লেখার তারিখঃ জুন ১৯, ২০১৫ । ৮.৩১ পি.এম
ছোটদের প্লেন পরিচিতি – ১
আচ্ছা মিহি, তোমার প্লেন ভাল্লাগে?
— লাগে তো পেক পেক মামা। আমরা তো অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সময় প্লেন এ উঠেছিলাম
আমারো প্লেন অনেক ভাল্লাগে। তুমি প্লেন এ উঠে কি দেখেছো?
— জানালা দেখেছি। আর সিটবেল্ট বাধতে হয়, আর আন্টি টা আমাকে ক্রেয়ন দিয়েছিল আকতে।
বাহ। তুমি বড় হয়ে প্লেন চালাতে চাও?
— হুউউ। আমি তো পাইলট হব। আর প্লেন চালিয়ে বাংলাদেশে এসে পরবো
বা বা বা, খুব মজা হবে। তুমি প্লেন দেখেছো বাইরে থেকে?
— দেখেছি তো মামা। আমি আর অহি জানালার কাচটার কাছে গিয়েছিলাম আর দেখেছি তিন্টা প্লেন দাড়িয়েছিল।
আর প্লেন এর পাখা দেখেছো?
— হেএএ। দুইটা পাখা ছিল। এরকম এরকম *দুই হাত দুই দিকে ছরানো*
অফ তোমাকে তো একদম প্লেন এর মত দেখাচ্ছে মামা।
— ওয়াও, আমি প্লেন হয়ে গেছি?
হ্যা, হয়ে গেছো তো। এখন প্লেন এর মত দোউড় দিলেই উড়তে পারবা?
— প্লেন এর মত দোউড় দিলে কি হবে মামা?
তার আগে তুমি বলতো, প্লেন এর পাখা গুলা কি তোমার হাত এর মত গোল গোল নামি চেপ্টা চেপ্টা?
— গোল গোল না তো, পেন্সিল বক্স এর মত চেপ্টা চেপ্টা
ঠিক বলেছো মিহি। ইঞ্জিনিয়ার আংকেল রা আছে না, ওরা তো প্লেন বানানোর সময় এমন ভাবে বানিয়েছে যাতে এই পাখার উপরে বাতাস কম চাপ দ্যায় আর নিচে বেশি চাপ দ্যায়।
— পাখার নিচে বেশি চাপ দিলে কি হবে মামা?
এই দেখো দেখাই। তোমার হাত এর নিচে বেশি চাপ দিয়ে তোমাকে উপরে উঠিয়ে ফেল্লাম। আবার হাত এর উপর বেশি চাপ দিয়ে নিচে নামিয়ে ফেল্লাম।
— হি হি, আবার উঠাউ আবার
অরে এত শক্তি নাই রে, বুড়া হইতাসি না। তাইলে এখন তুমি বল, প্লেন এর পাখার নিচে বাতাস বেশি চাপ দিলে কি হবে?
— প্লেন উপরে এ এ উঠে যাবে
এইতো বুঝে গিয়েছো। গুড গার্ল। এই ভাবে পাখা বা Wings এর উপর বাতাস এর চাপ বা Wind Pressure এর কম বেশি করার কারনেই প্লেন উপরে উঠে আর নিচে নামে
— কিন্তু মামা, প্লেন তো সাম্নেও যায়। তখন কি করে?
কেন প্লেন এর চাক্কা আছে না? প্লেন এর ইঞ্জিন ঘুরে আর চাক্কা ঘুরে আর প্লেন সাম্নে যায়। :p
— কিন্তুউউ, আকাশে উঠে গেলে তো চাক্কা থাকেই না, তখন কিভাবে সামনে যায় মামা?
প্লেন এর Wings এর নিচে দুইটা গোল গোল ইঞ্জিন লাগানো দেখেছিলা?
— দেখেছি তোওওও। এক্টা প্লেন এ চারটাও লাগানো ছিল। ভিতরে ফ্যান এর মত। আর এক্টা প্লেন এর পাখার নিচে দুইটা আর লেজের কাছে এক্টা লাগানো ছিল। আর এক্টা প্লেন এ ফ্যান দুইটা দেখা যাচ্ছিল। আম্মু বলেছে অগুলার নাম প্রপেলার।
বাহ, ভেরি গুড মিহি। তোমার আম্মুর মাথা খারাপ হইলেও মানুষ ভাল দেখি। তুমি ঠিক দেখেছ। অগুলাই প্লেন এর ইঞ্জিন। কিছু দেখতে গোল গোল, ভিতরে ফ্যান এর মত। এগুলা কে বলে জেট ইঞ্জিন আর কিছু হইল প্রপেলার। এক এক প্লেন এ এক এক রকম ইঞ্জিন থাকে। কিছু প্লেন এ এক্টা প্রপেলার ইঞ্জিন থাকে, কিছু প্লেন এ দুইটা জেট ইঞ্জিন থাকে। কিছু প্লেন এ চারটা জেট ইঞ্জিন থাকে।
— ইঞ্জিন দিয়ে প্লেন কি করে মামা?
প্লেন করে কি চলার সময় অনেক জোরে জোরে ইঞ্জিন ঘুরায়। তাতে সাম্নের বাতাস টান দিয়া নিয়া আইসা ইঞ্জিন এর পিছন দিক দিয়া বাইর কইরা দ্যায়। নিউটন নামে এক্টা আনকেল এর কথা বলসিলাম মনে আছে?
— মনে আছে তো, আপেল খায় যে খালি
হি হি, আপেল খায় না তো। আচ্ছা যাই হোক উনি তো অনেক কিছু বলে গেছেন। এক নাম্বার, দুই নাম্বার এরকম অনেক কথা। তার মধ্যে তিন নাম্বার কথা হইল, উনি বলে গেছেন যে, তুমি যদি কিছু তে ধাক্কা দাও তাইলে উল্টা দিক থেইকাও এক্টা সমান ধাক্কা আসবে
— অই জন্যই তো অহি আমাকে মারলে আমিও অহি কে মারি। কিন্তু আমি তো আস্তে মারি। অহি তো আমার ছোট বোন, সে জন্য
সবাই তো তোমার মত লক্ষী মেয়ে না মিহি। প্লেন এর ইঞ্জিন ও না। আর বাতাস ও তোমার মত লক্ষী না। সে জন্য বাতাস যখন অনেক জোরে ইঞ্জিন এর পিছন দিক দিয়া বের হয় তখন সে সমান সমান ধাক্কা ইঞ্জিন কেও দ্যায়। আর ইঞ্জিন তো প্লেন এর সাথে লাগানোই। তাই প্লেন ও সাম্নের দিকে আগায়।
— উহু প্লেন ও লক্ষী তো। আমি আর প্লেন দুইজন ই লক্ষী আচ্ছা?
আচ্ছা। মিহি আর প্লেন আর দুইজন ই লক্ষী। তো এই লক্ষী প্লেনটাকে প্লেন এর ইঞ্জিন রানওয়ের উপর দিয়ে দৌড়ায় দৌড়ায় নিয়ে যায়। এক্টু আগে বলসিনা যে প্লেন এর পাখা ইঞ্জিনিয়ার আংকেল রা এমন ভাবে বানায় যাতে পাখার উপরে বেশি জায়গা আর নিচে কম জায়গা জাইতে হয় বাতাস কে। আর উপরের বাতাস আর নিচের বাতাস গিয়া মিলে পাখার পিছনে। এইটার কারনে পাখার নিচে বাতাসের চাপ বারতে থাকে আর একসময় এই ধাক্কাই প্লেন কে বাতাসে উঠায় ফালায়।
— ইয়েএএএই প্লেন টা উড়ে এ এ গেলোওওও
আজকে এই টুকুই আচ্ছা? প্লেন এর বাকি গল্প আরেকদিন করব নে?
— আচ্ছা পেক পেক মা মা, বাই বাই, লাভিউ মামা।
লাভ ইউ টু বাচ্চাটা 🙂