লেখার তারিখঃ মার্চ ১৯, ২০১৫ । ১.০৩ এ.এম
১১ টা আলাদা আলাদা বাংলাদেশের টুকরা কালকে এক সাথে মাঠে নামতাসে আমাদের ১ টা স্বপ্ন পুরন করার জন্য। একটু যদি ভাবি, এরা বড় হইসে আলাদা আলাদা ভাবে। এদের সবার গল্পটা আলাদা। কিন্তু আবার একটা জায়গায় আইসা মিল্লাও গেসে।
একটা কমন ইন্টারেস্ট এ এদের এক অন্যের সাথে এক টিম হয়া কাজ করতে হইতাসে। হয়তো এদের কেউ কেউ কাউরে কাউরে মনে মনে পছন্দ করে না। কিন্তু দেশকে জিতানো যেখানে কাজ, সেইখানে এই সব কেডায় দেহে। ওদের জায়গায় নিজেরে কল্পনা করলে কেমন হাত পা ঠান্ডা হয়া আসে। আমি কত নির্লজ্জ ভাবে ব্যার্থ হইতাম আর ইনারা কত সহজাত ভাবে জিতা যায়। ভাবতেই দম আটকায় আহে।
এরা আমাদের মতই স্কুল এ বকা খাইসে, আম্মার আব্বার সাথে বেড়াইতে গেসে, রাস্তায় রিকশা বা সিএনজি না পায়া হতাশ হইসে। এরা বি ডি আর এর মিউটিনিও দেখসে, শাহবাগ ও দেখসে, অবরোধ ও দেখসে । ইনারাও অর্ণব এর গান শুনে, ইভা রহমান এর পচানিতে মজা পায়, কানে হেডফোন লাগায়া ইনারাও মাথা দুলায় আমরা যেম্নে দুলাই মাঝে মাঝে।
বাংলাদেশি হিসাবে আমরা যেই কমন দুঃখ সুখ গুলার মধ্যে দিয়া যাই এরা সবাই কিন্তু তার মধ্যে দিয়াই বড় হইসে। তারপর নিজের প্যাশন রে ধাওয়া করসে ওস্তাদ দৌড়বিদ এর মত আর সব কাছাকাছি যোগ্যতার প্লেয়ার দের পিছনে ফালায়া চান্স পাইসে জাতীয় দলে।
জাতীয় দল মানে বাংলাদেশের দল। যেই দল মানে সবাই বুঝবে বাংলাদেশ। কত বড় ব্যাপার এইটা। আমরা সুট পরা আর লুঙ্গি পরা এক দল ভিক্ষুক রে একসাথে কইরা বলি নাই এইটা বাংলাদেশ। আমরা অনেক ভাল খেলতে পারে এরম ১১ জন রে এক সাথে কইরা বলসি এইটা বাংলাদেশ। পারো তো হারাও এখন।
এরা আসমান থেইকা ঠুস কইরা পইরাই ব্যাট বল হাতে জাতীয় টিম এর জারসির বুতাম লাগাইতে লাগাইতে স্টেডিয়াম এ ঢুইকা যায় নাই। এদেরকে অন্য অনেকের মধ্যে থেইকা উইঠা আসতে হইসে। আর এই উঠাটা এখনো থাইমা যায় নাই। ইনারা প্রত্যেক্টা ধাপ এ পরীক্ষা দিয়া দিয়া উঠসেন। কাল্কেও পরীক্ষা দিতে নাম্বেন। আমি আপ্নে পরীক্ষা দিতে যাই নাই কিন্তু। আমরা টিভির সামনে বইসা ভুরি দুলামু আর পরীক্ষা দিব কিন্তু এরাই।
একবার এক স্কুল এর ক্লাস ওয়ান এর ভর্তি পরীক্ষা শেষ হইসে। আমি ক্যান জানি অইদিক দিয়া যাইতাসিলাম। দেখি এক পিচ্চি মেয়েরে তার বাপ বক্তে বক্তে নিতাসে। আর পিচ্চিটা খালি চুপ চাপ চোখ মুছতাসে। বাপ টা সমানে চিল্লায়ই যাইতাসে “আরে এত সুজা প্রশ্ন, আরে এত সুজা প্রশ্ন, আর তুমি পার নাই”। মুন্ডা চাইসিলো হালারে ধইরা ওহোম এর সুত্র জিগাই আর কই, আরে এত সুজা প্রশ্ন , আপ্নে পারেন্না? এডি তো ফাস্ট ইয়ার এর পুলাপাইন ও পারে। খেলা দেখার সময় কেউ যখন বলে আরে এত মোয়া বল খেলতে পারলো না তামিম কিংবা আজিব, এইডা কি বল করসে সাকিব! আমার তখন এই গল্পটার কথা মনে হয়।
আমরা ইনাদের বিচার করি খুব সহজেই। ভাল খেল্লে চুমা আর খারাপ খেল্লে কথার বুমা। হয়ত অনেক ভালবাসা থেইকাই অধিকার বোধ টা আসে। কিন্তু সাইকো প্রেমিক দের মত আমরা কেউ কেউ জানি না কোথায় থামতে হবে।
আমার মনে হয় ইনারা এত দূর যে আইসে এইটা আমগো লাইগা অনেক। এই বার কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত আইসে, অনেক আইসে। এখন আমরা জানি কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত আসা যায়। কুনু ব্যাপার ই না। যদি আজকে জিতা যাই তাইলে খুশির সীমা থাকবো না। আর যদি হাইরা যাই, তাইলে একটা কাজই করার চিন্তা করা উচিত তখন। ইনারা কবে দেশে আসবে খোজ নেওয়া। ফ্লাইট এর টাইম টা জানার চেস্টা করা। সংবরধনা দিতে হবে যে আমাদের ১১ জন বাংলাদেশ এর টুকরা কে।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট টিম এর জন্য শুভ কামনা।