১২/৩৬৫

লেখার তারিখঃ মার্চ ১১, ২০১৫

আমার মাঝে মাঝে ( এবং ইদানিং প্রায়  ই) মনে হয়, আমি এখন যে চাকরি টা করছি সেইটা যদি না করতাম, তাইলে কি হইত? তাইলে কি জীবন টা অন্যরকম হইত? আমি এখন যা, চাকরি না থাকলে কি সেরকম ই থাকতাম? নাকি টাকা পয়সার অভাবে আরো গ্রাম্পি ওল্ড ম্যান টাইপ সারাক্ষণ ই রাইগা থাকতাম?

 

আমি মোটামুটি শিওর যদি এই চাকরি টা না থাক্তো আর যদি বাপ মায়ের যথেষ্ট পরিমান টাকা পয়সা থাক্তো তাইলে গিয়া ফ্লাইং স্কুল এ ভর্তি হইতাম। এখনও যখন পাশে দিয়া এয়ারলাইন্স এর সাদা মাইক্রোবাস যায় আর ভিতরে একটা পাইলট বইসা থাকতে দেখি, একদম ভিতর থেইকা একটা গভীর বিষাদময় দীর্ঘশ্বাস উইঠা আসে।

 

কোন কোন দিন অফিসে ল্যাপ্টপ এর সাথে নাক লাগায় বইসা থাকতে থাকতে কল্পনা করি, সামনে ককপিট প্যানেল আর জানলার অইপাশে অনন্ত অসীম মেঘমালা। কোন কোন রাতের ফ্লাইটে জগত সংসার ভাসায় নিয়া যাওয়ার মত জোছনা দেখতে দেখতে উড়তে থাকি ।

 

পিছনে কয়েকশ যাত্রী হয়তো ঘুমাচ্ছে কারন আমি তো আছি ই । উড়ে উড়ে দেশ বিদেশ দেখা। ঘড়ির কাটার সাথে মিলানো জীবন আবার বোরিং ও না। ধবধবা সাদা সার্টের কাধের কাছে দাগ কাটা। এগুলা কে বলে এপিলেটস (epaulets)। চার দাগ মানে ক্যাপ্টেন, তিন দাগ মানে ফাস্ট অফিসার। আর দুই দাগ মানে ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার।

 

আমার কাছে পাইলট দের মানুষ মনে হয় না। যেভাবে টেক্টিন্যাল ব্যাপার গুলার সাথে নিজের ইন্দ্রিয় কে কাজে লাগায় কাজ করতে হয়,  পাইলট রা তো সিক্রেট সুপার হিরো। আর আই এনভি অল সিক্রেট সুপার হিরোজ ।

 

এই খানে অনেক বিতর্ক ও আছে। আমি ব্যাক্তিগত লাইফ এ একজন পাইলট কি, সেই হিসাবে এই গুলা বলি নাই। আই মেন্ট দা পাইলট প্রফেশন। এক জন পাইলট ব্যাক্তিগত জীবনে চোর, ডাকাত, লুইচ্চা, ফ্রিক ইত্যাদি হইতেই পারেন, আমি সেগুলারে এনভি করি মিন করিই নাই।

 

আর যদি বাসা থিকা টেকা টুকা না পাওয়া যাইত, যেইটা ইন রিয়ালিটতে আসলেই পাওয়া যাইত না, তাইলে নিশ্চই হার্ডকোর প্রোগামার হইতাম। গরীব ও মেধাবি প্রফেশনাল প্রোগ্রামার। রাতের পর ডিবাগ করা নিয়া পইড়া থাকতাম। মোবাইল এর জন্য এপ বানাইতাম। সারাদিন মাথায় অমুক তমুক ওয়েব সাইট এর আইডিয়া গিজ গিজিং করে।

 

এই চাকরি টা না করতে হইলে হয়ত একটা ছোট স্টারটাপ কোম্পানি দিয়া ওই স্বপ্নটা ধাওয়া করার চেষ্টা করতাম। পারতাম হয়তো। নিজেরে মনে করাই, আমরা কি ই-প্রথম-আলো বানাই নাই? এখন কত মানুষ দ্যাখে। তখন তো মাত্র ইউনিভারসিটি পাস দিসি। এত দিনে আরো কত স্কিল বাড়তো।

 

অফিসে বস এর সাথে রাগ কইরা থাইকা আসলে লাভ নাই। চাইরটা জিনিষ আল্লাহর হাতে। জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ আর বস। আপ্নের বস কে হবে এইটা আপনি জীবনেও নির্ধারণ করতে পারবেন না, এক্সেপ্ট আপনি যখন নিজেই নিজের বস তখন।

 

জিকো ভাই এই ক্ষেত্রে একটা ভাল কথা বলসে। বলসে রাগ উঠলে, মন খারাপ লাগলে মনে মনে বস রে বলবেন,  “ আপনার যা শিক্ষা আর যোগ্যতা ,তাতে আপনি আপনার কেপাবিলিটির সবচেয়ে হাইয়েস্ট চাকরিটা করতাসেন। কংগ্রেটস। আর আমি করতেসি আমার যোগ্যতার সবচেয়ে লোয়েস্ট টা। দ্যাটস দা ডিফ্রেন্স। “

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *