৩৯/৩৬৫

লেখার তারিখঃ এপ্রিল ৭, ২০১৫ । ১১.৪১ পি.এম

আমি একটা পরাবাস্তব জগতে বাস করি। আমার কাছে সারি সারি সোডিয়াম লাইট মানে একটা হলুদ আলোর ধারা। আমি সেখানে হাত দিলে একটু কেপে যায়, কিন্তু থামে না। আমি আমার ঘসা কাচ এর চশ্মায় শুধু আলো দেখি না, আলোর লম্বা লম্বা রেখা দেখি। আমার বাস্তব টা ঠিক যা হওয়ার তা হয় না। একটু বিকৃতি একটু অন্যরকম হয়ে যায়। সাল্ভাদর ডালির পেইন্টিং এর মত।

অফিসের নিচে আটকা পরে ছিলাম অনেকক্ষণ। বৃষ্টি। সাথে ছাতা নাই। দাড়ায় দাড়ায় জিপি হাউজের নিচের ফোয়ারার পানি তে বৃষ্টি পরা দেখলাম। থমকে থাকা পানির কোন চার্ম নাই। বৃষ্টি পরলে কেমন একটু টেক্সচার ওআলা হয় পানি টা আর তখন মজা লাগে দেখতে। ১০ টা বাজলো যখন, ভাবলাম বাসায় যাওয়া উচিত। কই থিকা জানি ফেরদৌস আইসা পড়ল। তাও আবার ছাতি নিয়া। আমারে পৌছায় দিল গেট পর্যন্ত। ফেরেশ্তা দের সাথে ফ্রেন্ডশীপ রাখলে এরুম ই হয়। বৃষ্টির সময় ছাতা পাওয়া যায়।

ওই দিন এর সাদা কুকুর টা আজকে আবার আসছিল অফিসের নিচে। আমাকে দেইখা চিন্তেও পারসে। পা তুইলা দিসে গায়ের উপর আর হাত চেটে দিসে একটু খানি। আমি জিজ্ঞেস করলাম কিরে ব্যাটা তোর গারলফ্রেন্ড কই? একটু পর দেখি পাশে থেকে আরেকটা কুকুর আমার পায়ে নাক দিয়ে গুতু দ্যায়। মেয়ে কুকুর। বুঝলাম এইটাই গারলফ্রেন্ড। জিপি হাউজের সিকুরিটি ভাই আমাদের দেইখা আগায় আসছিল আর পকেট থেইকা এক পেকেট লেক্সাস বিস্কিট বের করে দিসিল। আর বলসে “ছার, ইটা খাওয়ান”। আমি অদের “ইটা” খাওয়াইসি। দুইজন কেই অনেক কইরা মাথায় হাত বুলায় দিয়া আসছি। আর বলে আসছি শুকনা জায়গা দ্যাখে যাতে রাতে ঘুমায়।

আমার মনে হয় আবার বড় বড় লুকজন এর কইরা যাওয়া পেইন্টিং গুলা দেখা শুরু করা উচিত। মাঝখানে শুরু ও করসিলাম। এক জয়নুল আবেদিন এর কাজ দেইখা আর চিন্তা কইরাই জীবন পার কইরা দেওয়া যায়। আর কত কত আর্টিস্ট এর কাজ দেখা বাকি।

আমার কাছে আর্ট মানে “এক্সপ্রেশন”। এইটা এমন না যে সব ভাল মত হাতে কলমে বুঝায় দিবে। একজন একটা কিছু এক্সপ্রেস করতে চাইসে আর সেই এক্সপ্রেশন টাই হইল আর্ট। সেইটা রাগে চিল্লানোর মত অনেক লাউড, অনেক স্পষ্ট অনুভূতির বহিপ্রকাশ ও হইতে পারে। আবার আমার মত স্ট্রেইট ফেইস কইরা সবকিছু গিল্লা ফালানো ও হইতে পারে। দুইটাই এক্সপ্রেশন। দুই রকম এর। যেই লোক ঘটনার আগে পিছে কিছুই জানে না, সে দুই রকম এক্সপ্রেশন দেইখা দুইশ রকম এর অর্থ মনে কইরা নিতে পারে। আর্ট মানে ওইটাই। মাধ্যম অনেক। উদ্দেশ্য এক। এক্সপ্রেস করা।

এইটাই আমরা খুজি। গানে, ফটো তে, পেইন্টিং এ, লেখায়, ভাস্কর্যে, ইত্যাদি ইত্যাদিতে। প্রথমে দেখি সেই এক্সপ্রেশন্টা আমার সাথে মিলে কিনা। না মিল্লে তারপর আর্টিস্ট এরও যে এমন একটা অনুভূতি হইসিল যেইটা আমি ভাবি ই নাই , ওইটা ভাইব্বা মজা লাগে। আর ওই পিস অফ আর্ট টাকে তখন আমরা মনে রাখি অনেক দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *