লেখার তারিখঃ এপ্রিল ৩০, ২০১৫ । ৯.৫৮ পি.এম
অপারেশন সার্চলাইট (Operation Searchlight) এর শেষ পর্ব আজকে। এই খানে বইলা রাখা বলা ভাল যে এই লেখার কিছুই আমার নিজের লেখা না। বই থেইকা, ইন্টারনেট থেইকা সরাসরি তুইলা দেওয়া। আমি শুধু নিজের যেমনে বুঝি অমনে ধারাবাহিক সাজাইসি ঘটনা গুলা। লেখার তথ্য সূত্র গুলা আমি উল্লেখ করসি প্রথম পর্বের পরেই। আমার শুধু অবাক লাগে, আমাদের কত কিছু জানতে দেওয়া হয় নাই। এগুলা না জাইনাই আমরা বড় হয়া গেসি।
শুধু এই ঘটনা দিয়াই একটা সিনামা বানায়া ফালানো যাইত। কিন্তু আমাদের সেই সিনেমা আজও দেখার সৌভাগ্য হয় নাই।
বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার অভিযান, রাত ১ টা ৩০ মিনিট
ধানমন্ডি ৩২ নং সড়ক, ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান
শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ির এবং বাড়ির আশেপাশের রুটের একটি নকশা তৈরী করা হলো। ৩ নং এসএসজির একটি কোম্পানীকে তিনটি প্লাটুনে ভাগ করা হলো। একটি ক্যাপ্টেন সাঈদ, একটি ক্যাপ্টেন হুমায়ুন এবং একটি মেজর বেলালের নেতৃত্বে। যদিও মধ্যরাতে অভিযানের পরিকল্পনা ছিলো, কিন্তু ক্যাপ্টেন হুমায়ুনের রেকী পার্টি ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর সড়কে রোডব্লক তৈরী করা হচ্ছে খবর আনলে সময় এগিয়ে এনে রাত ১১ টায় করা হয় যাতে ঠিক সময় মত সব বাধা পেরিয়ে পৌছানো যায়।
ক্যাপ্টেন হুমায়ুনের প্লাটুন বঙ্গবন্ধুর বাড়ীর পাশের বাড়ীর ভেতর দিয়ে প্রবেশ করে .দেয়াল টপকে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে প্রবেশ করে। কেউ একজন গুলি করে এবং কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে জানা যায় যে সে ছিলো বাড়ির গার্ড, যাকে মুহুর্তেই হত্যা করা হয়। পুর্ব পাকিস্তান পুলিশের গার্ড তার ভারী তাবুর পোল সহ তুলে নিয়ে নিজেকে আড়াল করে লেকের পানিতে ঝাপিয়ে পরে।
তল্লাশী দল এরপর বাড়িতে প্রবেশ করলো। শেখ মুজিবের এক গার্ডকে পাশে একজনের পাহারায় ভেতরে গাইড করে নিয়ে যাবার জন্য বলা হলো। কিছুদুর যাবার পরেই সে হুট করে রামদা নিয়ে আক্রমন করতে যায়, কিন্তু পেছন থেকেও যে তাকে লক্ষ্য করা হচ্ছে সেটা সে জানতোনা। তাকে গুলি করে থামিয়ে দেয়া হল, যদিও সাথে সাথে হত্যা করা হয়নি। এরপর তল্লাশী দল নীচতলা এবং উপরতলার সব কক্ষ সার্চ করে এবং সব ফাকা পায়। কেবল উপরতলার একটি কক্ষ ভেতর থেকে বন্ধ পায়। মেজর খান মেজর বেলালকে কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকতে বলেন এবং ক্যাপ্টেন সাঈদের দলের কাছে লোকজন জড়ো হবার কোন খবর আছে নাকি জানতে পাঠান। হুট করে তিনি একটি পিস্তল ফায়ারের শব্দ পান এবং এরপর গ্রেনেড বিস্ফোরণের। তিনি ধরে নেন কেউ না কেউ শেখ মুজিবকে হত্যা করে ফেলেছে। দৌড়ে তিনি উপরে যান।
এরপর অথবা ওই সময়ে কি হয়েছিলো তা মেজর জেড এ খান তার, ‘The Way It Was’ বইতে ঠিক এভাবে উল্লেখ করেন,
‘I later learnt that after telling Major Bilal to break down the closed door upstairs when I went to check on the vehicles, someone had fired a pistol shot into the room where Major Bilal’s men were collected, luckily no one was hit. Before anyone could stop him a soldier threw a grenade into the veranda from where the pistol shot had come and followed it with a burst from his sub-machine gun. The grenade burst and the sub-machine gun fire made Sheikh Mujib call out from behind the closed room that if an assurance was given that he would not be killed he would come out. He was given an assurance and he came out of the room. When he came out Havaldar Major Khan Wazir, later Subedar, gave him a resounding slap on his face.’
এর পরের ঘটনার বর্ননায় মেজর খান বলেন,
“I asked Sheikh Mujib to accompany me, he asked me if he could say goodbye to his family and I told him to go ahead. He went into the room where the family had enclosed themselves and came out quickly and we walked to where the vehicles were. I sent a radio message to inform the Eastern Command that we had got Sheikh Mujib.”
এর বাইরে এই সাধারন বর্ননা উল্লেখ করা যেতে পারে,
“Sheikh Mujib then told me that he had forgotten his pipe. I walked back with him and he collected his pipe. By this time Sheikh Mujib was confident that we would not harm him and he told me that we had only to call him and he would have come on his own.”
কয়েকঘন্টার মধ্যেই বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০ পরিবহন বিমানে করে শেখ মুজিবকে পশ্চিম পাকিস্তানের ফয়সালাবাদে নিয়ে যাওয়া হবে এটিসি অফিসার স্কোঃ লীঃ খাজা, সিনিয়র অপারেসন্স অফিসার উইং কমান্ডার খাদিমুল বাশার, ডিরেক্টর অব এয়ারপোর্ট এবং ফ্লাইট সিকিউরিটি স্কোঃ লী হামিদুল্লাহ খানের নাকের সামনে দিয়েই, তারা কিছু বুঝতেও পারেননি কি হচ্ছে, বুঝলেও সে মুহূর্তে করবার কিছুই ছিলোনা। পশ্চিম পাকিস্তানে অবতরনের পর শেখ মুজিব জীবিত শুনে তার ব্রিগেড কমান্ডার তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি একে প্রথমেই হত্যা করলেনা কেন?”
কোন রকম অসুবিধা ছাড়াই। সি-১৩০ বিমানটি উড়ে যাবার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই জেনারেল হেডকোয়ার্টার সহ প্রায় সমস্ত ইউনিটে বার্তা পৌছে গেলো,
The Big Bird is in the Cage, I repeat, The Big Bird is in the Cage
“বড় পাখিটি খাঁচায় বন্দী হয়েছে”।