লেখার তারিখঃ জুন ২৭, ২০১৫ । ১১.৫২ পি.এম
আজকে সারাদিন এ ফেসবুক এ ইস্যু ছিল দুইটা। এক , আমেরিকার সব গুলা স্টেট এ এল,জি,বি,টি কমিউনিটির মধ্যে বিবাহ বৈধ ঘোষণা কইরা আইন আর দুই, নাসের এর বোনের সাথে ছবি তে মানুষ জন এর উলটা পালটা কমেন্ট আর শেষ মেষ নাসের এর সেই ছবি রিমুভ করা এবং বলা যে ডোন্ট ফলো মি।
আমি চেষ্টা করি সব ধরনের ইস্যু কে এরায়া যাইতে। যদিও সব সময় সম্ভব হয় না। আমিও মানুষ, আমিও ক্যারিড এওয়ে হই। এর কারন আমার মনে হয় ইস্যু গভীরতা বোঝার জ্ঞ্যান আমার নাই। অথবা আমার মন্তব্য বুঝনের গভীরতা ইস্যু তৈরি কারির নাই। তাই চুপ থাকি। ইস্যুর দিকে পিঠ দিয়া ঘুমায় যাই।
আজকের গুলাও এরায়াই যাইতাম। কিন্তু দুই দিন এর চিটাগাং সফর এর পর হঠাত ফ্রি হয়া গিয়া আমি সুপার বোরড। তার উপর সব শনিবার রাতে “কালকে অফিস” ভাইবা যেই ডিপ্রেশন টা কাজ করে তার একটা এফেক্ট তো পরেই। আমার মনে হয়, নাহ আমারো কিছু বলার আছে, মূল্যবান মতামত আছে।
এই দুইটা ইস্যুতে আমার চিন্তা ভাবনা অশিক্ষিত সমাজ বিজ্ঞানী টাইপ এর । আমেরিকায় কি লিগাল হইল না হইল তা নিয়া আমি শুইনা আমোদিত হইতে পারি। খবর টা শেয়ার পর্যন্ত দেওয়াটাই আমাদের ফেসবুকিও অভ্যাস ছিল। কালকে অন্য ইস্যু আসলে এইটা মানুষ ভুইলাও যাইত। কিন্তু এই খান থেইকাও যে বিজনেস করা সম্ভব তা কি পুঁজিবাদী ব্রেইন ছাইরা দিবে? সবাই দেখলো এইখানে একটা পজিটিভ মার্কেটিং এর চান্স আসে। 9Gag তার লোগো পালটায় রঙ ধনু দিল, Facebook তার ইউজার দের ছবির উপর একটা রংধনু লেয়ার বসানোর ফিলটার টুল ছারলো।
এর পর ব্যাপার টা ব্রাজিল আর্জেন্টিনার খেলার মত হয়া গেল। যে যেইটা সাপোর্ট করে বা কোন টাই সাপোর্ট করে না তাদের সন্দেহ হইল, অন্যরা কি তার মত বুঝদার? এক টা পপুলার স্ট্যাটাস এর টাইপ দাঁড়ায় গেল এইরকম যে “তোমরা যারা রংধনু মার্কা ছবি দিচ্ছ, তারা কি বুইঝা দিচ্ছ?”
এই খানে স্ট্যাটাস দাতা দুইটা জিনিশ বুঝান। এক, তিনি ব্যাপারটা জানেন এবং তার কাছে ব্যাপার টা কি জিজ্ঞেস করলে তার কাছে লিঙ্ক রেডি আছে তিনি সাথে সাথেই দিয়া দিবেন। আর দুই, তিনি রঙধনু মার্কা ছবি দেন নাই এবং কেউ যাতে তারে না ভাবে যে তিনি যুগ এর সাথে তাল মিলায় চলতাসেন না তাই তিনি জানাইলেন যে তিনিও সামথিং এমাঙ দা নাথিংস।
আম্রিকায় এল,জি,বি,টি রা বিয়া কইরা সুখে শান্তি তে বসবাস করলেও আমাদের কিছু না, অরা রাইতে উইঠা ঝগড়া করলেও আমাদের কিছু না। আমরা শুধু সাপোর্ট জানাইতে পারি বা না জানাইতে পারি। কিন্তু নিজের মত এর ভিন্ন মত প্রকাশকারি রে দ্বীন এর রাস্তায় আনা আমার পবিত্র দায়িত্ব মনে কইরা ফতোয়াবাজি করতে পারি না। সেইটা আরেক জন এর স্বাধীনতার বরখেলাপ হয়।
২য় ইস্যু ছিল নাসের এর সাথে উনার বোন এর ছবি তে লোকজন এর কমেন্ট। এই টা আমার মনে হয় যত দিন যাবে, মোবাইল কোম্পানি গুলা যত বেশি ইন্টারনেট এর বাইরে থাকা লোক গুলা কে আইনা ইন্টারনেট এ ছাইরা দিয়া বলবে দ্যাখ কত মজা, তত দিন এইটা বাড়তেই থাকবে।
কই আমি বা আপনে তো এগুলা করি না গিয়া অন্যের ছবির নিচে। তাইলে ওরা ক্যান করে? কারন ওরা মনে করে ইটস ওকে টু ডু দিস স্টাফ। ওদের কমেন্ট করার সাথে সাথে কেউ ডিলেট কইরা দ্যায় নাই। যে ৪ নাম্বার কমেন্ট টা করসে সে দেখসে যে ১,২,৩ নাম্বার এর অরা তার চেয়েও খারাপ কথা বইলা গেসে, অগুলা জলজল করতাসে , মুছা হয় নাই। আর তার ফ্রেন্ড লিস্টে ফ্রেন্ড ই আসে হয়তো ৪ জন। যারা ঠিক মত নিজের নাম ই লিখতে পারে না। সে যদি এখন অশ্লীল কিছু বলেও তার তো সামাজিক কোন বাধা নাই। দিল কইরা। তারপর ৫ নাম্বার জন আইসা দেখল, বাহ, এইখানে তো ভালাই চলতাসে। দেই একটা কমেন্ট ছুঁইরা।
সেম জিনিষ টা ইভ টিজিং এর ক্ষেত্রেও হয়। প্রথম একজন শুরু করে, দ্যাখে যে কেউ বাধা দিতাসে না, তখনা আরো করে, সাথের লোকজন ও সেইটা দেইখা শুরু হয়া যায়। ক্রিয়েট হয় মব এর।
এই গুলা কে প্রথমেই থামায় দিতে হবে। কমেন্ট চোখে পরা মাত্রই দরকার হইলে স্ক্রিনশট রাইখা মুইছা দিতে হবে। তারপর তারে পাঠাইয়া বলতে হবে, এই বার করসস ছাইরা দিলাম, এর পরের বার পাবলিক লি দেখানো হবে। একজন সেলিব্রেটির পক্ষে এইটা করা টা কঠিন, তার এত এত টাইম নাই। কিন্তু তার সব ফ্যান তো খারাপ না। তাদের যদি দায়িত্ব দেয়া হয় জিনিষটা দেখভাল করার তাইলে এই সব কমেন্ট করা লোকজন পালায়া কুল পাবে?
আমাদের অনেক লোক কম্পিটার ব্যাবহার এর আগেই মোবাইলে ফেসবুক ব্যাবহার এর সুযোগ পাইতাসে এইটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। এরা আশে পাশে দেইখাই শিখবে। এরা অনেকে জানেও না যে যা করতাসে সেইটা দৃশটি কটু। এদের মুরাদ টাক্লা বইলা একটা কিউট ইমেজ দেওয়ায় যায় কিন্তু তাতে সংশোধন তো হয় না।
শিখাইতে হবে এদের। দরকার হইলে হাতে ধইরা শিখাইতে হবে। গত ফেব্রুয়ারির বই মেলায় একটা লোক তার মোবাইলে একটা স্টল এর সেলস গার্ল দের ছবি তুলতাসিল। অনেক সাহস কইরা জিনিষটার প্রতিবাদ করসিলাম। মেয়েগুলাও চিল্লা চিল্লি কইরা লোক জমায় ফেলসিল তাই সাহস পাইসিলাম, নাইলে আমার এত সাহস নাই। মাইর দিতে আসছিল পাবলিক, আমি শুধু লোকটারে শান্ত গলায় বলসি, মোবাইল টা দ্যান। তারপর তার পুরা গ্যালারি আর মেমরি কার্ড ডিলিট কইরা দিয়া আবার ফেরত দিয়া দিসি।
খালি গালা গালি কইরা দায়িত্ব শেষ করলে হবে না। যারা নাসের আর নাসের এর বোন রে উলটা পালটা বলসে তাদের নাম ধইরা খুইজা বাইর কইরা একশন নিতে হবে। সেইটা ভারচুয়াল জগত এই হোক আর বাস্তব জগতেই হোক।