াজ দিবে, আর মেসেজ উঠবে মনিটর এ যে রুট করা ডান। তখন ইউ এস বি খুইলা ফালালেও হবে।

রুট করার পরে আমি সেই স্ক্রিনশট নেওয়ার এপটা ইন্সটল করলাম। এরপর এন্ডোমন্ডো খুইলা সাকসেসফুল্লি স্ক্রিনশট নিয়া পাটি পাটি হা হা এলবাম এ পোস্ট কইরা দিলাম।

অল দিস বিকজ আই আম আ আইলসা। ফোন এর বাটন ঠিক করাইতে যাওয়ার কশট এভয়েড করার জন্য রুট ই কইরা ফালাইলাম ফোন।

স্পিকিং অফ আইলসা। আইজকা আমার বস এর বস একটা গল্প বলসে। ভাল্লাগসে গল্প টা। একবার জাপানের এক বড় সড় লাইট ব্যাবসায়ী ঢাকায় আসলেন ঢাকায় কেমনে ফিলিপ্স বাত্তি বানানো হয় তা দেখতে। সব দেইখা তিনি খুব তাচ্ছিল্য নিয়া বললেন, “হেহ, তোমরা দেখিই এখন হাত ব্যবহার কইরা প্যাকেট এ ভর বাল্ব গুলা। মিসিং হয় না কোন? আমাদের দেশে হয়, প্রায় ই দেখা যাইত বাল্ব এর প্যাকেট এর ভিতর বাল্ব নাই।

এই সমস্যা দূর করার জন্য আমরা জাপানে একটা সেন্সর লাগানো রবোটিক আর্ম ইন্সটল করসিলাম। সেইটা প্রত্যেকটা প্যাকেট চেক করতো যে তার ভীতর বালব আছে কিনা। তোমারা এই সমস্যা ফেস কর নাই?”

বাল্ব কোম্পানির ম্যানেজার মুচকি হাইসা বললেন, অবশ্যই করসি, আসেন আমার সাথে। গিয়া দেখাইল, একটা জায়গায় মাত্র প্যাকেট করা বাল্ব গুলা আনা হইতাসে। ওই খানে এক দারোয়ান একটা টেবিল ফ্যান হাতে নিয়া দাঁড়াইয়া আসে। বাল্ব গুলারে মাটীতে রাখা আর দরজা বন্ধ কইরা দেয়ার পর টেবিল ফ্যান ছাইড়া জুততে জুততে বাতাস দিতাসে বাল্ব গুলারে। যেই প্যাকেট এর ভিতরে বাল্ব নাই সেই প্যাকেট টা উইরা চইলা যাইতাসে। আর ভরা প্যাক্যাট গুলা থাক্তাসে। বিদেশি পুরাই ব্যাক্কল হয়া গেল।

এই গল্পের সারমর্ম হইল, সব চেয়ে কঠিন কাজ টা সব চেয়ে আইলসা পারসন রে দেওয়া উচিত। তাইলে সে একটা শর্টকাট উপায় বাইর করবই।

 

১৬২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ০৮, ২০১৫ । ১১.৪৩ পি এম

নটর ড্যাম এ ফার্স্ট ইয়ার এ পড়ার সময় আমার একটা স্যার ছিল। প্রাইভেট টিউটর। বুয়েট থেইকা পাস করা। ভাল লাম মনে নাই। ডাক নাম ইকো। আমার বাবার বন্ধুর ছেলে হয়। তাই ইচ্ছা না থাকলেও আমাকে আর অভিকে উনার কাছে পড়তে পাঠানো হইল। কারণ তখন আমাদের বাসার বুয়েট নাম টা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাব গাম্ভির্জ এর সাথে উচ্চারণ করা হইত। আমার মা বাবার ধারনা ছিল যেহেতু সে বুয়েটে পড়ে সেহেতু সে ফিজিক্স, ক্যামিস্ট্রি, বাংলা, ইংরেজি, পিটি ক্লাস ইত্যাদি সব ই পারে। এই টিউটর কে তো হাতছাড়া করাই যাবে না। সে যে দয়া কইরা আমাদের পড়াইতে রাজি হইসে এই তো অনেক।

দুই দিন পইড়া অভি শালা কাট মারলো। কারণ ওই লোক অনেক বকা ঝকা করতো। উনারা যে ম্যাথ, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রির বই পইড়া আসছেন (সব এসো নিজে করি বেজড) তার সাথে আমাদের বই এর কোন মিল এ ছিল না। তাই উনি পড়াইতে গিয়া প্রায় ই প্যাচ লাগায় ফেলতো। আর সেই পুরা রাগ ঝাড়তও আমাদের উপর। অভি এদিকে বায়োলজি পড়তে হবে বাহানায় ইনার কাছে আসা বন্ধ কইরা দিল।

অভি চইলা আসার পর আমার উপর উনার মানসিক অত্যাচার আরো বাইরা গেল। উঠতে বসতে বকা দিত। খাতা ছুঁইরা ফালায় দিত। আমি বাসায় কিছু বলতেও পারতাম না। কারণ বললে বলতো, যেই পড়া দ্যায় পারস নাই, তাই বকা দিসে, ঠিক ই আসে , বেশ করসে। সেলফ ইস্টিম কমতে কমতে মাইনাসের ঘরে চইলা গেসিল।

এর মধ্যে একদিন উনি ফিজিক্স পরীক্ষা নিবে। আমি পরীক্ষা দিতে বইসা দেখি অঙ্ক গুলা পারবো, কিন্তু বাকি প্রশ্ন যে কই থেইকা করসে উনি যানে আর আল্লাহ। তো সব মিলায় আমি অনেক ক্ষণ বইসা ছিলাম কেমনে কি করব চিন্তা কইরা। এমন সময় উনি বাসার ভিতর থেইকা আসলেন। আসা দেখলেন আমি সাদা খাতা নিয়া চিন্তা করতাসি।

ব্যাস উনার গেল রাগ উইঠা। বলল, রাখ, পরীক্ষা দেওয়া লাগবে না। বইলা খাতা টা নিয়া বারান্দা দিয়া নিচে ফালায় দিলেন। ওই টা আমার কলেজের খাতা ছিল। তারপর বললেন ব্যাগ গুছায় আমার সাথে আসো। বইলা আমারে নিয়া বাসার দরজার সামনে দার করাইলেন। তারপর বললেন,

“তুমি ইন্টার তো দুরের কথা, ফার্স্ট ইয়ার ই পাস করতে পারবা না। আর যদি ফার্স্ট ইয়ার পাস ও কর এর ওর টা দেইখা লিখা তাইলেও ধরা খাবা ইন্টার এ গিয়া। একবারে পাস করতে জীবনেও পারবা, এইটা তোমার মত স্টুডেন্ট দের কর্ম না। তারপর ডিগ্রি কলেজে গিয়া অনার্স পইরো রাষ্ট্র বিজ্ঞান এ। বুয়েট এ পড়া লাগবে না। তোমার আব্বা কে গিয়া বইলা তোমাকে একটা মুদির দোকান নাইলে সেলুন খুইলা বসায় দিতে। এ ছাড়া আর কিছু করার যোগ্যতা তোমার নাই”

এই টুকু বইলা উনি মুখের উপর দরজা বন্ধ কইরা দিল। ওই বয়সে এত অপমান আমারে কেউ করে নাই। আমার মনে হইতাসিল আমি রাস্তায় গিয়া একটা ট্রাক এর সামনে দাড়ায় যাই। কি হবে আর বাইচা থাইকা। রিকশায় আস্তে আস্তে আমার মনে হইতাসিল সারা শহর এর লোক আমার দিকে তাকায় আসে। আমি খালি কান্তে সিলাম আর কান্তে সিলাম আর শার্ট এর হাতায় চোখ মুছতাসিলাম। টিস্যু ছিল না। বাসায় যাতে কানসি বুঝতে না পারে ওই জন্য মসজিদে ঢুইকা অজু খানা থেইকা চোখে মুখে পানি দিয়া তারপর বাসায় ঢুক্সিলাম। তখন রাত ৯ টা বাজে।

বাসায় ঢুকার একটু পরেই আম্মা ভাত খাইতে বসাইল। তখন জি বাংলা ছিল না। তাই ভাত খাওয়ার সময় আম্মা টেবিলে পাসে বইসা থাকতো। আমি খাইতাসি আর আমার দুনিয়া ভাইঙ্গা কান্দা আস্তাসে। আমি কোন মতে সাম্লাইতাসি তারপরও টপ টপ কইরা পানি পরতাসে চোখ দিয়া। আম্মা দেখলো আর সাথে সাথে চিৎকার দিয়া উঠল, এই কি হইসে তোর, এদিকে তাকা, কি হইসে তোর, কলেজে কিসু হইসে, বলস না ক্যান? আমি জীবনেও কিছু বলতাম না,যদি না পাশে থেইকা অইভ্যা বলত, মেঝু, (আমার আম্মা অভির মেঝ খালা)ইথার ভাইয়ার দোষ নাই। ইকো ভাই পড়াইতে পারে না আর সব রাগ ঝাড়ে আমাদের উপর। আজকে অনেক খারাপ খারাপ বকসে ইথার ভাইয়া রে। আম্মা আমার দিকে তাকায় ছিল অনেক ক্ষণ, আমি চোখ তুইলা তাকাইতে পারি নাই, আমার সামনে তখন একটা ঝাপ্সা ভাত এর প্লেট আর মুখে নোনতা নোনতা ভাত এর লোকমা। আম্মা শুধু বলল,

“কালকে থেইকা তুই আর যাবি না ওই স্যার এর কাছে, বুয়েটের থেইকা যদি এমন অমানুষ পয়দা হয়, আমারার দরকার নাই বুয়েট”

তারপর আমি আর কোন পরীক্ষায় ফেইল করি নাই। ইন্টার পাশ করসি, ন্যাশনাল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় আহসানুল্লাহ ইউনিভার্সিটিকে রিপ্রেজেন্ট করসি, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ গ্রাজুয়েশন করসি, ই-প্রথম আলো বানাইসি, গ্রামীণ এ রিটেন ভাইবা পাস কইরা চাকরি পাইসি। এই গুলা শো অফ এর জন্য বলতাসি না, এই গুলা সে সব মাইল স্টোন যে গুলার প্রত্যেকটার পরে আমি ওই “ইকো” নামের লোকটারে মনে করসি যে আমারে তার বাসা থেইকা বাইর কইরা দিসিল ফিজিক্স এর দুইটা সূত্র ভুইলা গেসিলাম বইলা, আর বলসিল আমি ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার ই পাস করতে পারবো না।

আমার অনেক ইচ্ছা করতো, প্রত্যেক বার তারে গিয়া বইলা আসি দেখেন আমি এই করসি, দেখেন আমি ওই করসি। কিন্তু কিছু বলি নাই। প্রতিশোধ নিলে তো হওয়াই গেল। আমি তো ওই লোক টার লেভেলে “নামতে” পারি না। আমি জীবনে কি করসি সেইটার জন্য তো আমার তার এপ্রুভাল দরকার নাই। আমি তার বিচার করার ভার টা সব চেয়ে বড় বিচারক এর হাতেই ছাইরা দিসি। উনি ই ভাল বুঝবেন কি করা লাগবে।

 

 

১৬১/৩৬৫

লেখার তারিখঃ আগস্ট ০৭, ২০১৫ । ১০.৩৮ পি এম

 

আজকের দিনের হাই লাইট হইল, আমার ডিশ লাইন ঠিক হয়া গেসে। এইটা ভাল হইল না খারাপ হইল বুঝতাসি না। গত ছয়মাস আমার ডিশ লাইন ছিল না। কিন্তু আমি প্রত্যেক মাসে ডিশ এর ভাড়া দিয়া গেসি। মুল কারণ হইল যেই লোক টা ভাড়া নিতে আসে, সেই লোকটা অনেক স্কেয়ারি। ভুরু মুরু কুঁচকায় তাকায় থাকে আমি আর কিছু বলতে পারি না। ডর লাগে।

প্রত্যেকবার ঠিক কইরা রাখি, লাইন ঠিক না হইলে টাকাই দিমু না। সেই লোকটা আসে ঠোটের কুনায় একটা সিগারেট ঝুলায়া। দরজায় ঠাস ঠাস কইরা নক করে। দরজা খুইলা কিছুই জানি না ভাব নিয়া জিগাই, কি? লোকটা বলে, ডিশের লাইন এর ভাড়া টা? আমি বলি, কিন্তু আমার তো লাইন নষ্ট। লাইনটা ঠিক কইরা দেন, আমি ভাড়া দিয়া দিব। ঐ লোক একদম অবিশ্বাস নিয়া আমার দিকে তাকায় থাকে। তারপর বলে, আচ্ছা আপনে টাকা টা দেন, আমি ছেলেটারে পাঠাইতাসি, ও আইসা ঠিক কইরা দিবে। সেই ছেলে আর জীবনেও আসে না। এই ভাবে গেসে গা ছয় মাস। প্রত্যেকবার একি রুটিন। আসে , চোখ কুঁচকায় বলে দেন টাকা দেন তারাতারি। আমি ভয়ে ভয়ে দিয়া দেই। খুবি স্কেয়ারি লোক।

এই মাসে আমার সাহস বারসে। আমি দরজা খুইলা বলসি, কিসের টাকা? ওই লোক আবারো তার স্কেয়ারি মোড অন কই কইরা বলসে ডিশের টাকা। আমি বলসি আমার তো ডিশ ই নাই। ওই লোক আরো ভয়ঙ্কর টোন এ বলসে, ডিশ ঠিক নাই মানে? আমি বলসি, আসেন দেখেন। আমি তো গত মাসেও বলসি।

তার উনারে বাসায় ঢুকায়া টিভি ছাইরা দেখাইসি। তারপর ফাইনালি সে বিশ্বাস করসে। আর সিঁড়ি তে গিয়া বোর্ড খুইলা কি জানি গুটুর গুটুর করসে। ইট টারন্স আউট দ্যাট আমার সামনের ফ্ল্যাট এর লোকেরা সুন্দর মত আমার লাইন খুইলা দিয়ে নিজেগো ডা লাগায় দিসে। যাক, ঠিক হইসে তাই টেকা টুকা দিয়া দিসি

আমি টিভি ছাড়লাম। আর আটকায় গেলাম। ও মাই গড। কালার টিভি। ভিতরে আবার মানুষ জন লরে চরে। কি আশ্ছর্জ ঘটনা। এখন আমারু ডিশ আছে। এখন আমিও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবো। আই ফিল ডাম্ব অলরেডি।

আজকে পাটি পাটী হা হা করতে যাই নাই। আমি একটা জায়গায় পড়সি যে, আপনি যখন অয়ার্ক আউট শুরু করেন, তখন আপনার মাসলের টিস্যু গুলা ছিরা যায়। তারপর আবার নতুন টিস্যু জন্মায়। এই ভাবেই মাসল আস্তে আস্তে শক্ত হয়। তাই ওয়ার্ক আউট এর মাঝখানে একটা রেস্ট ডে দিতে হয় টু রিবিল্ড দা মাসলস। আজকে আমি সেই রেস্ট ডে টা লইসি। কাল্কেরথে আবার পাটি পাটি হা হা শুরু হবে।

আমার বই গুছানি প্রজেক্ট এও প্রগ্রেস হইসে। একটা বুক্সশেলফ তো আগেই গুছানো শেষ। আজকে আরেকটা বুকশেলফ পুরা খালি কইরা সেইটারে একলা একালই ঠেইলা রুম এর আরেক পাশে নিয়া গেসি। খুবি মাসলদার মনে হইতাসে নিজেরে। এখন দুইটা বুকশেলফ পাশা পাশী দেখতে মজাও লাগতাসে। বই গুলা সব মাটিতে যদিও। সর্টিং কইরা রাখসি। এখন আস্তে আস্তে বুকশেলফ এ তুলতে হইব সব গুলা। আজকে অনেক কাজ কইরা লাইসি, তাই আজকে ওরা মাটিতেই থাউক। কাইলকা গুছামু নে।