লেখার তারিখঃ জুন ১, ২০১৫ । ৯.৫১ পি.এম
এপোলো হাসপাতালের বেড এ শুইয়া শুইয়া নোট লিখতাসি। আমার কিছু হয় নাই। আম্মার শরীরে পটাসিয়াম কইমা গেসিল। শনিবার দুপুরে আমি আর অভি যখন ঘুরাঘুরি কইরা উত্তরা ফিরতাসিলাম তখন হঠাত ফোন আসলো বাবার। রুটিন চেকাপ ছিল এপোলো তে। ডাক্তার বলসে ভরতি করতে।
তখন থেইকা এপোলো তেই ভরতি আছে আম্মা। কাল্কে রিলিজ দিয়া দিতে পারে। এখন দুইটা ইঞ্জেকশন চলতাসে সেলাইন এর সাথে। শেষ হবে রাইত ১১ টায়। বাবা গত দুই রাত ছিল। আমারে থাক্তে দ্যায় নাই। বাসায় পাঠায় দিসে। আজকে আমি বাবা রে বাসায় পাঠায় দিসি। আম্মার পাশে থাক্তাসি আজকে এপোলো তে।
এই খানে চিকিতসা অনেক ব্যায়বহুল। গ্রামীন ফোন এর চাকরি টা না থাকলে এই খানে চিকিতসা এফোরড করা সম্ভব ছিল না আমাদের পক্ষে। অফিস এর হেলথ ইন্সুরেন্স থেইকাই পুরা ব্যায় কাভার করতাসে। আমার তেমন কিছু দিতে হইতাসে না। আমার ভাল্লাগতাসে যে আমি এমন এক্টা যায়গায় পৌছাইসি যেখানে আমি আমার বাবা মার চিকিতসার খরচ যোগাইতে পারি। এ ছাড়া নাইলে টাকা পয়সা দিয়া কি করুম আর।
আম্মা খাইসে এক্টু আগে। এখন টিভি দেখে। আর আমার সাথে গুটুর গুটুর আলাপ করে। আমারে বিয়া দেওয়ার জন্য পাগল হয়া গেসে। বলসে তুই যারে আইন্না বলবি তার সাথেই বিয়া দিব। কুন অসুবিধা নাই। আর বলসে তুই তারে নিয়া ভাল বাসা নিয়া থাকিস। বাসাবো থাকা লাগবে না।আমি কিচ্ছু বলব না। তবু বিয়া কর বাপ, তর বউ নাই চিন্তা কইরা আমারি একা একা লাগে, তোর যে কেমন লাগে তা তো বুঝি ই। আমি কয়েকবার বল্লাম আম্মা চুপ কর। কি কউ এগুলা হুদাই। কিন্তু ঘুরায় ফিরায় অই বিয়ার আলাপ ই। আজিব।
হাসপাতালের রাত গুলা অদ্ভুত। আম্মার সাথে আগেও কাটাইসি হাসপাতালে। হাসপাতাল কখনো ঘুমায় না। কোথাউ না কোথাউ এক্টা অসুখে কষ্ট পাওয়া মানুষ জাইগা থাকে। অপেক্ষা করে ভোর হওয়ার। আমার মনে হয় এদের সাথে গল্প করি গিয়া। সবার ই অনেক গল্প থাকে বলার। শুন্তে চায় না কেউ। আমার মনে হয় আমি যদি সেই কান টা হই।
আজকে এক্টা অন্যায় এর প্রতিবাদ করসি। এক্টা লাল গাড়ি সাম্নের গাড়ি কেন আগায় না অইজন্য সমানে হরন বাজাইতেসিল। সবাই বিরক্ত হয়া লুক দিতাসিল আর কানে আংগুল দিতাসিল। কিন্তু কেউ কিছু বলে নাই। আমি গিয়া গাড়ির ছাদে দুইটা থাবা দিয়া বল্লাম, এত হরন বাজান ক্যান। সবার কান ফাটায় ফেলতাসেন। অই লোক উল্টা কি কি জানি বল্লো। আমি কোন উত্তেজনা দেখাই নাই। বলসি আরেকবার হরন দিলে আপ্নাকে দার করায় শুনাবো কেমন লাগে শুন্তে। আশে পাশের লোক ও ততখনে আগায় আসছে আর গালি দেওয়া শুরু করসে। অই লোক চুপ কইরা মাথা নিচু কইরা গাড়ি চালায়া গেল গা।