লেখার তারিখঃ জুলাই ৩, ২০১৫ । ১০.৪৩ পি.এম
জন্মদিন ব্যাপারটা কেমন অদ্ভুত না? আজকে এত মানুষের উইশ পাইসি, এএএততত মানুষের উইশ পাইসি যে আমি ঠিক জানি না আমি সবার পোস্ট এর রিপ্লাই দিতে পারবো কিনা। কিন্তু আমার ইচ্ছা আমি সবাইকে জবাব দিব। একটা মানুষ তার টাইম থেইকা একটা আলাদা টাইম বাইর কইরা আমারে উইশ করসে। উইশ করার সময়টা সে ভাবসে আমার কথা। এইটা আমার কাছে অনেক বড় একটা ব্যাপার। তার কিছুটাও তারে ফেরত দিতে না পারলে আমার কেমন অপরাধী অপরাধী লাগতাসে।
আজকে দিন টা ভাল গেসে। আলহামদুলিল্লাহ। এক মাস আগে থেইকা ঠিক হইসিল যে ডেমিয়েন থরন ওরফে তামিম্বাই সারপ্রাইজ দিতে ঢাকা আইসা পর্বে আজকে। আর কেউ জানতো না। খালি আমি আর ফায়েক জানতাম। আমরা উনারে আনতে গেসিলাম এয়ারপোর্ট এ। এয়ারপোর্ট এ পৌছায় দেখি আমাদের হাতে দুই ঘণ্টার মত টাইম আসে। তাই আমরা সময় কাটাইতে উত্তরা গেসিলাম। জর্জেস ক্যাফে দেহি বন্ধ। তাই বিনস এন্ড এরোমা তে গেসিলাম। ওই খানে বইসি , ফায়েক বিভিন্ন “জিনিষ” দেখতাসে এমন সময় হঠাত দেখি ওয়েটার পেলেট এ কইরা দুইডা ব্লু বেরি চিজ কেক লয়া আসল। হেইডাতে আবার মুম্বাতি লাগানি। দুইডা মরদ পোলা রাইত বারোটা বাজে কফি শপ এ কিউট দেখতে চিজ কেক এ মুম্বাতি লাগাইয়া জন্মদিন পালন করতাসে, আবার জার জন্মদিন সে লজ্জ্যায় মুচরা মুচড়ি করতাছে, ব্যাপারটা এত এলজিবিটি । আমরা দুই জন ই নিজ নিজ মোবাইলে মনোযোগ দিয়া চিজ কেক আর মোকা খাইয়া দউর দিলাম এয়ারপোর্ট এ।
এয়ারপোরট এ তেমন উল্ল্যেখযোগ্য কিছু হয় নাই। একসেপ্ট আমরা একটা নাদুস নুদুস ফ্লাফি কালা বিড়াল দেখসি। আমি ওর কাছে বইসা অনেক খন চুক চুক কইরা ডাকসি কিন্তু আমারে বেশি পাত্তা পুত্তা দ্যায় নাই। একটু পরে তামিম ভাই ল্যান্ড করসে আর কাচের মধ্যে দিয়া দুউউর এ উনারে দেখতে পায়া আমাগো আহ্লাদ এর সীমা আসিল না। আমার হাত নারানি, পাও নারানি, আর ফায়েক আরো যা যা নাড়াইতে পারে সব নাড়াইয়া তামিম্বাই এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা গেল। উনার সাইজ দেইখা খাইশটমস এর লুকজন বেশি কিছু করতে সাহস পায় নাই। তাই তাড়াতাড়ি বাইর হয়া আয়া পরসে। আর আইতেই জাব্রা জাব্রি।
উনারে লওয়া উনার বাসায় আইলাম। তখন সেহরির টাইম। ভাবি ঘুমাইতাসিল। তামিম্বাই গিয়া ডাকসে আর ভাবি উইঠা একবার উনারে দেইখা ও আচ্ছা মুখ কইরা আবার ঘুমায় গেসে। আমরা তো হতাশ। এত প্ল্যান আর এই রিয়েকশন। হতাশ মুখে বাইরে আইসি রুম এর। এমন সময় ভাবি দৌড়াইতে দৌড়াইতে আইসা তামিম ভাই এর দিকে হা কইরা তাকায় রইসে। তুমি সত্যি আসছো? সত্যি? আর কি কান্না টা শুরু করলো তখন। আহা। খাইতে বইসাও উনার কান্না আস্তাসিল আর সারপ্রাইজ এর কথা মনে কইরা আবার হাইসা দিতাসিল।
এর চেয়ে সুন্দর ভাবে একটা জন্মদিন শুরু হইতে পারে? আমি ভাবসিলাম এই টাই শেষ। কিন্তু আল্লাহ ভাবসে অন্য কিছু। সেহরি খাইয়া ঘুমায় টুমায় উঠসি সাড়ে নয়টার দিকে। দেখি পিপলস রেডিও এর এক আর জে ভাই নক দিসে। বলে ভাই, একটু রেডিও টা ছাড়বেন। আমি সিউর বইলা ছাড়লাম, আর তব্দা খাইয়া গেলাম। উনি তখন শো করতাসিল আর আমার সম্পর্কে প্রায় পাঁচ মিনিট এর একটা বক্তিতা দিয়া আমারে ডেডিকেট কইরা একটা গান ছাড়ল, “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে”। ব্যাপক চমকাইসি।
আরেকটু পরে আইসা টিয়ারা উইশ করল। তামিম ভাই উকুলেলে নিয়া আসলো। আমরা অল্প একটু গান বাজনা করলাম। তারপর বাসাবো আইসা পরসি। আর এই লেখার সময় যেখানে অর্ধেক শুইয়া আসি, সেই একি জায়গায় ইফতারির সময় টা বাদে কাটায় দিসি দিনের বাকিটা।
ফেসবুকে, মোবাইলে টেক্সট কইরা, ফোন কইরা যারা উইশ করসেন তাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা আমারে মনে করার জন্য। সবাই এত ভাল ভাল কথা লিখসেন যে এখন ভয় লাগে হোয়াট ইফ আই ক্যান্ট মিট অল দ্বিজ একসপেক্টেশান্স? হোয়াট ইফ ওয়ান ফাইন মর্নিং সবাই রিয়ালাইজ করে ইটস অল ফেক? আমি আসলে তেমন কিছু পারি না।
তারপর মনে হইসে, হুর, এরা সবাই আমারে যেমনে কোন কারণ ছাড়াই ভালবাসতে পারসে, আমিও যতদিন বাইচা আসি সবাইকে মন থেইকা ভালবাইসা যামু। এই জিনিষ টা আমি খুব ভাল পারি।